Dr Halida Hanum Akhter

Dr Halida Hanum Akhter Senior Associate at Bloomberg School of Public Health, Johns Hopkins University

মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাডা. হালিদা হানুম আখতারআজ আবারও আমি মাতৃমৃত্যুর কথা নিয়ে আলোচনা করতে চাই। যখন নিরাপদ মাতৃত্ব কথা...
17/06/2025

মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
ডা. হালিদা হানুম আখতার

আজ আবারও আমি মাতৃমৃত্যুর কথা নিয়ে আলোচনা করতে চাই। যখন নিরাপদ মাতৃত্ব কথা চিন্তা করবো, তখন মাতৃমৃত্যুর কথা এসেই যাবে।

২০১৬ সালে আমাদের যে মেটারনাল মর্টালিটি সার্ভে হয়েছিল, এর তথ্য নিলে দেখা যাবে কী কী কারণে একজন মা-কে তার গর্ভের কারণে মারা যেতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় যে কারণ, সেটা হলো অতিরিক্ত রক্তপাত। এটি ২৯ শতাংশ। আরেকটি হলো, একলামসিয়া বা খিঁচুনি। আবার তার আগের কোনো রোগ থাকলে যেমন ডায়াবেটিস বা হার্টের কোনো রোগ বা কিডনির কোনো রোগ থাকলে গর্ভাবস্থায় জটিলতা হতে পারে।

তবে আরেকটি বিষয় রয়েছে, যেটি নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করবো। এটি হলো, গর্ভপাতের জটিলতা। গর্ভপাত অনেক সময় এতো জটিল হয়ে যায়, এতে মাকে মারা যেতে হয়। এটি সাত শতাংশ। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ২০১০-এ যে সমীক্ষাটা করা হলো, এতে দেখা গেছে, এক শতাংশ মারা গেছে। তবে পরে সেটি বেড়ে গিয়ে সাত শতাংশ হয়েছে। এর মানে ১০০টি মা মারা গেলে সাতটি মা মারা যাচ্ছে গর্ভপাতের জটিলতায়।

গর্ভপাতকে ইংরেজিতে আমরা অনেক সময় অ্যাবরশন বলি। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে গর্ভপাত কেন হচ্ছে? কেন একটি নারীকে গর্ভপাত করাতে হচ্ছে? আমরা যেটি বুঝি, একটি মা গর্ভধারণ করেছে, তবে এই সন্তানটি সে চাচ্ছে না। এই না চাওয়াটা যেকোনো কারণে হতে পারে। তার ব্যক্তিগত কারণে হতে পারে। সে হয়তো লেখাপড়া করছে, এখন সন্তান নেওয়ার সময় নয় বা তার বয়স খুব কম, আরো দেরি করে বাচ্চা নিতে চায়- এইরকম। এসব অবস্থায় তখন তারা বিভিন্ন জায়গায় যায় এই গর্ভকে বাদ দেওয়ার জন্য।

এখন কীভাবে বুঝবে একজন নারী গর্ভধারণ করেছে? সে জানে তার মাসিকটা বন্ধ হয়ে যাবে। সে ঐ সময় গর্ভটা না চাইলে তার জন্য এটি একটি চিন্তার বিষয়। তখন বিষয়টি সেই নারীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে। তার টাকা-পয়সা থাকলে সে কোনো ক্লিনিকে গিয়ে ব্যবস্থাটা নিয়ে নেয়। তবে যে দরিদ্র, যার কাছে তথ্য নেই, যার কাছে শিক্ষা না থাকার কারণে সে জানে না যে কোথায় যেতে হবে, তার জন্য সেটি একটি জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

আমি কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, গ্রামের মানুষ অনেক সময় এই ক্ষেত্রে কবিরাজের কাছে যায় বা যারা গাছ-পালা নিয়ে সেবা দেয়, তাদের কাছে যায়। তখন তারা হয়তো গাছের শিকড় দিলো, বা গাছের শিকড় থেকে বের করা এমন একটি ওষুধ দিলো, যেটা ব্যবহার করলে, খেলে বা সেই কাঠিটি তার শরীরে ঢুকালে গর্ভপাত হয়ে যাবে। এই রকম একটি অবস্থা তখন হয়ে যায়। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিষয়টি না করলে জটিলতা বেশি হয়। এই জটিলতার কারণে মা-কে মারা যেতে হয়।

জটিলতাটা কী হতে পারে? সংক্রমণ, সেপটিসিমিয়া ও সেপটিক হতে পারে। ভীষণ জ্বর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই সময় ভালো চিকিৎসা না হলে সে মারা যেতে পারে।

