16/09/2025
আপনার ঔষধের মূল্য আপনিই বাড়াচ্ছেন!
বাংলাদেশে এখন এক ভয়াবহ প্রবণতা তৈরি হয়েছে self-medication বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ঔষধ সেবন। সামান্য জ্বর, সর্দি-কাশি, হালকা সংক্রমণ বা upper respiratory tract infection হলে আমরা অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে সরাসরি ফার্মেসি থেকে ঔষধ কিনে খেয়ে ফেলি। অনেক সময় বন্ধুর পরামর্শ বা দোকানদারের কথাই হয়ে ওঠে আমাদের “প্রেসক্রিপশন।” অথচ এই অভ্যাসের ভেতরে লুকিয়ে আছে এক ভয়ংকর পরিণতি antibiotic resistance বা antimicrobial resistance (AMR)।
একসময় যেখানে একটি সাধারণ third-generation cephalosporin (যেমন Ceftriaxone, Cefixime) দিয়েই রোগ সেরে যেত, এখন অনেক ক্ষেত্রেই এগুলো কাজ করছে না। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে Escherichia coli (E. coli) জীবাণুর প্রায় ৯৮% isolate এখন multi-drug resistant (MDR)। এর মানে হলো প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক আর কার্যকর হচ্ছে না, ফলে রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে fifth-generation cephalosporin (যেমন Ceftaroline), carbapenem group (Meropenem, Imipenem) বা এমনকি Reserve group antibiotics যেমন colistin। এসব ওষুধ অনেক বেশি দামী, জটিল এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও মারাত্মক।
প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি হচ্ছে নির্বিঘ্নে। জরিপে দেখা গেছে, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ফার্মেসি দোকানদার প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করেন। অধিকাংশেরই নেই পর্যাপ্ত জ্ঞান, তবুও তারা মানুষের হাতে তুলে দেন broad-spectrum antibiotics যেমন Ciprofloxacin, Amoxiclav, অথবা Azithromycin। অনেকে আবার অর্ধেক কোর্স খেয়ে ঔষধ বন্ধ করে দেন, যাকে বলে incomplete antibiotic course। এর ফলে জীবাণু পুরোপুরি ধ্বংস না হয়ে শরীরে থেকে যায় এবং তৈরি করে drug-resistant strain।
এর পরিণতি ভয়াবহ। একজন ব্যক্তি যখন এভাবে misuse of antibiotics করেন, তখন তার শরীরে গড়ে ওঠা resistant bacteria কেবল তার জন্য নয়, বরং তার পরিবার ও সমাজের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এই জীবাণুগুলো সহজেই এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩২,০০০ মানুষ সরাসরি AMR এর কারণে মারা যাচ্ছেন। পাশাপাশি hospital stay lengthened, treatment cost escalated, এবং morbidity-mortality rate বেড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ভাবুন তো, আগে যেখানে ২০০-৩০০ টাকার ঔষধে সেরে যেত আপনার সংক্রমণ, এখন সেখানে ২০০০-৫০০০ টাকার ঔষধ ছাড়া ফল পাওয়া যাচ্ছে না। নিজের অজ্ঞতা ও অসচেতনতার কারণেই আপনি নিজেই নিজের drug cost বাড়িয়ে তুলছেন।
Antibiotic কোনো সাধারণ painkiller নয়, এগুলো জীবন রক্ষাকারী ঔষধ। এগুলো ভুলভাবে ব্যবহার করলে একসময় আপনার শরীরে থাকা normal flora থেকে শুরু করে pathogenic bacteria পর্যন্ত এমনভাবে রেসিস্ট্যান্ট হয়ে উঠবে যে তখন আর কোনো ঔষধই কাজে লাগবে না। একে বলে post-antibiotic era যেখানে ছোট্ট সংক্রমণও মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাই সচেতন হোন। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না, অসম্পূর্ণ কোর্স কখনোই করবেন না, আর ফার্মেসির পরামর্শে কখনোই ওষুধ খাবেন না। মনে রাখবেন আজকের একটুখানি অসচেতনতা আপনাকেই কালকে আরও দামি, জটিল ওষুধের দিকে ঠেলে দেবে।