Islamic Matrimony fb page

Islamic Matrimony fb page way to get married

03/12/2025

রিলেশনে জড়ানো বা কাউকে পছন্দ করা প্রতিটি ছেলে-মেয়ের জন্য গল্পটা পড়া আবশ্যক মনে করি।

ক্লাস নাইনে থাকতে আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম, শান্তশিষ্ট, পড়াশোনায় ফার্স্টক্লাস ছেলেটার সাথে আমি রিলেশনে জড়িয়ে পড়ি।
প্রপোজ আমিই তাকে করেছিলাম। সে আমার প্রপোজাল গ্রহণ করবে, আমি এটা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারতাম না।

কিন্তু কীভাবে যেন সে আমার প্রপোজাল গ্রহণ করে নেয়। ওর মতো ছেলেকে প্রমিক হিসেবে পাওয়াও কম সৌভাগ্যের না। সবদিক থেকেই ও পার্ফেক্ট ছিল। সম্পর্ক ভালোই চলছিল।

এসএসসি পর ও তাবলীগে চল্লিশ দিনের জন্য চলে যায়। তাবলীগ থেকে ফিরে এসে ও কেমন হুজুর টাইপের হয়ে যায়। তখন ও আমাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয়, সে আর এই রিলেশন কন্টিনিউ করবে না। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সে এই সম্পর্ক ছিন্ন করছে।

ব্রেকআপের পর আমি মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙে পড়ি। তার সাথে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করি। কিন্তু কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারি নি। তখন আল্লাহ আমাকে হেদায়েত দান করেন। আমি ধীরে ধীরে পূর্ণ দ্বীন মানতে শুরু করি।

হেদায়েত পাওয়ার পর আমি আরও বেশী দুর্বল হয়ে পড়ি তার প্রতি। আমি প্রতিটি দোয়াতেই আল্লাহর কাছে তাকে হালালভাবে চাইতাম। লাগাতার দুই বছর বেশী আমি আল্লাহর কাছে তাকে চেয়েছি।
দোয়া কবুলের কোনো মুহূর্তকেই তাকে চাওয়া থেকে বাদ রাখি নি। আমার দোয়ার বড় একটি অংশ হয়ে গিয়েছিল সে।

আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করলেন। ও অনার্সে ভর্তি হবার আগে আমার পরিবারে পারিবারিকভাবে প্রস্তাব পাঠাল। আমার পরিবার প্রথমে রাজি হয় নি।

আম্মাকে আকারে-ইঙ্গিতে বুঝালাম, এই বিয়েতে আমি কতটা আগ্রহী। সাথে আল্লাহর কাছে আরও বেশী করে দোয়া করতে লাগলাম। প্রায় দু’মাস পর আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করলেন। আমাদের বিয়ে হয়ে গেল।

বিয়ের পর কিছুদিন সবকিছু ভালোই চলছিল। একদিন ও হাতেনাতে পর্নোগ্রাফি দেখা অবস্থায় ধরা পড়ল। আমি তাকে এই অবস্থায় আবিষ্কার করে জাস্ট স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ও আমার কাছে মাফ চাইল।

ওয়াদা করল, আর কোনোদিনই এসব দেখবে না। দীর্ঘদিনের অভ্যাস হওয়ায়, বিয়ের পরও মাঝে-সাঝে দেখে ফেলত। আমি নির্বাক রয়ে তাকে বিশ্বাস করলাম।

আমি নিজে মোবাইল প্রয়োজন ছাড়া ইউজ করতাম না। তিনি আমাকে একটি বাটন ফোন কিনে দিয়েছিলেন। আমার কোনো প্রয়োজন পড়লে সেই মোবাইল দিয়েই কাজ সেরে নিতাম। একদিন কৌতুহলবশত তার মোবাইল হাতে নেই, ও ওয়াশরুমে যাবার পর। ঠিক তখনই একটি মেসেজ নোটিফিকেশন আসে। আমি মেসেজটি পড়ে দ্বিতীয়বারের মতো স্তব্ধ হয়ে যাই।

বিশ্বাসের প্রাচীর পুরোটাই ভেঙে পড়ে। ওয়াটস আপে মেসেজ এসেছিল। আমি মেসেজে ক্লিক করি সাথে সাথে। তখন বুঝতে পারি ও ওয়াট'স আপে লক করে রেখেছে। ও ওয়াশরুম থেকে বের হলে আমি তাকে খাবার দেই। খাবার খেয়ে যখন রেস্ট নিতে যায়, তখন তাকে 'মেসেজটি কার ছিল?' জিজ্ঞেস করে।

ও সাথে সাথেই রেগেমেগে আগুন হয়ে যায়। আমার সাথে চিল্লাপাল্লা করতে থাকে, কেন আমি ওর পারমিশন না নিয়ে তার মোবাইলে হাত দিয়েছে। অল্প সময়ের মাঝেই আমাদের ঝগড়াঝাটি অনেক বড় হয়ে যায়।

ও আমার গাঁয়ে হাত তোলে। এরপর কিছুদিন আমি আমার বাড়িতে থাকি। পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিমাংসা হয়। আমি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসি।

কিন্তু এরপর থেকে তার আসল রূপ
বেরিয়ে আসে। আমার সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ সে শুরু করে।

আমি তার মাঝে দ্বীনদারিতার ছিটেফোঁটাও খোঁজে পাচ্ছিলাম না। তাকে আমি বুঝানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করলাম। তাবলীগে যাবার জন্য অনেক অনুরোধ করলাম। এতে সে আরও বেশীই খেঁপে গেল। সে-রাতেই আমাকে ও তালাক দিল।

তালাকের দু'বছর পেরিয়ে গেছে। জীবন যে কত জটিল আর কঠিন হতে পারে, এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।

আল্লাহর প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। আমি নিজের দোষেই মরেছি। আমি যদি আল্লাহর কাছে নির্দিষ্ট করে তাকে না চেয়ে দ্বীনদার, গায়রতবান কাউকে দোয়ায় চাইতাম, তাহলে হয়তো আজ এই আফসোস করতে হত না।

লেখায়: Wafi Khalil

( সংগৃহীত )

02/12/2025

এক ভাই এর থেকে শুনলাম বিয়ের পর তার বউকে দেখে প্রথম রিয়েকশন কেমন ছিল।

সেই ভাই বলল, প্রথম যখন আমি আমার বউকে দেখি। তাকে সালাম দিয়ে খাটের উপর তার সামনে গিয়ে বসলাম।

মন ভরে তার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কি অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছিল আমার ভিতর।

কী এক প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছিল আমার ভিতর। সামনে বসা মেয়েটা আমার বউ।

সারা জীবন ভাবতাম আল্লাহ আমার জন্য কেমন মেয়ে বউ হিসাবে লিখে রেখেছে। সামনের এই মেয়েটাই সেই মেয়ে, যাকে আল্লাহ আমার জন্য লিখে রেখেছে। আমার সঙ্গী হিসাবে বাছাই করেছে।
আমার জন্য রিযিক করে দিয়েছে। তার দেহ আমার জন্য হালাল করেছে, আমার দেহ তার জন্য।

আমি শুধু তাকিয়ে দেখলাম তাকে। আমার বউকে। সারা দুনিয়ায় কোটি কোটি মেয়ের মধ্যে এই মেয়েটা আমার হলো।