অনেক সময় কাঠি ঢুকিয়ে দেয় জরায়ুতে। যারা কাজটি করে তারা তো আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। তখন কাঠিটি দিয়ে জরায়ু ফুটো হয়ে যায়। তখন পেরিটোনাইটিস হয়ে যায়। ভীষণ জটিল একটি অবস্থা হয়ে, সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক সময় আমরা দেখি, টিটিনাস হয়ে যায়। তখন রোগীর মৃত্যু হয়। এই অবস্থাটি আমরা চাই না।

গবেষণায় দেখেছি, যত নারী গর্ভধারণ করছে, তার ৪৮ শতাংশ বলছে আমি এটি চাচ্ছি না। তো অনেক কারণেই নারীর মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এখন আলোচনার বিষয় হলো, কী করতে হবে? আপনারা জানেন, আমাদের খুব নামকরা একটি পরিবার-পরিকল্পনা প্রোগরাম রয়েছে। আমাদের এখন ৬০ শতাংশ দম্পতি পরিবার-পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তবে এরপরও দেখা গেছে, এই পদ্ধতি যাদের গ্রহণ করা বেশি দরকার, এমন ১০ শতাংশ এটি নিচ্ছে না। তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হচ্ছে।

তাহলে আমি একটু বলতে চাই, এটি সবারই জানা দরকার, আমাদের মাসিক নিয়ন্ত্রণ বলে একটি প্রোগরাম রয়েছে। ১৯৭৪ সাল থেকে আমরা অল্প করে এটি শুরু করেছি, পরে ১৯৭৬ সালে এটি আরেকটু বিস্মৃত হয়েছে। ১৯৭৯ সালে সরকার একে সরকারি প্রতিষ্ঠানে রূপ দিয়েছে। যারা প্যারামেডিকেল ছিলো তাদের এমআর-এর ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এমআর কী? এটি হলো, মাসিক নিয়ন্ত্রণের একটি ব্যবস্থা। একটি ছোট প্লাস্টিক সিরিঞ্জের মাধ্যমে পাতলা স্ট্র দিয়ে টানা হয়, তখন ভেতরে যে তরল পদার্থটি রয়েছে, সেটি বের হয়ে আসে। মাসিক বন্ধ হওয়ার আট বা নয় সপ্তাহের মধ্যে এটি আমাদের করা সম্ভব। সরকার একে পরিবার-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রচলন করেন। প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক প্যারামেডিক এই ব্যবস্থা দিয়ে আসছে। যদিও আমরা দেখছি গত ১০ বছরে এই ব্যবস্থা দেওয়ার সংখ্যাটা কমে এসেছে, এর জন্য গর্ভপাতের জটিলতার সংখ্যাটা বেড়েছে। আমরা জানি, এমআর বা মিন্সট্রুয়াল রেগুলোশনের সংখ্যা কমে যাওয়াতে গর্ভপাতের জটিলতার কারণে মৃত্যু বাড়ছে। তো আমি জনগণের জানার জন্য বলছি, আপনি সরকারি যেকোনো জায়গায় গিয়ে বলবেন, 'আমি এমআর করতে চাই'। তাহলে তারা এমআর-এর ব্যবস্থা করে দেবে।

২০১৪ সালে সরকার আরেকটি নতুন পদ্ধতি এনেছে। সেটি হলো, খাওয়ার বড়ি। এই বড়ির মাধ্যমেও মাসিক নিয়ন্ত্রণ করানো যায়। তবে সেটি নয় সপ্তাহ পর্যন্ত করানো যায়। ফামের্সিতে গেলেও বলতে পারেন, 'আমার মাসিক বন্ধ রয়েছে, এটি আমার চালু করতে চাই।

এই জন্য কী ওষুধ রয়েছে?' তখন তারা আপনাকে ওষুধ দেবে। ওষুধের বক্সে সব লেখা থাকে কীভাবে খেতে হবে বা কী করতে হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। এই ওষুধ আসার পরে অনেক সহজ হয়েছে।

সুতরাং এসব বিষয় জেনে নিজের মতো ব্যবস্থাপনা নিতে পারলে ভালো। আমাদের দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এটি দিচ্ছে। যেমন, মেরিস্টোপ নামে আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারা এই সেবা দেয়। তাদের যত ক্লিনিক রয়েছে, এখান থেকেই সেবা দেয়। প্রায় ৬০ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। তাই কবিরাজ বা উল্টোপাল্টা কারো কাছে না গিয়ে আপনারা সঠিক প্রতিষ্ঠানে গেলে জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না। নারী মারা যাবে না। আমরা মনে করি, এটি নারী ক্ষমতায়নেরও একটি বিরাট বড় বিষয়। আমি আপনাদের আবারও বলছি, এটি সরকারের অনুমতি করা একটি পদ্ধতি। একে আমরা মিস্টুয়াল রেগুলেশন বা মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বলি।

