Institute of Modern Psychology and Research, Bangladesh

Institute of Modern Psychology and Research, Bangladesh Research based Mental Health Care Organization ☑️

📌ট্রানজেকশনাল এনালাইসিস কি?ট্রানজেকশনাল এনালাইসিস বা Transactional Analysis (TA) হল একটি মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্ব এবং থেরাপি...
04/04/2024

📌ট্রানজেকশনাল এনালাইসিস কি?

ট্রানজেকশনাল এনালাইসিস বা Transactional Analysis (TA) হল একটি মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্ব এবং থেরাপিউটিক পদ্ধতি যা 1950 এর দশকে এরিক বার্ন দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এটি মানুষের আচরণ, যোগাযোগ এবং সম্পর্ক বোঝার লক্ষ্য। এটির মাধ্যমে দেখা যায় ব্যক্তিদের তিনটি অহং অবস্থা রয়েছে - পিতামাতা, প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু - যা তাদের মিথস্ক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।

পিতামাতার অবস্থা:
কর্তৃপক্ষের থেকে শেখা আচরণ, মূল্যবোধ এবং মনোভাবের প্রতিনিধিত্ব করে। লালনপালন (ইতিবাচক) এবং সমালোচনামূলক (নেতিবাচক) দিকগুলিতে বিভক্ত। ব্যক্তিরা তাদের জীবনে পিতামাতার পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তা প্রভাবিত করে।

প্রাপ্তবয়স্কদের অবস্থা:
আবেগগত পক্ষপাত ছাড়াই বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ জড়িত। বর্তমান বাস্তবতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে। যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমস্যা সমাধানে উৎসাহিত করে।

শিশুর অবস্থা:
শৈশবকালে শেখা আবেগ, অনুভূতি এবং আচরণগুলিকে প্রতিফলিত করে।

ফ্রি চাইল্ড (স্বতঃস্ফূর্ত, সৃজনশীল) এবং অভিযোজিত শিশু (অনুশীলিত, মানানসই) এ বিভক্ত। শৈশব অভিজ্ঞতা দ্বারা প্রভাবিত প্রতিক্রিয়া আকার

TA এর মূল ধারণা:

লেনদেন: ব্যক্তিদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া মৌখিক এবং অ-মৌখিক সংকেতের বিনিময় জড়িত। ইতিবাচক লেনদেন যোগাযোগ বাড়ায়, অন্যদিকে নেতিবাচক লেনদেন দ্বন্দ্বের কারণ হতে পারে।

লাইফ পজিশন: ব্যক্তিরা জীবনের মৌলিক অবস্থানগুলি বিকাশ করে- "আমি ঠিক আছি, আপনি ঠিক আছেন" (স্বাস্থ্য), "আমি ঠিক আছি, আপনি ঠিক নেই" (বিচারমূলক), "আমি ঠিক নেই, আপনি ঠিক আছেন ঠিক আছে" (আত্ম-সমালোচনামূলক), এবং "আমি ঠিক নেই, আপনি ঠিক নন" (নিরাশা)।

গেমস: আচরণের অসচেতন ধরণ ব্যক্তিরা লুকানো অর্থ অর্জনের জন্য নিযুক্ত হন। এই গেমগুলি সনাক্ত করা এবং বোঝা ব্যক্তিগত বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাইকোথেরাপি: TA ব্যাপকভাবে কাউন্সেলিং এবং সাইকোথেরাপিতে ব্যবহৃত হয় যাতে ব্যক্তিদের তাদের যোগাযোগ এবং আচরণের ধরণগুলি অন্বেষণ এবং সংশোধন করতে সহায়তা করে।

শিক্ষা: শিক্ষকরা ছাত্র-শিক্ষকের গতিশীলতা বুঝতে এবং একটি ইতিবাচক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে TA নীতিগুলি ব্যবহার করেন।

সাংগঠনিক উন্নয়ন: যোগাযোগ, নেতৃত্ব এবং দলের গতিশীলতা উন্নত করতে কর্মক্ষেত্রে TA প্রয়োগ করা হয়।

TA এর সুবিধা:

স্ব-সচেতনতা: TA ব্যক্তিদের তাদের নিজস্ব আচরণের ধরণ গুলি চিনতে এবং বুঝতে সাহায্য করে।

উন্নত যোগাযোগ: স্পষ্ট এবং কার্যকর যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

দ্বন্দ্ব সমাধান: গঠনমূলক পদ্ধতিতে দ্বন্দ্ব এবং ভুল বোঝাবুঝি মোকাবেলার জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

📑 TA-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহঃ
১. স্টোরিজ
২. স্ক্রিপ্ট অফ লাইফ
৩. লাইফ পজিশন
৪. অটোনমি
৫. টাইম স্ট্রাকচারিং
৬. ফাংশনাল মডেল অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল এনালাইসিস অফ ইগো স্টেট
৭. ইগোগ্রাম ও
৮. লাইফ স্ক্রিপ্ট

ট্রানজেকশনাল এনালাইসিস মানুষের মিথস্ক্রিয়া, ব্যক্তিগত উন্নয়ন, উন্নত সম্পর্ক এবং কার্যকর যোগাযোগের জন্য মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। এর নীতিগুলি বিভিন্ন ডোমেনে প্রযোজ্য, ব্যক্তি এবং সম্মিলিত বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

পোস্টঃ ৪৬

পূর্বের পোস্টঃ https://www.facebook.com/share/p/uBHMMMX4qTBuRdCu/?mibextid=Nif5oz

সিবিটি (CBT) কী?🔶🔶🔶🔶🔶🔶সিবিটি হলো এক ধরনের টকিং থেরাপি। টকিং থেরাপিগুলো সাইকোথেরাপি নামেও পরিচিত। সাইকোথেরাপি ও মনস্তাত্ত...
04/04/2024

সিবিটি (CBT) কী?
🔶🔶🔶🔶🔶🔶

সিবিটি হলো এক ধরনের টকিং থেরাপি। টকিং থেরাপিগুলো সাইকোথেরাপি নামেও পরিচিত। সাইকোথেরাপি ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসাবিষয়ক তথ্যসংবলিত আমাদের পেইজটি থেকে আপনি এ সম্পর্কে আরও জানতে পারবেন।

বিভিন্ন দৈনন্দিন পরিস্থিতিতে আপনি কিভাবে চিন্তাভাবনা করবেন এবং আপনার ওপর নানা বিষয়ের কেমন প্রতিক্রিয়া হবে সেই বিষয়ক উপকারী কিছু পদ্ধতি শিখতে সিবিটি আপনাকে সাহায্য করবে। চিন্তাভাবনা ও কাজকর্মের ধরনে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে অনেক সময় মানসিক অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব হয়।

অন্যান্য কিছু টকিং থেরাপির চেয়ে সিবিটি একটু আলাদা, কারণ এতে অতীতের অভিজ্ঞতার পরিবর্তে বর্তমানের প্রতিবন্ধকতাগুলোর ওপর জোর দেওয়া হয়। এই চিকিৎসার লক্ষ্য হচ্ছে আপনাকে নিজের চিন্তা, কাজ ও অনুভূতির মধ্যকার সম্পর্ক খুঁজে বের করার উপায় শেখানোর মাধ্যমে আপনার মানসিক অবস্থার উন্নতি করা।

