03/12/2025
বাচ্চার জন্য নিচের পরামর্শ মেনে চলি, হাসপাতাল-ঔষধ থেকে দূরে থাকি:
আপনার শিশুর সঠিক চিকিৎসার জন্য অবশ্যই 'শিশু চিকিৎসক' এর পরামর্শ নিন, অন্য কারো কাছে গিয়ে ভুল/অসম্পূর্ণ চিকিৎসা নিয়ে শিশুর ক্ষতি করবেন না।
➡️ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর জন্য পরামর্শঃ
শিশু বুকের দুধ খেলে বারবার বুকের দুধ খাওয়ান। শিশুর বয়স ৬ মাসের বেশি হলে খিচুরী এবং কাঁচা কলা ভর্তা, ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, রাইস স্যালাইন দিন। মিষ্টি খাবার, ফল, গরুর দুধ দিবেন না।
অতিরিক্ত বমি, জ্বর, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, খিচুনি অথবা নেতিয়ে পড়লে/কিছু না খেলে দ্রুত হাসপাতালে নিন।
বেশির ভাগ রোগী শুধুমাত্র খাবার স্যালাইন খেয়েই সুস্থ হয়, তাই ধৈর্য ধরে সঠিক নিয়মে স্যালাইন খাওয়াবেন।
➡️সুস্থ নবজাতক/সদ্যভূমিষ্ট শিশুর জন্য করণীয়ঃ
প্রথম এক ঘন্টার ভেতর মায়ের শালদুধ খাওয়াবেন। সর্বক্ষণ মায়ের কোলে রাখবেন। মধু, চিনি, পানি, কৌটার দুধ অথবা অন্য কিছু মুখে দিবেন না।
প্রথম ৬ মাস শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াবেন, প্রতিবার খাওয়ানোর পর সঠিক নিয়মে ঢেকুর তোলাবেন। মাঝে-মাঝে বলি করলে। ভয়ের কিছু নেই। প্রতিদিন ৫-৬ বার প্রস্রাব করে কিনা লক্ষ্য রাখবেন।
প্রতিদিন সকালে ২০ মিনিট করে ২ সপ্তাহ সকালের রোদ গায়ে লাগাবেন।
নিয়মিত টিকা দিবেন। শিশুর নাভীতে কিছু লাগাবেন না, নাভী শুকনা ও পরিষ্কার রাখবেন।
➡️শিশুর সর্দি-কাশি হলে করণীয়:
বয়স ৬ মাসের বেশী হলে মধু, তুলসি পাতার রস, হালকা গরম লেবু চা, আদা চা দৈনিক ৩-৪ বার দিবেন।
ঠান্ডা খাবার দিবেন না, ধূলোবালি/ঠান্ডার ভেতর নিবেন না।
বাসায় অন্য কেউ আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসা নিতে হবে এবং শিশুর কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
কিছুক্ষণ পরপর হাত সাবান দিয়ে ধুবেন, নাক মুছবার জন্য টিস্যু/নরম কাপড় ব্যবহার করবেন।
জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ২ সপ্তাহের বেশি কালি থাকলে অবশ্যই 'শিশু চিকিৎসক' এর পরামর্শ নিবেন।
➡️শিশুর বিকাশ এবং বৃদ্ধি সঠিকভাবে না হলে করণীয়ঃ
প্রথমেই মনে রাখবেন প্রতিটি শিশুই আলাদা। একটা শিশুর সাথে অন্য শিশুর যেমন মিল থাকতে পারে, অনেক কিছুর অমিল ও থাকতে পারে এবং সেটাই স্বাভাবিক।
শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য চিকিৎসকের প্রয়োজনীয়তা খুব কম। শিশু বাইরের খাবার, চকলেট, চিপস, বিস্কুট এটা-সেটা খেলে তার মুখের রুচি নষ্ট হয়ে যায়, পেটে গ্যাস হয়, পায়খানা নিয়মিত হয় না এবং তার জন্য শিশু বাসার খাবার খেতে চায়না এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়।
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বাসায় বানানো পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। দৈনিক আপনার শিশুকে দুধ, ডিম, মাছ, মাংশ, শাকসবজি এবং ফল খাওয়ান। খাওয়ার জন্য শিশুকে ৩০ মিনিটের বেশী জোর করবেন না। দৈনিক খাবারের মেন্যুতে পরিবর্তন আনুন, শিশুকে খেলাচ্ছলে খাওয়ান, খাবারটা শিশুর কাছে আকর্ষণীয় করুন। দৈনিক ৩ বেলা পর্যাপ্ত খাওয়ানোর পর মাঝে দুবার নাজ দিন, এক্ষেত্রে হালুয়া, ডিমের পুডিং, নুডুলস, সেমাই ইত্যাদি দেয়া যেতে পারে।
শিশুকে নিয়মিত কৃমির ঔষধ খাওয়াবেন। ওজন যেন অতিরিক্ত না হয় সেদিকে ও খেয়াল রাখাবেন।
শিশু সঠিক সময়ে বসা, দাঁড়ানো, হাটা শিখছে কিনা, কথা বলছে কিনা, অন্য শিশুদের সাথে মিশছে কিনা লক্ষ্য রাখবেন। সারাক্ষন শিশুকে মোবাইল, ট্যাব, টিভির সামনে বসিয়ে রাখবেন না, শিশুকে সময় দিন, তার সাথে কথা বলুন, খেলুন।
➡️শিশুর খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর উপায়ঃ
যা অবশ্যই করবেন: স্বাদের ভিন্নতার সঙ্গে শিশুকে পরিচয় করিয়ে দিতে হয় খুব ছোটবেলাতেই। ৬মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে শুধু খিচুরী নয়, বরং ভিন্ন ভিন্ন খাবার খেতে দিন। খেতে বসে ওর উপযোগী যেকোন খাবার ওর সামনে দিন যেমন মুড়ি, কেক, হালুয়া, পুডিং। শিশুকে নিজ থেকেই খাবার পছন্দ করার সুযোগ করে দিন। সবার সঙ্গে টেবিলে বসান, যে দেখবে অন্যরা কিভাবে খায়।
➡️যা অবশ্যই করবেন না। খাবার বেশী ভাজবেন না। জোর করবেন না। বরং প্রয়োজনে আরেকদিন চেষ্টা করুন। শিশুর খাবার যেন খুব গরম বা ঝাল না হয়। নতুন খাবার ধীরে ধীরে এবং অল্প পরিমাণে দেয়া শুরু করবেন। নাহলে খেতে গিয়ে ঐ খাবারের প্রতি ভীতি জন্মাবে। সে খাচ্ছে না দেখেই তার পছন্দের খাবার যেমনঃ চিপস, বিস্কুট, চকলেট দিয়ে দিবেন না।
©Dr.Tanvir Ahmed
Child disease and surgical care-BD