সুতরাং নিজের জীবনকে সুন্দর রাখার জন্য, নিজের জীবন যেন বিপথগামী না হয় বা জটিলতার মধ্যে না পড়ে, এর জন্য আমার মনে হয়, এই মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে আপনার জানা দরকার। প্রয়োজনে ব্যবস্থাপনা নিতে হবে।

আমার এটি বলার উদ্দেশ্য হলো, এই মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটা আমি অনেক আগে শিখেছি এবং শিখে মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি ও ট্রেনিং সেন্টারে প্রথম চিকিৎসক হিসেবে এমআর শুরু করি। এরপর এটি সরকার পর্যায়ে যায়। ধীরে ধীরে এর বিস্মৃতি বাড়ে। এটি যে কত নারীকে বাঁচিয়েছে এবং মাতৃত্বকে কত নিরাপদ করেছে এটি বলার কোনো শেষ নেই। তাই বিষয়টি জানিয়ে আমি আপনাদের সচেতন করতে চাই।

লেখক: রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

ডায়াবেটিস: লক্ষণ ও ক্ষতিছবি : ডা. হালিদা হানুম আখতারআজ আমরা ডায়াবেটিস নিয়ে কথা বলবো। এই কথা বলতে গিয়ে আমি প্রথমে যেটি ব...
12/06/2025

ডায়াবেটিস: লক্ষণ ও ক্ষতি
ছবি : ডা. হালিদা হানুম আখতার

আজ আমরা ডায়াবেটিস নিয়ে কথা বলবো। এই কথা বলতে গিয়ে আমি প্রথমে যেটি বলতে চাই, সেটি হলো, আমাদের রক্তের কী কাজ এবং এই রক্তের সঙ্গে ডায়াবেটিসের কী সম্পর্ক।

রক্তের কাজ কী? এর কাজ হলো, আমাদের দেহে নিয়মিত শক্তির জোগান দেওয়া। এ ছাড়া, বায়ু প্রবাহকে দেহের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, অক্সিজেন নিয়ে আসা, তাপ নিয়ন্ত্রণ করা, দেহের মধ্যে যেসব অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বা বর্জ্য রয়েছে, সেগুলো বের করে দিতে সাহায্য করা। এগুলো রক্তের মূল কাজ।

রক্তের সঙ্গে ডায়াবেটিসের কী সম্পর্ক? এটি জানতে হবে। কারণ, ডায়াবেটিস হলে রক্তের মধ্যে মাপতে হয়। তাহলে এই তরলটির মধ্যে কী রয়েছে, যার জন্য আমরা বলি ডায়াবেটিস?

আমরা যেই খাবার খাই, সেগুলো রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন কোষে গিয়ে পৌঁছায়। সেই অঙ্গগুলো তখন কাজ করতে থাকে।
আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাই। এর মধ্যে শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট একটি প্রধান খাদ্য।

আমাদের দেশে অনেক ভাত বা রুটি খাওয়া হয়। এসব খাবার শর্করার মধ্যে পড়ে। একে রূপান্তর করলে চিনি বা সুগার জাতীয় খাবারে পরিণত হয়। কোষের ভেতর গিয়ে এটি শক্তির উৎস হয়ে যায়। কারণ, শর্করা একেবারে না খেলে আবার দেখা যাবে দেহের কোষ কাজ করতে পারছে না। সুতরাং শর্করা জাতীয় খাবার রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন কোষে যায় এবং কোষ দিয়ে যেসব অঙ্গ তৈরি তাদের কাজ করতে সহায়তা করে।

মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে এই জাতীয় খাবারের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। শর্করা যথেষ্ট না হলে, মস্তিষ্ক কাজ করে না। স্নায়ুগুলো সঠিকভাবে কাজ করা থেকে বিরত থাকে।

