
05/08/2025
**নিষিদ্ধ প্রেম – পর্ব ৫**
**লেখা: সুমু**
\ #নিষিদ্ধ_প্রেম #সমাজ_ও_ভালোবাসা #সুমুর_কলমে
সন্ধ্যার আলো যখন ঝিমিয়ে আসে, তখন শহরের ব্যস্ত রাস্তার এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকে মেয়েটি। যার চোখে আজ নতুন এক দীপ্তি, ভেতরে লুকানো আত্মবিশ্বাস। একসময় এই চোখেই ছিল ক্লান্তি, হতাশা আর অন্ধকার। আজ তার জায়গায় জেগেছে সাহস, প্রত্যয় আর একটা নীরব বিদ্রোহ।
তিথি আজ আর কেবল 'একজন পতিতা' নয়। সে এখন বই পড়ে, খবর দেখে, সমাজের গতিপথ বোঝে। ‘সেবার সময়’ শেষ করে সে এখন ছোট্ট একটা ছাত্রীকে পড়ায় – নাম রেখেছে অনন্যা, যার বাবা-মা নেই। তিথি চায়, ও যেন আর কখনো এমন কোনো গলির মুখে না আসে, যেখান থেকে সে এসেছিল।
তার প্রেমিক আরিয়ান এখনো আশপাশেই থাকে, কিন্তু সম্পর্কটা একতরফা নয় আর। আরিয়ান তার পেছনে দাঁড়ায়, তিথির পাশে থাকে—তবে সামনে থেকে পথ দেখায় না। তিথির আত্মমর্যাদা যেন না হারায়, সেই হিসেবেই সে এগোয়।
আজ ‘আলোর গলি’ নামের একটা ছোট এনজিওর সদস্য হয়েছে তিথি। যেখান থেকে সে এক সময় গা ঢাকা দিত, আজ সেখানেই দাঁড়িয়ে মুখ খুলে বলে—
"হ্যাঁ, আমি একসময় পতিতালয়ে ছিলাম, কিন্তু এখন আমি নিজেকে অন্যভাবে সংজ্ঞায়িত করি। আমি একজন মানুষ, একজন স্বপ্নদ্রষ্টা।"
তিথির ভিতরের মেয়েটা যেন আজ চিৎকার করে বলে—
ভালোবাসা কেবল যৌনতা নয়, কেবল কাছের শরীর নয়। ভালোবাসা একটা হাত ধরা, একটা দৃষ্টি দেওয়া, একটা নিরব স্বীকৃতি—‘তুমি মানুষ’ বলে।
তিথি জানে, সে হয়তো কোনোদিন সমাজের সবার মন জয় করতে পারবে না। কিন্তু সে নিজেকে জয় করে ফেলেছে। সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
তাই আজ জানালার পাশে দাঁড়িয়ে, সে শুধু নিঃশব্দে বলে ওঠে—
"আমি নিচু ছিলাম না কখনও, শুধু কারও চোখে আমি ছিলাম ‘কম’।
এখন আমি নিজেকে দেখি, আর দেখাতে পারি—আমি 'পূর্ণ'।"
(চলবে)