04/07/2025
এভাবে খুব কম মানুষই সত্যটা বলতে পারেন।
লেখক- ডা. এম এ ওহাব লাবিব
আমার পরিচিত অনেক ডাক্তার আছেন ৩০ বার বিসিএস পরীক্ষা দিলে ৩০ বারই প্রথম ১০ জনের ভিতরে থাকতে পারবেন। এমন এমন ডাক্তার আছেন- পৃথিবীতে ১০ বার জন্ম নেওয়ার সুযোগ থাকলে ১০ বারই ডাক্তার হতে চাইবেন তারা। কারণ সরাসরি মানবসেবা , সরাসরি জঠিল রোগগুলোর সমাধান করা , সরাসরি মানুষের কাছে আসা,সরাসরি মানুষের দুআ পাওয়া। বৈধভাবে স্বচ্ছল জীবন যাপন করার মতো পেশা ডাক্তারী ছাড়া আর খুব একটা নাই। একজন মেধাবী ছাত্রের ডাক্তার হয়ে ওঠা আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নেয়ামত।
তবে রাষ্ট্র ডাক্তারদের সঠিক মূল্যায়ণ করে না। বিসিএস ক্যাডারে সুযোগ সুবিধার দিক থেকে এক চোখে দেখে না। এসিল্যান্ড ,ইউএনও কে দেয় বাড়ি গাড়ি, পাইক পেয়াদা। বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে দেয় বাসভবন, গান ম্যান, পাইক পেয়াদা। তখন ঢাকা মেডিকেলের মতো মেধাবী কিছু ছাত্ররা নিজের পেশা , মেধা, টেকনিক্যাল দক্ষতা বিসর্জন দিয়ে স্বাস্থ্য ক্যাডারে মেডিকেল অফিসার না হয়ে হতে চান পররাষ্ট্র, এডমিন, পুলিশ ক্যাডার।
এবারে তাই ৪৪তম বিসিএস এর ফলাফলে দেখা গেল ১ম ও ২য় হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের দুজন ডাক্তার। দুজনরই পছন্দ পররাষ্ট্র ক্যাডার। কারণ তারা বুঝে গিয়েছেন যে ইউনিয়ন সাবসেন্টারে কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভাঙ্গা চেয়ারে বসে গরমের ভিতরে দিনে ১০০ রোগী দেখার থেকে ঢাকায় এসিরুমে কয়েকটা ফাইল ঘাটাঘাটি অনেক নিরাপদ এবং ঝামেলামুক্ত চাকরি।
আমার দেখা শতশত বুয়েটের মেধাবী ছাত্ররা অনেকে এখন দেশে থাকা চিন্তাই করতে পারেন না। বেশিরভাগ মেধাবীরা আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক। কেউ কেউ নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সিইও।
একজন বুয়েট ইন্জিনিয়ার উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী হয়ে যখন দেখেন উপজেলায় কোন মূল্যায়ন নাই। উপজেলার মাসিক বৈঠকে চেয়ার প্রায় সবার পিছনে। গাড়ি বাড়ি তেমন সুবিধার না। তখন তিনি আবার বিসিএস দিয়ে হয়ে যাচ্ছেন এডমিন পুলিশ। এভাবেই হচ্ছে মেধার অপচয়। এসবের জন্য রাষ্ট্র দায়ী। একই বিসিএস ক্যাডারদের সাথে রাষ্ট্র করে বৈষম্য আচরণ।
ক্যাডার বৈষম্য দূর হোক। যে ব্যক্তি যে পেশার সেই পেশায় যথাযথ সম্মানে অভিষিক্ত হোক, এই শুভকামনা।