তবে, চিনির পরিমাণ রক্তে বেশি হলে, স্বাভাবিক রেঞ্জ থেকে বেড়ে গেলে, একে আমরা ডায়াবেটিস বলি। আরেকটি অঙ্গ রয়েছে, পেনক্রিয়াস। এই পেনক্রিয়াসের মাধ্যমে ইনসুলিন নামের যে তরল পদার্থ রয়েছে, সেটি বের হয়ে আসে। পেনক্রিয়াস এটি তৈরি করে এবং সে রক্তের মধ্যে একে দিয়ে দেয়। ইনসুলিনের কাজ হলো, রক্তের মধ্যে শর্করার একটি ভারসাম্য রাখা। একটি পরিমাণ রাখা যেটি ক্ষতিকর নয় এবং রক্তের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কোষের মধ্যে শর্করা পরিচালনা করতে সাহায্য করে। সুতরাং পেনক্রিয়াস যে অঙ্গটি, এবং এর থেকে যে ইনসুলিন বের হয়ে আসে, এর সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এখন ডায়াবেটিস হলো কি না, আমরা কীভাবে বুঝবো? এর মধ্যে একটি বিজ্ঞানসম্মত পরিমাপ করার বিষয় রয়েছে। রক্তের মধ্যে চিনি কতখানি, সেটিকে আমরা মাপতে পারি। এখন প্রশ্ন হতে পারে, স্বাভাবিক চিনিটা কী? সেটা দেখা যায়, চার থেকে পাঁচ বা পাঁচ দশমিক পাঁচ মিলিমল পর্যন্ত। এটা স্বভাবিক। একে ডায়াবেটিস বলবো না। এই পরিমাপটা হলো, খাওয়ার আগে। খাওয়ার দুই ঘণ্টা পরে হবে সাত মিলিমল। এই স্বাভাবিক থেকে বেশি হয়ে গেলে, একে আমরা ডায়াবেটিস বলবো। অল্প বাড়লে একে প্রি ডায়াবেটিস বলা হয়। আর বেশি হলে তখন আমরা ডায়াবেটিস বলি।

এখন প্রশ্ন আসে, কীভাবে বুঝবে ডায়াবেটিস হয়েছে? লক্ষণগুলো কী হবে? লক্ষণ হলো, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। সাধারণভাবে হয়তো আপনি রাতে প্রস্রাব করেন না। তবে ডায়াবেটিস যখন হবে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাবে। আপনাকে বাথরুমে যেতে হবে। আরেকটি হলো, পিপাসা বেশি লাগে। স্বাভাবিকভাবে যা অভ্যাস ছিলো, এর চেয়ে বেশি পিপাসা লাগে। একটু বেশি হলে দেহের ওজন কমে আসে। ক্ষুধাও অনেক সময় বেশি লাগে। খালি খেতে ইচ্ছে করে।

আর এটি যেহেতু বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে, চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন। আরেকটি হলো, হাত-পা ক্লান্ত হয়ে যায়। হাত-পা দুর্বল লাগে। অনেক সময় দেখা যায়, চামড়া শুকিয়ে গেছে। এগুলো খুব সাধারণ উপসর্গ। তবে আমাদের বিষয়গুলো জানা থাকা দরকার।

বেশি সতর্ক করা হয় যেসব বিষয়গুলোতে সেগুলো হলো, ক্ষুধা বেশি লাগা, পিপাসা বেশি লাগা এবং রাতে বাথরুমে যাওয়া। এসব একটু সাবধান হওয়ার মতো লক্ষণ। এখন আপনি হয়তো বলবেন, এসব তো হতেই পারে। হওয়া স্বাভাবিক। তবে সমস্যা হলো, বেশিদিন ধরে এই ডায়াবেটিসের অবস্থান আপনার দেহে থাকলে, বড় বড় জটিলতা হয়। সেগুলো কী হতে পারে? একটি হলো, কিডনি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিডনি প্রস্রাবকে ফিল্টার করে দেহের বর্জ্যগুলো বের করে দেয়। এই অঙ্গটির অনেক জরুরি কাজ রয়েছে আমাদের দেহে। তবে ডায়াবেটিস হলে কিডনির ক্ষতি হয়। এর কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে নিয়ে আসে। আমরা ইংরেজিতে বলি, কিডনি ডেমেজ হয়ে যায়।

আরেকটি হলো, আমাদের যে স্নায়ুতন্ত্র রয়েছে, একে ডায়াবেটিস আক্রান্ত করে। এটি হলে নিউরোপ্যাথি হবে। হাত-পা জ্বালাপোড়া করবে বা চিন্তাশক্তি কমে আসবে। ডায়াবেটিস ডিমেনসিয়ারও বড় কারণ। তখন আমরা সুস্থভাবে চিন্তা করতে পারি না। মস্তিষ্ক বা স্নায়ুর কার্যক্রম কমে যায়। আরেকটি দেখেছি যে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে। এর জন্য অনেক সময় দেখবেন, যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এদের একটি ক্ষত হলে সেটি সহজে সারতে চায় না। অনেক সময় দেখা যায়, পায়ে ক্ষত হয়েছে, কিছুতেই সারছে না।

