29/04/2025
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে হঠাৎ করেই এক টাকার লাল কয়েন নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। অজানা ও অদ্ভুত কারণেই হু হু করে বাড়তে শুরু করে এক টাকার সোনালি কয়েনের দাম। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এ ধাতব মুদ্রাটি বিক্রি হতে শুরু করে ৫০-২০০ টাকায়। সারা দেশে বহু সংঘবদ্ধ চক্র এক টাকার সোনালি কয়েন কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ফলে স্থানীয় দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক টাকার সোনালি কয়েনের চরম সঙ্কট দেখা দেয়। যে যেভাবে সম্ভব এক টাকার লাল কয়েন সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ও মাজারের দানবাক্স খুলে সংগ্রহ করা হয় এ কয়েন। মাটির ব্যাংক ভেঙে খুঁজতে শুরু করে কোথায় আছে লাল কয়েন। স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সবাই যে যার মতো ফোনে ও ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে সোনালি কয়েন সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। রিকশাওয়ালা ও দোকানিরা ২০-৩০ টাকার ভাড়া কিংবা সওদার পরিবর্তে দাবি করেন এক টাকার লালচে কয়েন। কে বা কারা কী কারণে এ কয়েন সংগ্রহ করছে তা বলতে পারছে না কেউ। তবুও দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে লাল কয়েনের কারিশমা। প্রশাসনও লাল কয়েন দৌরাত্ম্য রুখতে অসহায়! রহস্যের জট খোলার আগেই হাট-বাজার থেকে এক টাকার লাল কয়েন গায়েব। যারা লাল কয়েন বিক্রি করছেন তারাও জানেন না লাল কায়েনের মূল্য কত। লাল কয়েনের ক্রেতারাও জানেন না এ কয়েন সংগ্রহ করে তারা কোথায় বিক্রি করবেন। কয়েন নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হওয়ার আগে চিলে কান নেয়ার গল্পের মতো করে রটে যায় সারা দেশে। কানাঘুষা চলতে থাকে, লাল কয়েন দিয়ে স্বর্ণে ভেজাল দেয়া হয়। ফলে স্বর্ণের খাদ হিসেবে লাল কয়েনের চাহিদা তুঙ্গে। তাই মুনাফার লোভে লোকজন যে যেভাবে পারে লাল কয়েন সংগ্রহ করতে শুরু করে দেয়। আর এভাবেই লাল কয়েন সারা দেশে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়। কিন্তু পুরো ব্যাপারটি ছিল মিথ্যা এবং যারা উচ্চমূল্যে লাল কয়েন সংগ্রহ করেছেন তাদের কেউই তা অন্যত্র বিক্রি করতে পারেননি।
-সংগৃহিত