21/08/2025
মুক্তাঝুরি:
মুক্তাঝুরি গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম: Clerodendrum inerme / Clerodendrum viscosum – অঞ্চলে ভেদে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতিকে “মুক্তাঝুরি” বলা হয়)
এটি একধরনের ঔষধি গুল্মজাতীয় গাছ, বাংলার গ্রামাঞ্চলে ও উপকূলীয় এলাকায় বেশ পরিচিত।
💚 সাধারণ পরিচয়
স্থানীয় নাম: মুক্তাঝুরি, ভূতাঝুরি, ঘনট্যাজুরি ইত্যাদি নামে পরিচিত।
পরিবার: Lamiaceae (পূর্বে Verbenaceae)
প্রকৃতি: ঝোপালো, ২–৩ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। অনেক সময় বেড়া, ডালপালা বা সমুদ্র উপকূলের ঝোপঝাড়ে জন্মে।
পাতা: ডিম্বাকৃতি, ধারালো ডগা, ভাঙলে হালকা দুর্গন্ধ ছড়ায়।
ফুল: সাদা রঙের, মাঝখানে বেগুনি বা হালকা নীলচে রঙের আভা থাকে। দেখতে অনেকটা মুক্তোর মতো ঝুলে থাকে বলেই “মুক্তাঝুরি” নাম।
ফল: ছোট, সবুজ থেকে বাদামি, ভিতরে বীজ থাকে।
🤍 বিস্তৃতি
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু অঞ্চলে পাওয়া যায়।
উপকূলীয় এলাকা, ঝোপঝাড়, নদীর ধারে বা বনে জন্মে।
🧡 ঔষধি ব্যবহার (লোকজ চিকিৎসায়)
মুক্তাঝুরি দীর্ঘদিন ধরে আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
জ্বর কমাতে: পাতার রস জ্বর নিরাময়ে ব্যবহার হয়।
ত্বকের রোগে: চুলকানি, একজিমা, ফোঁড়া, পোকামাকড়ের কামড়ে পাতার পেস্ট লাগানো হয়।
অন্ত্রের সমস্যা: পাতা ও শিকড়ের নির্যাস কৃমিনাশক হিসেবে ব্যবহৃত।
শ্বাসকষ্টে: পাতার রস বা ক্বাথ হাঁপানি ও কাশি উপশমে কাজে লাগে।
বাহ্যিক ব্যথায়: পাতার পেস্ট ব্যথা ও ফোলা জায়গায় লাগানো হয়।
❤️ তবে এটি তিক্ত ও কিছুটা বিষাক্ত প্রভাব রাখে। অতিরিক্ত সেবনে বমি, ডায়রিয়া হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
💚 পরিবেশগত গুরুত্ব
সমুদ্র উপকূলে বেড়া ও ভূমিক্ষয় রোধে ঝোপঝাড় হিসেবে রোপণ করা হয়।
প্রজাপতি ও মৌমাছি এর ফুলে আসে, তাই পলিনেটর আকর্ষণকারী উদ্ভিদ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।