সেই ক্ষতটা বাড়তে বাড়তে অনেক সময় উপরে উঠে যায়। পা
কেটে ফেলতে হয়। এরকমও আমরা ডায়াবেটিসে অনেক দেখেছি। তখন এই জটিলতাগুলো বাড়ে। বেশিদিন ধরে ডায়াবেটিস অপ্রতিরোধ্য অবস্থায় থাকলে বিভিন্ন বড় অঙ্গ, যেগুলো দেহের মূল কাজগুলো করে, সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
এগুলো নষ্ট হলে একজন মানুষ খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

আরেকটি হলো, চোখে কম দেখে। চোখের যে শক্তি সেটি কমে আসে। কর্নিয়াকে খুব আক্রান্ত করে ডায়াবেটিস হলে। অনেক সময় রেটিনোপ্যথি হয়। চোখের টিস্যু থেকে পানি কমে যাওয়াতে দৃষ্টিটা কমে আসে। কোনো জিনিসের দিকে তাকালে ফোকাস করতে পারে না।

চোখে দেখতে না পারলে কী হয়? ব্যক্তির কার্যক্ষমতা কমে আসে। আরেকটি বিষয় আমরা জানি, নারীর ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে, তার অনেক জটিলতা হয়। এই জন্য একজন মা গর্ভাবস্থায় থাকলে আমরা ডায়াবেটিস টেস্ট করি। তার ডায়াবেটিস রয়েছে কি না, ব্লাড সুগার স্বাভাবিক কি না, দেখতে হয়। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ডায়াবেটিস হলে তার প্রি একলামসিয়া হতে পারে। শিশু বড় হয়ে যেতে পারে। শিশুর আকার মায়ের পেলভিস থেকে বড় হলে প্রসব করার সময় জটিলতা তৈরি হয়। তখন সিজারের দরকার হতে পারে।

আরেকটি বিষয় দেখেছি, ডায়াবেটিস থাকলে সন্তান পেটে বড় হয়ে যায়, পরিপূর্ণ সময়ের আগে প্রসব হয়। ৪০ সপ্তাহে হয়তো ডেলিভারি হওয়ার কথা, সেটি দেখা গেলো ৩৫ সপ্তাহে হচ্ছে। শিশু অপরিপক্ব থাকে, মায়ের জন্য কষ্ট হয়।

আরেকটি বিষয় দেখেছি, মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে, মরা বাচ্চা জন্ম নেয়। আগে হয়তো অল্প ডায়াবেটিস রয়েছে, তবে গর্ভ হওয়ার কারণে বেড়ে গেলো, তাতে যেসব মা ও গর্ভস্থ সন্তান দুজনের জন্যই বিরাট জটিলতা হয়। তো এই জন্য ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের পরে আমাদের ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করা দরকার। আমি সুস্থ রয়েছি কি না জানা প্রয়োজন।

আমি একটি বিষয় সবাইকে আবারও বলতে চাই, বাংলাদেশে এই রোগের প্রকোপ কতখানি। ২০০৯ সালে যে সমীক্ষা হয়েছে ওখানে দেখা গেছে, ১৩ লাখের কাছাকাছি ডায়াবেটিসে মৃত্যু হয়েছে। ডায়াবেটিস টাইপ-টু এর কারণে। আরেকটি হলো, সারাদেশে ৭১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। তারা জানে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তবে ডায়াবেটিস দেহে রয়েছে কি না বা নির্ণয় করা হয়নি, এমন সংখ্যা প্রায় ৩৭ লাখের মতো। আর আরেকটি হলো, প্রতি বছর ১৩ লাখের মতো মানুষের ডায়াবেটিসে মৃত্যু হয়। সুতরাং এটি বিরাট ধ্বংসকারী একটি রোগ। এটি মানুষের জীবনকে ক্ষয় করে দেয়। তার পরিবারের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিস হওয়ার পর দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলো আক্রান্ত হলে খরচের পরিমাণ বাড়ে। সুতরাং আমি বলবো, এটি একটি শরীর ধ্বংসকারী রোগ, যার বিষয়ে আমাদের খুবই সচেতন থাকতে হবে। একে আমাদের এড়িয়ে গেলে হবে না। রুটিন ডায়াবেটিস চেকআপ করতে হবে। ৩৫ বছরের পরে এটি খুব জরুরি। ৩৫ বছরের আগে যে ডায়াবেটিস হয় না, তা নয়। তবে এরপরে এর প্রকোপটা বাড়ে। তাই ডায়াবেটিসের নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।

লেখক : রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

ডিমেনসিয়া প্রতিরোধে করণীয়ডা. হালিদা হানুম আখতারডিমেনসিয়া একটি মস্তিষ্ক ক্ষয়জনিত রোগ। এর প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। উন্নত ও...
29/05/2025

