
13/03/2025
বুয়ার রুম থেকে কেমন যেন আহঃ উঃ ব্যথা পাচ্ছি তো সাহেব এই ধরনের শব্দ আসতেছে। শব্দটা কেমন যেন বেড়েই চলেছে। এদিকে আমার স্বামী আরিয়ান রুমেও নাই। কিছু না বলেই সে বের হয়ে চলে গেছে। শুধু এইটুকু শুনেছি বুয়াকে বলল দরজাটা আটকিয়ে দাও। এরপর কিছুক্ষণ পরেই বুয়ার রুম থেকে এই ধরনের বাজে শব্দ আসতেই চলেছে। মনে হচ্ছে বুয়ার রুমে কেউ আছে। ঠিক তখন রাত দশটা বাজে । আমার স্বামী আরিয়ানের সাথে প্রায় প্রায় ঝগড়া হয়।
!
!
!
আজকে রাতেও অনেক ঝগড়া হয়েছে। এজন্য সে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেছে। কোথায় গেছে কিন্তু সে বলে যায়নি। আমার কিছুটা সন্দেহ হতে লাগলো। আমার স্বামী আবার বুয়ার রুমে যায় নাই তো। আবার মনে মনে ভাবলাম সামান্য বুয়ার রুমে কেন যাবে সে।
।
।
।
তার দিকে কান না দিয়ে আমি সোজা আমার রুমে আবার চলে আসলাম। রুমে এসে আমার স্বামী আরিয়ানকে কল দিই। কিন্তু সে কল ধরে না। যতবার কল দেই ততবারই কলটা কেটে দেয়। সত্যিই এখন খুব চিন্তা হচ্ছে। এত রাতে কোথায় যেতে পারে আমার স্বামী আরিয়ান। এই নিয়ে অনেকক্ষণ ভাবতে লাগলাম। আমাদের বিয়ে হয়েছে আজ ১০ বছর। বাবা-মার পছন্দের ছেলে ছিল আমার স্বামী আরিয়ান।
আমার নাম ফারজানা বাবা মায়ের অনেক আদরের ছোট মেয়ে ছিলাম। আমাদের বিয়ের পাঁচ বছর খুব ভালোভাবে কেটেছিল। আমাদের একটা ফুট ফুটে কন্যা সন্তান ও আছে। কন্যা সন্তানের নাম আয়াত।
দেখতে ঠিক ওর বাবার মতন হয়েছে। আর বাবাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। কিন্তু আমার স্বামী আরিয়ান ইদানিং খুব চেঞ্জ হয়ে গেছে। কিন্তু কেন সেটা আমি বুঝতে পারছি না। একটুতে একটু হলেই আমার সাথে অনেক ঝগড়া করে। আর শুধু বলে তুই তোর বাপের বাড়িতে চলে যা তোকে আমার আর সহ্য হচ্ছে না।
।
।
আমার মেয়ে আয়াত আমাদের এই ঝগড়া দেখে শুধু কান্না করে। আমি ওর সামনে আমার স্বামী আরিয়ানকে বলে দেখো মেয়েটা কিন্তু বড় হয়ে যাচ্ছে এর সামনে কিছু বলো না আমাকে। তোমার দুটো পায়ে ধরি। তোমার যা মন চায় তুমি আমার একা যখন পাবে তখন বইলো। এতে তোমার কোন বাধা দেবো না। অন্তত এই মাসুম বাচ্চার সামনে কিছু বোলো না আমাকে। তবুও কোন কথা শুনল না তার যত রাগ মেয়ের সামনেই বলে যাচ্ছে আর বিশ্রী ভাষায় গালি দিচ্ছে আমাকে। তবুও আমার মেয়েকে কিছু বুঝতে দিই না । ওর সামনে সবসময় আমি হাসি খুশি থাকি। কারণ আমাদের আয়াতের বয়স মাত্র ৬ বছর চলে।
।
।
ইদানিং আমার মেয়েকেও তার সহ্য হয় না যদি ওর বাবাকে বলে বাবা বাজার থেকে এটা নিয়ে এসো আমার জন্য উল্টো রাগ দেখায় মেয়ের প্রতিও।
একটা সময় এই মেয়ের প্রতি অজ্ঞান ছিল আমার স্বামী আরিয়ান। কিভাবে একটা মানুষ এতটা চেঞ্জ হতে পারে সেটা ভাবতে পারছি না। যে মানুষটার আমার প্রতি এতটা ভালোবাসা ছিল টেক কেয়ার ছিল। অথচ তার ভিতর এখন কিছুই নাই।
এখন আমি শুধু তার কাছে শুধুমাত্র ডাস্টবিন। একটা ডাস্টবিনের যতটা মূল্য আছে তার থেকেও আমার কোন মূল্য নাই এই বাড়িতে। অনেকটা খারাপ ব্যবহার করে তবুও আমি কিচ্ছু বলি না। আর একটা কারণ আছে আমার বাবা-মা এতটা ধনী ছিল না। যেটা বলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি। অনেক আশা এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পাশের গ্রামের একটা ছেলের সাথে বিয়ে দেয়।
সেই ছেলেটা কেউ না আমারই স্বামী আরিয়ান।
এরপর আমাদের বিয়েটা যখন হয়ে যায় কিছুদিনের মধ্যে আমরা ঢাকাতে চলে যাই। কারণ আমার স্বামী আরিয়ানের চাকরি ঢাকায় হয়। আর সেখানে থাকতে হবে। বাসার সব কাজ আমি করতাম একটা সময়।
আমার স্বামী বলল তোমার এত কাজ করতে হবে না। এত কাজ করলে তুমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়বে।
আমি তখন বললাম দেখো বাসার কাজ তো আমি করব। ওই সময় আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসতো আমার স্বামী আরিয়ান!!!
চলবে
পাপিষ্ট_স্বামী
পর্বঃ১
লেখক_ মেহবুবা
নেক্সট পার্টগুলো সবার আগে পেইজে দেওয়া হবে, তাই লাইক-ফলো দিয়ে সাথে থাকুন!