13/03/2025
গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা কতটা নিরাপদ এবং কী খাবার খাওয়া উচিত?
ইসলামে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয় যদি এটি মা বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হয়। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী রোজা রাখা বা পরে কাজা করা অথবা ফিদিয়া দেওয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থার কোন মাসে রোজা রাখা নিরাপদ?
প্রথম তিন মাস (১-৩ মাস): সাধারণত রোজার পরামর্শ দেওয়া হয় না, কারণ এই সময় শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হয় এবং মা ক্লান্তি, বমি ও দুর্বলতায় ভুগতে পারেন।
দ্বিতীয় তিন মাস (৪-৬ মাস): মা যদি সুস্থ থাকেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে পারেন।
শেষ তিন মাস (৭-৯ মাস): শিশুর পুষ্টি চাহিদা বেড়ে যায়, তাই রোজা রাখা কঠিন হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় রোজার সময় স্বাস্থ্যকর খাবার
সেহরি (ভোরের খাবার)
জটিল কার্বোহাইড্রেট (ওটস, লাল আটার রুটি, ব্রাউন রাইস) – দীর্ঘ সময় শক্তি যোগাবে।
প্রোটিন (ডিম, দই, বাদাম, ডাল) – ক্ষুধা কমাবে।
ফল ও সবজি (কলার, খেজুর, শসা) – ভিটামিন ও পানি সরবরাহ করবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন – শরীর হাইড্রেট রাখবে।
ইফতার (রোজা ভাঙার খাবার)
খেজুর ও পানি দিয়ে শুরু করুন – দ্রুত শক্তি বাড়ায়।
প্রোটিন (মুরগি, মাছ, গরুর মাংস, ডাল) – শিশুর বৃদ্ধির জন্য জরুরি।
স্বাস্থ্যকর চর্বি (অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল, বাদাম) – শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার (পালং শাক, লাল মাংস, ডাল) – রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করবে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (দুধ, দই, পনির) – শিশুর হাড় গঠনে সহায়ক।
গর্ভাবস্থায় রোজার সময় বিশেষ সতর্কতা
✔ ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
✔ ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (চা, কফি) এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি শরীরকে পানিশূন্য করে।
✔ ক্লান্ত বা দুর্বল অনুভব করলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
✔ মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা বা অন্য কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে রোজা ভেঙে ফেলুন।
গর্ভাবস্থায় রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার ও আপনার শিশুর সুস্থতাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।