ডিমেনসিয়া প্রতিরোধে করণীয়
ডা. হালিদা হানুম আখতার

ডিমেনসিয়া একটি মস্তিষ্ক ক্ষয়জনিত রোগ। এর প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। উন্নত ও অনুন্নত উভয় দেশেই এটি বাড়তির দিকে। আমরা যদি উন্নত দেশের কথা চিন্তা করি, তাহলে সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ ডিমেনসিয়াতে ভুগছে।

আরেকটু যেটি শঙ্কার বিষয়, দেখা যাচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে দুইজন নারী ডিমেনসিয়াতে ভুগছে। এমন অবস্থা আমরা অনুন্নত বা উন্নতিকামী দেশগুলোতে দেখি। বাংলাদেশের দিকে তাকালেও দেখা যাবে চারজনের মধ্যে তিনজনই নারী। এদের কীভাবে ঠিকমতো সেবা ও পরিচর্যা করা যায়, এদের জন্য একটি দেশ কীভাবে পলিসি করতে পারে, সেসব নিয়েই আজ কথা বলবো।

এর কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় রয়েছে। নন কমিউনিক্যাবল রোগগুলো ডিমেনসিয়া বা আলঝাইমারের ঝুঁকির কারণ। যেমন: উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা, কোলেস্টেরল বেশি থাকা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। এ ছাড়া যারা বিষণ্ণতায় ভুগে, মানসিক অবস্থা ভালো নেই, এমন নারী বা পুরুষরাও ডিমেনসিয়াতে ভুগতে পারে। আরেকটি দেখা যাচ্ছে, যারা বেশি স্থূল বা ওবেস তাদেরও এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তাহলে ডিমেনসিয়া যেন কম হয় আমার, সেটির জন্য আমি কী করতে পারি? এই বিষয়গুলো আমরা একটু জেনে নিই। ব্যক্তিগতভাবে আমি কীভাবে সুরক্ষাটি আনতে পারি, সেটি নিয়ে আলোচনা করতে চাই।

তাহলে বিষয়টি হলো, আমাদের যেন এই রোগগুলো না হয়। এই ক্ষেত্রে হার্ট ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হবে। ডায়াবেটিস থাকলে এটি ব্যবস্থাপনা করা জরুরি। এর জন্য যে সেবা, ওষুধ ও রুটিন দরকার, সেটি ব্যবস্থাপনা জরুরি।

আমরা জানি, তামাক পান করা, সিগারেট খাওয়া বা ব্যবহার করা ইত্যাদি বড় ধরনের ঝুঁকি। সুতরাং তামাক সেবনকে বাদ দিতে হবে। আর যেসব দেশের মানুষ মদ্যপান বেশি করে, তাদেরও বলা রয়েছে, তোমরা এটি বেশি খাবে না।

আরেকটি পরামর্শ খুব দেওয়া হয়, মনকে প্রফুল্ল রাখতে হবে, যেন বিষন্নতায় না যায়। একা যেন না থাকে, সামাজিকভাবে যেন মানুষের সঙ্গে মেশে।

আরেকটি বিষয় আমরা সবাইকে বলে থাকি। সেটি হলো, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে; ব্যায়াম করতে হবে। দেহকে একটি ব্যায়ামের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি, খাবারের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। খাবারটি যেন ভারসাম্যপূর্ণ হয়।

খাওয়াটি এমন হবে না যে আপনাকে আরো স্থূল করবে; ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দেবে। বেশি মাংস বা উচ্চ চর্বিজাতীয় খাবার খাবেন না। এতে দেহ আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিদিন সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক চর্চা ও সুস্থ জীবনের মধ্যে থাকলে সেই মানুষটির ডিমেনসিয়া বাড়ার ঝুঁকি অনেক কমে।

আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কানে সঠিকভাবে শোনার বিষয়টি। আমরা অনেক সময় বুঝি না, কানে কম শুনতে পাচ্ছি। চিকিৎসক হিসেবে আমার পরামর্শ থাকবে চল্লিশের পরে আপনি কানে ঠিকঠাকমতো শুনতে পারছেন কি না, সেই পরীক্ষা করিয়ে নিন। একটি বেজ লাইন করুন। এরপর হয়তো তিন বা চার বছর পর পরীক্ষা করলেন। কেন এই পরীক্ষাটি জরুরি? কারণ, কানে না শুনতে পারলে আপনার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করবে না, ডিমেনসিয়ায় ভুগবেন।

আর যারা খেলোয়ার রয়েছে, তারা যেন মস্তিষ্কে আঘাত না পায়। কারণ, মাথায় আঘাত ডিমেনসিয়ার জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি।

