11/12/2025
শিশুরা যখন বাবা-মায়ের খুব কাছে বা একই ঘুমের পরিবেশে থাকে, তখন ব্রেনের বিকাশ ও মানসিক বিকাশ ভালোভাবে এবং দ্রুতগতিতে হয় অন্যদের তুলনায় ।জীবনের প্রথম দিকে অসাধারণ পরিমাণ শারীরিক স্পর্শ পায়—প্রায় তিন বছর বয়সে অতিরিক্ত ১৩,০০০ ঘণ্টা পর্যন্ত। এই বাড়তি স্পর্শ কোনো খারাপ অভ্যাস তৈরি করার বিষয় নয়। নবজাতকের স্নায়ুতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে মস্তিষ্ক ও প্রতিরোধব্যবস্থার সবচেয়ে সংবেদনশীল বিকাশের সময়ে। স্পর্শ হলো শিশুর প্রাপ্ত প্রথম ও সবচেয়ে শক্তিশালী জৈবিক সংকেতগুলোর একটি, যা শরীরকে চাপ, স্বস্তি ও নিরাপত্তার প্রতি কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হয় তা শেখায়।
কাছাকাছি ঘুমানো ও নিয়মিত শারীরিক স্পর্শ শিশুর হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং কর্টিসল মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। যখন একটি শিশু নিরাপদ বোধ করে, তার স্নায়ুতন্ত্র শান্ত অবস্থায় চলে যায়, ফলে শরীর বেঁচে থাকার মোডের বদলে শক্তি ব্যবহার করে বৃদ্ধি ও বিকাশে। এই নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ভালো হজম এবং স্বাস্থ্যকর ঘুমের চক্রকে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু নিয়মিত শারীরিক ঘনিষ্ঠতা পায়, তারা সাধারণত কম চাপজনিত অসুস্থতায় ভোগে এবং পরবর্তীতে মানসিকভাবে আরও স্থিতিশীল হয়।
স্পর্শ মস্তিষ্কের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ত্বক-থেকে-ত্বকের সংস্পর্শ এমন স্নায়ুবন্ধনকে উদ্দীপিত করে যা আবেগ বোঝা, স্মৃতি এবং সামাজিক বন্ধনের সাথে জড়িত। এই প্রথম দিকের সংযোগগুলো নিরাপদ সংযুক্তির ভিত্তি তৈরি করে, যা শিশুর আত্মবিশ্বাস, সম্পর্ক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। নিরাপদভাবে সংযুক্ত শিশুরা সাধারণত চাপ সামলাতে পারে ভালোভাবে, সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবেগ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়।
মানব শিশু স্বভাবগতভাবেই পরিচর্যাকারীর কাছাকাছি থাকার জন্য তৈরি। জীবনের প্রথম কয়েক বছরে এই শারীরিক ঘনিষ্ঠতা দীর্ঘমেয়াদে এমন সব স্বাস্থ্য উপকার দেয়, যা শৈশবের অনেক বাইরে পর্যন্ত বিস্তৃত।
brain development #শিশু