20/05/2025
#স্কেলিং_বা_দাঁত_পরিষ্কার_করা_নিয়ে_ভুলের_রাজ্যে___বাস_করে_নিজের_দাঁতের_ক্ষতি_করছেন_না_তো?
স্কেলিং, অনেকের কাছে এটি "দাঁত ওয়াশ" নামেও পরিচিত। এই চিকিৎসাটির ব্যাপারে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন নেতিবাচক ধারণার প্রচলন আছে। আশেপাশের লোকদের কাছ থেকে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়ে অনেকেই এই চিকিৎসা নেওয়া থেকে বিরত থাকেন এবং নিজের ক্ষতি করেন। এসব ধারণা কতটুকু সঠিক বা ভুল, চলুন জানার চেষ্টা করি-
প্রথমেই জানবো, স্কেলিং(scaling) কী?
দাঁতের ওপর সাধারণভাবে যে সাদা/হলদে সাদা পরত(dental plaque) জমে, সেটিই শক্ত হয়ে calculus বা পাথর তৈরি হয়। আর মাড়ির ওপর ও নিচ থেকে সেই calculus অপসারণ করার চিকিৎসার নামই হলো স্কেলিং।
✴️ধারণা- ১
"স্কেলিং করালে দাঁত পাতলা হয়ে যায় বা ক্ষয়ে যায়।"
✅ আল্ট্রাসনিক স্কেলার মেশিন কম্পন সৃষ্টির মাধ্যমে পাথর অপসারণ করে থাকে। যথাযথ কৌশল জেনে এবং মেনে স্কেলিং করলে দাঁতের ক্ষতি হওয়ার কোনও ঝুঁকি থাকে না।
✴️ধারণা- ২
"স্কেলিং করালে দাঁত আরও বেশি শিরশির করে।"
✅ দাঁত ও মাড়ির মধ্যবর্তী স্থানে পাথর জমতে জমতে একসময় মাড়ি দাঁত থেকে আলগা হয়ে যায়। স্কেলিংয়ের সময় এই পাথর সরিয়ে ফেলায় দাঁতটা সাময়িকভাবে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। তাই স্কেলিং করানোর পর কিছুদিন দাঁত শিরশির করতে পারে। মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে এলেই এই সমস্যা কেটে যায়। সুতরাং আমরা বুঝতে পারলাম, অল্প পাথর জমা হতেই যদি স্কেলিং করিয়ে ফেলি, তাহলে চিকিৎসা পরবর্তী শিরশিরে ভাব দ্রুত কেটে যাবে।
✴️ধারণা- ৩
"স্কেলিং করলে মাড়ি আলগা, দাঁত ফাঁকা ও নড়বড়ে হয়ে যায়।"
✅ অনেকদিন ধরে মাড়িতে প্রদাহ (gingivitis) ও দাঁতের গোড়ায় পাথর (calculus) বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকলে এক সময় দাঁতের সকেটের হাড় ক্ষয় হয়ে দাঁতের শিকড় আস্তেআস্তে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। দাঁতকে সকেটের সঙ্গে আটকে রাখা পেরিওডন্টাল লিগামেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ফলে দাঁত হারায় তার অবলম্বন। কিন্তু calculus দিয়ে ঢেকে থাকার কারণে এই ক্ষয়ক্ষতিগুলো তেমন চোখে পড়ে না। স্কেলিং করে এই calculus অপসারণ করলে ভেতরের দুরবস্থা তখন প্রকটভাবে চোখে ধরা দেয়। অর্থাৎ স্কেলিংয়ের কারণে মাড়ি আলগা বা দাঁত ফাঁকা ও নড়বড়ে হয় না বরং প্রদাহের কারণেই এগুলো হয়ে থাকে, স্কেলিংয়ের ফলে সেটা প্রকাশ পায় মাত্র।
✴️ধারণা- ৪
"স্কেলিংয়ে ব্যথা পাওয়া যায়।"
✅ সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে স্কেলিং করলে এতে ব্যথা পাওয়ার কোনও আশংকা নেই। হ্যাঁ, কিছুটা ঘষা লাগা এবং শিরশিরে অনুভূতি পারে, প্রদাহ বেশি হলে শিরশির ভাবও বেশি অনুভূত হয়। তাই প্রদাহ অল্প থাকতেই চিকিৎসা করানো উচিত।