এবার আসি, যাদের ডিমেনসিয়া হয়ে গেছে, তাদের জন্য কী করতে হবে? তাদের জন্য যে সেবাটা দরকার, সেটা কেমন হবে? ব্যক্তিকে নিয়ে চিন্তা করলে, তার যে মানসিক অবস্থা, সেটা কেমন হচ্ছে বোঝা জরুরি। সে কি নিজে বাথরুমে যেতে পারছে না কি অসুবিধা হচ্ছে, খেয়াল করতে হবে। দেখতে হবে নিজে নিজে প্রস্রাব করতে পারছে কি না, গোসল করতে পারছি কি না, শোবার ঘর ও বাথরুম চিনতে পারছে কি না। এমনও অবস্থা হয়ে যায় কোনদিকে বাথরুম সেটা হয়তো চিনছে না। খেতে দেওয়া হলে হয়তো চামচ বা হাত কিছু দিয়েই খেতে পারছে না।

সুতরাং একজন ডিমেনসিয়া রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে তার যত্ন দিতে হবে। এমনও হতে পারে, তাকে বাথুরুমে ধরে নিয়ে যেতে হচ্ছে। বাথরুমের জন্য তাকে চেয়ার বিছানার কাছে দিয়ে দিতে হতে পারে। এসব বিষয় বুঝে পরিবারের মানুষকে কাজের ভাগাভাগি করে সেবাটা দিতে হবে।

অনেক জায়গায় দেখা যায়, এসব রোগী নির্যাতনের শিকার হয়ে যায়। অনেক রোগী রয়েছে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে চায়, রাস্তায় চলে যাবে। তখন তাকে রাস্তায় যেতে দেওয়া যাবে না। দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সে ফিরে এসে বাড়ি খুঁজে পাবে না। সে বাড়ি না খুঁজে পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে। ডিমেনসিয়ার এমনও অনেক বড় বড় লক্ষণ রয়েছে। সুতরাং তাকে আসলে সুরক্ষা দিতে হবে, সেবা দিতে হবে। তার যে সেবা, খাদ্য, আবহাওয়া দরকার সেটি দেওয়া জরুরি।

আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় যারা নিয়োজিত রয়েছে, ডাক্তার থেকে শুরু করে প্যারামেডিক যারা রয়েছে, এদের সবাইকে ডিমেনসিয়া সম্পর্কে জানাতে হবে। ডিমেনসিয়ার যত্নের ধরনটা জানা জরুরি। এই রোগের কী কী লক্ষণ হতে পারে, পরিবারের মানুষকে কীভাবে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে, তা জেনে রাখতে হবে।

আমরা অনেক সময় দেখি, রোগী চিকিৎসকের কাছে গেলো, উনি ২০টি ওষুধ দিয়ে দিলেন। ডিমেনসিয়া রোগী ঐ ২০টি ওষুধ কীভাবে খাবে এবং তার সত্যি সত্যি কোনো উপকার হবে কি না, এটি আমাদের একটি আদর্শগত বিষয়। আমি তাকে কী ওষুধ দিচ্ছি, কতটুকু ওষুধ দিচ্ছি, সেগুলো তার কোনো উপকারে আসবে কি না, সেগুলো বুঝতে হবে।

পরিবার তো এমনিতেই বিধ্বস্ত। এরপরও ১৫ থেকে ২০টি ওষুধ কিনতে দিলে অর্থনৈতিকভাবে আরো বিব্ধস্ত হয়ে যাবে। তাহলে সেই পরিবারটির কথা চিন্তা করতে হবে। রোগীকে সেই ওষুধই দিতে হবে যার খরচ সে বহন করতে পারে এবং যেটি তাকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে।

ডিমেনসিয়াকে একই পর্যায়ে রাখতে পারা গেলে ভালো। একেই আমরা অনেক সৌভাগ্যের মনে করি। আমরা ইতিহাস থেকে জেনেছি ডিমেনসিয়াকে সম্পূর্ণ ভালো করা যায় না। ক্ষতিকে কমিয়ে নিয়ে আসা যায়। কিছু ওষুধ রয়েছে যা কি না সহায়ক হতে পারে। সুতরাং খুব বুঝেশুনে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে; পরীক্ষা করতে হবে। কেবল যতটুকু পরীক্ষা না করলে নয়, ততটুকু করা ভালো। রোগীর পকেট থেকে যেন অনেক টাকা খরচ না হয়, সেই জিনিসটিও যারা সেবাদানকারী তারা বিচার বিবেচনা করতে পারে।

