29/09/2025
দুর্গা পূজার সময় জ্বীন-শয়তানের সক্রিয়তা বেড়ে যাওয়া আর আমাদের মুসলমানদের করণীয়:
ইসলামী আকিদা অনুযায়ী, জ্বীনরা মানুষের মতই আল্লাহর সৃষ্ট এক প্রজাতি। তাদের মধ্যে মুসলিমও আছে, কাফেরও আছে। কাফের জ্বীনরা শয়তানের অনুসারী এবং মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহর সাথে শরিক করা (শিরক) সবচেয়ে বড় গুনাহ। দুর্গা পূজা ও অন্যান্য মূর্তি-পূজা মূলত শিরকভিত্তিক কাজ। এই সময়ে চারদিকে গান-বাজনা, অপচয়, শিরক ও বিদআতের সমাহার হয়। ঠিক এই পরিবেশেই জ্বীন-শয়তান সক্রিয় হয়ে ওঠে, আর যাদুকররা (সাহির) ব্ল্যাক ম্যাজিকের মাধ্যমে মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করে।
রাসূল ﷺ সতর্ক করে বলেছেন:
“যে ব্যক্তি জাদু করে অথবা জাদুকরের কাছে যায়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
(সহীহ হাদীস, আহমদ)
শয়তানের কাজই হলো মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা ঢোকানো। পরিবারে ঝগড়া-বিবাদ লাগানো।শিশুদের ভয় দেখানো বা অসুস্থ করে তোলা। মানুষকে গুনাহে প্রলুব্ধ করা। যাদুকরদের সহযোগী হয়ে মানুষের ক্ষতি করা।এই সময়ে মানুষ যদি গাফেল হয়, তবে তারা সহজেই শয়তানের শিকার হতে পারে।
এসব কাজের মাধ্যমে তারা মানুষকে অশান্তিতে রাখে। আর উৎসব, মেলা, গান-বাজনা, শিরক এইসব পরিবেশে শয়তানরা আরও জোরদারভাবে কাজ করে।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:
“নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”(সূরা ইয়াসীন: ৬০)
তাই আমাদের করণীয় শিরক ও যাদুর ক্ষতি থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। কুরআন ও হাদিসে অনেক মাসনুন আমল বর্ণিত আছে যা মানুষকে জ্বীন-শয়তান ও ব্ল্যাক ম্যাজিক থেকে সুরক্ষা দেয়। আল্লাহর থেকে protection পাওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো তাঁর কাছে দোয়া করা। সূরা ফালাক ও সূরা নাসকে এজন্য আল-মু‘আউইযাতাইন বলা হয়। সকাল-সন্ধ্যার আজকার করতে ভুলে না যাওয়া।
ঘরে কুরআন তিলাওয়াত বেশী বেশী করা। ঘরে সূরা বাকারা পাঠ করলে শয়তান পালিয়ে যায়। নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত ঘরকে বরকতময় করে ও যাদুর প্রভাব ভেঙে যায়।
একজন মুসলমানের কর্তব্য হলো এ ধরনের কাজ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকা, নিজের ঈমান রক্ষা করা এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা। এই সময়ে পরিবেশে নানা রকম শিরক ও কুফরী কাজকর্ম হয়, তাই দুর্গা পূজা ও অশুভ শক্তির সক্রিয়তা বেড়ে যায়। মূর্তি পূজা, দেবদেবীর আরাধনা, এসবই ইসলামের দৃষ্টিতে শিরক। আল্লাহ তা’আলা স্পষ্টভাবে বলেছেন,“নিশ্চয়ই আল্লাহ শিরককে ক্ষমা করবেন না, তিনি যাকে ইচ্ছা অন্য সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।”
(সূরা আন-নিসা: ৪৮)
আমাদের মনে রাখতে হবে, একমাত্র আল্লাহই প্রকৃত রক্ষাকারী। মাসনুন আমল, নিয়মিত দোয়া ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমেই জ্বীন-শয়তান ও ব্ল্যাক ম্যাজিক থেকে নিরাপত্তা পাওয়া সম্ভব।
তাই আমাদের মুসলিমদের উচিত:
• এসমস্ত উৎসব থেকে দূরে থাকা
• আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া
• প্রতিদিন মাসনুন দোয়া ও আজকার পড়া
• সন্তান ও পরিবারকে আমল করানো
কারণ একমাত্র আল্লাহই প্রকৃত রক্ষাকারী।
Jabin