18/03/2025
সুখ কেবল আমাদের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে না—এটি নির্ভর করে আমরা কীভাবে জীবনকে দেখি তার উপর।
The Book of Joy বইতে দুই মহান আধ্যাত্মিক নেতা—দালাই লামা এবং আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু—তাদের অভিজ্ঞতা, দর্শন ও জ্ঞানের আলোকে সত্যিকারের আনন্দের সন্ধান করেছেন। তারা দুজন সাতদিনের জন্য দালাই লামার আশ্রমের একত্রিত হয়ে তারা জীবন, দুঃখ-কষ্ট, করুণা, ক্ষমাশীলতা এবং প্রকৃত সুখ নিয়ে আলোচনা করেন।
এই বইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো,
এটি কেবল ধর্মীয় বা দার্শনিক আলাপ নয়; বরং এতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণও উঠে এসেছে।
বইটিতে বলা হয়েছে:
আমাদের আনন্দে থাকার ক্ষমতা ততটা গভীরভাবে অধ্যয়ন করা হয়নি, যতটা আমাদের সুখ চর্চার ক্ষমতা নিয়ে গবেষণা হয়েছে। ১৯৭৮ সালে মনোবিজ্ঞানী ফিলিপ ব্রিকম্যান, ড্যান কোয়েটস এবং রনি জানফ-বুলম্যান একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রকাশ করেন, যেখানে দেখা যায় যে লটারি জিতেছেন এমন ব্যক্তিরা দুর্ঘটনায় চিরদিনের পঙ্গু হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি সুখী নন। এই গবেষণা এবং পরবর্তী গবেষণাগুলো থেকে ধারণা আসে যে মানুষের জীবনে একটি ‘সেট পয়েন্ট’ থাকে, যা তাদের সামগ্রিক সুখ নির্ধারণ করে।
পরবর্তীতে, মনোবিজ্ঞানী সোনজা লিউবোমিরস্কি তার গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, আমাদের সুখের মাত্র ৫০% নির্ধারিত হয় জিনগত বৈশিষ্ট বা স্বভাব দ্বারা। কিন্তু বাকি ৫০% নির্ভর করে আমাদের জীবনযাপন, মানসিকতা এবং অভ্যাসের উপর। বিশেষ করে, তিনটি অভ্যাস আমাদের সুখকে বাড়াতে পারে—
১️⃣ নেতিবাচক পরিস্থিতিকে ইতিবাচকভাবে দেখা ২️⃣ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ৩️⃣ উদারতা চর্চা করা
দালাই লামা এবং আর্চবিশপ টুটু এই তিনটি বিষয়কে সত্যিকারের আনন্দের মূল ভিত্তি হিসেবে দেখিয়েছেন।
এই বইটি আমাদের শেখায় যে, আনন্দ কেবল মুহূর্তের অনুভূতি নয়—এটি চর্চার মাধ্যমে অর্জিত মনের খোরাক। তাই, প্রতিদিন আমরা আনন্দ চর্চা করতে পারি—একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং দয়া ও উদারতা ছড়িয়ে দিয়ে।