সিবিটি চলাকালে আপনার থেরাপিস্টের সহায়তায় আপনি সমস্যা সমাধানের নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করবেন এবং যাকিছু পরিবর্তন করতে চান সেসব বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন। সিবিটি ফলপ্রসূ হলে তখন নিজের জীবন যে নিজের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে তা উপলব্ধি করা সহজ হয়।

সিবিটি থেকে কারা উপকৃত হতে পারেন?
🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵🔵

অনেক মানসিক রোগের ক্ষেত্রেই সিবিটি ব্যবহারে সুফল পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:

ক] মানসিক অবসাদ যেমনঃ উদ্বেগ, আতঙ্ক ও অমূলক ভয়-অ্যাগোরাফোবিয়া (এমন কোনো পরিস্থিতিতে আটকা পড়ার ভয় যেখান থেকে পালানোর কিংবা যেখানে সাহায্য পাওয়ার কোনো উপায় থাকবে না), সামাজিক উদ্বেগ (সামাজিক পরিস্থিতিকে ভয় করা) ও স্বাস্থ্যজনিত উদ্বেগও (অসুস্থ থাকার কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়ার ভয়) এসবের অন্তর্ভুক্ত, খাদ্যগ্রহণে অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি।

খ] অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার (ওসিডি)
পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি)
বাইপোলার ডিজঅর্ডার এবং সাইকোসিস (স্কিৎজোফ্রেনিয়াসহ)।

অন্যান্য সমস্যার ক্ষেত্রেও সিবিটি কাজে আসতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১> ভাল ঘুম না হওয়া
২> মানসিক চাপ
৩> ক্রোধ
৪> আত্মবিশ্বাসের অভাব ও
৫> ব্যথা ও অত্যধিক ক্লান্তির মতো শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা।

সিবিটির মাধ্যমে যেকোনো বয়সের মানুষই উপকৃত হতে পারে, এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও।

সিবিটি চলাকালে সেটির পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার জন্য ওষুধ খাওয়ার দরকার হলে তাও করা যায়। তবে তা আপনার সমস্যা, ডাক্তারের মতামত ও আপনার পছন্দের ওপর নির্ভর করবে।

মদ্যপান, মাদক কিংবা ঔষধে আসক্তিসংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সিবিটি শুরু করার আগে সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করার ব্যবস্থা করা উচিত। এর কারণ হচ্ছে, অত্যধিক মদ্যপান, ঔষধ সেবন বা মাদক গ্রহণ করা হলে সেক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার বেশি কার্যকর উপায় শেখা ও মনে রাখা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

ডিমেনশিয়াসহ স্মৃতিশক্তির তীব্র সমস্যায় ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রে সিবিটিতে ফললাভ হতে দেখা যায়নি। সিবিটির গুরুত্বপূ্র্ণ একটি অংশ হচ্ছে নতুন দক্ষতা অর্জন করা, কিন্তু পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার নতুন কোনো উপায় মনে রাখা কিংবা চর্চা করাই যদি সম্ভব না হয় তাহলে সেসব দক্ষতা অর্জন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

সিবিটি কতটা কার্যকর?
🔹🔹🔹🔹🔹🔹🔹

ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্সের (NICE) মতে বেশ কয়েকটি সমস্যার ক্ষেত্রে সিবিটি-ই সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা।

উদ্বেগ ও মানসিক অবসাদ - যেসব রোগের ক্ষেত্রে সমস্যার মূলে থাকে উদ্বেগ (যেমন জেনারালাইজড অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার কিংবা প্যানিক ডিজঅডর্ডার) অথবা মানসিক অবসাদ সেসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতিগুলোর একটি হচ্ছে সিবিটি।
ফোবিয়া ও ওসিডি - ফোবিয়া এবং ওসিডির সবচেয়ে কার্যকর মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা হল সিবিটি।

দেখা গেছে সিবিটি শুরু করার পর চিকিৎসাসেবা গ্রহণকারীদের চার ভাগের প্রায় এক ভাগই চিকিৎসা বাদ দিয়ে দেয়। সেবাগ্রহীতা যদি মানসিক অবসাদগ্রস্ততায় ভোগে কিংবা থেরাপিস্টের উপস্থিতিতে সামনাসামনি যদি সিবিটি করা না হয় তাহলে শুরুর দিকে এভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

ওষুধের তুলনায় সিবিটি কতটা কম/বেশি কার্যকর?
▪️▪️▪️▪️▪▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️▪️

বিভিন্ন প্রকারের মানসিক অবসাদের চিকিৎসায় সিবিটি-তে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধের মতোই কাজ হয়। উদ্বেগের চিকিৎসায় এতে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধের চেয়ে সামান্য বেশি ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে। ওষুধের চেয়ে সিবিটির প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়, আর এটি প্রয়োগ করা হলে রোগীর পক্ষে ভবিষ্যতেও ভাল থাকা সহজ হয়ে যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা তীব্র হলে সেক্ষেত্রে শুধু ওষুধ কিংবা শুধু সিবিটি-র পরিবর্তে ওষুধের পাশাপাশি সিবিটি করা হলে তাতে বেশি উপকার হতে পারে।

সিবিটি কিভাবে করা হয়?
🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾🌾

সিবিটির ‘C’ দিয়ে বোঝায় ‘কগনিটিভ’ অর্থাৎ ‘জ্ঞানীয়’ (আপনি যা ভাববেন) – মনে কখন নেতিবাচক চিন্তাভাবনা চলছে তা ধরতে পারার পদ্ধতি আপনি সিবিটির মাধ্যমে শিখতে পারবেন। এই চিকিৎসায় নেতিবাচক এবং নিরর্থক বা অহিতকর ভাবনাকে আপনি চ্যালেঞ্জ করতে থাকবেন। এসব ভাবনার উদাহরণ হল:

‘আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না’ কিংবা
‘সবকিছু গুলিয়ে যাবে’।
আপনি এগুলোর পরিবর্তে মনে আরও কার্যকর ও বাস্তব ভাবনার উদ্রেক করার চেষ্টা করবেন। যেমন:

‘একথা যে সত্য তার প্রমাণ কী?’
‘এই বিষয় নিয়ে অন্য আর কোন আঙ্গিকে ভাবা যেতে পারে?’ কিংবা
‘আমার অবস্থায় কোনো বন্ধু পড়লে তাকে আমি কী উপদেশ দিতাম?’

