
08/06/2025
🦴আমাদের সমাজে পায়া (গরু বা খাসির পায়ের ঝোল) একটি পরিচিত ও জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে শরীর দুর্বল হলে বা হাড়ে ব্যথা থাকলে অনেকেই বলেন, “পায়ার ঝোল খাও, ক্যালসিয়াম বাড়বে।” কিন্তু এই কথাটি কতটা সত্য?
❌ প্রচলিত ধারণা: পায়া মানেই ক্যালসিয়ামের ভান্ডার
👉পায়ার ঝোল গরু বা খাসির হাড় দিয়ে তৈরি হয়। তাই অনেকের ধারণা, এতে হাড়ের সব ক্যালসিয়াম ঝোলে মিশে যায়। এর ফলে পায়া খেলে হাড় শক্ত হয়, দাঁত ভালো থাকে, এমনকি শিশুদের বৃদ্ধিও ভালো হয় — এমনটাই ভাবা হয়।
📌কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা ভিন্ন।
🔬 বিজ্ঞান কী বলছে?
👉সাধারণভাবে রান্না করা পায়ার ঝোলে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ খুবই কম।
এর কারণ হলো:
👉হাড়ের ক্যালসিয়াম রান্নার সময় সহজে ঝোলে মিশে না।
👉বিশেষভাবে লম্বা সময় ধরে রান্না করা না হলে (যেমন ১২-২৪ ঘণ্টার বোন ব্রথ), হাড় থেকে ক্যালসিয়াম বের হয় না।
👉ভিনেগার বা লেবুর রস ছাড়া হাড়ের খনিজ গলে না।
📌 তাই, শুধু পায়ার ঝোল খেয়ে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়।
✅ তাহলে পায়াতে কী উপকার?
👉পায়ায় ক্যালসিয়াম কম থাকলেও অন্য কিছু উপাদান আছে যা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে:
🦴কোলাজেন ও জেলাটিন – ত্বক, চুল ও জয়েন্টের জন্য ভালো
🦴গ্লুকোজামিন ও কন্ড্রয়েটিন – জয়েন্টের ব্যথা বা অস্থিসন্ধির সমস্যা কমাতে সহায়ক
🦴প্রোটিন– দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে
তাই বলা যায়, পায়া সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, কিন্তু ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস নয়।
🥦 ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস কোনগুলো?
👉যদি আপনি হাড় ও দাঁত ভালো রাখতে চান, তাহলে নিচের খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়া জরুরি:
🥛 দুধ ও দই
🧀 পনির
🥬 পালং শাক
🥜 বাদাম (বিশেষ করে আমন্ড)
⚪ তিল
🐟 ছোট মাছ (মাছের কাঁটা সহ খাওয়া হয় এমন)
এছাড়াও ভিটামিন D দরকার, কারণ এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। রোদে কিছু সময় কাটানো, ডিমের কুসুম ও সামুদ্রিক মাছ খাওয়া এতে সহায়ক।
🤚পায়া খেতে সুস্বাদু, এবং এতে কিছু উপকারী উপাদান থাকলেও, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে এটি নির্ভরযোগ্য উৎস নয়।
👉 তাই হাড় ভালো রাখতে চাইলে প্রতিদিন দুধ, দই, পনির, শাকসবজি ও বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
✅পায়া খাবেন, কিন্তু ক্যালসিয়ামের জন্য নয় —স্বাদের জন্য!
✍️ Clinical Dietitian - Sazeda Kashem Jyoti