30/01/2022
মধু খাওয়ার উপকারিতা এবং সঠিক নিয়মঃ
মধু: মধু হল এক প্রকারের উচ্চ ঔষধি গুণসম্পন্ন মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে মধুকে বলা হয় মহৌষধ। প্রাচীনকাল থেকেই ‘পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক’ হিসেবে বিভিন্নভাবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ মধু গ্রহণ করে আসছে। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাদের কাছে তুলে ধরব, মধু সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, মধু কেন খাবেন? মধু খাওয়ার উপকারিতা কি? কোন সময় মধু খেলে বেশি উপকারিতা পাবেন এবং আরো বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: একটু সময় নিয়ে প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়লে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন।
প্রথমে আমরা জেনে নিই মধুর খাদ্য উপাদান সমূহ:
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫-১২ শতাংশ মন্টোজ থাকে। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি। আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনকাইম। এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান যা আমাদের শুধুমাত্র দেহের বাহ্যিক দিকের জন্যই নয়, দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় কাজ করে।
মধু কেন খাবেন?
প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত অত্যন্ত উপকারী খাদ্য মধু। প্রাচীনকাল থেকে এটি রোগ নিরাময়ে এবং প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে মহা ঔষধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কোরআন হাদিসেও বলা হয়েছে মধুর কথা।
মধু হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
মধু রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদপেশির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।
মধু দাঁতকে পরিষ্কার ও শক্তিশালী করে এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে।
মধুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
মধুর ক্যালরি রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়, যারা রক্ত স্বল্পতায় বেশি ভোগে বিশেষ করে মহিলারা, তাদের জন্য নিয়মিত মধু সেবন অত্যন্ত ফলদায়ক।
মধু গ্লাইকোজেনের লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগের উপকারি।
আলসার ও গ্যাস্ট্রিক রোগের জন্য মধু উপকারী, এছাড়াও নিয়মিত মধু খেলে বার্ধক্য দেরিতে আসে।
শিশুদের মুখের ভেতর পচনশীল ঘায়ের জন্য খুবই উপকারী।
ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মধু স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কলা সুদৃঢ় করে।
মধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ক্ষুধা এবং হজমশক্তি ও রুচি বৃদ্ধি করে।
মধু রক্ত পরিশোধন করে এবং শরীর ও ফুসফুসকে শক্তিশালী করে।
মধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এবং বাতের ব্যথা উপশম করে।
গলা ব্যথা, কাশি-হাঁপানি এবং ঠাণ্ডা জনিত রোগে মধু বিশেষ উপকারী।
মধু শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে শরীর হয়ে উঠে সুস্থ, সতেজ এবং কর্মক্ষম।