আমি অবাক হয়ে দেখলাম। এই মেয়েটা আমারই একটা অংশ। এই মেয়েটার জন্য আমার অনেক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুনিয়াতে কোটি কোটি মেয়ে, অথচ সামনে বসা মেয়েটা আমার বউ। যাকে ছুঁলে আল্লাহ্ খুশি হবেন। যাকে খাইয়ে দিলে নবীজির সুন্নত পালনের সোয়াব হবে।

আমার সুখের দায়িত্ব মেয়েটার প্রতি, মেয়েটার সুখের দায়িত্ব আমার প্রতি। মেয়েটাকে এখন থেকে বউ বলে ডাকব। ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে।

আমার বউ কেমন সুন্দর, কতটুকু সুন্দর সেসব মাথাতেই আসছে না। শুধু মাথায় ঘুরছে, সামনের মানুষটা আমার। আমার মানুষ...(সংগ্রহীত)

বি:দ্রঃ আগে ভাবতাম যে আমার স্ত্রী হবে তার চেহারা, গঠন না জানি কেমন হবে। তবে এখন ভাবি সে যেমনি হোক তবুও সে আমার স্ত্রী হবে। তার বাহ্যিক সৌন্দর্য্যকে আমি মূল্যায়ন করি নাহ্, আমি ভাবি সে যেমনি হোক সে শুধু আমার, ব্যাস্ এই কারণই যথেষ্ট তাকে ভালোবাসার!😌🌸

সংগৃহীত

30/11/2025

*লালবাগের নন-বাঙালিদের বিয়ের গল্প —
স্মৃতি, সংস্কৃতি আর এক হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্যের আখ্যান*

লালবাগে আমার বড় হওয়া—
যেন দুই সংস্কৃতির মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে থাকা এক মায়ার ঘর।
আমাদের বাড়িতে সবসময় ৩–৪টি বিহারী/নন-বাঙালি পরিবার ভাড়ায় থাকতেন।

আমার বাবা-শ্বশুর—দুজনেই ওদের ভীষণ পছন্দ করতেন;
কারণ ওরা পর্দা মেনে চলতেন, নামাজে কড়া সুন্নি নিয়ম মেনে চলতেন

আর ছিলেন মুহাজির—বিচ্ছেদের মাটিতে গড়ে ওঠা এক দৃঢ়, সংহত কমিউনিটি।

ধনী–গরিব—সবাই একইভাবে জীবন যাপন করলেও
ওদের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো ছিল আমার ছোটবেলার সবচেয়ে রঙিন পাঠ।

সরলতা, পর্দা, আন্তরিকতা—এমনভাবে মিলেমিশে থাকতো,
আজও মনে করলে মনে হয় যেন এক পুরনো নকশিকাঁথার নরম গন্ধ ভেসে আসে।

*দাওয়াত ছিল মুখের কথা—কাগজের নয়*

বিয়ের কার্ডে টাকা খরচ করাকে তারা অপচয় ভাবতো।

মুখে দাওয়াত, কখনো ছোট একটা কাগজে দিন–তারিখ লিখে দেওয়া—
এতেই সবার কাজ হয়ে যেত।

*দাওয়াত পৌঁছাতো “হাওয়া” হয়ে*

বর–কনের বাবা-মাকে আলাদা ছুটে গিয়ে দাওয়াত দেওয়া বাধ্যতামূলক না।
কমিউনিটি নিজেই জানিয়ে দিত—
“ফলানার বিয়ে, অমুকদিন।”
সম্পর্ক ছিলো এমন—একজনের খবর মানেই সবার খবর।

*আলোর বাহার নয়, কেবল ১০–১২টি লাইটই যথেষ্ট*

বাঙালিদের মতো পুরো বাড়ি–রাস্তা লাইটিং নয়।
গেটে সামান্য লাইট ঝুলিয়ে দিলেই বুঝা যেত—
“এই বাড়িতে আজ বিয়ে।”
সরলতা—কিন্তু কী যে সৌন্দর্য!

*কমিউনিটি হল নয়—দুটি বাড়িতে দুই জগত*

মহিলাদের জন্য একটি বড় বাড়ি, পুরুষদের জন্য আরেকটি।
এটাই ছিল তাদের অনুষ্ঠানস্থল।
একে অপরের ঘরের দরজা খুলে দিয়ে—
বিয়ে হয়ে যেতো পরিবারের ভেতর পরিবারের মতো।

*আন্তরিক মেহমানদারি—অল্পে সুখের প্রাচুর্য*

আইটেম কম—কিন্তু গরম গরম, খাঁটি, মজাদার।
একটি তান্দুরি/নান/রুমালি রুটিকে ৪ ভাগ করে পরিবেশন করা—
নিচ থেকে একজন বাবুর্চি দিচ্ছে,
একটি ছোট মেয়ে দৌড়ে ওপরে নিয়ে যাচ্ছে,

তারপর “গারাম রোটি, গারাম রোটি”—
ধোঁয়া ওঠা রুটি সবার প্লেটে…
আহ্‌ সেই সরল স্বাদের স্মৃতি আজও মুখ ভরিয়ে দেয়।

*সেবা ছিলো সবার—ডেকোরেটরের নয়*

ওদের বিয়েতে খাবার পরিবেশনের কাজে
কোনো ভাড়া করা বয়/খানসামা লাগতো না।

সমগ্র কমিউনিটি—ছেলে, মেয়ে, কিশোরী, এমনকি ছোট্ট বাচ্চারাও—
দৌড়াদৌড়ি করে সব সামলাতো।
দেখতাম, যেন মুক্তো-পরা গোলেমানরা
এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে ছুটে বেড়াচ্ছে।

*সম্পূর্ণ পর্দা—সৌন্দর্য ছিলো সুরক্ষিত*

পুরুষ–মহিলা কারো সঙ্গে কারো মুখোমুখি দেখা হতো না।
সব লেনদেন পর্দার আড়ালেই।
তবুও অনুষ্ঠান ছিলো প্রাণময়, সাজসজ্জায় ঝলমলে।

প্রতিটি নারী—হোক ৬ বছরের বাচ্চা বা ১০০ বছরের বুড়ি—
জড়ি-চুমকি, আফসানের কাজ,
হাতভরা চুড়ি, লম্বা বেণী, মেহেদী, মাথায় ফুল…
পর্দার ভেতর যেন রঙের উচ্ছ্বাস।

বুড়ো মহিলাদেরও সাদা চুল নেই—
সব মেহেদিতে রাঙানো।

ওদের পাশে দাঁড়ালে নিজেকে ফকির লাগতো—
হাহাহা, সত্যি বলছি।

*সাজসজ্জার দর্শন—হালাল সৌন্দর্য*

ওরা বলতো,
“সাজা হারাম না—হারাম হলো বেপর্দা সাজ।”
তারা সাজতো মাহরামদের জন্য,
নিজেদের জন্য,
পর্দার ভেতর এক নারীবাগানের মতো সুবাস ছড়িয়ে।

সাজ ছিলো ইবাদতের মতো পরিচ্ছন্ন—
চোখে অহংকার নয়,
মুখে লজ্জাশীল উচ্ছ্বাস।

*একতার শক্তি—মুহাজিরদের অন্তরবন্ধন*

কারো বিয়ে মানেই সবার দায়িত্ব।
ড্রেস, পর্দা, চাদর, পান্জাবি—
সব মিলেমিশে সেলাই করে দিতো।
রান্নাবান্না, ঘর সাজানো—একজন নয়,
একটি গোটা কমিউনিটি মিলে করতো।

*যৌতুক নয়—কেবল কাপড় ও গয়না*

খাট–ফ্রিজ–টিভি পাঠানো তো ভাবনাতেই ছিলো না।
তারা বলতো:

“মেয়ের সম্মান জামাইয়ের ঘর সাজাতে নয়।”

তবে ১১/৫১/১০১ জোড়া কাপড়
এবং কয়েক সেট গয়না—
এটা ছিলো আনন্দের প্রতীক,
জাঁকজমক নয়—সংস্কৃতির অংশ।

*বড় গিফট নয় ছোট্ট টোকেন*

গিফট মানে জিনিস নয়—সহযোগিতা।
বিয়ে শুরুর আগেই সবাই যেভাবে পারে সাহায্য করতো;
অনুষ্ঠানে দিতো মাত্র ১১ টাকা।
টাকার অংক ছোট ছিল—
কিন্তু ভালবাসার পরিমাণ আকাশসম।

*শেষ কথাটি খুব কষ্টের কিন্তু সত্য*

আমরা ওদের ভালো দিকগুলো খুব কম নিলাম।

বরং তারা ধীরে ধীরে আমাদের মতো হয়ে গেল—
পর্দা কমলো, জাঁকজমক বাড়লো,
সরলতা হারালো, ব্যয় বাড়লো।

কখনো কখনো মনে হয়—
যে সংস্কৃতিতে আমি বেড়ে উঠেছি
তা আস্তে আস্তে বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে।

তবু আলহামদুলিল্লাহ,
আমার ছেলের বিয়েতে আমি সেই পুরোনো সৌন্দর্যটাকে
আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি—
পর্দা, সরলতা, আন্তরিকতা,

আর একসময়ের নন-বাঙালি মুহাজির সংস্কৃতির সৌম্য রঙগুলি।

সংগৃহীত

30/11/2025

✍️✍️সম্মানিত একজন শিক্ষিকা বোন বলেন, আমি স্কুল থেকে ফিরে রান্নাঘরের কাজ শেষ করে বের হতে প্রায় অর্ধ রাত হয়ে যায়।
একদিন আমার ভাই এসেছিল।
সে এসব দেখে বলল, আমি তো সবসময়ই তোমাকে রান্নাঘরে দেখি!

আমি বিরক্তির সুরে বললাম, তাহলে কেন তুমি লাইলাতুল কদরে আমার জন্য দোয়া কর না যে, আল্লাহ যেন আমাকে রান্নাঘরের জ্বালা থেকে মুক্তি দান করেন!

এই বলে আমি কিছু সময় চুপ রইলাম কিন্তু মাথায় ইমাম আহমাদ (রাহি)-এর ঘটনাটি ঘুরপাক খেতে শুরু করল। তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন, "হে আল্লাহ! আমাকে হাদিস হিফজ করার মতো সময় দাও।"

কিন্তু তিনি আফিয়াতের কথা বলতে ভুলে যান। ফলে তিনি সুযোগ তো পেয়েছিলেন তবে তা বন্দি অবস্থায় জেলখানায়। তাই তো কেউ যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাইবে তার তো আফিয়াত ও উত্তম বস্তুটি চাওয়া উচিত।

তাই ঝটপট করে ভাইকে বললাম, "দেখ, আমার রান্নাঘরের ঝামেলা থেকে মুক্তির দোয়া যদি তোমার করতেই হয়, তবে এই দোয়া করবে, যে আল্লাহ যেন আমাকে আফিয়াতের সাথে মুক্তি দান করেন। "
.
পরেরদিন ছাত্রীদেরকে এই বিষয়টি আমি বুঝিয়ে বলছিলাম এবং সতর্ক করছিলাম।৷ তাদেরকে ইমাম আহমাদের গল্পও শুনালাম।

তাদের মধ্য থেকে এককজন ছাত্রী দাঁড়িয়ে পড়ল এবং বলা শুরু করল, উস্তাদ! আমাদের বাড়ির পাশে এক মহিলা আছে। আমি তাকে চিনি। সে সবসময় দোয়া করেন,

" হে আল্লাহ! আমাকে বিনা পরিশ্রমে ঘরে বসে বসে তিন মিলিয়ন টাকার মালিক বানিয়ে দাও। "

সে যেকোন সম্মানিত জায়গায় যেতেন বা যেকোন বরকতময় রজনীতে এই একি দোয়া করতেন, " তিন মিলিয়ন টাকা বিনা পরিশ্রমে ঘরে বসে বসে। "

উস্তাদ, আল্লাহর শপথ! এভাবে দোয়া করার ফলে কিছুদিন পর তার দোয়া অনুযায়ী ৩ মিলিয়ন টাকা ঘরে বসে বসে কাছে তো আসল কিন্তু-----

কিন্তু কি?!

কিন্তু ম্যাডাম, তার যেহেতু এ পরিমাণ টাকা কামানোর যোগ্যতা ছিল না। আর তার দোয়া ছিল তার লাগবেই। তাই তো তার ছেলেকে যখন কিছু ব্যক্তি হ**ত্যা করে তার দিয়াত হিসেবে সে ৩ মিলিয়ন পেয়ে যায়।

উস্তাদ- এইজন্যই আমি তোমাদেরকে সতর্ক করেছি। অর্থাৎ যখন দোয়া করবা তখন আফিয়াত ও খায়েরও চাইবা।

যদি সম্পদ চাও তাহলে বলবা, 'হে আল্লাহ! আমাকে এতটুকু সম্পদ দেন যেন সে সম্পদ আমার দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়াত ও কল্যাণময় জীবন কাটানোর জন্য যথেষ্ট হয়।'

যদি পাত্র/পাত্রী কামনা কর তাহলে বলবা, 'হে আল্লাহ! আমাকে এমন ভাল ছেলে/মেয়ে মিলিয়ে দিন যাকে পেয়ে আমি দুনিয়া ও আখিরাত আফিয়াত এবং কল্যাণের সাথে কাটিয়ে দিতে পারি। এবং সে আমার চক্ষু শীতলকারী হওয়ার পাশাপাশি আমার সাহায্যকারীও হতে পারে।'

– শায়েখ রাতিব নাবুলুসী (হাফি)
অনুবাদ - আব্দুর রহমান

[আফিয়াত = নিরাপত্তা, সুস্থতা ইত্যাদি।
খায়ের = কল্যাণ, উত্তম ইত্যাদি।]

30/11/2025

যেভাবে মনের মানুষকে খুঁজে পেয়েছিলেন সালাহুদ্দীনের বাবা!

নাজমুদ্দীন আইয়ুব (রহ.)। সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবীর (রা.) বাবা। তার হাতে তিকরিতের শাসনভারের গুরুদায়িত্ব। কিন্তু বিয়ের বয়েস পেরিয়ে যাচ্ছে, তবুও বিয়ের নাম-গন্ধ নেই। এটা দেখে ভাই আসাদুদ্দীন শিরকুহ চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
— কিরে বিয়েটা করবে না?

— মনমতো পাত্রী পাচ্ছি না তো ।

— আমি পাত্রী দেখবো তোমার জন্যে?

— পাত্রীটা কে হবে শুনি?

— মালিক শাহের মেয়ে অথবা নিযামুল মুলকের মেয়ে?

— নাহ, তারা আমার কাঙ্খিত পাত্রী নয় ।

— তোমার কাঙ্খিত পাত্রীর বৈশিষ্ট্য কী বলো তো শুনি।
— আমি চাই একজন সুশীলা স্ত্রী, যে আমার হাত ধরে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। আমাকে একটি নেক সন্তান উপহার দিবে। সে সন্তানকে যথাযথ লালন-পালন করে বড় করবে। বড় হয়ে সে ছেলে হবে একজন দুর্দান্ত ঘোড়সওয়ার, সাহসী মুজাহিদ। আরও বড় হয়ে যে মুসলমানদের জন্যে বায়তুল মুকাদ্দাস ফিরিয়ে আনবে।
দুই ভাইয়ে যখন কথা হচ্ছিল তখন তারা ছিলেন তিকরিতে (ইরাকের একটি শহরে)। জেরুসালেম থেকে অনেক অনেক দূরে। বায়তুল মুকাদ্দাস ছিল ক্রুশেডারদের হাতে। কিন্তু নাজমুদ্দীনের তনুমন পড়ে ছিল আল আকসার পানে। এমনকি বিয়েটা পর্যন্ত স্বপ্নের জড়িয়ে ফেলেছিলেন। আসাদুদ্দীন ভাইয়ের কথায় আশ্বস্ত হতে পারলেন না।
— তুমি যেমন কনের আশায় বসে আছো, ইহজীবনে তেমনটা পাবে কিনা আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে রে!

— যে ইখলাসের সাথে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যে কোনো নিয়ত করে, আল্লাহ তাকে তা দিয়ে দেন।

উক্ত ঘটনার কয়েক দিন পর, নাজমুদ্দীন তিকরিতেরই এক শায়খের মজলিসে বসে আছেন। কথা বলছেন। এমন সময় এক যুবতী এসে পর্দার আড়াল থেকে শায়খকে সালাম দিল। শায়খ সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তোমার জন্যে যে পাত্রটা পাঠিয়েছিলাম, তাকে ফিরিয়ে দিলে কেন? সে কম কিসে?
— আপনার পাঠানো পাত্র জ্ঞানে-গরিমায় কোনো অংশেই ফেলনা নয়। রূপে-গুণে পদে-অর্থেও বাছার মতো নয়।

— তাহলে ফিরিয়ে দিলে যে?

— শায়খ! এই পাত্রের মধ্যে আমার কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য নেই।

— কেমন পাত্র চাও?
— আমি চাই এমন নেককার পাত্র, যে আমার হাত ধরে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। যে আমাকে একটি নেক সন্তান উপহার দিবে। সে সন্তানকে যথাযথ লালন-পালন করে বড় করবে। বড় হয়ে সে ছেলে হবে একজন দুর্দান্ত ঘোড়সওয়ার, সাহসী মুজাহিদ। আরও বড় হয়ে যে মুসলমানদের জন্যে বায়তুল মুকাদ্দাস ফিরিয়ে আনবে।
নাজমুদ্দীন অবাক হয়ে দুজনের কথোপকথন শুনছিলেন। মেয়েটার শেষ কথা শুনে তিনি একেবারে বাকহারা হয়ে গেলেন। দুজন সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষের মনের কথা এমন অক্ষরে অক্ষরে মিলে যায় কী করে? ভাবনার অতলে হারিয়ে গেলেন। হঠাৎ করে সম্বিত ফিরে পেয়েই বলে উঠলেন, 'শায়খ! আমি এই পুণ্যবতী মানুষটাকে বিয়ে করতে চাই।'
— নাহ, তা কী করে সম্ভব! এই মেয়ে আমাদের মহল্লার সবচেয়ে গরীব ঘরের সন্তান। আর তুমি হলে আমাদের ওয়ালী!
নাজমুদ্দীন শায়খকে সব কথা খুলে বললেন।
শায়খ সব শুনে অজান্তেই একটা আয়াত তিলাওয়াত করলেন,

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا

'আর তাঁর (আল্লাহর) অন্যতম একটা নিদর্শন হলো, তিনি তোমাদের জন্যে, তোমাদের থেকেই স্ত্রীদেরকে সৃষ্টি করেছেন। যেন তোমরা তাদের কাছে প্রশাস্তি লাভ করতে পারো।'
(সূরা রূমঃ ২১)

দুজন মহৎপ্রাণ যুবক-যুবতীর বিয়ে হয়ে গেল। তাদের ইখলাস ও নিয়্যাতের বরকতে আল্লাহ তাদেরকে দান করলেন একটি অনন্য উপহার! অপূর্ব এক সন্তান।
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবীর।
— শায়েখ আতীক উল্লাহ (হাফিজাহুল্লাহ)
কার্টেসী : মুহস্বানাত

29/11/2025

বিয়ের দ্বিতীয় দিন আমার শাশুড়ি আমায় বললেন, "তোমার বিয়েতে পাওয়া সমস্ত গহনা আমাকে দাও। তুমি সামলে রাখতে পারবে না।"

আমি বললাম, "পারবো মা।"

শাশুড়ি মা রেগে বললেন, "যা বলছি, তাই করো। যাও। গহনাগুলো নিয়ে আসো।"

আমি কোমল কন্ঠে বললাম, "না মা। আমার গহনা আমি কাউকে দিবো না। আমি নিজেই এগুলো সামলে রাখতে পারবো।"

আমার শাশুড়ি, মেঝ জা ও ছোট ননদ বিস্ফোরিত দৃষ্টি মেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বড় জা-এর চোখে অশ্রু চিকচিক করলেও, মুখে বিজয়ীর হাসি দেখতে পেলাম।

আমার শাশুড়ি রেগে আমার ছোট ননদকে বললেন, "দেখেছিস নূপুর! দিহান এ কোন ফকিন্নির বাচ্চাকে ধরে আনলো! আমি কী তার গহনাগাঁটি বিক্রি করবো? আমার কাছে রাখলে কী হবে?"

নূপুর বললো, "বাদ দাও না মা। ভাবী যেহেতু দিতে চাচ্ছে না, তোমার কাছে রাখার দরকারই বা কী?"

আমার শাশুড়ি মা নূপুরের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালেন। বড় ভাবীর বিয়েতে পাওয়া গহনা থেকে একজোড়া বালা তিনি তার বড় মেয়ে ফুলিকে দিয়ে দিয়েছেন। মেঝ ভাবীর ভাই পুলিশের এসআই হওয়ায় তিনি মেঝ ভাবীর থেকে গহনা চাওয়ার সাহস পান নি।

আমার গহনা থেকে স্বর্ণের হার ও রুপোর নূপুর তিনি ছোট ননদকে দিতে চেয়েছিলেন। আমার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না আর এতে নিজেই আমার ছোট ননদ ব্যাগড়া দিচ্ছে।

আপনারা ভাবছেন, আমি আমার শাশুড়ির ভাবনা কোথায় থেকে শুনলাম? আমার খালা শাশুড়ি আমায় জানিয়েছেন।

তিনিও আগে এমন করতেন বিধায় তার পুত্রবধূরা এখন আর তার তেমন দেখভাল করে না। সকালের নাস্তা দুপুরের আগে খেতে দেয়, রাতের খাবার দিতে দিতে এগারোটা বেজে যায়।

সময়ের সাথে সাথে সংসারের অদৃশ্য চাবির হাতবদল হয়। যে মেয়েটা সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে ভীতু অবস্থায় নতুন বাড়িতে পা রাখে, সেই বাড়িতেই সে একদিন কর্ত্রী হয়ে ওঠে।

আমার খালা শাশুড়ি চান না, আমার শাশুড়ির সাথে আমি কখনো এমন করি। তাই তিনি আমাকে গহনা দিতে নিষেধ করেছেন। আমি তার কথা রাখলাম।

সেদিন রাতেই,
আমার নামে বিচারসভা বসানো হলো। বিচারসভায় শাশুড়ি কেঁদে কেঁদে বললেন, "দিহান রে! এ তুই কাকে বিয়ে করলি? বিয়ে হতে না হতেই আমার মুখে মুখে তর্ক করে। কয়েকদিন পরে তো আমায় দেখবেই না।"

দিহান আমায় বললো, "তন্বী! গহনাগুলো মাকে দিয়ে দাও। আমি তোমায় পরে কিনে দিবো।"

আমি দৃঢ়স্বরে উত্তর দিলাম, "আমার গহনা যেহেতু, আমার কাছেই থাকুক। তুমি বরং মা-কে পরে কিনে দিও।"

আমার শাশুড়ির চক্ষু চড়কগাছ। তিনি স্বপ্নেও ভাবেন নি, দিহান গহনা দিতে বললেও আমি গহনা দিবো না।

বড় ভাবী বললেন, "গহনা নিয়ে এত নাটক করার দরকার নাই। আম্মা আপনি আমার গহনা থেকে স্বর্ণের হারটা নূপুরকে দিয়েন। আর আমি আপনার বড় ছেলেকে রূপোর নূপুরের ব্যবস্থা করতে বলছি।"

নূপুর ভীষণ অবাক হয়ে বললো, "সে কী! আমি কেন তোমার গহনা নিতে যাবো?"

অন্দরমহলের দ্বন্দ্বে প্রয়োজন ছাড়া নূপুর কখনো থাকে না। তাই অনেককিছুই তার অজানা।

বড় ভাবী বললো, "কেন নেবে না? ফুলিকে যে মা আমার স্বর্ণের বালা দিয়েছে।"

সবার চোখ শাশুড়ি মায়ের দিকে ঘুরে গেল। হাঁটে হাঁড়ি ভাঙায় শাশুড়ী মা আমতাআমতা করছেন।

মেঝ ভাবী মুচকি হাসছেন। তিনিই শাশুড়ী মাকে আজকের বিচারসভার আয়োজন করার জন্য প্ররোচনা দিয়ে গিয়েছেন। তাকে খারাপ ভেবেছিলাম তখন। এখন বুঝতে পারলাম, তিনি সত্যি ভীষণ বুদ্ধিমান ও খুব ভালো মনের মানুষ।

অণুগল্প: কৌশলে_মুখোশ_উন্মোচন
লেখিকা: ফারজানা_ফাউজিয়া_মুগ্ধতা

29/11/2025

আমার স্বামীর প্রিয় খাবার ছিলো, ইলিশ পোলাও।মাছ দিয়ে যে বিরিয়ানির মতো করে পোলাও রাঁধা যায় সেকথা আমি বিয়ের আগে জানতামই না।

‎ শ্বাশুড়িমা একথার জের ধরে বলেছিলেন,ছোট খানদানের মাইয়া।পান্তা ভাত আর পুঁটি মাছ খাইয়া অভ্যাস, ভালো খাবার চিনবে কেমনে?

‎খুব লজ্জা লেগেছিলো সেদিন।
ঢোঁক গিলার মতো করে সেই লজ্জাটাকেও হয়তো গিলে নিয়েছিলাম।নাহলে কি আর সংসার করা হত?

‎মা-চাচী সকলে শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠিয়েছেন, বড়োঘরে তোমার বিয়ে দিচ্ছি। মানিয়ে গুছিয়ে থাকবে। যা বলে তাই করবে।মনে রেখো লাল শাড়ি পরে যাচ্ছো ওবাড়িতে আর ফিরবে কিন্তু সাদা শাড়ি পরেই।

‎তখন আমার কতোই বা বয়স? বড়জোর ষোলো কিংবা সতেরো।
‎রঙিন সুতোয় যেমন করে নকশিকাঁথায় নকশা করতাম তেমন করেই তো সংসারটাকেও বুনতে চেয়েছিলাম।মনের সব রং,ভালোবাসা উপড়ে ঢেলে দিয়েছিলাম নিজের সংসারে।যদিও,কখনো হিসাব করা হয়নি ওটা আদতে কতটুকু নিজের সংসার ছিলো! হিসেবে বরাবরই বড্ড কাঁচা ছিলাম আমি।
‎দেখতে দেখতে দিন গেলো, মাস গেলো, বহু বহু বহু বছরও গেলো। সময় মানুষকে সব ভুলিয়ে দেয়, একথা সত্যিই। তবুও,হুটহাট করে মনের কোণে ডুবন্ত খন্ড খন্ড স্মৃতিরা উঁকিঝুঁকি দিয়ে বসে প্রায়শই।
‎এইতো আজ ভোর সকালে, আমার একমাত্র ছেলের বউ টেলিফোন করে হঠাৎ আমায় বললো,মা আপনার হাতের স্পেশাল ভুনা খিচুড়ি রান্নাটা আমায় একটু শিখিয়ে দিবেন প্লিইইজ?
‎এরকম ছেলেমানুষী কন্ঠের আব্দার শুনে হেসেই ফেললাম আমি।
‎বললাম,মা গো।তুমি এই যুগের মেয়ে।রান্নাবান্নার কৌশল আমার চেয়ে কি কম জানো? কিসব ইউটিউব ফিউব দেখো, কতো নামীদামী রাঁধুনীদের ভিডিও.......
‎সে অধৈর্য্য হয়ে মাঝপথেই থামিয়ে দিলো।বললো,মা রাগীব তো প্রায়শই আপনার রান্না করা খিচুড়ি, আচার,মাংস এসবের খুব খুব তারিফ করে। রেস্তোরাঁর রান্নাও নাকি ফেইল আপনার হাতের যাদুর কাছে।তাই,ভাবলাম বর্ষার মৌসুম তো এসেই পরছে।আমি আপনার থেকে সেই যাদু শিখে একদম ওকে তাক লাগিয়ে দিই।কি বলেন?
‎ আমি হেসে ফেললাম।
‎- আচ্ছা এই কথা? তাহলে,আমি তোমায় বলছি কিভাবে রাঁধতাম, তুমি লিখে নাও।
‎.
‎রাগীব আমার একমাত্র ছেলে।আকাশে ইশান কোণে একটু মেঘ দেখলেও সে হুড়োহুড়ি করে এসে বলতো,আম্মা বৃষ্টি আসবে।বৃষ্টির দিনে একটু খিচুড়ি না হলে কি জমে?
‎এই একটা খাবারের মধ্যে ও যে কি পায় ঠিক আমি জানিনা।এত্তো পছন্দ করে!
‎সেই ছোট্ট থেকে আজ অবধি এই বিষয়টিতে একটুও বদল এলোনা।চাকরিসূত্রে ওরা দূরে থাকে। মন চায় পাখির মতো উড়ে চলে যাই ওদের কাছে।তবে,কেনো জানি শহরে নিজেকে বন্দি বন্দি লাগে।
‎গ্রামের মেয়ে আমি।কিষাণের মেয়ে।মাঠ ভরা সোনালী ধানের গন্ধ আমার চির চেনা।বর্ষার ব্যাঙের ডাক, টিনের চালে পরা বৃষ্টির রুমঝুম শব্দ, কাদামাটির সোঁদা গন্ধ, ঝুম দুপুরে ঘুঘুর ডাক - এইসবই আমার চিরচেনা সঙ্গী।তাইতো,ছেলে-বউমা শত জোরাজোরি করলেও ওদের কাছে খুব একটা যাওয়া হয়না।বরং ওরাই আসে ছুটিছাটায়।
‎কিন্তু,এবার মনে হলো ঘুরে আসি। বউমা যেভাবে আটঘাট বেঁধে প্রস্তুতি নিচ্ছে আমার মতো খিচুড়ি রেঁধে স্বামীকে চমকে দেবে সেই চমকের সাক্ষী হয়ে আমিও থাকি।
‎তাছাড়া,নিজের প্রথম জীবনের একটা স্মৃতির কথা খুব করে মনে পরে গেছিলো। ছেলের বউয়ের মধ্যে আমি যেনো তিরিশ বছর আগের সেই কিশোরী আমার একটা অংশকে দেখতে পেলাম হঠাৎ।
‎যে স্মৃতিতে ধুলো জমে ছিলো তা হঠাৎই উজ্জ্বল হয়ে ভেসে উঠলো মনের মধ্যে।
‎শ্বাশুড়ি মায়ের থেকে শিখেছিলাম ইলিশ পোলাও রান্নার কৌশল খুব আশা নিয়ে।এমন নয় যে তিনি খুব আগ্রহ ভরে আমায় শিখিয়েছিলেন।বরং,বেশ বিত্যক্তই ছিলেন। মুখ গোমরা করে কতো কি কথা শুনিয়েছিলেন।যার সারমর্ম এই যে,আমি ছোটলোক পরিবারের মেয়ে,আমার মা আমাকে ভালো মতো রান্নাবান্নাটাও শিখিয়ে পড়িয়ে পাঠাননি শ্বশুর ঘরে।
‎তবে,,আমি সেসব কথা গায়ে মাখিনি।
‎খুব আগ্রহ আর আনন্দ নিয়ে রাগীবের বাবার জন্য ইলিশ পোলাও রেঁধেছিলাম নিজ হাতে।
‎ঠিক আজকের নিশার মতোই আমিও খুব করে অপেক্ষা করছিলাম মানুষটা ফিরে এসে যখন খেতে বসবে, তখন সে কতখানি চমকিত হবে.......
‎.
‎রাগীবের ফ্লাটের কলিংবেল বাজতেই নিশা অর্থাৎ আমার বউমা দরজা খুললো।দেখতে পেলাম তার ঘর্মাক্ত ক্লান্ত চেহারা।
‎ আমাকে দেখে যারপরনাই অবাক হলো সে।কারণ,সাধারণত আরো বলে কয়েও শহরে আমাকে ঠিক সহজে আনা যায়না।
‎হেসে বললাম,তা হয়েছে রান্না তোমার?
‎এবার উৎফুল্ল হয়ে নিশা জবাব দিলো, হয়েছে তো।
‎উৎসাহ নিয়ে আমাকে সে দেখাতে লাগলো.....
‎ভূনা খিচুড়ি, টকমিষ্টি আচার,ডিমভাজা, বেগুন ভাজা আর মুরগির মাংস......
‎অবাক হয়ে বললাম,বাবা অনেক কিছু করে ফেলেছো দেখছি।
‎সে জানালো,হ্যাঁ মা এরজন্যই তো ক্লান্ত হয়ে পরেছি।এখন দেখা যাক আপনার ছেলে কতটুকু প্রশংসা করে।কে জানে ভালো লাগবে নাকি তার?
‎ আমি স্বাদ চেখে বললাম,অবশ্যি তারিফ করবে মা।অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
‎সে খানিকটা ভরসা পেয়ে হাসলো।
‎তবে খেতে বসে ছেলে তেমন একটা প্রতিক্রিয়া দেখালো না। নিশা খুব আগ্রহ নিয়েই সব তাকে সাজিয়ে খেতে দিলো।হাস্যমুখী হয়ে জানালো, আজ তার পছন্দের খাবারগুলি সে রেঁধেছে।
‎ রাগীব অবশ্য শুকনো কন্ঠে বললো,আমি তো ভেবেছিলাম আম্মা বুঝি রেঁধেছে।
‎নিশা থতমত খেয়ে বললো,কেনো আমার রান্না ভালো হয়নি?
‎রাগীব বললো,হইছে ভালোই।কিন্তু,মায়ের রান্নার যা স্বাদ তার ধারে কাছেও নাই।
‎বলেই সে নির্বিকার ভঙ্গীতে খেতে লাগলো।
‎বউমার হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় মলিনতার ছাপ আমি স্পষ্ট দেখলাম।দেখলাম কি করে লজ্জা কিংবা অভিমানে সে মাথাটা নুইয়ে ফেললো।
‎ আচ্ছা, আমার কি খুশি হওয়া উচিৎ? আমার ছেলে, আমার সন্তান আমার রান্নাকে সবার উপরে স্থান দিয়েছে। এভাবে বড়গলায় সে তারিফ করলো, আমার স্বাদের ধারেকাছেও বউমা যেতে পারবে না....এই তারিফে আমি কি খুশিতে আর কিছুটা আত্ম অহমিকায় সমুন্নত হবো?যেমনটা কোন এক কালে হয়েছিলেন আমার শ্বাশুড়ি?
সেই যে সেইদিনের ইলিশ পোলাও যা আমি রেঁধেছিলাম, সেই রান্নায় শুধু কি পোলাও চাল , ইলিশ,মশলাপাতি এইসবই মিশিয়েছিলাম? উঁহু মোটেও না।সঙ্গে তো হৃদয় নিংড়ানো অসীম ভালোবাসাও মিশিয়েছিলাম পরম যত্নে।
‎বলা বাহুল্য, সেই স্বাদ আমার স্বামীকে আকৃষ্ট করতে পারেনি।
‎এখন কি করতাম জানিনা, তবে সেসময় খুব আগ্রহ করে বারবার জানতে চাইছিলাম আমার রান্নাটা কেমন হয়েছে?
হয়তো,আমার বারবার জানতে চাওয়া তাকে বিরক্ত করে ফেলেছিলো।তিনি চেঁচিয়ে উঠেছিলেন জোরে।
ধমকে বলেছিলেন, এক্কেবারে উল্টায় ফেলছে অমৃত রেঁধে। যত্তোসব.... শিখতে পারো নাই ভালো করে আম্মার কাছে? তোমার রান্না কিছু হইছে? আম্মা কেমন রাঁধে দেখো না তুমি....
শ্বাশুড়িমা গর্বিত ভঙ্গীতে হেসে বলেছিলেন, কি আর করা ছোট খানদানের মাইয়া বইলা কথা।বাবা তুই কষ্ট করে আজকে খাইয়া নে।আমি তোরে পরে ভালোমতো রাইন্ধা খাওয়ামুনে.....
আমার রান্নার স্বাদ আসলে কতটুকু ছিলো আজ আর সেই তর্কে যাবোনা।তবে,খুউব কেঁদেছিলাম সেদিন।
হয়তো বাড়াবাড়ি,হয়তো অল্পতেই নেকামি করেছিলাম কিন্তু,কষ্ট পেয়েছিলাম এতো অমোঘ সত্যি।
রাগীবকে আমি বললাম, বউমা এতো কষ্ট করে রাঁধলো তোর জন্য আর তুই একটু দুইটা লাইন তারিফও করতে পারছিস না?
আমার কন্ঠে কিছু একটা ছিলো।রাগীব-নিশা দুজনেই অবাক চোখে আমার দিকে তাকালো।
আমি বললাম,, এভাবে ওর সাথে আমাকে তুলনা দিয়ে প্রশংসা করায় কিন্তু আমি মোটেও খুশি হইনি।
রাগীব একটু থতমত খেয়ে গেলো।বললো,আসলে ভালোই হয়েছে। আমি তো আর ওকে কষ্ট দিতে কথাটা বলিনি।আর,মা তুমি ভেবো নাহ।নিশা আজকালকার মেয়ে।ও এসবে কষ্ট পায়নি।
আমি বললাম, কষ্ট পেয়েছে কি পায়নি তা নিয়ে তুই পরে ভেবে দেখিস।এখন,আমি একটা কথা বলি শোন।কারো প্রশংসা করতে হলে কেবল তার প্রশংসাটুকুই করবি স্থান,কাল,পাত্র বুঝে। একজনের তারিফ করতে গিয়ে আরেকজনকে ছোট করবিনা। তোর মা ভালো রাঁধে, সেই কথা বলার সময় নিশ্চয়ই ফুরিয়ে যায়নি।বউ কষ্ট করে, ভালোবেসে রেঁধে এনেছে সেসময় একথা বলতে হবে কেনো?
রাগীব এবার খাওয়া থামিয়ে হেসে বললো,তোমরা মেয়েরা না মা অল্পতেই সিরিয়াস হয়ে যাও।
নিশাও খানিকটা এগিয়ে এলো।আমার হাত ধরে বললো,মা থাকনা।ও খাচ্ছে খাক।সমস্যা নেই।আমি কষ্ট পাইনি।আপনি আসলেও অনেক ভালো রাঁধেন,এটা তো সত্যিই।
আমি হেসে বললাম,তা তো সত্যি বটেই।প্রায় পয়ত্রিশ বছর ধরে রান্নাবান্না করছি,,আমার হাত তো পাকা হবেই।তোমার সদ্য বিয়ে হয়েছে, খুব একটা সময় তো হয়নি।তোমার সাথে আমার তুলনা দেওয়াটা তো বোকামি। তবে,শুরুর দিকে আমি তোমার চেয়ে ধরতে গেলে কম ভালোই রাঁধতাম।তুমি আজ চমৎকার রেঁধেছো আমি তো খেয়েছি।

রাগীবের খাওয়া শেষ হয়েছে।সে হাত ধুতে ধুতে বললো, আচ্ছা নিশা আমি স্যরি। আমি কথাটা আসলে অতো ভেবে বলিনি।তোমার রান্না বেশ ভালোই হয়েছে।
আমার আসলে বোঝা উচিৎ ছিলো,খাওয়াটা যতো সহজে হয়ে যায় রান্নাটা ঠিক ততোটাই কঠিন।এভাবে তুলনা দেওয়া আমার ঠিক হয়নি।
নিশা হাসলো।বললো,কোনো সমস্যা নেই।আমি কষ্ট পাইনি।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে শহরের দালানকোঠার ফাঁকফোকর দিয়ে আসা অস্তমিত সূর্যের আলো দেখছিলাম।
বউমা এসে আমার পাশে দাঁড়ালো।হাতে দুকাপ চা।
বারান্দায় রাখা বেতের চেয়ারে বসে বললো, মা আপনি ঠিকই বলেছিলেন, আসলেই আমার কষ্ট হয়েছিলো তখন।কিন্তু,কখনো ভাবিনি আপনি এভাবে আমার পক্ষ নিয়ে কথা বলবেন....
আমি চায়ে চুমুক দিয়ে মৃদু হাসলাম।পাগল মেয়ে বলে কি! আমি তো ওর পক্ষ নয় আমি তো আমার পক্ষই নিলাম আজ।সেই যে আমি কতটা কেঁদেছিলাম একা একা।স্বামীর কথায়,শ্বাশুড়ির কথায়।
আজ,তো সেইদিনের সেই আমার পক্ষেই আমি কথা বললাম....
আমি তো শ্বাশুড়ি হবার আগে একজন বউ ছিলাম।আমি তো জানি একজন স্ত্রী,একজন বউ ঠিক কোন কথায় কষ্ট পায়,কোন সামান্য আঘাতে ভেঙে পরে কাঁচের মতো,কোন ব্যবহারটি তার দুচোখে জল আনে.....
চিরাচরিত নিয়ম হিসেবে যে কষ্ট আমি পেয়েছি, আমার শ্বাশুড়ি পেয়েছেন বউ থাকাকালীন কিংবা তারও আগের প্রজন্ম ; তা আমি আর বাহক হয়ে পরবর্তী প্রজন্মে পৌঁছে দিতে চাইনা।এই প্রথার এখানেই সমাপ্তি ঘটাতে চাই।
কিছু_কথা
লেখিকা : লিলি
(অনুগল্প)
_______সমাপ্ত_______

28/11/2025

আমার ঢাকায় বাসা হল। বিয়ের পর নতুন সংসার। বাসায় আমার স্বামী আর এক দেবর।

দেবর গ্রামের বাড়িতে থাকে না। শ্বশুর নতুন বিয়ে করেছে। দেবর থাকলে নতুন শ্বাশুড়িমায়ের বড়ই অসুবিধে।

আমার স্বামী ছোটভাই বলতে অজ্ঞান। প্রাণের ভাই।
বিয়ের পরপরই আমায় বলেছেন,
—শোনো মিনু, আমার ভাইয়ের যত্নে ত্রুটি হলে কোনো ক্ষমা পাবে না।

আমি বাবা-মা মরা অভাবী পরিবারের মেয়ে। স্বামীর কথা আমার কাছে ধর্ম।
এর মধ্যে দেশের বাড়ি থেকে আমার ছোটভাই মুরাদ ঢাকায় এল। বিসিএস পরীক্ষার ভাইভা দেবে।

রাতে এল। আমাদের ছোট্ট বাসায় থাকল। ভোরবেলায় উঠে তৈরি হয়ে গেল ভাইভা দিতে।

দুপুরে আমার স্বামী এলেন অফিস থেকে।
হঠাৎ করেই তিনি তার প্যান্টের পকেটে থাকা পাঁচ টাকার একটা কয়েন খুঁজে পাচ্ছেন না।

অনেক খুঁজাখুঁজি চলল। পাঁচ টাকা হারিয়ে গেছে।
কে নিল?
মেজাজ সপ্তমে আমার স্বামীর। আমি ভয়ে আধমরা হয়ে আছি।

আমার দেবর বলল,
—টাকাটা হয়ত মুরাদ ভাই নিয়েছে। ভেবেছে দুলাভাইয়ের টাকা, না বলে নিলে তো আর চুরি হবে না।
আমার স্বামী যথেষ্ট সহবোধ দেখালেন।

—আচ্ছা নিয়েছে যখন নিক। সামান্য পাঁচটি টাকাই তো। আলাপ করার দরকার নেই।

আমি শুনলাম। চুপ করে থাকলাম।
সন্ধ্যার সময়ে আমার ভাই ভাইভা দিয়ে এল। বড্ড ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। ওর আজ রাতটুকু আমার বাসায় থেকে যাবার ইচ্ছে।

বারবার জিজ্ঞেস করলো,
—আপা কী করবো? চলে যাব?
আপা..আজ রাতটা কী থেকে যাব?
আমি বললাম,

—থেকে আর লাভ কী! যা চলে যা। আর তো তোর কাজ নেই ঢাকায়।
—পৌঁছাতে তো বড্ড রাত হয়ে যাবে আপা? যাব?

—আরে রাত হলে কী। নিজেদের এলাকা। যা চলে যা।
ভাই আমার বড় আশাহত হয়ে চলে গেল।
আমার স্বামী আর তার ভাই এর মধ্যে আরেক দফা আলোচনা হল,

—পাঁচ টাকার কয়েন মুরাদই নিয়েছে। এতদিন তো চুরি হয় নি।
আমি সমস্ত সন্ধ্যা বারান্দায় বসে থাকলাম। বিশ্বাস করুন একটুও মন খারাপ হল না আমার। আমি এমনিই বসেছিলাম। মাঝে মাঝে একটু দম আটকে আসছিল। ওটা হয়ত এমনি এমনি। অক্সিজেনের অভাবে বোধহয়।
পরেরদিন সকালে আমার স্বামী সেই পাঁচ টাকার কয়েনটি খুঁজে পেলেন তার ব্রিফকেসের পাশে।
আমি কিচ্ছু বললাম না। মুরাদ নেয়নি এই অপবাদ তো ঘুচলো। বলার কী আছে? আমার ভাই চোর নয় সেটা তো আমি জানি। যারা জানে না তারা জানলো।

আমার সেই ভাইয়ের এখন ঢাকায় তিনটা ফ্ল্যাট। তার ছেলে মেয়ে দু'জনেই দেশের সবথেকে নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।
গত বছর হজ্জ করে এল ওরা স্বামী-স্ত্রীতে।

এখন যখন আমার ছোট ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে যাই। আমার খুব দম বন্ধ লাগে। গলায় একটা পাঁচ টাকার কয়েন আটকে থাকে। আমি ওটা গিলতে পারি না।

আমার স্বামী অবশ্য ওকে এখন খুব বাহবা দেন। ওর নতুন গাড়িটা আমার স্বামীর খুব পছন্দ।
প্রশংসা করেন বেশ,
—“মুরাদের আসলে ক্যালিবার আছে। সাকসেসফুল ম্যান। ঢাকায় বাড়ি গাড়ি।”
আমি শুনি। স্বামীর কথা শুনতে হয়। না হলে সংসার টিকে না। সংসার টিকিয়ে রাখতে হয়।

পাঁচ টাকার কয়েন খুঁজে পেতে দেরি হলেই ওটা তোমার ভাই চুরি করেছে বললেও টিকিয়ে রাখতে হয়।

আমাদের মেয়েদের কী অসাধারণ ক্ষমতা!
এমন সংসার ভালোবেসে আমরা জীবন পার করে দিই
আমরা কাউকে ঘৃণা করি না। কারও উপরে রাগ করি না।
রাগ করলে সংসার হতো বুঝি! হুহ!
কতবার যে ভাঙতো!

সংসার_অথবা_সঙসার(সমাপ্ত)
তৃধা_আনিকা

28/11/2025

নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক

কাল শুনলাম পরপর তিন মেয়ে হওয়াতে স্বামী তালাক দিয়েছে বাচ্চাদের মাকে।
ইসলাম ধর্মে কি মেয়ের জন্মকে অপরাধ বলা হয়েছে?

মেয়ে সন্তান জন্ম দিলে
স্ত্রীকে তালাক দিতে বলা হয়েছে?

নানা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে বাচ্চাদের কোন খরচও দিচ্ছে না
এই বাবা।
বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এরকম কত কাহিনী।

আল্লাহ
হেদায়েত করুন আমাদের।

নিচের ঘটনায় জানি না তিন তালাক হয়েছিল নাকি
এক তালাক।
জন্মগত একটি সমস্যায় বাচ্চার গায়ের রং খুব ফর্সা হয়। এতে সন্দেহ করে স্ত্রীকে তালাক দেন
স্বামী।
মিডিয়াতে ঘটনা প্রচার পাবার কারণেই কিনা জানি না, অবশেষে স্ত্রী এবং বাচ্চাকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে
সেই স্বামী।

তালাককে আমাদের দেশের পুরুষরা খেল তামাশায় পরিণত করেছে।
ইচ্ছা হলো অল্প দেনমোহরে বিয়ে করে চাইলেই তালাক দিয়ে দিল।
প্রথম ঘটনায় বিয়ের মোহরানা ছিল মাত্র ১৫ হাজার।

আল্লাহ যেন এসে পুরুষকে কেয়ামতের দিন তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেন।

সিনিয়র এডমিন
ইসলামিক ম্যাট্রিমনি

https://www.facebook.com/share/1DTSaGp1pj/

28/11/2025

আমীন

28/11/2025

❑ ঘরে ঢুকে স্ত্রী-সন্তানদেরকে সালাম দিন।

আমরা জানি সালামের অর্থ > তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এটি একটি উত্তম দু'আ।

আমাদের দেশে সাধারণতঃ আমরা বাসায় ঢুকে স্ত্রীকে সালাম দেই না, এছাড়া সন্তানদেরকে তো সালাম দেয়ার প্রশ্নই উঠে না।
এটি আমাদের দেশের দীর্ঘ দিনের প্রচলন।

বাহিরে মোটামুটি সালামের প্রচলন থাকলেও ঘরে স্বামী তার স্ত্রীকে সালাম দেয় না বা স্ত্রী তার স্বামীকে সালাম দেয় না এবং বাবা-মায়েরা তার সন্তানদেরকে সালাম দেয় না ।

এতে স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানরা নিয়মিত একটি উত্তম দু'আ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
একই পরিবার কিন্তু ইসলামী নিয়মানুযায়ী প্রতিদিন কেউ কারো মঙ্গল কামনা করছে না।

আমরা নিজ স্বামীকে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করি, নিজ স্ত্রীকে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করি, নিজ সন্তানদেরকে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করি।

অর্থাৎ একই পরিবারের একে অপরের জন্য দু'আ করতে লজ্জাবোধ করি।

আমাদেরকে এই ট্রেডিশন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে পরিবারের জন্য উত্তম উপায়ে দু'আ করতে হয়।

এখানে লজ্জার কিছু নেই। প্রথম প্রথম একটু লজ্জা ও অস্বস্থি লাগবে কিন্তু আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

তখন মনে হবে এতো দিন এই দু'আর বরকত থেকে পরিবারের সকলেই বঞ্চিত হয়েছি, তখন আফসোস হবে। তাই আজ থেকেই আপনাদের প্রাকটিস শুরু করা উচিত।

যেন আমাদের পরিবারগুলো হয় সুখী পরিবার... ♡

✎ জাহিদ হাসান

◍ পারিবারিক টিপস (পর্ব-১৭)

26/11/2025

বিসমিল্লাহ

নিচের পোস্টটা পড়ে একই সাথে ভালো লাগলো , আবার খারাপ লাগলো ।

না জানি কত বোন জালিম স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে করে জীবন কাটিয়ে দেয়।

আল্লাহ রহম করুন।

***

https://www.facebook.com/share/1BN41qApn8/

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Islamic Matrimony fb page posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Practice

Send a message to Islamic Matrimony fb page:

Share

Share on Facebook Share on Twitter Share on LinkedIn
Share on Pinterest Share on Reddit Share via Email
Share on WhatsApp Share on Instagram Share on Telegram