সিবিটির ‘B’ দিয়ে বোঝায় ‘বিহেভিয়ার’ অর্থাৎ ‘আচরণ’ (আপনি যা করবেন) – আপনি যা-ই করেন এবং তা যেভাবে করেন তা-ই হল আপনার আচরণ। যেসব বিষয় আপনি এড়িয়ে চলেছেন কিংবা যেসব বিষয় নিয়ে আপনার মনে ভয় রয়েছে সেসব সমস্যার সমাধান সিবিটির মাধ্যমে করা সম্ভব হতে পারে। সিবিটি চলাকালে আপনার প্রতিদিনকার কাজকর্ম আপনি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারবেন এবং যেসব কাজ করতে ভয় পান সেগুলো করে দেখার জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারবেন। নিজের লক্ষ্য ও কাজকর্ম সম্পর্কে লিখে রাখলে, কাজ করে তাতে সফলতা প্রাপ্তির ফলে আপনার মনে তৃপ্তি আসবে এবং আপনার পক্ষে নিজের অগ্রগতির হিসাব রাখাও সুবিধা হবে।

সিবিটির ‘T’ দিয়ে বোঝায় ‘থেরাপি’ অর্থাৎ ‘চিকিৎসা’ (আপনি যা শিখবেন) – সিবিটির মাধ্যমে আপনি এমন সব নতুন দক্ষতা শিখতে পারবেন যেগুলো পরবর্তীতে ‘বাড়ির কাজ’ হিসাবে করা যাবে। সিবিটি শেষে আপনি এসবের চর্চা অব্যাহত রাখতে পারবেন, যার ফলে ভবিষ্যতে ভাল থাকার উপায় আপনার হাতের নাগালেই থাকবে।

সিবিটি কিভাবে করা হয়?
⏭️⏭️⏭️⏭️⏭️⏭️⏭️⏭️

প্রশিক্ষিত থেরাপিস্টরা সিবিটি করে থাকেন। বিভিন্ন উপায়ে সিবিটি পাওয়া সম্ভব:

☑️ সামনাসামনি করা সিবিটি
এটি একক সেশনেও করা যেতে পারে, আবার দলগতভাবেও করা যেতে পারে। সামনাসামনি করা সিবিটিকে সাধারণত এই চিকিৎসাপদ্ধতিটির সবচেয়ে কার্যকর উপায় হিসাবে গণ্য করা হয়।

☑️ ডিজিটাল সিবিটি (অনলাইন বা ‘ই-সিবিটি’)
কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট কিংবা স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও কল কিংবা টাইপ করে চ্যাট করার মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে। নিচের পরিস্থিতিগুলোতে ডিজিটাল সিবিটি কাজে আসে:

সরাসরি সাক্ষাত করা সম্ভব না হলে, যেমন: শারীরিক অসুস্থতার জন্য আপনার ওপর যদি কাউকে দেখাশোনা করার এমন কোনো দায়িত্ব থাকে যার কারণে কোথাও একা যাওয়া আপনার পক্ষে সম্ভব না হয়, কিংবা যেখানে সামনাসামনি সিবিটি করা হয় সেখানে যদি আপনার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না হয়।
ডিজিটাল সিবিটির কার্যকারিতাও সামনাসামনি করা সিবিটির সমান হতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে ব্যক্তিভেদে পার্থক্য দেখা যায় এবং কার্যকারিতার পরিমাণ সিবিটি গ্রহণকারী ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে।

☑️ সেলফ-হেল্প সিবিটি
সেলফ-হেল্প সিবিটি-র ক্ষেত্রে আপনাকে বই অথবা অনলাইন কোনো কর্মসূচি কিংবা অ্যাপের সহায়তা নিতে হবে। যেহেতু নিজে নিজে করবেন সেহেতু এক্ষেত্রে বাড়ির কাজ করা ও সিবিটির পুরো প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য আপনার মধ্যে অনুপ্রেরণা থাকতে হবে। সেলফ-হেল্প সিবিটি চলাকালীন পেশাদার কারো কাছ থেকে সহায়তা পেলে সেটি আরও ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। একে ‘গাইডেড সেলফ-হেল্প’ বলে এবং এটি ফোনে, ইমেইলে কিংবা অনলাইনে করা যায়।

সূত্রঃ রয়েল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্ট থেকে নেয়া ও কিছুটা সংক্ষেপিত।

পোস্টঃ ৪৫

পূর্বের পোস্টঃ https://www.facebook.com/share/v/bidpnuwpYxfjYLy7/?mibextid=oFDknk

06/02/2024

বেশিরভাগ মানুষ জীবনে চলার পথে উদ্বিগ্নতা অনুভব করেন। চাপমুলক ঘটনা বা পরিস্থিতিতে আংজাইটি অনুভব করা ব্যক্তির জন্য স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই উদ্বিগ্নতাগুলি যখন অনেক বেশী সময় আপনার জীবনে প্রভাব ফেলে তখন আপনি উদ্বিগ্নতা রোগে আক্রান্ত।

উদ্বিগ্নতা বা এংজাইটির সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা জানতে ভিডিওটা দেখুন। - Jianur Kabir স্যার।

ক্রেডিটঃ বাংলাভিশন

পোস্টঃ ৪৪

পূর্বের পোস্টঃ https://www.facebook.com/share/p/1a79kKP1HtqBg4fC/?mibextid=9R9pXO

ডায়ালটিক্যাল বিহেভিয়ার থেরাপি (ডিবিটি) হল একটি পরিবর্তিত ধরনের কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে ডাঃ...
17/01/2024

ডায়ালটিক্যাল বিহেভিয়ার থেরাপি (ডিবিটি) হল একটি পরিবর্তিত ধরনের কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে ডাঃ মার্শা লাইনহান এবং সহকর্মীরা ডিবিটি তৈরি করেছিলেন। তারা ক্লিনিক্যাল প্রাক্টিসে দেখেন যে, শুধুমাত্র কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি বোডারলাইন পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার ক্লাইন্টের ক্ষেত্রে আশানুরূপ কাজ করে না। অনেকেই আবেগীয় সমস্যায় ভুগেন। এই আবেগগুলো যখন অপ্রতিরোধ্য হয়, তখন মানুষ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর আচরণ করেন।

ডায়ালটিক্যাল বিহেভিয়ার থেরাপি (ডিবিটি) মানুষকে অপ্রতিরোধ্য আবেগ পরিচালনা করতে সাহায্য করার জন্য একটি অসাধারণ কার্যকর পদ্ধতি। অনেক মানুষ অনিয়ন্ত্রিত আবেগের সাথে সংগ্রাম করে, যখন তারা রেগে যায়, দু:খ পায় বা কষ্ট পায় তখন তাদের আচরণে বিশৃংলা দেখা যায়। গবেষণা দেখা যায় যে একজন মানুষ তীব্র মানসিক চাপের কারনে নিজের আবেগের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যখন ধ্বংসাত্মক কাজ করতে চায় তখন ডায়ালটিক্যাল বিহেভিয়ার থেরাপি (ডিবিটি) সেই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ হারানো আবেগকে রেগুলেশন করে এবং ধ্বংসাত্মকভাবে আচরণ না করে তার তীব্র মানসিক চাপ পরিচালনা করার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।

এই থেরাপিটি বোডারলাইন পাসোর্নালিটি ডিজঅর্ডারের রুগীদের জন্য তৈরি করা হলেও বর্তমানে নিম্নোক্ত সমস্যার ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে কাজ করে:
• Attention-deficit/hyperactivity disorder (ADHD)
• Bipolar disorder
• Borderline personality disorder (BPD)
• Eating disorders (such as anorexia nervosa, binge eating disorder, and bulimia nervosa)
• Generalized anxiety disorder (GAD)
• Major depressive disorder (including treatment-resistant major depression and chronic depression)
• Non-suicidal self-injury
• Obsessive-compulsive disorder (OCD)
• Post-traumatic stress disorder (PTSD)
• Substance use disorder
• Suicidal behavior

এই থেরাপির চারটি স্কিল আছে। এই স্কিলগুলো সংক্ষেপে নিচে দেয়া হলো:

১. Mindfulness Skills: অতীতের বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা বা ভবিষ্যতে ভীতিকর সম্ভাবনার উপর কম মনোযোগ দেওয়ার সময় মাইন্ডফুলনেন্স আপনাকে বর্তমান মুহূর্তটিকে আরও সম্পূর্ণরূপে অনুভব করতে সহায়তা করবে। মাইন্ডফুলনেন্স আপনাকে নিজের এবং অন্যদের সম্পর্কে অভ্যাসগত, নেতিবাচক সিদ্ধান্তগুলি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে।

২. Distress Tolerance Skills: এই দক্ষতাগুলো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিগুলোতে নতুন উপায়ে আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে সহায়তা করবে।

৩. Emotional Regulation Skills: আবেগ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা আপনাকে আপনি কী অনুভব করেন তা আরও স্পষ্টভাবে চিনতে এবং তারপর প্রতিটি আবেগে অভিভূত না হয়ে পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই পদ্ধতির লক্ষ্য হল প্রতিক্রিয়াশীল ও ধ্বংসাত্মক উপায়ে আচরণ না করে আপনার অনুভূতিগুলিকে রেগুলেট করা।

৪. Interpersonal Effectiveness skills: এই দক্ষতাগুলো আপনাকে আপনার বিশ্বাস এবং চাহিদা প্রকাশ করতে, সীমা নির্ধারণ করতে এবং সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনার জন্য নতুনভাবে সহায়তা করবে—যাতে করে অন্যদের সাথে আরও ভালোভাবে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারেন এবং অন্যদের সঙ্গে সম্মানের সাথে আচরণ করতে পারেন।

পোস্টঃ ৪৩

পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=701397325465341&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

📌 Applied Behavior Analysis : কোন কোন ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে?Applied Behavior Analysis (ABA) শব্দটি শুনলে, ...
17/01/2024

📌 Applied Behavior Analysis : কোন কোন ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে?

Applied Behavior Analysis (ABA) শব্দটি শুনলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) সম্পর্কে চিন্তা করে থাকি। কারণ ABA সাধারণত অটিস্টিক ব্যক্তিদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তবে অন্যান্য আরো অনেক সমস্যাক্ষেত্রও কিন্তু Applied Behavior Analysis এর মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে।
ABA হল এক ধরনের থেরাপি যা কিছু বিশেষ আচরণ, যেমন- যোগাযোগ, সামাজিক দক্ষতা, দুর্বল শিক্ষণ এবং অনুরূপ মানসিক ব্যাধি, ইত্যাদির চিকিৎসা এবং উন্নতিতে ব্যবহৃত হয় । ABA প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু -উভয়ের জন্য এবং বাড়ি, স্কুল, ক্লিনিক ও কর্মক্ষেত্র সহ বিভিন্ন সেটিংসে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এই আলোচনায় এমনি বেশ কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো যেসব ক্ষেত্র Applied Behavior Analysis ব্যবহার থেকে উপকৃত হয়ে থাকে।

🎯 Attention Deficit Hyperactivity Disorder (ADHD)

Attention Deficit Hyperactivity Disorder (ADHD) তে ভুগছেন এমন ব্যক্তিরা সাধারণত হাইপারঅ্যাকটিভ হয়ে থাকে, ফলে তাদের মনোনিবেশ করতে এবং আবেগপ্রবণ আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হয়। একজন ভাল ABA থেরাপিস্টের সাহায্যে, ব্যক্তির ADHD নির্মূল না হলেও, লক্ষণসমূহের হ্রাসকরণ সম্ভব। থেরাপিস্ট ADHD ব্যক্তিদের কীভাবে শান্ত এবং সচেতনভাবে তাদের শরীরের উপর ফোকাস করতে হয় এবং কোনো একটি কাজ করার আগে ব্যক্তি কী করতে চলেছেন সে সম্পর্কে চিন্তা করতে শেখানোর মাধ্যমে সাহায্য করে থাকেন। অনুপযুক্ত কর্মের পরে শিশুকে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে, ABA শিশুকে প্রথমে কাজটি সম্পর্কে চিন্তা করতে এবং এর কোনো একটি উপযুক্ত বিকল্প খুঁজে বের করতে শেখায়। এছাড়াও উত্তম এবং চিন্তাশীল আচরণের জন্য পুরষ্কার ব্যবস্থাও প্রয়োগ করে।

🎯 Autism Spectrum Disorder (ASD)

অটিজম এমন একটি অবস্থা যা যোগাযোগের সমস্যার সাথে সম্পর্কিত। যদিও অটিজমের তীব্রতা একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে, তবে এটি প্রায় সবসময় যোগাযোগমূলক আচরণকে প্রভাবিত করে, ফলে অটিস্টিক রোগী সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারে না। তাদের স্পর্শ, গন্ধ, দৃষ্টি, শ্রবণ এবং স্বাদের প্রতিও শক্তিশালী সংবেদনশীলতা রয়েছে। অপরিচিত পরিবেশে, অটিস্টিক ব্যক্তি অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারে এবং তখন সেখানে যথাযথ আচরণ করা তার পক্ষে সম্ভবপর হয় না। অটিস্টিক ব্যক্তিদের যোগাযোগমূলক অসুবিধার বিষয়টি খুবই সাধারণ হবার কারণে, ব্যক্তি কোনো বোধগম্য উপায়ে তার বিরক্তি বা অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারে না। ABA থেরাপিস্টরা অটিস্টিক রোগীদের অনুপযুক্ত আচরণ থেকে বিরত থাকতে এবং অন্যরা বুঝতে পারে এমন উপায়ে যোগাযোগ করতে সাহায্য করতে সক্ষম। Psychology Today রিপোর্ট করে যে, প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে 20 ঘন্টা ABA থেরাপি প্রয়োগ করা হলে, ABA অটিস্টিক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেশ সাফল্যজনক হতে পারে।

🎯 Obsessive Compulsive Disorder (OCD)

যদিও আমাদের অনেকের মধ্যেই এমন বিশ্বাস আছে যে, আমরা সবাই কমবেশি Obsessive Compulsive Disorder (OCD) ভুগছি; তবে প্রকৃতপক্ষে আমাদের সকলের এ বিষয়ে চিকিৎসা নেবার প্রয়োজন নেই। প্রকৃত ওসিডি আক্রান্ত রোগীরা একটি আবেশ অনুভব করেন (যা প্রকৃতপক্ষে বাস্তব নয়) যে, খারাপ কিছু ঘটা এড়াতে তাদের অবশ্যই কোনো নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন, একজন ব্যক্তি বিশ্বাস করতে পারেন যে যদি ওয়াশরুমের প্রতিটি জুতা একই দিকে না থাকে তবে নেতিবাচক কিছু ঘটবে। ABA বিশেষজ্ঞরা OCD রোগীদের সাথে কাজ করেন এবং তাদের শুধুমাত্র বাধ্যতামূলক আচরণ কাটিয়ে উঠতেই সাহায্য করে না বরং কোথায় এবং কখন আবেশের উৎপত্তি হয়েছিল তা নির্ধারণ করে থাকেন। তারা রোগীকে এও শিক্ষা দেন বা অভ্যস্ত করান যে একটি নির্দিষ্ট উপায়ে একটি নির্দিষ্ট কাজ না করার ফলে খারাপ জিনিস হবে না বা খারাপ কিছু ঘটবে না।

