19/05/2022
দীর্ঘ মেয়াদি তলপেটে ব্যথার বিষয়ে তথ্য ও করনীয়।
অনেক মা-বোন আছেন যাদের প্রায় সময়ই দেখা যায় তলপেটে ব্যথা। ব্যথার কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং জীবন যাপনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ওষুধ না খাওয়া পর্যন্ত এই ব্যথা ভালো হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যথা এত তীব্র মাত্রায় হয় যে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। দীর্ঘ মেয়াদি এই ব্যথার কারণে রোগীর খাবার দাবার গ্রহণেও অনীহা জন্মে। ফলে দেখা যায় এ ধরনের কোনো কোনো রোগী রক্তস্বল্পতা এবং দুর্বলতায় ভোগেন। অনেক সময় তলপেটের এই ব্যথার সাথে থাকে প্রস্রাবের সমস্যা, মাসিকের সময় তলপেটের ব্যথা বেড়ে যাওয়া, কারো আবার অতিরিক্ত পরিমাণে মাসিকের সময় রক্ত যাওয়া, যাতে রোগী দুর্বল হয়ে পড়েন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাসিকের সমস্যা ছাড়াও অতিরিক্ত স্রাব যাওয়ার সমস্যাও দেখা যায়। কারো ক্ষেত্রে সেটা আবার দুর্গন্ধযুক্তও হতে পারে। কোনো কোনো রোগী বলে থাকেন কোমরে ব্যথা, হাতে পায়ে দুর্বল লাগা এবং নানা রকম শারীরিক সমস্যার কথা। মোটকথা স্বাভাবিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যাগুলো যারপর নেই সমস্যার সৃষ্টি করে। এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করতে গেলে গাইনোকোলোজিক্যাল কিছু কারণ তো আছেই। সাথে আপনার হাড়জনিত কোনো সমস্যা, খাদ্যনালীর কোনো সমস্যা আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। প্রস্রাবের সমস্যা যেমন- বার বার প্রস্রাব হওয়া যেটা পরিমাণে অনেক সময় কম। একবার প্রস্রাব শেষ করলেও মনে হয় প্রস্রাবের বেগ পুনরায় অনুভব হওয়া, জালাপোড়াসহ নানা ধরনের প্রস্রাবের সমস্যাও এই তলপেটের দীর্ঘ মেয়াদি ব্যথার কারণ হতে পারে। অনেক সময় রোগী বলেন ‘যত দিন ওষুধ খাই ততদিন ভালো থাকি’। কিছুদিন পর আবার যা আগে ছিল ঠিক সে রকম ব্যথা শুরু হয়। অনেকে আবার হতাশ হয়ে যান। কেউ কেউ মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন। কেউ কেউ স্বামীসহবাসের সময়ও ব্যথা অনুভব করেন। অনেক সময় এসব রোগী ব্যথার সাথে স্বাভাবিক কাজকর্মে দুর্বলতা অনুভব, মাথা ব্যথা, কোমরে, পিঠে, হাত-পায়ে। শক্তি না পাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের সমস্যায় ভোগেন। কারো স্বাস্থ্যের অবনতিও লক্ষ্য করা যায়।
এরকম কোনো সমস্যা যদি আপনার থাকে তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়, আপনি চিকিৎকের শরণাপন্ন হয়েছেন ব্যথার জন্য। কিন্তু আপনার জন্য তথ্য হলো ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা করতে হবে। চিকিৎসক আপনাকে কয়েক ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা দিতে পারেন রোগটিকে শনাক্ত করার জন্য। কারণ এ ধরনের সমস্যার কারণ কিন্তু বেশ কয়েকটি এবং সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু পরীক্ষা -নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। যেমন-তলপেটের আলট্রাসনোগ্রাম, প্রস্রাবের পরীক্ষা, যদি প্রস্রাবের কোনো উপসর্গ থাকে। এ ছাড়া রুটিন মাফিকও প্রস্রাবের পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। দুর্বলতা অনুভব করলে চিকিৎসক আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন টেস্ট দিতে পারেন। যদি কোমরে ব্যথা থাকে এবং হাড়ের সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসক আপনাকে প্রয়োজন অনুসারে এক্স-রে করতে বলতে পারেন। সে যাই হোক না কেনো পরীক্ষা নিরীক্ষা সাথে সাথে আপনার ওষুধপত্র যেটা চিকিৎসক দেবেন সেটা গ্রহণ করবেন। যদি জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন আনতে হয় সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মনোযোগের সাথে সেটা অনুসরণ করতে হবে। যেমন- কোমরে ব্যথার জন্য অনেক সময় চিকিৎসক কিছু ওষুধপত্রসহ হাঁটা-চলা, ওজন বহন এসব ক্ষেত্রে নিয়মকানুন দিয়ে থাকেন। সেগুলো অনুসরণ না করে শুধুমাত্র ওষুধ খেলে কিন্তু আপনি পুরোপুরি সুস্থ হবেন না। প্রস্রাবের সমস্যার ক্ষেত্রে ঐ একই কথা। মাসিকের সময়ও আপনাকে অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। চেষ্টা করবেন মাসিকের সময় পরিষ্কার কোনো কাপড় কিংবা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে।৪ থেকে ৬ ঘণ্টা পর আপনার স্যানিটারি ন্যাপকিনটি চেঞ্জ করবেন। পর্যাপ্ত পানি খাবেন। এর পরও যদি আপনার তলপেটে ব্যথা যা আপনাকে বার বার কষ্ট দিতে থাকে এরকম কিছু হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন। আপনার কথাগুলো চিকিৎসককে খুলে বলবেন। প্রয়োজনে নোট করে নিয়ে যাবেন। মনে রাখবেন চিকিৎসার পাশাপাশি সুস্থ জীবন যাপনের নিয়মকানুন, সঠিক খাদ্যগ্রহণ, বিশ্রাম গ্রহণ এবং আপনার সুস্থ মনমানসিকতা আপনকে আজীবন সতেজ ও কর্মম রাখবে। এই বিষয়ে তথ্য ও ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহিত।