
23/07/2025
বরফের দেশে এক অলৌকিক নীল জাদু
সিকিমের উত্তর প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে এক অদ্ভুত নীলাভ হ্রদ।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭,৮০০ ফুট ওপরে, এই হ্রদ যেন আকাশকে ছুঁয়ে থাকে।
কিন্তু এর নীলজলে লুকিয়ে আছে শতাব্দীর পুরনো এক অলৌকিক গল্প।
লোককথায় শোনা যায়, ৮ম শতকে এখানে এসেছিলেন আধ্যাত্মিক গুরু প্যাডমসম্ভবা।
গভীর তপস্যার পর তাঁর আশীর্বাদে হ্রদের একাংশ চিরকাল বরফমুক্ত হয়ে থাকে।
সেই থেকেই স্থানীয় বৌদ্ধরা এই হ্রদকে পবিত্র বলে মানে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আরেকটি কিংবদন্তিও শোনা যায়।
১৫১৬ সালে সিকিমে এসেছিলেন শিখ ধর্মের প্রথম গুরু, গুরু নানক দেবজী।
তীব্র শীতে স্থানীয়রা পানীয় জলের জন্য কষ্ট পাচ্ছিল।
গুরু নানক তাঁর লাঠি দিয়ে হ্রদের বরফ স্পর্শ করেন।
এবং বিস্ময়করভাবে বরফ গলে যায়, সেই অংশের জল আজও জমে না।
শিখ সম্প্রদায় তাই এই হ্রদকে গুরু নানকের পবিত্র আশীর্বাদের প্রতীক মনে করে।
বৌদ্ধ ও শিখ, দুই ধর্মের কিংবদন্তি একসাথে বাঁচিয়ে রেখেছে এই হ্রদের মহিমা।
কিন্তু ১৯৯০-এর দশকে গুরুদ্বারা নির্মাণ নিয়ে কিছু বিরোধ সৃষ্টি হয়।
সিকিম সরকার পরে ঘোষণা করে যে হ্রদটি প্রাচীন বৌদ্ধ ঐতিহ্যেরও অংশ।
আজও দুই ধর্মের মানুষ এই হ্রদকে সমানভাবে শ্রদ্ধা করে।
গুরুদংমার হ্রদ শুধু প্রকৃতির বিস্ময় নয়, এটি দুই ধর্মের মিলনের এক আধ্যাত্মিক প্রতীক।
বরফে ঢাকা পাহাড়ের মধ্যে এই নীলজল যেন চুপচাপ বলছে—
বিশ্বাসের গল্প কখনও সময়ের সঙ্গে হারায় না।
তথ্যসূত্র:
Sikkim Govt. – Ecclesiastical Affairs Department
Wikipedia – Gurudongmar Lake
Times of India – Gurudongmar Lake Legend
#গুরুদংমারহ্রদ #সিকিমভ্রমণ #পর্যটনগল্প
#গুরুদংমারহ্রদ #সিকিমভ্রমণ #পর্যটনগল্প #ভ্রমণকাহিনী #পর্যটনস্পট #ট্রাভেলস্টোরি #হিমালয়যাত্রা #পর্যটনভারত #ভ্রমণতৃষ্ণা #ট্রাভেলবাংলা