🎯 Post Traumatic Stress Disorder (PTSD)

যদিও সাধারণত অনেকে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) এর সম্পর্কে ভাবেন যে এটি কেবল যুদ্ধফেরত সৈনিকদের ক্ষেত্রে তাদের মানসিক দুরবস্থার ব্যাখ্যা দিতে অধিক প্রযোজ্য, তবে PTSD আসলে অন্য অনেক ব্যক্তির মধ্যেও ঘটে যদি তারা আঘাতমূলক বা ট্রমাটিক ঘটনার সাথে জড়িত থাকে। পিটিএসডি রোগী চরম আতঙ্ক এবং উদ্বেগ অনুভব করতে পারে যখন কোনো নির্দিষ্ট উদ্দীপনা বাস্তবে ঘটে যাওয়া ঘটনার বেদনাদায়ক স্মৃতিকে ট্রিগার করে। ABA থেরাপিস্টরা PTSD রোগীদের সাথে কাজ করে রোগীর সেই স্মৃতিগুলোকে ট্রিগার করে, কিন্তু সহায়ক এবং নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে। তাদের সেই স্মৃতিগুলো ট্রিগার হলে কিভাবে ইতিবাচক আচরণ প্রদর্শন করতে হয় - এই বিষয়টিই থেরাপিস্টরা রোগীদের শেখান বা অভ্যস্ত করান।

Applied Behavior Analysis (ABA) থেরাপির একটি অন্যতম সফল পদ্ধতি, কারণ এটি আচরণ এবং শিক্ষণ সম্পর্কিত প্রমাণিত তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে গঠিত। ABA সম্পর্কে জানতে আগ্রহী কিংবা থেরাপির প্রয়োজন এমন কারোর নিকটস্থদের এটা অনুধাবন করা জরুরি যে ABA থেরাপি শুধুমাত্র অটিজমের জন্যই নয়, অটিজম সহ আরো অনেক সমস্যাক্ষেত্রই উপকার করতে পারে।

Source: https://www.appliedbehavioranalysisprograms.com/faq/what-conditions-benefit-from-applied-behavior-analysis/

Post Credit: Bondhu: Counselling and Psychosocial Research Centre - BCPRC

পোস্টঃ ৪২
পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=665515212386886&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

প্রশ্নঃ শিশু কোয়ালিটি প্লে টাইম বা গুনগত খেলার সময় পাচ্ছে কি না তা কিভাবে বুঝবেন? এর জন্য কি শিশুকে অনেক খেলনা দিতে হয়? ...
12/11/2023

প্রশ্নঃ শিশু কোয়ালিটি প্লে টাইম বা গুনগত খেলার সময় পাচ্ছে কি না তা কিভাবে বুঝবেন? এর জন্য কি শিশুকে অনেক খেলনা দিতে হয়?

উত্তর লিখেছেনঃ সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি, সাইকোলজিস্ট।
🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿🌿

🟣শিশুর গুনগত খেলার সময় পরিমাপ করা যায় শিশু কতটুকু সময় ধরে একটি খেলনা দিয়ে খেলছে এবং শিশু ওই খেলনা দিয়ে কত ধরনের খেলা খেলছে তার উপরে।

গবেষণায় (কারলি ডুস ও অন্যান্য, ২০১৮) দেখা গেছে, শিশুদের যখন অল্প খেলনা দিয়ে খেলতে দেয়া হয়, তখন শিশুরা অল্প খেলনা দিয়ে তুলনামূলক বেশি সময় নিয়ে খেলা করে৷ অল্প খেলনা দিয়ে খেলার কারনে শিশু এক্সপ্লোরে বেশি মনযোগ দিতে পারে।

✅ শিশু খেলনা দিয়ে খেলার সময় বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করুন-

১. শিশুকে এক সাথে অনেক খেলনা দিয়ে খেলতে দিবেন না।

২. একটি খেলনা দিয়ে খেলা শেষ হলে অন্য একটি খেলনা দিন।

৩. শিশু খেলার সময় টিভি বন্ধ রাখুন বা মোবাইলের শব্দ বন্ধ রাখুন। এই ধরনের শব্দ শিশুর মনযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।

৪. প্রতি সপ্তাহে খেলনা রোটেশন করে দিন। কিছু খেলনা লুকিয়ে রাখুন। এক সপ্তাহ পর বের করে দিন।

🔴 কেন একসাথে অনেক খেলনা দিবেন না?

১. অনেক খেলনা দিয়ে খেলা করলে শিশু তুলনামূলক কম ক্রিয়েটিভ ভাবে খেলতে পারে। সহজ ভাষায়, শিশু এক খেলনা দিয়ে যে বিভিন্ন ভাবে খেলা খেলতে পারে তা শিশু বুঝতে পারে না। যেমন - বল দিয়ে দাও নাও খেলা যায়, বল পা দিয়ে খেলা যায়, একা একা বল গড়িয়ে খেলা যায়।

২. অনেক বেশি খেলনা শিশুর মনযোগ ব্যহত করে।

৩. অনেক বেশি খেলনা দিয়ে শিশু কম সময় খেলা করে।

৪. যে সব শিশুরা কম খেলনা দিয়ে খেলা করে তারা তুলনামূলক বেশি হাসিখুশি হয়।

ছবিঃ ইন্টারনেট

পোস্টঃ ৪১
পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=665514602386947&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

বাবারা কিভাবে তাদের সন্তানকে সমানুভূতি (empathy) দেখাতে পারেন এবং সন্তানের মানসিক বিকাশে পাশে থাকতে পারেনঃ১. আপনার শিশুক...
12/11/2023

বাবারা কিভাবে তাদের সন্তানকে সমানুভূতি (empathy) দেখাতে পারেন এবং সন্তানের মানসিক বিকাশে পাশে থাকতে পারেনঃ

১. আপনার শিশুকে উৎসাহিত করুন যেন সে তার যে কোন অনুভূতি (feeling) ও চিন্তা ভাবনা (thoughts) নিয়ে আপনার সাথে সরাসরি কথা বলে। তাকে আপনার সাথে কথা বলার সময় ও সুযোগ দিন৷ এতে সন্তান আপনাকেই তার কাছের বন্ধু মনে করবে।

২. আপনার সন্তান যখন কোন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে তাকে তার সমস্যা সমাধানে সহায়তা করুন। যেমন- শিশুকে তার খেলনা এগিয়ে দেয়া। কোন খেলনা বা জিনিস ধরতে সহায়তা করা। একটু বড় শিশু হলে তাকে পাজলের সমাধান করতে সহযোগিতা করা।

৩. শিশুর বয়স অনুযায়ী প্রতিটি বিকাশ (শারীরিক ও মানসিক) খেয়াল করা। কোন বিকাশ দেরীতে হলে বা যে কোন সমস্যা হলে সন্তানের সেই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া।

৪. সন্তানের যেন অন্যান্য মানুষদের সাথে সুসম্পর্ক (positive relationship) হতে পারে সেই বিষয়ে সন্তানকে সহায়তা করা। কিভাবে? সন্তানকে বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে নেয়া, সঠিক আচরণ সম্পর্কে সন্তানকে জানানো গল্পের মতো করে। যেমন- ছোটদের বড়দের সাথে পরিচয় করানো, সালাম দেয়া, শিশুর সাথে সবার কথা বলিয়ে দেয়া (শিশুর ভাষা বিকাশে ও ভুমিকা রাখে)।

৫. শিশুকে তার স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে সহায়তা করুন৷ শিশুর ঘুম, খাওয়া, এক্সারসাইজ এগুলো করতে বা শিখতে শিশুকে সময় দিন। শিশু একটু বড় হলে এগুলোর গুরুত্ব শিশুকে বলেন। "ডিম খেলে সুস্থ থাকবা" না বলে বলুন "ডিমে ভিটামিন ডি আছে। ডিম তোমার হাড়কে অনেক শক্তিশালী করবে।"

৬. শিশুকে সবসময় present এ থাকতে সহায়তা করুন। এর মানে হলো শিশু যে অবস্থায় যেখানে আছে তার মন ও মনযোগ যেন সেখানেই থাকে, তাতে সহায়তা করুন। Mindfulness techniques আপনার সন্তানকে শেখান। ইউটিঊবে ভিডিও পাবেন।

৭. শিশুরা বড়দের রোল মডেল মনে করে। তাই শিশুর জন্য মানসিক স্বাস্থ্যের রোল মডেল হয়ে যান আপনি। নিজে শান্ত থাকুন। যে কোন সমস্যায় হতাশ না হয়ে সমাধানের চেষ্টা করুন।

৮. শিশুর প্রশংসা করুন। মিথ্যা প্রশংসা না৷ শিশু যা করছে তার প্রশংসা করুন। শিশু যে কাজ করছে তা উৎসাহিত করুন৷ যেমন- শিশু বল খেলছে তাকে বলুন সে কতো সুন্দরভাবে বল গড়িয়ে দিচ্ছে বা বল ধরছে। আপনার প্রশংসা শিশুর self-esteem বাড়াতে সহায়তা করবে।

৯. Psychological coping skill শিখতে শিশুকে সহায়তা করুন৷ যেমন- anxiety বা দুশ্চিন্তার জন্য সবচেয়ে সহজ technique হল breathing. ছোট শিশু বা যে কোন বয়সীরা সহজে breathing শিখতে পারে।

১০. শিশু নিজে যে একজন মানুষ, একটি অস্তিত্ব, তা নিজে বুঝুন, শিশুকে বুঝান। শিশুর সব সিদ্ধান্ত আপনি নিবেন না। শিশুকে অপশন দিন সিদ্ধান্ত নেয়ার। হ্যা অবশ্যই এখানে আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। যেমন- ধরুন শিশু ঘুরতে যেতে চায়। আপনার এখন শহরের বাইরে কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়। আপনি শিশুকে শহরের ভিতরে ২/৩ টি জায়গার নাম বলুন ও শিশুর কাছে জানতে চান সে কোথায় যেতে চায়। শিশু নিজে মতামত দিতে পারলে একি সাথে সে বুঝতে পারবে সে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, পাশাপাশি সে খুশি ও থাকবে। আর আপনার ও অসুবিধা হবে না।

বোনাস পয়েন্টঃ

-শিশুর "না" বলাকে গুরুত্ব দিন। ধরুন, আপনার শিশু কিছু খেতে চাইছে না, কোথাও যেতে চাইছে না বা কোন মানুষের সামনে থাকতে চাইছে না, তার কথা শুনুন। শিশুরা অনেক সময় সেনসরি ইস্যুর কারনে খেতে চায় না, অনেক মানুষের bad touch শিশু পছন্দ করে না বা অনেক কাজ শিশুর পছন্দ না ও হতে পারে।

-শিশুকে মানুষের সামনে জোর করে নাচতে, গান গাইতে বলবেন না। সে নিজে করতে চাইলে ভিন্ন বিষয়।

ধন্যবাদ।

ছবি: ইন্টারনেট

সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি
সাইকোলজিস্ট।

পোস্টঃ ৪০
পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=665513855720355&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

শিশুর জন্য কোয়ালিটি টাইম - এই লেখায় যে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে-১. কোয়ালিটি টাইম কি, ২. কেন গুরুত্বপূর্ণ, ৩. কে কে ...
12/11/2023

শিশুর জন্য কোয়ালিটি টাইম - এই লেখায় যে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে-

১. কোয়ালিটি টাইম কি,
২. কেন গুরুত্বপূর্ণ,
৩. কে কে শিশুকে কোয়ালিটি টাইম দিতে পারবেন,
৪. কিভাবে শিশুকে কোয়ালিটি টাইম দিতে পারবেন এবং
৫. গৃহিণী মা নাকি চাকরিজীবি মা কে শিশুকে কোয়ালিটি টাইম বেশি দেন?

যদিও করোনার কারনে বর্তমানে আমাদের জীবন বেশ কিছুটা থমকে গেছে তবু ও আমরা স্বীকার করতে বাধ্য আমাদের সবার জীবন কম বেশি ব্যস্ত। আমাদের প্রতিটি দিন শুরু হয় কাজের ব্যস্ততায়, আবার চোখের পলকে দিনটি শেষ ও হয়ে যায়৷ এই ব্যস্ততার কারনেই বেশির ভাগ মা বাবার মনে ভয় তৈরি হয় এই ভেবে যে, আমি বোধহয় আমার সন্তানটিকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিতে পারছি না বা সময় না দেয়ার কারনে হয়তোবা আমার শিশুর বিকাশ বয়সের তুলনায় পিছিয়ে থাকবে। এই কারনেই অনেক মা বাবারা, বিশেষ করে মায়েরা নিজেদের চাকরি / ব্যবসা বা নিজের জন্য একটু আলাদা সময় বের করতে যেয়ে অপরাধবোধে ও ভোগেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে যখন অন্য বাবা মায়েরা তাদের সন্তান কে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার, এক সাথে বিভিন্ন বয়স উপযোগী কাজ করার ছবি বা ভিডিও দেন, এই অপরাধবোধ তখন আরো বেড়ে যায়।

💜 কোয়ালিটি টাইম কি?

Quality শব্দের সহজ বাংলা গুনগত। Quality time/ কোয়ালিটি টাইম হলো শিশুকে গুনগত সময় দেয়া, শিশু যে কাজগুলো করতে বা খেলতে পছন্দ করে তার সাথে সেই কাজগুলো করা বা খেলা এবং শিশুর পছন্দের কাজগুলো করার সময় শিশুকে পুরোপুরি মনযোগ দেয়া।

আমাদের সমাজের মা বাবারা কোয়ালিটি টাইম শব্দটির সাথে পরিচিত হয়েছেন খুব বেশি দিন না। শব্দটির সাথে পরিচিত হলেও বেশিরভাগ বাবা মায়েরা এই শব্দটির মূল কথা বুঝতে পারেন নি। তাইতো অনেকের কাছে কোয়ালিটি টাইম মানে শিশুকে খেলনা দিয়ে পাশে বসিয়ে রেখে টিভি বা মোবাইল দেখা। অনেক বাবা মার কাছে কোয়ালিটি টাইম মানে শিশু যাই করুক না কেন শিশুর কাজটি না দেখে, শিশুর প্রতিটি কাজের ছবি তুলে রাখা, ভিডিও করে রাখা এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করা।

💜 কোয়ালিটি টাইমের গুরুত্ব-

Journal of Marriage and Family ২০১৫ সালে একটি রিসার্চ প্রকাশ করেন। এই রিসার্চ অনুযায়ী শিশুর বিকাশে quantity of time (সময়ের পরিমাণ) না উল্টো quality of time (সময়ের গুণগত ব্যবহার) বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শিশুর বিকাশ বলতে মূলত শিশুর আচরণ, মানসিক সুস্থতা এবং শিশুর স্কুলের রেজাল্টকে বোঝানো হয়েছে। এই রিসার্চ অনুযায়ী শিশুর সাথে কোয়ালিটি টাইম কাটাতে শিশুকে অনেক লম্বা সময় দিতে হবে এমন না। প্রতিদিন যদি শিশুকে অল্প কিছু মিনিট কোন ধরনের বাধা ছাড়া পুরোপুরি মনযোগ দেয়া হয় তাহলে ওই সময়টাই হবে শিশুর জন্য কোয়ালিটি টাইম।

🚫 কোন কাজ গুলো কোয়ালিটি টাইম না?

