16/07/2025
"আমি যতজনের সঙ্গে থাকি সবার সাথেই ওভারশেয়ার করি"
"Emotional Oversharing: Boundaries & Self-Awareness"
("নিজের সীমারেখা নির্ধারণ ও অতিরিক্ত শেয়ারিং নিয়ন্ত্রণ")
আমরা অনেক সময় এমন কিছু কথা বলে ফেলি, যা আসলে বলা উচিত ছিল না। এমন কিছু অনুভূতি, স্মৃতি কিংবা কষ্টের গল্প আমরা শেয়ার করে ফেলি এমন কারো সাথে, যার সাথে সেই মাত্রার সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। কথাগুলো বলে হয়তো হালকা লাগলেও, পরে মনে হয়—“আমি কি একটু বেশি বলে ফেললাম?” অথবা “ও আমার ব্যাপারে এত কিছু জানে, অথচ আমি ওর কিছুই জানি না।”
এটাই হলো Oversharing—যেখানে আমরা নিজের সীমারেখা না বুঝে এমন সব কথা বলি, যা হয়তো আমাদের দুর্বল করে ফেলে, অথবা যার মূল্য আমরা ঠিকভাবে দিইনি। অনেক সময় এটা হয় হঠাৎ করে কারো সাথে সংযোগ অনুভব করার তীব্র চেষ্টায়, কখনও মনে হয় কেউ যদি শুনে নেয়, বুঝে নেয়—তাহলেই হয়তো একটু ভালো লাগবে। কিন্তু সব কথা তো সবার জন্য নয়, তাই না?
যখন কেউ আমাদের সেই কথাগুলো গুরুত্ব না দিয়ে হালকা ভাবে নেয়, ব্যঙ্গ করে বা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়—তখনই Oversharing-এর কষ্টটা স্পষ্ট হয়। তখন মনে হয়, “নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখলেই হতো।”
নিজের কষ্ট, অভিজ্ঞতা, আবেগ—সবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেগুলো কাকে বলছি, কেন বলছি, এবং সেই মানুষটির সাথে আমার সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু—এই প্রশ্নগুলো খুব জরুরি। কারণ oversharing অনেক সময় আমাদের vulnerability কে অন্যের হাতে তুলে দেয়, যেটা তারা সবসময় যত্ন করে ধরে রাখে না।
তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন— আপনার অনুভূতি কি সে মানুষটির কাছে নিরাপদ? আপনি যা বলছেন, সেটা কি আপনি বলার জন্যই প্রস্তুত? এটা কি সত্যিই বলার সময়?
নিজেকে গুটিয়ে ফেলতে হবে না। শুধু শেয়ার করার সময় নিজের মানসিক নিরাপত্তার কথাটা একটু ভাবলেই হয়।
আমরা ছোট্ট একটা প্র্যাক্টিস করতে পারি-
আগামী ১ সপ্তাহে ১টা দিন ঠিক করি, যেদিন আমি কেবল ১-২টা কথা বলব নিজের সম্পর্কে, বাকিটা অন্যদের শোনার চেষ্টা করব।
জেরিনা আক্তার আঁখি
বিএসসি ইন সাইকোলজি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়;
এমএসসি ইন ক্লিনিক্যাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়;
এমএস ইন কাউন্সেলিং সাইকোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়;
কনসালটেন্ট সাইকোলজিস্ট, লাইফস্প্রিং।