✴️ ধারণা- ৫
"স্কেলিং হচ্ছে দাঁত সাদা করার চিকিৎসা"
✅ স্কেলিংয়ের ফলে plaque, calculus এর পাশাপাশি দাঁতের কিছু superficial stain থাকলে তা-ও দূরীভূত হয়। এতে দাঁত আগের চেয়ে পরিস্কার দেখাতে পারে, কিন্তু তাই বলে এটি "দাঁত সাদা করার চিকিৎসা" নয়।
✴️ধারণা- ৬
"জীবনে একবার স্কেলিং করালেই যথেষ্ট"/"একবার স্কেলিং করালে বারবার করাতে হয়"
✅ মুখে Calculus জমলে স্কেলিং করাতে হবে - সহজ কথা। কয়বার, কতদিন পরপর স্কেলিং করানো লাগবে, তার কোনও সার্বজনীন হিসেব নেই। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মুখগহ্বরের যথাসাধ্য যত্ন নেওয়া এবং ৬ মাস পর পর BDS ডিগ্রিধারী রেজিস্টার্ড ডেন্টাল সার্জনের কাছে চেকআপ করানো। স্কেলিংয়ের প্রয়োজন মনে করলে তিনিই সেটার পরামর্শ দেবেন।
❓❓❓কারও কারও হয়তো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে- দাঁতের গোড়ায় পাথর জমেছে, স্কেলিং করালাম না। ক্ষতি কী❓❓❓❓
ক্ষতি এই যে, gingivitis তখন তীব্রতর প্রদাহ periodontitis এ রূপ নেবে। আগে যেখানে মাড়ি দিয়ে রক্ত আসতো, দাঁত শিরশির করতো, এখন পুঁজ জমে যন্ত্রণাদায়ক ফোঁড়া (abscess) সৃষ্টি হতে পারে। মুখের দুর্গন্ধ কিছুতেই পুরোপুরি দূর হবে না। প্রদাহ বাড়তে বাড়তে একসময় দাঁত যখন নড়তে শুরু করবে, তখন খাওয়াদাওয়া স্বাচ্ছন্দ্যে করা যাবে না, যার প্রভাব পড়বে সারা শরীরে। এরপর একসময় দাঁত পড়ে যেতে শুরু করবে। শুধু তা-ই নয়, periodontitis এর সঙ্গে রক্তনালীতে চর্বি জমা, হৃদরোগ, রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে না আসা, গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই শিশু প্রসব, কম ওজনের শিশু জন্ম নেওয়া- এসব জটিলতারও সংযোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।
❗️অনেকেই calculus এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপসর্গগুলো দেখা দিলে ঔষধের দোকান থেকে ইচ্ছেমত ঔষধ নিয়ে খাওয়া শুরু করেন! একটু ভাবুন তো, মুখ ভর্তি calculus যদি ভেতরে ভেতরে এত বড় ক্ষতি করে ফেলতে থাকে, তাহলে ডেন্টাল সার্জনের কাছে গিয়ে calculus দূর না করিয়ে এভাবে শুধু ঔষধ খেয়ে যাওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
মুখ, দাঁত ও চোয়ালের সব ধরনের সমসয় জাইন ডেন্টাল কেয়ার সব সময় আপনার পাশে আছে।
যে কোন পরামর্শ বা সেবার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন আমাদের ইনবক্সে / আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে।
মোবাইল : ০১৬২৫৮১৮১৯১
০১৭৫৯৯০৫০৫৪
অথবা, সরাসরি চলে আসতে পারেন "জাইন ডেন্টাল কেয়ার"
🦷🏥আমাদের ঠিকানা : মতিন সুপার মার্কেট এর ২য় তলায়, দনিয়া, ঢাকা।(পুরাতন এ কে স্কুল এর পাশে)
🕓 রোগী দেখার সময়
প্রতিদিন
বিকাল ৫.০০ টা - রাত ১০. ০০ টা