22/11/2025
ভূমিকম্পের সময় কী করবেন: যখন মাটি কাঁপে, তখন প্রস্তুত থাকুন!
ঢাকার যে অবস্থা সেখানে বড় সাইজের ভুমিকম্প হলে হয়ত কিছুই করা যাবে না। এত বিল্ডিং সব গায়ে গায়ে লাগা, তেমন কোন সেফটি চেক ছাড়াই অনেকগুলা নির্মান করা। ভুমিকম্পের পর আমাদের নাই কোন ন্যাশানাল ইমার্জেন্সি রেস্পন্স যেটা রেডি টু ডিপ্লয়, নাই ন্যাশানাল এম্বুলেন্স সার্ভিস আর হাসপাতালে নাই ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্ট যেগুলা ইকুইপড মাস ক্যাজুয়েল্টি হ্যান্ডেল করার। এটা একটা সুযোগ এগুলা সব আপগ্রেড করার - বিশেষজ্ঞ অনেক আছে, জাস্ট দরকার সরকারের সদিচ্ছা।
তাও কিছু জিনিস জানা দরকার সবার পার্সোনাল সেফটির জন্যে। ভূমিকম্প কোনো সতর্কতা ছাড়াই আঘাত হানে, তাই এই অপরিহার্য নির্দেশিকাটি একবার দেখে নিন! বিশেষ করে বাংলাদেশ ভুমিকম্প জোনে, তাই প্রস্তুত থাকা অরুরি।
১. নুইয়ে পড়ুন, আশ্রয় নিন এবং ধরে থাকুন! (যদি ভেতরে থাকেন) - Drop, Cover and Hold On
এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ:
* তাৎক্ষণিকভাবে হাত ও হাঁটুর ওপর নুইয়ে পড়ুন (Drop)। এই অবস্থান আপনাকে ঝাঁকুনিতে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
* আপনার মাথা ও ঘাড় হাত দিয়ে প্রটেক্ট করেন (COVER)। সম্ভব হলে একটি মজবুত টেবিল বা ডেস্কের নিচে যান। যদি আশেপাশে কোনো আশ্রয় না থাকে, তবে একটি ভেতরের দেয়ালের (বাইরের দেয়াল বা জানালার কাছে নয়) পাশে নিচু হয়ে বসুন।
* ঝাঁকুনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আপনার আশ্রয়স্থল (টেবিল/ডেস্ক) ধরে থাকুন (HOLD ON)।
২. ঘরের ভেতরে যা এড়িয়ে চলবেন:
* বাইরে দৌড়ে যাবেন না যতই মনে হয় এটা করতে। বাইরের দরজার কাছে বা দেয়ালের পাশ দিয়ে ছোটার সময় ওপর থেকে পড়া ধ্বংসাবশেষের আঘাতে আহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
* জানালার কাঁচ, আয়না, বাইরের দরজা এবং দেয়াল এবং পড়ে যেতে পারে এমন যেকোনো কিছু, যেমন ভারী ফার্নিচার বা আলমারি থেকে দূরে থাকুন।
* লিফট ব্যবহার করবেন না (Do NOT)।
৩. যদি আপনি বাইরে থাকেন:
* বড় বিল্ডিং, রাস্তার ল্যাম্প পোস্টএবং ইউটিলিটি তার থেকে দূরে সরে যান। কোন বাসার বাইরের দরজার ঠিক বাইরে এবং বাইরের দেয়ালের পাশে সবচেয়ে বেশি বিপদ থাকে।
* একবার খোলা জায়গায় এলে, নুইয়ে পড়ুন, আশ্রয় নিন এবং ধরে থাকুন। ঝাঁকুনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত নিচু হয়ে থাকুন।
৪. গাড়িতে থাকলে:
* নিরাপদে রাস্তার পাশে গাড়ি থামান এবং হ্যান্ডব্রেক অন করবেন। ভবন, ব্রিজ, ওভারপাস বা ইউটিলিটি তারের নিচে থামানো এড়িয়ে চলুন।
* ঝাঁকুনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আপনার গাড়ির ভেতরে থাকুন । গাড়ি আপনাকে ধ্বংসাবশেষ থেকে রক্ষা করতে পারে।
ঝাঁকুনি বন্ধ হওয়ার পর
১. নিজের এবং অন্যদের আঘাত কেমন হয়েছে দেখুন আর ভাবেন কোন চিকিৎসা লাগবে কিনা।
২. আফটারশক বা পরবর্তী ঝাঁকুনির জন্য প্রস্তুত থাকুন। আবার হলে তাৎক্ষণিকভাবে নুইয়ে পড়ুন, আশ্রয় নিন এবং ধরে থাকুন।
৩. বিপদগুলো বুঝে নিন: ছোট আগুন লাগলে তা নেভান। গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা দেখুন। যদি গ্যাসের গন্ধ পান, তবে জানালা খুলুন, দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে যান এবং মূল গ্যাসের ভালভ বন্ধ করে দিন।
মুসলিম যারা, আমাদের জন্যে অতি গুরুত্বপুর্ন যে এই সময় গুলোতে আল্লাহর স্মরন করি, তাওবা করি ও তাঁর সাহায্য কামনা করি।
লেখাঃ ডা. রাঈয়্যিক রিদওয়ান, ইমার্জেন্সি মেডিসিন স্পেশালিস্ট