09/10/2025
🧿 কেস হিস্ট্রি: বশীকরণের যাদু — এক মেয়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা
📋 Patient Name: (গোপনীয়)
📅 Age: ২৫ বছর
🏠 Address: গাজিপুর জেলা
🧕 Complaint: ঘন ঘন কান্না, ঘুমে ভয় পাওয়া, মনে হয় কেউ ডাকছে, এক নির্দিষ্ট ছেলেকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না।
🕰️ Duration: ৩ মাস
---
🩺 ইতিহাস:
রোগিনী (ছদ্মনাম: সোহানা) বলেন —
> “আমি রাশেদ নামে এক ছেলেকে ভালোবাসতাম। কিন্তু সে আমাকে পাত্তা দিত না।
তখন এক বান্ধবীর মাধ্যমে একজন তাবিজওয়ালার কাছে যাই।
সে বলল, ‘বশীকরণ দরকার। এই তাবিজ পড়লে ছেলেটা তোমার পিছে পিছে ঘুরবে।’”
তাবিজটি গলায় পড়ার ৫-৬ দিনের মধ্যে সে এক ধরনের উত্তেজনা অনুভব করে।
রাশেদ আচরণে পরিবর্তন আনে — কিছুদিন পর দুজনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়।
কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হয় অদ্ভুত ঘটনা —
রাতে রাশেদের চোখ বড় হয়ে যেত
কানে কানে কথা শুনত
ঘুমাতে পারত না
সোহানাকে দেখলেই হঠাৎ ভয় পেত
মাঝেমধ্যে বমি, মাথাব্যথা, গরম শরীর
পরিবার বিষয়টি ইউনানি ও ইসলামিক রুকইয়া চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
রুকইয়া সেশনে দেখা যায়, জাদুর প্রভাব আছে, যা “বশীকরণের যাদু” নামে পরিচিত।
---
🔍 রুকইয়া সেশনে ব্যবহৃত কোরআনি আয়াতসমূহ
1. সূরা আল-বাকারা (২:১০২)
> “তারা এমন কিছু শিখত যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটায়;
কিন্তু তারা এর দ্বারা কারো ক্ষতি করতে পারে না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া।”
🟢 এই আয়াতে বোঝা যায় — যাদু শেখা ও করা উভয়ই গুনাহ।
আর যাদুর কোনো ক্ষমতা নেই, আল্লাহ অনুমতি না দিলে কিছুই হয় না।
---
2. সূরা ইউনুস (১০:৮১–৮২)
> “মূসা বলল, তোমরা যা এনেছ, তা তো যাদু;
নিশ্চয়ই আল্লাহ একে ব্যর্থ করে দেবেন।
আল্লাহ তো সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও অপরাধীরা তা অপছন্দ করে।”
🟢 এই আয়াত রুকইয়ার সময় পড়লে যাদুর প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়ে।
---
3. সূরা ত্বাহা (২০:৬৯)
> “আর তোমার ডান হাতে যা আছে, তা ফেলে দাও;
তারা যা বানিয়েছে, তা তো জাদুকরদের কৌশল মাত্র।
আর জাদুকর কখনো সফল হয় না, যেখানেই সে থাকুক।”
🟢 এই আয়াত মনে করিয়ে দেয় — যাদু সাময়িক, সত্য ও তাওহিদের সামনে তার কোনো শক্তি নেই।
---
4. সূরা আল-ফালাক ও আন-নাস
> “আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি প্রভাতের প্রতিপালকের কাছে,
তাঁর সৃষ্টি সকল অশুভ থেকে...
এবং হিংসুকের হিংসা থেকে।”
“আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের কাছে...
সেই কুমন্ত্রণা দানকারী শয়তান থেকে।”
🟢 এই দুটি সূরা প্রতিদিন ৩ বার সকালে ও রাতে পড়া — জাদু ও নজর উভয়ের প্রতিষেধক।
---
🧴 রুকইয়া চিকিৎসা (সেশনে ব্যবহৃত পদ্ধতি)
1. ওজু অবস্থায় রুকইয়া আয়াতসমূহ পড়ে পানি ও অলিভ তেলে ফুঁক দেওয়া
2. সেই পানি দিয়ে গোসল করা ৩ দিন
3. একই পানি থেকে অল্প পরিমাণ পান করা (প্রতিদিন সকালে)
4. রাতে ঘুমানোর আগে সূরা ফালাক ও নাস ৩ বার করে পড়া
5. ঘরের কোণে ঝুলানো তাবিজ, অচেনা সুতোর গিট বা লবণ জাতীয় বস্তু থাকলে সরিয়ে ফেলা
6. নামাজ ও তাওবার নিয়মে থাকা
---
🌿 ফলাফল (৩ সপ্তাহ পর):
ভয় ও কণ্ঠশোনা বন্ধ
ঘুম স্বাভাবিক
রাশেদের প্রতি মানসিক আসক্তি কমে যায়
দেহে শান্তি ও স্বচ্ছন্দতা ফিরে আসে
রোগিনী বলেন —
> “আমি বুঝেছি, যাদু নয়, আল্লাহই হৃদয়ে ভালোবাসা দেন।
আমি এখন শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি চাই।”