03/06/2025
অনেক সময় যথেষ্ট ঘুমানোর পরেও এবং কড়া চা বা কফি খাওয়ার পরও অনেকের ঘুম ঘুম ভাব বা প্রচণ্ড ঘুম পায়। এর পেছনে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে।
যেমন -
১. ঘুমের গুণগত মান (Sleep Quality) ভালো না হওয়া
শুধু সময় দিয়ে ঘুমালেই ঘুম পূর্ণ হয় না। ঘুম যদি বারবার বিঘ্নিত হয়, গভীর ঘুমে না যেতে পারেন, তবে তা যথেষ্ট বিশ্রাম দেয় না।
সম্ভাব্য কারণ: স্লিপ অ্যাপনিয়া (Sleep Apnea), ঘুমের সময় নাক ডাকা, দুঃস্বপ্ন, অস্থিরতা।
২. হরমোন বা থাইরয়েডের সমস্যা
হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) বা অন্য কোনো হরমোনজনিত সমস্যা থাকলে শরীর সব সময় ক্লান্ত লাগে।
৩. রক্তে শর্করা (Blood Sugar) সমস্যা
হাইপোগ্লাইসেমিয়া (কম সুগার) বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স থাকলে অতিরিক্ত ঘুমঘুম ভাব হতে পারে।
৪. রক্তস্বল্পতা (Anemia)
শরীরে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন না থাকলে অক্সিজেন ঠিকভাবে পৌঁছায় না, ফলে ক্লান্তি ও ঘুমঘুম ভাব হয়।
৫. বিষণ্নতা বা মানসিক চাপ (Depression, Anxiety)
মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা থাকলে অনেক সময় ঘুমালেও ঘুমানোর অনুভূতি আসে না, সারাক্ষণ ঘুম ঘুম লাগে।
৬. অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাওয়া
অনেকেই ভাবেন ক্যাফেইন ঘুম কমাবে, কিন্তু বেশি ক্যাফেইন স্নায়ুকে ক্লান্ত করে দিতে পারে, ঘুম-বিষণ্নতা বাড়াতে পারে।
৭. ভুল ঘুমের সময়সূচি (Sleep Schedule Problem)
আপনি যদি মধ্যরাতে ঘুমিয়ে সকালে দেরিতে উঠেন, শরীরের সার্কাডিয়ান রিদম বিঘ্নিত হতে পারে।
🧪 সমাধান ও করণীয়:
১. রক্ত পরীক্ষা করুন: CBC, Thyroid profile (TSH, FT4), Vitamin D, B12, Cortisol
২. ঘুমের প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করুন: আপনি ঘুমের মাঝে বারবার জাগেন কিনা।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও সকালবেলা সূর্যালোক গ্রহণ করুন।
৪. ডিজিটাল ডিটক্স: ঘুমের আগে মোবাইল/ল্যাপটপ কম ব্যবহার করুন।
৫. মানসিক চাপ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন,স্ট্রেস হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়,সকল রোগের মূল।
৬. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, বিশেষ করে ঘুমজনিত ব্যাধির জন্য (Sleep Specialist / Neurologist)।
৭. সঠিক ও স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেইনটেইন করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমিত খান।প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
✍️পুষ্টিবিদ ফাতিমা তাহ্সিন
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট এন্ড ডায়েটিশিয়ান,
বেটার লাইফ হসপিটাল, ঢাকা।