১. যখন শিশু ও বাবা/ মা একি জায়গায় অবস্থান করছে কিন্তু তারা ভিন্ন ধরনের কাজ করছে, যেমনঃ শিশু বল খেলছে এবং মা সবজি কাটছেন।

২. যখন শিশু একটি কাজ করছে এবং পাশে বসে মাঝেমধ্যে শিশুকে মনযোগ দিচ্ছেন আবার মনযোগ দিচ্ছেন ও না। যেমনঃ শিশুটি বাবার পাশে বসে ছবি আঁকছে। বাবা মোবাইলে গেম খেলছেন। মাঝে মাঝে ছেলেকে প্রশ্ন করে জানতে চাইছেন শিশু কি আঁকছে।

💜 কে কে শিশুকে কোয়ালিটি টাইম দিতে পারবেন-

বাবা, মা, ভাই, বোন, যে কোন আত্মীয়, ন্যানি, শিশুর সমবয়সী কেউ, ইত্যাদি।

💜 শিশুর সাথে কোয়ালিটি টাইম উপভোগ করতে আপনাকে অনেক প্ল্যান করতে হবে বা অনেক খরচ করতে হবে এমন না। কোয়ালিটি টাইমের মূল উদ্দেশ্য একসাথে কাটানো সময় উপভোগ করা। যেমনঃ শিশুর সাথে পিকাবু খেলা, শিশুর সাথে ছবি আঁকানো, শিশুকে ব্রেডে মাখন কিভাবে লাগাতে হয় তা শিখানো, শিশুর সাথে কোন পাজল সলভ করা, ইত্যাদি৷

✅ কোয়ালিটি টাইম নিয়ে পরিবারের প্রতি পরামর্শ -

১. শিশুর সাথে বিভিন্ন সময় বয়স অনুযায়ী খেলা করুন। হতে পারে তা শিশুকে গোসল করানোর সময় বা শিশুকে স্কুলে নামিয়ে দেয়ার সময়৷ খেলা যে শুধুমাত্র খেলনা দিয়ে খেলা যায় এমন নয়।

২. প্রতিদিন আপনার সন্তানকে জানান আপনি তাকে ভালোবাসেন এবং সে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার সব কাজে আপনি কি অনুভব করেন তা ও সন্তান কে বলুন। যদি আপনি সন্তানের থেকে দূরে কোথাও থাকেন ভিন্ন শহর বা দেশের বাইরে সেক্ষেত্রে সন্তানের সাথে ফোনে অডিও বা ভিডিও কলে নিয়মিত কথা বলুন। ফোনের মাধ্যমে তাকে ভালোবাসা ও স্নেহ জানান।

৩. শিশুকে হাসির কিছু বলে/ করে একসাথে হাসাহাসি করুন।

৪. শিশুর যে আচরণ আপনি তার কাছে আশা করেন, শিশু তা করলে তার প্রশংসা করুন। প্রশংসার মাধ্যমে শিশুকে উৎসাহ দিন।

৫. শিশুকে জিজ্ঞেস করুন সে কোন ধরনের খেলা / কাজে আগ্রহী। শিশুর মতামত নিয়ে শিশুর সাথে সময় কাটান। শিশুর পছন্দের খেলা/ কাজ করুন।

৬. যদি আপনার রুটিনের সাথে শিশুর সময় না মিলে সেক্ষেত্রে শিশুর জন্য ছোট চিরকুট রেখে যেতে পারেন। শিশু নিজে পড়তে না পারলে বাসায় শিশুর যে কেয়ারগিভার থাকবে সে শিশুকে তা পড়ে শোনাবে।

৭. ঘরের কাজে শিশুর সহযোগিতা নিন। একসাথে কাজ করলে নিজেরা কমিউনিকেট করার মতো বেশ কিছুটা সময় পাবেন।।যেমন- একসাথে গাছে পানি দেয়া, রান্না করা ইত্যাদি।

৮. প্রতিদিন একসাথে বসে খাবার খান।

৯. শিশুর সাথে সময় কাটানোর সময় যাবতীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস সরিয়ে রাখুন। মোবাইল দিয়ে ম্যাসেজ করা, কথা বলা, অকারনে ফোনে স্ক্রোল করা, গেম খেলা, টিভি দেখা ইত্যাদি করা থেকে বিরত থাকুন।

💜 গৃহিণী মা নাকি চাকরিজীবি মা কে শিশুকে কোয়ালিটি টাইম বেশি দেন?

যে কোন মা সন্তানকে কোয়ালিটি টাইম দিতে পারেন। চাকরিজীবী মা বাসায় এসে যদি ঘরের বা অফিসের কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে যান, শিশুর সাথে সময় না কাটান তাহলে শিশু কোয়ালিটি টাইম পাবে না। একিভাবে গৃহিণী মা যদি ঘরে থাকা অবস্থায় সারাদিন ঘরের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং সন্তানের জন্য আলাদা করে সময় বের না করেন তাহলে গৃহিণী মায়ের সন্তান ও কোয়ালিটি টাইম পাবে না।

মায়ের কর্মজীবনের সাথে কোয়ালিটি টাইমের কোন সম্পর্ক নেই। তাই কর্মজীবী মায়েরা হীনমন্যতায় ভুগবেন না।

💜 শেষকথা- বাবা ও মা আপনারা যতই ব্যস্ত থাকুন, সময় বের করে সন্তানের সাথে কোয়ালিটি টাইম কাটান। আবারো বলছি কোয়ালিটি টাইম মানে শিশুকে সারাদিন সময় দেয়া নয়।

শুভ কামনা।

সূরাইয়া ইসলাম মুন্নি
সাইকোলজিস্ট।

ছবিঃ ইন্টারনেট

পোস্টঃ ৩৯

পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=663741305897610&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডারঃসিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার বা SAD হল বিষণ্নতার একপ্রকার ধরন। এটি বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে শর...
09/11/2023

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডারঃ

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার বা SAD হল বিষণ্নতার একপ্রকার ধরন। এটি বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে শরৎ বা শীতকালে হয়ে থাকে। মনে করা হয় যে,ছোট দিন এবং কম দিনের আলো মস্তিষ্কে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটায় আর এর ফলে বিষণ্নতার লক্ষণ দেখা দেয় দিতে পারে। লাইট থেরাপি এবং এন্টিডিপ্রেসেন্টস SAD এর চিকিৎসায় সাহায্যকারী হতে পারে।

