25/04/2024
মুসলমানি (Circumcision) :
আমাদের দেশে সুন্নতে খৎনা নামে সমধিক পরিচিত। পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকে যে অতিরিক্ত চামড়া পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল মাথাকে ঢেকে রাখে তা কেটে বাদ দেওয়াকেই বলা হয় খতনা বা মুসলমানি বা সারকামসিশন।এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা খুবই উদাসীন। শুধু মাএ খরচ কমানো বা এনেস্থিসিয়ার ভয়ে বাংলাদেশের একটা বড় অংশের মানুষ অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে হাজাম বা পল্লী চিকিৎসকদের দ্বারা এমন একটা সংবেদনশীল অঙ্গের অপারেশন ( মুসলমানি) করান।এটা খুবই দুঃখজনক। এমন উদাসীনতা সারা জীবনের কান্না হতে পারে।
প্রয়োজনীয়তাঃ
যৌনাঙ্গের নানা রোগ থেকে বেঁচে থাকার জন্য মুসলমানি দেওয়া খুবই প্রয়োজন। ধর্মীয় কারণে মুসলিম জাতি, খৃস্টানরা মুসলামনি দিয়ে থাকে। তাছাড়া ফাইমোসিস বা প্যারাফাইমোসিস রোগ হলে মুসলমানি দিতে হয়।
Indication ( কেন মুসলমানি করতে হয়):
১. প্রস্রাবের রাস্তার অগ্রভাগের মুখ(Foreskin) বন্ধ হয়ে যাওয়া( Phimosis)
২. পুরুষাঙ্গের গলার চারপাশে ইনফেকশন হয়ে শক্ত হয়ে চামড়া প্যাচিয়ে থাকা ( Paraphimosis)
৩. ধর্মীয় দৃষ্টিকোন( Religious ground)
৪. পুরুষাঙ্গের ভেতরের অংশে বার বার সংক্রমন(Recurrent Balanitis/ Balanoposthitis)
৫. পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার ও যৌন রোগের প্রতিকার হিসেবে
উপকারিতাঃ
পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নিচে এক ধরনের সাদা সাদা পদার্থ যাকে স্মেগমা বলা হয় তা জমে লিঙ্গের মাথা অপরিস্কার ও দুর্গন্ধময় করে তোলে। এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার রোগ সৃষ্টি করে। তাই মরণ ব্যাধি এ রোগ থেকে বাঁচতে মুসলমানি দেওয়া দরকার। তাই মুসলিম ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার নেই বললেই চলে। এর প্রধান কারণ খতনা বা মুসলমানি। অনেক দেশী-বিদেশী চিকিৎসকের জরিপের মাধ্যমে তারই সত্যতা প্রকাশ পেয়েছে। বিভিন্ন তথ্য মাধ্যম থেকে জানা যায় মরণ ব্যাধি এইডস এবং যৌন রোগ প্রতিরোধে মুসলমানি বিরাট একটি ভুমিকা পালন করে।
কি কি পদ্ধতিতে করা হয়:
১. কনভেনশনাল কেটে করা
- ডিসেক্টিং ম্যাথোড
- গুল্লেটিন ম্যাথোড
২. লেজার পদ্ধতি
৩. ডিভাইস পদ্ধতি
কোন পদ্ধতি সবচেয়ে ভালো ও নিরাপদ?
ভালোর কোনো শেষ নেই। সবগুলোই কসমেটিক সার্জারী। মূল পার্থক্য খরচে।কোথায় করবেন,কাকে দিয়ে করাবেন তার উপর খরচ নির্ভর করে। তবে যে পদ্ধতিতেই করা হোক,অবশ্যই একজন সার্জারী ডাক্তার দ্বারা মুসলমানি করা উচিত।
কনভেনশনাল পদ্ধতিতে সেলাই কাটার কিছু নেই। এ পদ্ধতি সমধিক পরিচিত ও রিকমেন্ডেড।
লেজার পদ্ধতিতে লেজার দিয়ে সীল হয়,সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না।সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও অল্প কিছু করপোরেট হাসপাতালে করা হয়।
ডিভাইস পদ্ধতিতে সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না।ভিন্ন ভিন্ন সাইজের ডিভাইস প্রয়োজন হয়।পরবর্তীতে ডিভাইসটা খুলতে হয়।বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হলেও এ পদ্ধতি এখনো সার্জারীর টেক্সট বই রিকমেন্ড করে না।
আমাদের দেশে প্রায়ই হাজাম দ্বারা মুসলমানি বা খতনা করানো হয়। এটি একটি পুরাতন রীতি। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তখনকার দিনে তত উন্নত ছিল না। ফলে হাজামরাই মুসলমানির কাজ সমাধা করতেন। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নতির পরে দেখা যাচ্ছে এতে শিশুদের নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বা হচ্ছে। মুসলমানি দেওয়ার পরে কোন কোন শিশুর বা খতনাকারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না। যা মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে বা মৃত্যুও ডেকে আনে। তাই মুসলমানি দেওয়ার আগে জন্মগত রক্তক্ষরণ সমস্যা আছে কিনা তা জানা খুবই প্রয়োজন। এসময় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কী সমস্যা হতে পারে ঃ
*চামড়া কাটার পর রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হয় না।
*হাজাম বা অনভিজ্ঞতার কারণে অতিরিক্ত বা কম চামড়া কেটে ফেলা।
*লিঙ্গের সংবেদনশীল মাথা কেটে ফেলা।