13/12/2025
জীবনে অনেক মানুষকে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আপনাকে ক্ষমা করতেই হবে। সুতরাং ক্ষমা করার সুন্দর পদ্ধতিটি জানা থাকা উচিত। প্রথমে নিচের হাদিসটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিন।
আয়িশা (রা.) বলেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো মন্দের জবাব মন্দ দিয়ে দিতেন না, বরং ক্ষমা করে দিতেন। পরবর্তী সময়ে তা কখনো আলোচনাও করতেন না। [ইমাম আহমাদ, আল-মুসনাদ: ২৫৪৫৬; ইমাম ইবনু হিব্বান, আস-সহিহ: ৬৪৪৩]
এই হাদিস থেকে আমরা শিখলাম:
১) মন্দ আচরণের জবাবে মন্দ আচরণ না করা, খারাপ কথার জবাবে খারাপ কিছু না বলা;
২) মন্দ আচরণটির জবাব উত্তম কোনো উপায়ে দেওয়া;
৩) তাকে ক্ষমা করে দেওয়া এবং
৪) ক্ষমার কথাটি কখনো আলোচনাও না করা।
আমরা কী করি? প্রথমে একবার ঝগড়া করি, শাসিয়ে নিই। এরপর হয় বিরক্ত হয়ে না হয় বাধ্য হয়ে তাকে ক্ষমা করি, তাও ভেতরে ক্ষোভ বাকি রেখে। আবার তাকে ক্ষমা করার বিষয়টি মাথায় নিয়ে ভাবি, তার প্রতি বিরাট ইহসান (অনুগ্রহ) করেছি। কারণে-অকারণে এই ব্যাপারটি নিয়ে কথাও বলি। অথচ নবিজির আচরণ ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন।
আমাদের হজমশক্তি কম। আমরা সামান্য ভালো কিছু করলেও সেটিকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করতে ভালবাসি—ইচ্ছায় হোক বা অবচেতন মনে। তবে এটি ভালো কোনো স্বভাব নয়। ক্ষমাকারীদের ব্যাপারে কুরআন হাদিসে অসাধারণ মর্যাদার কথা এসেছে। সুতরাং আমরা কাউকে ক্ষমা করলে যেন নেকি পাওয়ার উদ্দেশ্যেই করি। আর সেটি দিয়ে ভবিষ্যতে তাকে যেন ছোট না করি, খোঁটা না দিই। কারণ খোঁটা দেওয়া মুমিনের সিফাত (বৈশিষ্ট্য) নয়।
আর আপনি যদি কাউকে উপরে উল্লিখিত নববি আদর্শের আলোকে ক্ষমা করতে পারেন, তবে তার সাথে আপনার বিদ্বেষ-শত্রুতা থাকলেও, সে আপনার বন্ধুতে পরিণত হবে। যেমনটি কুরআনে এসেছে, “ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ ও জুলুমকে উৎকৃষ্ট পন্থায় প্রতিহত করো। (জুলুমের পরিবর্তে অনুগ্রহ করো)। এরূপ করলে যে ব্যক্তি ও তোমার মধ্যে শক্ৰতা আছে, সে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে যাবে।” [সুরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৪]
আর আমরা নবিজির জীবনে এমনটিই দেখেছি। তাই, জীবনকে সুন্দর করতে উত্তম পদ্ধতিতে ক্ষমা করার প্র্যাকটিস করতে হবে। তবে, কেউ জুলুমের শিকার হলে, সে জালিমকে ক্ষমাও করতে পারে আবার সমান প্রতিশোধও গ্রহণ করতে পারে। তবে, সর্বাবস্থায় ক্ষমাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।
©️ নুসুস পেইজ থেকে সংগৃহীত (আল্লাহ ﷻ উনাদের'কে উত্তম প্রতিদান দান করুন)