কারা SAD এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণঃ
SAD সাধারণত যৌবনের সময় শুরু হয় এবং বয়সের সাথে এর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এটি 20 বছরের কম বয়সী লোকেদের মধ্যে বিরল। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা প্রায়শই আক্রান্ত হন।

SAD এর কারণঃ
সূর্যের কম উপস্থিতি এবং ছোট দিন মস্তিষ্কে রাসায়নিক পরিবর্তনের কারনে সিজনাল এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার হতে পারে। মেলাটোনিন, যা ঘুমের সাথে সম্পর্কিত একপ্রকার হরমোন, এছাড়াও SAD হওয়ার একটি অংশ বলা যায়। অন্ধকার হলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই বেশি মেলাটোনিন তৈরি করে। তাই যখন দিনগুলো ছোট থাকে এবং অন্ধকার হয়, তখন আরও মেলাটোনিন তৈরি হয়। যার ফলে বেশি ঘুম ও বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে।

SAD এর ধরনঃ
SAD দুই ধরনের হয়ে থাকে-
ক) পতন-সূচনা- একে "শীতকালীন বিষণ্নতা"ও বলা হয়। বিষণ্নতার লক্ষনগুলো শীতের শেষের দিকে শুরু হয় এবং গ্রীষ্মের মাসগুলিতে হ্রাস পায়।

খ) বসন্ত-সূচনা-একে "গ্রীষ্মকালীন বিষণ্ণতা"ও বলা হয়। বসন্তের শেষের দিক থেকে গ্রীষ্মের শুরুর দিক পর্যন্ত এর লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারণত এই ঘটনা অনেক কম।

SAD এর লক্ষণগুলো কি কিঃ

👉অধিক ঘুম এবং দিনের বেলায়ও ঘুমের বৃদ্ধি।
👉পূর্বে উপভোগ করা ক্রিয়াকলাপগুলিতে আগ্রহ এবং আনন্দ কমে যাওয়া।
👉প্রত্যাখ্যানের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি এবং নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া
👉বিরক্তি এবং উদ্বেগ
👉অপরাধবোধ এবং আশাহীনতার অনুভূতি
👉ক্লান্তি বা দুর্বল অনুভব করা
👉সেক্স ড্রাইভ হ্রাস
👉ফোকাস বা কোনোকিছুতে মনোনিবেশ করার ক্ষমতা হ্রাস
👉পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে সমস্যা হওয়া
👉ক্ষুধা বৃদ্ধি, বিশেষ করে মিষ্টি এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের প্রতি
👉ওজন বৃদ্ধি
👉শারীরিক সমস্যা, যেমন- মাথাব্যথা

এই উপসর্গগুলি ফিরে আসে এবং প্রতি বছর প্রায় একই সময়ে উন্নতি হয়। SAD এর লক্ষণগুলি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার মতোই দেখাতে পারে। তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য সর্বদা একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে দেখানো উচিত ।

কিভাবে SAD নির্ণয় করা হয়ঃ
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের দ্বারা মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার মাধ্যমে SAD হয়েছে কিনা তা জানা যায় এছাড়াও তাদের পূর্বের মেডিক্যাল হিস্ট্রি স্টাডি করে।

কিভাবে SAD চিকিৎসা করা হয়ঃ
"শীতকালীন বিষণ্নতা" এবং "গ্রীষ্মকালীন বিষণ্নতা" এর চিকিৎসাগুলি প্রায়শই ভিন্ন হয় এবং নিম্নলিখিত গুলির মধ্যে যেকোনও একটি বা এর সংমিশ্রণ অন্তর্ভুক্ত হতে পারেঃ
🌻সূর্যালোকের এক্সপোজার- বাইরে বা জানালার কাছে বসে সময় কাটালে SAD এর উপসর্গ উপশম হতে পারে।
🌻লাইট থেরাপি-যদি সূর্যালোক বাড়ানো সম্ভব না হয় তবে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একটি বিশেষ আলোর সংস্পর্শে থাকা কার্যকরী হতে পারে৷
🌻সাইকোথেরাপিঃ সাইকোথেরাপির ফলে নিজেকে নিয়ে বা আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গী তৈরি করতে সাহায্যকারী হতে পারে। নিজের বিষন্নতা হওয়ার কারন নিজেকেই চিহ্নিত করতে এবং কীভাবে সেটাকে মোকাবেলা করা যায় সেইবিষয়ে দক্ষ হতে সাহায্য করবে।
🌻এন্টিডিপ্রেসেন্টস।

SAD এর উপসর্গগুলিকে কমাতে সাহায্য করার জন্য নিজের জন্য কি করতে পারেনঃ

🌹সাহায্য চান। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি বিষণ্ণ হতে পারেন, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে যেতে পারেন।
🌹বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। বড় কাজগুলোকে একবারে না করে ছোট করে ভাগ করে করুন। অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন এবং আপনি যা পারেন তা করুন।
🌹একা না থেকে অন্যদের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
🌹এমন কিছু করুন যা আপনাকে ভালো বোধ করাবে। যেমন-সিনেমা দেখতে যাওয়া, বাগান করা বা ধর্মীয়, সামাজিক বা অন্যান্য কাজে অংশ নেওয়া। অন্য কারো জন্য ভালো কিছু করাও কিন্তু আপনাকে ভালো বোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
🌹নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
🌹আপনার মেজাজ ধীরে ধীরে ভালোর দিকে যাবে সেই আশা রাখুন। কারন ভালো বোধ করতে সময় লাগে।
🌹স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার খান।
🌹অ্যালকোহল এবং মাদক থেকে দূরে থাকুন। এগুলি হতাশাকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
🌹হতাশা কেটে না যাওয়া পর্যন্ত বড় সিদ্ধান্তগুলি (যেমন- চাকরির পরিবর্তন, বিয়ের সিদ্ধান্ত ইত্যাদি) বিলম্বিত করুন। অন্যদের সাথে আলোচনা করুন যারা আপনাকে ভাল জানেন এবং বোঝবেন।
🌹ধৈর্য ধরতে চেষ্টা করুন এবং ইতিবাচক দিকে মনোনিবেশ করুন।
🌹আপনার পরিবার এবং বন্ধুদেরকে আপনার পাশে থাকার সুযোগ করে দিন।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অভিজ্ঞর পরামর্শ নিতে হলে নিচের লিংকে ক্লিক করে আমাদেরকে ইনবক্স করুনঃ
Bondhu: Counselling and Psychosocial Research Centre - BCPRC

অনুবাদকঃ
সাদিয়া তাবাসসুম সারা
অনার্স ২য় বর্ষ
মনোবিজ্ঞান বিভাগ, নরসিংদী সরকারি কলেজ

সহকারী কর্মকর্তা, মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগ, বন্ধু।

ছবি: ইন্টারনেট

পোস্টঃ ৩৮

পূর্বের পোস্টঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=663739732564434&id=100067852402365&mibextid=9R9pXO

Address

Hatirpool Bazar
Dhaka
1205

Telephone

+8801932005775

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Institute of Modern Psychology and Research, Bangladesh posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share