24/01/2025
🌼হাঁপানি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
দীর্ঘমেয়াদী হাঁপ বা বারবার হাঁপের আক্রমনকে হাঁপানি বলে। হাঁপানি শ্বাসতন্ত্রের ক্রনিক প্রদাহ। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শ্বাসনালীগুলো সর্বদা প্রদাহজনিত কারনে লাল ও সংবেদনশীল থাকে, এ সংবেদনশীল খুদ্র শ্বাসনালীগুলো যদি ঠান্ডা, ভাইরাস জীবাণু অথবা হাঁপানি উদ্দীপক অন্য কোন সংস্পর্শে আসে তখন সেগুলোতে প্রতিক্রিয়াজনিত সংকোচন ঘটে, ফলে শ্বাসনালী সংকীর্ণ হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি হয় এবং রোগীর শ্বাসকষ্ট হয়।
কারনঃ হোমিওপ্যাথি মতে সোরা-ও সাইকোসিসের উপবিস এর প্রধাণ কারন, যেমন কারো গণোরিয়া বা চর্মরোগ মলম দিয়ে বা বিসদৃশ পন্থায় চিকিৎসা করার পরে এ রোগটি ফুসফুসে আক্রমণ করলে এর নাম হয় হাঁপানি, লিভারে আক্রমন করলে হয় লিভার সিয়োসিস, কিডনিতে আক্রমন করলে হয় নেফরোসিস। এলার্জির কারনে হাঁপানি হতে পারে, ধূলা-বালি, ফুলের রেণু, পশুপাখির লোম, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ইত্যাদিতে যদি কারো এলার্জি থাকে তবে হাঁপানি হতে পারে। কম্বল, কার্পেট, লোমশ পোশাক অনেক সময় হাঁপানির কারণ হতে পারে। ধূমপান করলে হাঁপানি হবার সম্ভাবনা থাকে।
প্রকারভেদঃ👇
ক্রণিক হাঁপানিঃ এটা এপিসোডিক হাঁপানি যা বছরের পর বছর যোগী কষ্ট পায়, কাশি মিউকাস মিশ্রিত থুথু এবং বারবার শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ দেখা যায়, যখন রোগের অন্য লক্ষণ থাকে না তখনও Bronchi দেখা যায় এবং হঠাৎ মারাত্মক আকার ধারণ করে।
Acute severe Asthamaঃ
এ ধরনের এ্যাজমা খুবই মারাত্বক, এই হাঁপানি থেকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
উপসর্গ ও লক্ষণঃ 👇
নারীর গতি হটাৎ ১২০ এর বেশি সেই সাথে পালসাস প্যারাডক্স থাকে এবং পরে কমতে থাকে। একসাথে পুরো বাক্য বলে শেষ করতে পারে না, সেন্ট্রাল সায়ানোসিস থাকতে পারে, অবসন্নতা, রক্তচাপ প্রথমে বাড়ে পরে কমতে থাকে। ফুসফুসের কোন শব্দ না হওয়া আর্থাৎ Silent chest,হঠাৎ মারাত্বক হাঁপানির প্রধান কথাই হলো রোগীকে দ্রুত বিপদমুক্ত করতে হবে। হোমিও ঔষধ দিয়ে রোগীকে সাথে সাথে হাসপাতালে পাঠাতে হবে, সহনশীল অবস্থায় এলে লক্ষণভিত্তিক হোমিও চিকিৎসা দিতে হবে।
চিকিৎসাঃ👇
1. Ammonium carbonicumঃ পুরাতন হাঁপানি, সিঁড়ি বেয়ে দু-এক ধাপ উপরে উঠলেই শ্বাসকষ্ট। মুক্ত বায়ুতে আরাম বোধ, উষ্ম বায়ুতে দম বন্ধের অনুভূতি, মুখ নিল হয়ে যাওয়া, খুক খুক কাশিসহ শ্বাসকষ্ট সামান্য পরিশ্রমেই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি হলে এ ঔষধ কার্যকর।
2. Antim tartঃ অত্যাধিক শ্বাসকষ্টের জন্য রোগী উঠিয়া বসিতে বাধ্য হয়। শেষ রাতে বৃদ্ধি, ভিতরে প্রচুর শ্লেষ্মা জমে জিহ্বাতে ত্রিকোণাকৃতির সাদা প্রলেপ, বুকের মধ্যে ঘড়ঘড় শব্দ ইত্যাদি লক্ষণে কার্যকর।
3. Arsenicum Albumঃ দুর্বিষহ শ্বাসটান, রাত ১টার পর যোগের বৃদ্ধি, অত্যাধিক উদ্বেগ ও অস্থিরতা, শ্বাসরোধ হবার ভয়ে শুইতে ভয় পায় সারা রার বসে থাকে নড়াচড়ায় বৃদ্ধি উত্তাপে বা গরমে আরামবোধ।
4. Kali Bichromicumঃ শ্বাসনালীর প্রদাহসহ হাঁপানি, কফ
আঠালো দড়িরমত। রাত ৩/৪ টার দিকে বৃদ্ধি, সামনের দিকে ঝুঁকলে কফ বের হলে আরামবোধ। নাসারন্ধে বা কপালের ব্যাথা রোগী অত্যন্ত দুর্বল হলে এ ঔষুধটি কার্যকর।
5. lobelia ঃ বুকের মধ্যে আড়ষ্টতা, সামান্য নড়াচড়ার কষ্ট দ্রুত চলাফেরা করলে আরাম, হাঁপানি বাড়ার আগে শরির চিটমিট করলে এ ঔষধ কার্যকর।
6. Lachesisঃ হাঁপানির কারনে নিদ্রাভঙ্গ, বুকের উপরে সামান্য চাপ সহ্য হয় না, কাশির সাথে সামান্য কফ বের হলে আরাম, গলার কাছে সামান্য কাপড় না রাখতে দিলে, গরম ঘরে রোগ বৃদ্ধি হলে এ ঔষধটি প্রযোজ্য।
6. Bromiumঃ সমুদ্রতীরে গেলে হাঁপানি বাড়ে, শ্বাস গ্রহনে কষ্ট হলে রোগী যদি মনে করে ফুসফুসে বায়ু প্রবেশ করাতে পারলেই আরাম হবে, তবে সে রোগীর জন্য এ ঔষধটি
উপযুক্ত।
7. Sulphurঃ চর্মরোগের কুচিকিৎসার ফলে হাঁপানি রোগ হলে, মাঝরাতে ঘুম ভাঙার পর বৃদ্ধি হলে, ঘরের দরজা খুলে দিতে বলে, মনে কারে খোলা বাতাসে আরাম পাবে মাথা ও পায়ে জ্বালা অনুভূত হলে, দুপুরের পূর্বে পাকাশয়ে শুন্যতা অনুভব হলে সাথে অবসন্ন বোধ করলে সালফার জরুরী প্রয়োজন।
এছাড়াও লক্ষণভেদে যেসব ঔষধ আসতে পারেঃ
👉Ipecac
👉Graphites
👉Carboveg
👉 Dulcamara
👉Lycopodium
👉 Grindelia
👉Natrum sulph
👉 Nux vomica
☞ লক্ষণের সাথে মিলে গেলেও ঔষধ সেবনের পূর্বে একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
ডা: নাজনীন আকতার
টিটিএস হোমিও মেডিকেয়ার
হেল্পলাইন নাম্বার: ০১৭১৭৯১৮৩৪৪