অনেক বাড়িতে ক্যানসার সারভাইভার, প্রতিবন্ধী বা দুর্ঘটনায় আক্রান্ত মানুষ থাকে। এই ধরনের মানুষকে যারা সেবা দেয়, তাদের কমিউনিটিতেও ডিমেনসিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে জানাতে পারলে ভালো। তাদের সেবার আওতায় আমরা ডিমেনসিয়ার রোগী আনতে পারলে, আমাদের ভার অনেকদিক থেকে কমে আসে।

আমাদের সরকারের কাছে যেটি আবেদন এবং আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি, সেটি হলো, ডিমেনসিয়ার জন্য বিশেষায়িত সেন্টার রাখা। এখানে চিকিৎসকরা এটি সম্পর্কে জানবে, রোগীরা সেবা পাবে। সেখান থেকে অন্যান্য চিকিৎসকদেরও আমরা আরো প্রশিক্ষণ দিতে পারবো। যারা পরে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করবে। আমাদের আরেকটি বিষয় দরকার। সেটি হলো, তথ্য বা ডেটা। এটি না থাকলে যারা নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে বসে রয়েছেন, তাদের আমরা তথ্য দিতে পারবো না।

আজ যেমন আমরা বলছি, ডিমেনসিয়ায় আক্রান্তদের চারজনের মধ্যে তিনজনই নারী। এটি আসলো কোথা থেকে? যেহেতু আমরা গবেষণা করেছি এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল পেয়েছি, সেহেতু আমরা জেনে নিয়ে এর ওপর ব্যবস্থাপনাটা পরিচালনা করবো। আমার মনে হয়, আমাদের দেশে ডিমেনসিয়ার ওপর পলিসি থাকা প্রয়োজন, বিশেষায়িত সেন্টার থাকা প্রয়োজন এবং প্রত্যেক স্বাস্থ্যকর্মীর এই ডিমেনসিয়া সম্পর্কে জ্ঞান থাকা উচিত। পাশাপাশি তারা পরিবারকে কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবে, এই রোগীকে কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবে, এই বিষয়ে জ্ঞান থাকলে তারা ঐ পরিবারের মানুষকে পরামর্শ দিতে পারবে।

আমাদের দেশে একটি স্টিগমা রয়েছে। এই ধরনের রোগীকে মানুষ পাগল বলছে। এরা পাগল নয়। এরা একটি অসুস্থ মানুষ, যার সুস্থতা দরকার এবং সুস্থ থাকতে সেবা দরকার। এটা আমাদের দায়িত্ব। অনেক দেশ রয়েছে এই বিষয়ে বিশেষ ইনসুরেন্স রয়েছে। অনেক দেশ রয়েছে, যেখানে বৃদ্ধ বয়সে তাকে আলাদা করে অর্থ উপর্জন করতে হয় না, তার যে ইনসুরেন্স রয়েছে, সেটা দিয়ে সেবাটা হয়ে আসে। আমাদের দেশে এই ধরনের রোগের জন্য ইনসুরেন্স করলে বৃদ্ধ বয়সে টাকার অভাবে বেশি ভুগতে হবে না। তারা একটি ব্যবস্থার মধ্যে চলে আসবে।

সুতরাং সরকার, পলিসি মেকার ও সিনিয়র প্রোগরাম ম্যানেজারদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাচ্ছি, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যেন বেশি ভুগতে না হয়। তারা যেন সঠিক চিকিৎসাব্যবস্থা, সেবা ও সম্মানটি পায়। তাহলে এই রোগে আক্রান্তদের আমরা নিরাপদে রাখতে পারবো।

লেখক: রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

30/03/2025
13/03/2025

নারীর জীবনচক্রে সহিংসতা : বেরিয়ে আসার উপায়
---
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

13/03/2025

নিরাপদ মাতৃত্ব : কী ও করণীয়
---
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

13/03/2025

মাসিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
---
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

12/03/2025

অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভাবস্থা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?
----
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

12/03/2025

মাতৃমৃত্যু: কারণ ও করণীয়
----
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

12/03/2025

প্রসব পূর্ববর্তী সেবা যেভাবে নেবেন
----
ডা. হালিদা হানুম আখতার;
রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

12/03/2025

'সম্ভ্রমযোদ্ধা : সেবাসদন ও একজন ডা. হালিদা'-বইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠানে বইটির লেখক, রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতারের স্বাগত বক্তব্যের অংশবিশেষ। বক্তব্য শেষে একাত্তরের আবহ পাঠ।

12/03/2025

রোকেয়া পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতারের বই 'সম্ভ্রমযোদ্ধা : সেবাসদন ও একজন ডা. হালিদা'-এর আলোচনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিরা।

Address

Fulbaria

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr Halida Hanum Akhter posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category