25/05/2021
(সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইল)
সাম্প্রতিক সময়ে উদ্বিগ্ন বিষয়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানি সঠিক নিয়ম পালন করি গুজব বা বিভ্রান্তি না ছড়ায় আমরা।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নয় এর নাম মিউকর মাইকোসিস। এই রোগ আগেও ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এটা কোন নতুন রোগ নয়। এই রোগ সবার হয় না। তাই ভয়ের কোন কারণ নেই।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি ছোঁয়াচে? এই রোগের উপসর্গ কী কী, জেনে নিন...
অতিমারি কোভিড আক্রান্তদের শরীরে দেখা দিচ্ছে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নামক এক প্রকার ছত্রাকের সংক্রমণ। যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হচ্ছে মিউকরমাইকোসিস। মূলত দুর্বল শরীরেই বাসা বাঁধে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস৷ ফলে করোনা রোগীর (coronavirus patients) শরীরে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তখনই শরীরে আক্রমণ করে এই ফাঙ্গাল সংক্রমণ৷
মূলত দুর্বল শরীরেই বাসা বাঁধে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস৷ ফলে করোনা রোগীর (coronavirus patients) শরীরে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তখনই শরীরে আক্রমণ করে এই ফাঙ্গাল সংক্রমণ৷
কী এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস?
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমায়কোসিস একটি বিরল ফাঙ্গাল সংক্রমণ (rare fungal infection)৷ এটি শরীরে দেখা দিলে ৫৪শতাংশ রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানা গিয়েছে, কোভিড সংক্রমণ থেকে রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও তাঁর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। তখনই এই জাতীয় ছত্রাক শরীরে বাসা বাঁধে। যে সব রোগীকে দীর্ঘদিন আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে এবং যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের শরীরের এই জাতীয় সংক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে।
এই রোগের উপসর্গগুলি কী কী
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেনঃ মুখের একপাশে ব্যথা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া অথবা ‘ডাবল ভিশন’ এই রোগের লক্ষণ। এ ছাড়া নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে কালো অথবা বাদামি রঙের জল পড়া এই রোগের লক্ষণ হতে পারে। এমনকি, ফুসফুস-সহ একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংক্রমিত করতে পারে মিউকর মাইকোসিস। আপনার যদি এই ছত্রাকের সংক্রমণ হয় তবে গালে ব্যথা হতে পারে। এটি গালের একপাশে বা উভয় দিকেই হতে পারে, এটিই এই ছত্রাকের সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ। পরে, এই সংক্রমণের কারণে, মুখের ক্ষতও তৈরি হতে পারে। এগুলি ছাড়াও এই সংক্রমণ ত্বক সম্পর্কিত আরও অনেক সমস্যার জন্ম দিতে পারে।সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু করা না হলে এ ক্ষেত্রে ফল হতে পারে মারাত্মক।
চোখ প্রভাবিত করে এই ফাঙ্গাস
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, ফাঙ্গাল সংক্রমণ চোখকেও প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে চোখে ফোলাভাব এবং দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া চোখের লালভাবও এই ছত্রাকের সংক্রমণের অন্যতম প্রধান লক্ষণ।
কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিস?
এই রোগ ছোঁয়াচে নয় (Black Fungus not contagious) ৷ ফলে এটি সরাসরি একজনের দেহ থেকে অন্যের দেহে যেতে পারে না৷শুধু মাত্র যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় আছে, দীর্ঘদিন আইসিইউ তে আছে তাদের স্ট্যারয়েড নিতে হয় তাই তাদের এই রোগ টি হতে পারে। এছাড়া যেসব করোনা আক্রান্ত রোগী একই মাস্ক অনেকদিন ব্যবহার করে এবং অক্সিজেন সিলিন্ডারের মিটারের সাথে সংযুক্ত বোতলটিতে ময়লা পানি ব্যবহার করে তাদেরও এই রোগ হতে পারে। আবারও বলছি এই রোগ সবার হয় না তাই অহেতুক ভয়ের কোন কারণ নেই।
একমাত্র এই ধরণের ছত্রাকের (Fungus) ছোঁয়ার এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে৷ ক্ষতি করতে পারে ফুসফুস বা সাইনাস৷ ত্বকের সমস্যা থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা, সবটাই ঘটতে পারে। রোগীর শরীরের অবস্থা, এবং কতটা জোরাল ফাঙ্গাস, তার উপর নির্ভর করে এর মৃত্যুর হার৷ বহু করোনা রোগীর অবস্থা অবনতি হওয়ার পিছনে রয়েছে এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস৷
চিকিৎসা
শুধু মাত্র যাদের ব্লাড সুগার বা ডায়াবেটিস অনেক হাই, যাদের ক্যান্সারের মত জটিল রোগ আছে, যারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নিজেই পন্ডিতি করে প্রায়ই স্ট্যারয়েড নেয় যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায় শুধু মাত্র তাদেরই এই রোগ হতে পারে। সব করোনা আক্রান্ত রোগীদেরও এই রোগ হয় না। মিউকর মাইকোসিস প্রথম নাকে, তারপর চোখে আর শেষে ব্রেনে সংক্রমণ ঘটায়। তবে এই রোগ হলেই মানুষ মরে না। এই রোগের লক্ষণ প্রকাশের সাথে সাথে ডাক্তারের চিকিৎসা নিলে এই রোগ এমনি ভাল হয়ে যায়। এছাড়া ভিটামিন সি, ডি, ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, সব সময় পরিষ্কার মাস্ক পড়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, শারীরিক ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম সর্বোপরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ালে এই রোগ কিছুই করতে পারে না। তাই মিউকর মাইকোসিস নিয়ে শুধু শুধু ভয়ের কিছুই নাই।
আসুন আমরা সবাই সঠিক তথ্য জেনে বুঝে শেয়ার করি এবং বিশেষজ্ঞদের সুপরামর্শ গ্রহণ করি।আমরা সবাই ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলি এবং সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করি।
এই করোনা মহামারীতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি এবং সুস্থ ও সাবধানে থাকি ।