26/08/2025
FIP (International Pharmaceutical Federation)-এর সুপারিশ অনুযায়ী ‘ফার্মাসিস্ট অনুপাত’ কোনো একক ধ্রুব (fixed) সংখ্যায় নির্ধারিত হয় না। বরং সেটি সেবার ধরণ, কর্মভার (workload), প্রতিষ্ঠান/সেবা স্তর (primary care vs tertiary hospital), ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব/দক্ষতা (competency/role) এবং জাতীয় আইন-বিধি ও নীতির ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করার কথা বলা হয়। নিচে বিশদ ব্যাখ্যা, প্রস্তাবিত কাজের ধারা (step-by-step) ও গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স দিলাম।
কেন WHO বা FIP একক আপাত অনুপাত দেয় না:
👉WHO সাধারণভাবে HRH (human resources for health)-এর জন্য “fixed single ratio” না রেখে দেশের জন্য কর্মভিত্তিক (workload-based) পরিকল্পনা, UHC-ভিত্তিক থ্রেশহোল্ডস এবং দক্ষতা-মিশ্রণ (skills mix) ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।
👉FIP–এর কাগজপত্রগুলোও দেখায় যে ফার্মাসি-ওয়ার্কফোর্স পরিকল্পনা workforce intelligence, competency frameworks ও সেবা-প্রয়োজন বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত — ফলে দেশের, অঞ্চলের বা প্রতিষ্ঠানের কাঠামো অনুযায়ী অনুপাত ভিন্ন হবে।
FIP-এর নীতিগত দিক (সংক্ষেপে):
FIP গ্লোবাল ওয়ার্কফোর্স রিপোর্ট, GADF (Global Advanced Development Framework) ও অন্যান্য ডকুমেন্টে জোর দেয়:
1. কর্মক্ষমতা/দক্ষতা (competency)-এর মাধ্যমে কাজ বণ্টন — কোন কাজ কিসের দ্বারা সম্পন্ন হবে (ফার্মাসিস্ট, টেকনিশিয়ান বা সহকারী)।
2. ওয়ার্কলোড-বেসড স্টাফিং (WISN বা সমতুল্য পদ্ধতি) ব্যবহার করে লোকসংখ্যা/পোশনে কতজন প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা।
3. কন্টেক্সট অ্যাডাপটেশন — শহর/গ্রাম, প্রাইমারি/সেকেন্ডারি/টারশিয়ারি, আর বিদ্যমান সহকর্মীর মিশ্রণ বিবেচনা করা।
কোন ফ্যাক্টরগুলোকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া উচিত (পরামর্শ):
1. সেবা-প্যাকেজ (service package): ওষুধ বিতরণ মাত্র, নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ ম্যানেজমেন্ট, ক্লিনিকাল কেয়ার/কাউন্সেলিং/অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টিউয়ার্ডশিপ — প্রতিটি সেবার জন্য সময় ও দক্ষতা ভিন্ন।
2. ওয়ার্কলোড (নির্দিষ্ট কার্য তালিকা ও টাইমিং): প্রতিটি কার্য (e.g., prescription validation, counselling, inventory, ADR reporting)-এর গড় সময় পরিমাপ করে মোট ঘণ্টা বের করা। (WISN পদ্ধতি এগুলো করার জন্য উপযুক্ত)।
3. কম্পিটেন্সি-ম্যাপিং: কোন কাজটি ডিপ্লোমা-ধারী (D.Pharm / IHT) দ্বারা করা যায়, কোনটি B.Pharm/গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টের প্রয়োজন। FIP GADF ব্যবহার করে competency levels নির্ধারণ করা যায়।
4. আইনি/রেগুলেটরি স্কোপ: Pharmacy Council বা জাতীয় আইন কোন কাজকে ‘ফার্মাসিস্ট-এক্সক্লুজিভ’ করেছে কি না — সেটি স্পষ্ট করতে হবে। (বাংলাদেশে PCB-এর নিয়মকানুন ও ডিপ্লোমা/ডিগ্রি পাঠ্যক্রম বিবেচনা প্রয়োজন)।
5. পরিবেশগত কারণে (urban/rural), সেবা-ঘন্টা, দলগত কর্মদক্ষতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট — ডিপ্লোমা (৪ বছর IHT?) vs ৪ বছর গ্রাজুয়েট (B.Pharm):
বাংলাদেশে বিভিন্ন স্তরের pharmacy education আছে: সার্টিফিকেট/ডিপ্লোমা/বাচেলর — প্রতিটির উদ্দেশ্য ও কর্মক্ষেত্র আলাদা হয়ে আসবে (অনেক লেখায় বলা হয় ডিগ্রীবৃন্দ শিল্প ও ক্লিনিকাল রোলে, ডিপ্লোমা-ধারীরা হসপিটাল কমিউনিটি-ফার্মেসি-অ্যাসিসট্যান্ট রোলে থাকে)।
প্রস্তাবিত রোল-ডিফারেন্সিয়েশন (প্রস্তাব):
