22/06/2025
‼️বয়স ৪০ এর কোটায় হলে মহিলাদের কি কি বিষয়ের প্রতি যত্নশীল হতে হবে❓
৪০ বছর বয়সের পর মহিলাদের দেহে অনেক ধরণের শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তন শুরু হয় যা ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই বয়সে কিছু বিশেষ স্বাস্থ্যগত বিষয়ে নিয়মিত নজর দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।নিচে বিস্তারিতভাবে জানানো হলো:
1️⃣ হরমোনের পরিবর্তন ও মেনোপজ প্রস্তুতি:-
৪০-এর পর থেকে পেরিমেনোপজ শুরু হতে পারে, যা মেনোপজের পূর্ববর্তী সময়। এই সময় হরমোন (বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন) কমতে থাকে।এর ফলে দেখা দিতে পারে:অনিয়মিত পিরিয়ড,গরম অনুভব (hot flashes),ঘুমের সমস্যা,মুড সুইং।এইজন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পর্যাপ্ত ঘুম,স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং প্রয়োজনে গাইনোকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
2️⃣ হাড়ের স্বাস্থ্যের যত্ন (Osteoporosis প্রতিরোধ):-
ইস্ট্রোজেন কমে গেলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।এইজন্য ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে,দিনে অন্তত ১৫/২০ মিনিট রোদে থাকা,নিয়মিত ব্যায়াম করলে এই সমস্যা থেকে অনেকাংশেই পরিত্রাণ পাওয়া যায়।এছাড়া কোন জয়েন্টে ব্যথা বা অন্য কোন সমস্যায় অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের কাছে দেখাবেন।
3️⃣ হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়:-
মেনোপজের পর নারীদের হার্ট অ্যাটাক বা উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা বাড়ে।এইজন্য রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়মিত পরীক্ষা,কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া,প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম,ধূমপান ও অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলা উচিৎ।
4️⃣ ওজন নিয়ন্ত্রণ ও বিপাক হ্রাস:-
বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের মেটাবলিজম কমে যায়,ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।এইজন্য পরিমিত ক্যালোরি ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া,চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমানো,নিয়মিত শরীরচর্চা (কার্ডিও + স্ট্রেংথ ট্রেনিং) করার অভ্যাস রাখতে হবে।
5️⃣ মানসিক স্বাস্থ্য ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট:-
হরমোন পরিবর্তনের কারণে উদ্বেগ, হতাশা বা মন খারাপ থাকতে পারে।মেডিটেশন,ইয়োগা,গভীর শ্বাস প্রশ্বাস অনুশীলন এবং অবশ্যই নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী ইবাদত করলে এইসব সমস্যায় কম ভুগবেন।
6️⃣ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা:-
৪০ বছর পার হলে কিছু রুটিন চেকআপ খুব গুরুত্বপূর্ণ।যেমন:প্যাপ স্মিয়ার (৩ বছরে একবার) সার্ভিকাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং,
মেমোগ্রাম (২ বছরে একবার) স্তন ক্যান্সার শনাক্তে,ব্লাড সুগার (ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং),
লিপিড প্রোফাইল (কোলেস্টেরল লেভেল দেখার জন্য),থাইরয়েড ফাংশন (হরমোনের ভারসাম্য দেখার জন্য),ভিটামিন-ডি লেভেল টেস্ট।
7️⃣ ঘুম ও পানি পান:-
প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি।দিনে অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করা উচিত।
8️⃣ পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন:-
বেশি করে শাকসবজি, ফল, বাদাম, মাছ খান,কম তেলে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন,আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও বি-কমপ্লেক্স ভিটামিনে গুরুত্ব দিন।
৪০ পেরোনো মানেই বয়স বেড়ে যাওয়া নয় বরং নিজের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়ার সময়।আপনি যদি এই সময় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলেন তবে ৫০/৬০ বছর বয়সেও আপনি থাকবেন সুস্থ ও আত্মবিশ্বাসী।
সর্বোপরি,নিজেকে ভালোবাসুন নিজেকে ভালো রাখুন তাহলেই আপনি আপনার আশেপাশে প্রিয় সবাইকে ভালো রাখতে পারবেন এবং যার ফলে আপনি নিজেও ভালো থাকবেন।সব কাজের ফাঁকে নিজের জন্য প্রতিদিন আলাদা করে অন্তত ১ ঘন্টা সময় রাখুন যেই সময়টা শুধু আপনার,যা ভালো লাগে সেটাই করবেন।
©️ Farjana Sharmin Sonia
(CRP,DU),MPH(NSU).
MD and Chief physiotherapist.
Prince Physiotherapy and Health Care Center.
H/N-24,R/N-1,Block-kha,Shekertek,Mohammadpur.
Mobile No- 01400400037.
#ফিজিওথেরাপি