02/07/2025
নিশু (ছদ্মনাম) মা হয়েছেন তিন মাস হলো। ঘরে নতুন অতিথি এসেছে, সবাই ব্যস্ত তাকে ঘিরে। অতিথিরা আসছে, সেলফি তুলছে, আদর করছে শিশুটিকে।
কিন্তু নিশুর মুখে সেই আগের হাসি নেই। চুপচাপ, মনমরা, মাঝে মাঝে কান্নায় ভেঙে পড়েন হঠাৎ করেই।
ঘুম ঠিকমতো হচ্ছে না, খাবারে রুচি নেই, নিজের দিকে একটুও খেয়াল নেই। সবাই ভাবে, "শিশু সামলাতে গিয়ে হয়তো একটু বেশি ক্লান্ত। সময় গেলে ঠিক হয়ে যাবে।"
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিশুর ভিতরের অন্ধকার যেন আরও ঘন হয়ে উঠছে। একদিন হঠাৎ একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় — যা কেউ আশা করেনি, যা পরিবারের সবাইকে স্তব্ধ করে দেয়।
আমরা অনেক সময় খবরের কাগজে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখি মা সন্তানকে ফেলে দিয়েছে, নিজেকে আঘাত করেছে, অথবা করিয়েছে।
কখনও কখনও আত্মহ*ত্যা কিংবা সন্তানের প্রতি সহিংসতা — এমন অপ্রত্যাশিত অপরাধের আড়ালে লুকিয়ে থাকে এক ভয়ংকর, অথচ নিরব ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন, যার নাম Postpartum Depression।
এই গল্পটা শুধুই নিশুর নয়, আজকের সময়ে সন্তান লালন-পালন যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং।
শিশুকাল থেকে শুরু করে কৈশোর পর্যন্ত—প্রতিটি ধাপে মায়েদের নানা মানসিক ও শারীরিক চাপে পড়তে হয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবচেয়ে দরকার পরিবারের সংবেদনশীলতা, সহানুভূতি এবং সাপোর্ট।
আমরা যারা পরিবারের সদস্য, আমাদের উচিত এইসব ছোট ছোট পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখা।
কোনো মা যদি হঠাৎ মনমরা হয়ে যান, কান্না করেন, আগের মতো না থাকেন কিংবা নিজেকে আড়াল করে রাখে—তবে তা অবহেলা না করে তাকে সহানুভূতির সাথে বোঝার চেষ্টা করা দরকার।
- তাকে সাহস দিন কথা বলার, সময় দিন, পাশে থাকুন।
- প্রয়োজন মনে হলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
Postpartum Depression লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার ঘরেই। আপনার মা, বোন, স্ত্রী, বা ঘনিষ্ঠ কেউ হয়তো লড়ছেন চুপচাপ।
একটু ভালোবাসা, একটু যত্ন, একটু সচেতনতা হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটা জীবন — একটা পরিবার।