👉D.Pharm / 4-year IHT diploma holders — ফার্মাসিউটিক্যাল সাপ্লাই, ওষুধ স্টোর/ইনভেন্টরি, বেসিক ডিসপেন্সিং, রিকর্ড-কিপিং, রোগী-নির্দেশনা (basic counselling) — সুপারভিশনের আওতায় (বিশেষত ক্লিনিকাল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে)। (Curriculum refs)।
👉B.Pharm (4-year graduate) — ক্লিনিকাল ফার্মাসি, মেডিকেশন রিভিউ, থেরাপিউটিক কনসালটিং, ড্রাগ সেফটি/ফার্মাকোভিজিল্যান্স, হাসপাতাল/ক্লিনিক ম্যানেজমেন্ট, রেগুলেটরি কাজ ও নীতিনির্ধারণে নেতৃত্ব।
প্র্যাকটিক্যাল প্রসেস — কীভাবে ‘ফার্মাসিস্ট অনুপাত’ জাতীয়/প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ঠিক করবেন (স্টেপ-বাই-স্টেপ):
1. স্টিয়ারিং টাস্কফোর্স গঠন: MoHFW + Pharmacy Council of Bangladesh + হাসপাতাল/প্রাইমারি কেয়ারের প্রতিনিধি + শিক্ষা প্রতিষ্ঠান + FIP/WHO গাইডেন্স প্রতিনিধি।
2. সেবা প্যাকেজ নির্ধারণ: প্রত্যেক ধাপ/স্তরের (UHC centre, Upazila HC, district hospital, tertiary) জন্য কনক্রিট সার্ভিস লিস্ট বানাবেন।
3. টাস্ক-এনালাইসিস ও টাইম-স্টাডি: প্রতিটি কার্য কত সময় নেয় তা সংগ্রহ (WISN পদ্ধতি বা সমতুল্য) — ফলাফল হবে মোট মানবঘণ্টা প্রতি সপ্তাহ/মাস।
4. কম্পিটেন্সি-ম্যাপ: FIP GADF বা জাতীয় competency framework ব্যবহার করে কোন স্তরের কর্মী কোন কাজ করবে তা ম্যাপ করবেন।
5. স্টাফিং ক্যালকুলেশন: মোট প্রয়োজনীয় মানবঘণ্টা / এক-ব্যক্তির প্রাপ্য কার্যঘণ্টা = প্রয়োজনীয় ফার্মাসিস্ট সংখ্যা। এখানে দেখা যাবে কোথায় B.Pharm আবশ্যক, কোথায় D.Pharm পর্যাপ্ত।
6. রেগুলেটরি ও শিক্ষাগত অভিযোজন: যদি নতুন দায়িত্ব B.Pharm-কে দেয়া হয়, তখন Pharmacy Council/UGC-এর সঙ্গে পাঠ্যক্রম ও রেজিস্ট্রেশন নিয়ম আপডেট করতে হবে (ইন্টার্নশিপ, CPD, লাইসেন্সিং)।
7. পাইলট এবং পরিমাপ: নির্বাচিত জেলায়/সরকারি হাসপাতাল-এ পাইলট চালিয়ে ফলাফল ও সেবার মান পরিমাপ করে নীতিগত স্কেল-আউট।
প্রস্তাবিত উদাহরণ (কীভাবে রিপোর্ট হবে):
পাইলট রিপোর্টে অন্তত থাকবে: সার্ভিস-লিস্ট, টাইম-মোশন ফলাফল, competency map (কাজ-বাই-কাজ কে কার কাছে যায়), প্রস্তাবিত স্টাফিং তালিকা (প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী — উদঃ Upazila Health Complex: 1 B.Pharm বা সিনিয়র ফার্মাসিস্ট + 2 D.Pharm বা টেকনিশিয়ান ইত্যাদি — কিন্তু এটিকে দেশিক ওয়ার্কলোড-ডাটা দিয়ে কনফার্ম করতে হবে)।
গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স (পড়ার/উল্লেখ করার জন্য):
1. WHO — Health workforce requirements for universal health coverage and the Sustainable Development Goals (HRH guidance).
2. FIP — Pharmacy Workforce Intelligence / Global Workforce Report এবং GADF (Global Advanced Development Framework).
3. Joint FIP/WHO Guidelines on Good Pharmacy Practice (GPP) — ফার্মাসিস্টদের দায়িত্ব ও রোল-রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহারযোগ্য।
4. WISN ও workload-based staffing পদ্ধতি (প্রয়োগগত গবেষণা ও নির্দেশিকা)।
5. বাংলাদেশ ভিত্তিক — Diploma in Pharmacy (curriculum) এবং স্থানীয় শিক্ষা/রেগুলেটরি সূত্র (Pharmacy Council সংক্রান্ত রিপোর্ট/অ্যাডাপটেশন)।
শেষ কথা:
FIP বলে: ‘একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার অনুপাত’ ঠিকভাবে নির্ধারণের চেয়ে—ওয়ার্কলোড-ভিত্তিক, competency-based ও কনটেক্সট-অ্যাপটেড পদ্ধতি গ্রহণ করুন। এই পদ্ধতিতে বাংলাদেশে D.Pharm (4-yr IHC diploma) এবং B.Pharm (4-yr graduate)-দের ভূমিকা স্পষ্টভাবে বণ্টন করে, আইনগত স্কোপ নির্ধারণ করে এবং পাইলট করে স্কেল-আউট করা হবে সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত।