24/06/2024
🔴 কীভাবে বদনজর থেকে বেঁচে থাকবেন?
বদনজরের ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া-বিচ্ছেদ হয়, পারিবারিক অশান্তি তৈরি হয়, এমনকি বদনজরের কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়!
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, "নিশ্চয়ই বদনজর মানুষকে কবরে প্রবিষ্ট করিয়ে দেয়!" (মুসনাদুশ শিহাব আল-কুযায়ি: ১০৫৭)
বদনজরের কারণে অনেক মানুষ মারা যায়।
রাসূলুল্লাহ ﷺ আরো বলেন, "আল্লাহর কিতাব এবং তাঁর ফয়সালা ও তাকদিরের পর বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যুর কারণ হলো তাদের বদনজর!" (ইবনু আবি আসিম, আস-সুন্নাহ: ৩১১)
বদনজর এতো ক্ষতিকর হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ সচেতন না।
বদনজর থেকে বাঁচতে হলে কুরআন সুন্নাহর আলোকে এই আমলগুলো করতে হবে:
🟢 সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস, আয়াতুল কুরসি পড়া
প্রতিদিন নিয়মিত এই সূরাগুলো পড়তে হবে। বিশেষ করে ফরজ নামাজের পর, ঘুমানোর পূর্বে এগুলো পড়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ তাগিদ দিয়েছেন।
🟢 নিয়মিত দুরূদ ও যিকির পাঠ
সবসময় দুরূদ এবং যিকির পড়ার চেষ্টা করতে হবে। কাজের মধ্যে যেসব আমল করা যায়, একা একা বসে বসে যেসব আমল করা যায়, দুরূদ ও যিকির তারমধ্যে অন্যতম।
🟢 বিশেষ দুআ
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর নাতি হাসান-হুসাইনের জন্য এই দুআটি পড়তেন। শুধু তাই না, ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম তাঁর দুই ছেলের জন্যও এই দুআটি পড়তেন।
দুআটি হলো:
"আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়তানিন হাম্মাতিন,ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।" (সহীহ বুখারী: ৩৩৭১)
অর্থ: "আমি আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ কালেমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী ও প্রত্যেক কুদৃষ্টি (বদনজর) থেকে পানাহ চাচ্ছি।"
🟢 নিজের সব নেয়ামত প্রকাশ না করা
নিজের সবকিছু ফেসবুকে প্রকাশ করতে নেই। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, "প্রতিটা নিয়ামত লাভকারী হিংসার শিকার হয়।"
আপনি পেয়েছেন, অন্যজন পায়নি। এজন্য সে আপনাকে হিংসা করবে, বদনজর লাগবে।
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহি. বলেন, "যার বদনজরের আশঙ্কা বা ভয় থাকে, সে যেন তার সৌন্দর্যসমূহ গোপন বা লুকিয়ে রাখে।" (যাদুল মাআদ: ৪/১৫৯)
🟢 বদনজরকারী থেকে দূরে থাকা
সমাজে অনেকের ব্যাপারে প্রচলিত আছে- "অমুকের নজর খুব খারাপ।"
এরকম মানুষকে নিজের নিয়ামতের কথা জানানো থেকে বিরত থাকুন।
কাযী ইয়াজ রাহি. বলেন, "যখন কারো ব্যাপারে জানা যায় যে, তার বদনজর লেগে যায়, তবে তার থেকে বেঁচে থাকা চাই এবং তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।" (উমদাতুল কারী: ২১/২৬৭)
🟢 সকাল-সন্ধ্যার দুআ
বদনজর থেকে বাঁচতে হাদীসে বর্ণিত সকাল-সন্ধ্যার দুআ নিয়মিত পড়তে হবে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা এই দুআটি ৩ বার পড়বে তার ওপর হঠাৎ কোনো বিপদ আসবে না।
দুআটি হলো:
"বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মাআসমাহি শাইউং ফিলআরদি ওয়ালা-ফিসসামাই, ওয়াহুয়াস সামিউল আলিম।" (সুনানে আবু দাউদ: ৫০৮৮)
🟢 মাশাআল্লাহ, বারাকাল্লাহ বলতে উদ্বুদ্ধ করা
সুন্দর, ভালো কিছু দেখলে-শুনলে নিজে যেমন মাশাআল্লাহ-বারাকাল্লাহ বলতে হবে, অন্যদেরকেও এই ব্যাপারে উৎসাহ দিতে হবে।