18/04/2025
বাস্তবতা কি বলে?
হাসপাতালে রোগী কে দেখতে যাওয়া কি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা হওয়া উচিত?
না।
আপনি কাউকে হাসপাতালে দেখতে গেলে আপনার এই অল্প সময় টাকেও রোগী এবং রোগীর স্বজনের জন্য কার্যকর করে রাখতে পারেন। না দেখতে গেলে কি মনে করে, শুধু এই আনুষ্ঠানিকতা না হোক।
কিভাবে?
আসলে রোগী তো এমনিতেই কষ্টে আছে। রোগীর সাথে যারা আছেন তারাও কিন্তু অনেক কষ্ট করেন এই ভর্তিকালীন সময় টায়। যত্ন, খাওয়ানো, ডাক্তার কে সামলানো, পরীক্ষা করতে যাওয়া, রিসিট কাটা, রিপোর্ট আনা, ট্রলি খোজা, খাবার কেনা ইত্যাদি কত কাজ।
কে করে এত কাজ। ঐ ঘুরে ফিরে এক দুজন ই।
আপনি বা আমরা এখানে তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে পারি। না পারলে অন্তত তাদের শারিরীক বা আর্থিক কষ্ট লাঘবে সামিল হতে পারি।
যেমন :
১। আপনি যাবার আগে ফোন করে জানিয়ে গেলেন যে আজ দুপুরের খাবার টা আপনি রান্না করে নিয়ে যাবেন। তাহলে এক বেলার খাবার কিভাবে ব্যবস্থা হবে সেটা নিয়ে রোগীর মায়ের ভাবতে হবে না।
২। রোগী কে ইসিজি বা এক্স রে করানোর জন্য ট্রলি আনা লাগবে। আপনি বসে না থেকে ট্রলির ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। হয়তো সেই সময়ে রোগীর বাবা একটু বিশ্রাম নিলো।
৩। রোগীকে ডাক্তার এসে বলে গেলো, এক ব্যাগ রক্ত লাগবে। আপনি রক্ত দিতে না পারেন, ব্লাড ব্যাংকে একটু গিয়ে ব্লাড কিভাবে আনা লাগবে সেই কাজ টা করে দিলেন।
হয়তো রোগীর ছোট বোন টা এটা বুঝতোই না ঠিক ঠাক।
৪। আপনি দেখলেন রোগীর একটা রিপোর্ট হাসপাতালের বাইরে একটা ল্যাব থেকে আনা লাগে। আপনি রিসিট টা নিয়ে রিপোর্ট এনে দিলেন। রোগীর স্ত্রী হয়তো একটু খাওয়ার সময় পেলো।
৫। আপনি চলে আসার সময় রোগীর স্ত্রী বা সন্তান কেও থাকলে তার হাতে নিরবে কিছু টাকা গুজে দিয়ে আসলেন। বললেন ফল কিনে খেও। কিছু তো আনতে পারলাম না। বিশ্বাস করেন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা হাসপাতালে আসলে রোগের চাইতে টাকার চিন্তায় বেশী কষ্ট পায় অনেক সময়। আপনার এক /দুই/ তিন হাজার টাকা তার কাছে লাখ টাকার মত। তারা তো আর ফল কিনে খাবে না। হয় মেডিসিন কিনবে নাইলে পরীক্ষা করাবে, নাইলে কেবিন চার্জ দিবে।
৬। মনে করেন রোগী বা তার সাথের মানুষ কে কোনও ভাবে টাকা দেয়া যাবে না। তারা অন্য ভাবে নিবে। লজ্জা পাবে। আপনি ডাক্তারের প্রেস্ক্রিপশান টা দেখে কাল সারা দিনের তিন টা বা দুইটা ইঞ্জেকশান এন্টিবায়োটিক কিনে দিয়ে যান। টাকা টা সরাসরি না দিলেও রোগীর অনেক কাজে লাগবে। রোগীর ভাই এর হয়তো কালকের মেডিসিন এর চিন্তা আপনি দূর করে দিলেন।
৭। হাসপাতালে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করবেন না। রোগীর বিছানায় বসবেন না। অল্প সময় থাকবেন। অল্প মানুষ একসাথে যাবেন। নির্ধারিত ভিজিট করার সময়ে যাবেন। এক বা দুই জন। এই প্রতি টি কাজ রোগী ও তার সাথে থাকা লোক জনের জন্য উপকারী।
এগুলো কিছু ধারনা মাত্র। আমি জানি আপনাদের কাছে আরো অনেক সুন্দর আইডিয়া আছে। একটু চিন্তা করলেই পাবেন। অসুস্থ অবস্থায় মানুষ খুব অসহায় হয়ে পড়ে।
তাই তাদের জন্য দোয়া করার পাশা পাশি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যদি তাদের পাশে দাড়াতে পারেন আপনার ও শান্তি লাগবে।
সবার জন্য শুভ কামনা।
যদি আপনাদের ভালো লাগে আর অন্য কেও পড়লে তার কাজে লাগতে পারে বা সাধারণ মানুষের মাঝে একটু সচেতনতা বাড়তে পারে, বলে মনে করেন।
, তাহলে পোস্ট টি শেয়ার করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
লেখক: Dr.Bhuyan Sadab Ahmed