17/04/2022
🗣️👉 টাইপ টু ডায়বেটিসে আক্রান্ত হবার পর আমরা অনেকেই মনে করি,
আমার বাবার ডায়বেটিস, আমার চাচার ডায়বেটিস, মায়ের ডায়বেটিস, আত্মীয় স্বজন সবারই ডায়বেটিস।
তার মানে, সম্ভবত আমি বংশগতভাবে ডায়বেটিসটা পেয়েছি।
খেয়াল করলে দেখবেন, আপনার আগের জেনারেশনে ডায়বেটিস শুরু হয়েছিল বয়স ৪০-৪৫ বছর পর।
তার আগের জেনারেশন, অর্থাৎ নানা-দাদাদের জেনারেশনে ডায়বেটিস শুরু হয়েছিল দেখবেন ৫৫-৬৫ বছর বয়সের দিকে।
এর আগের জেনারেশনে একটু খোজ খবর নিলে দেখবেন ডায়বেটিস ছিল কিনা মানুষ বুঝতো না বা জানতো না। কিন্তু আমেরিকান ও ব্রিটিশ হেলথ সিস্টেমের ডেটা থেকে আমরা বুঝতে পারি, টাইপ টু ডায়বেটিস ১৯৬০ সালের আগে খুব অল্প মানুষেরই হত।
তাই আমার কাছে মনে হয়, ডায়বেটিসের জিনেটিক রুট খোঁজাটা আসলে বৃথা চিন্তা। একশো বছর না, মাত্র ৫০ বছর আগে গেলেও ডায়বেটিস ১% মানুষের মধ্যেও পাওয়া যায়নি।
👉 এবার আসুন একটু মাথা খাটাই।
আপনার দাদা কোন চাল খেতেন? বাদামী চাল, মোস্টলি, ফুল ফাইবার ইত্যাদি। গাড়ি, রিকশা, টেম্পু খুব একটা এভেইলেবল ছিল না তখন। তারা হাটতেন বা সাইকেলে চড়তেন।
আপনার বাবা-চাচাদের ছেলেবেলাও এভাবেই কেটেছে। আমরা একটু খোঁজ করলে দেখবো, বয়স ৩০ হবার আগে মিলে ভাঙ্গানো চাল তারা খেতে পাননি। দিনে ১০-১২ কিলো এমনিতেই হাটা পড়তো সবার।
১৯৯০ সালের আগে গ্রামগুলতে বিদ্যুৎ পৌছায়নি। সবাই ঘুমাতো সন্ধ্যা ৭-৮ টার মধ্যেই। শহরেও রাত ৯টার পর ঘুমিয়ে পড়তো বেশীরভাগ মানুষ।
তখন অধিকাংশ পরিবারের রান্না হত মূলত তিন বেলার জন্য, সকাল আর দুপুর আর রাত, তাও আবার বেশীরভাগ কাঠের চুলায়। দুপুরে যদি ভারী খাবার হত সাধারনত রাতের খাবার হালকা সেরে ফেলা হত।
সব মিলিয়ে, দিনে ১২ ঘন্টা চলতো ইটিং পিরিয়ড, আর ১২ ঘন্টা ফাস্টিং।
২০০০ সালের পর হিসাবটা বদলে গেল। মানুষ রাত জাগতে শুরু করলো, হাটতে ভুলে গেল।
২০১০ সালের পর আমরা চলে এলাম নতুন বাস্তবতায়, ওয়াইফাই-মোবাইল-ডিশ এর সুবাদে আমরা অনেকেই এখন ঘুমাই রাত ৩টায়, দিনের প্রথম মিল হয় সকাল ৯টায়, শেষ মিল হয় রাত ১টায়।
খেয়াল করবেন, এই যে আনন্যাচারাল লাইফস্টাইল, এটা আপনার দাদার চেয়ে আপনার বাবার বেশি ছিল, তারচেয়ে আপনার ছিল আরো বেশি, আপনার সন্তানের হচ্ছে আরো বেশি।
👆👇এবার আপনিই মিলান👇👆
দেখা যাবে, আপনার দাদার জেনারেশনে ডায়বেটিস ছিল ষাটের পর, বাবার জেনারেশনে পয়তাল্লিশের পর, আপনার জেনারেশনে ৩০ এর পর এবং এখন আমরা পাচ্ছি আমাদের পরের জেনারেশনে ১৫ থেকেই অনেকের ডায়বেটিস।
😭😭 তাই তো আমাদের চাল বদলাতে হবে, রেস্টুরেন্ট-ফুডপান্ডা-উবার ইটস ব্যবহার একেবারেই সীমিত করতে হবে, রাত জাগা বন্ধ করতে হবে, অল্প দুরত্বগুলোতে হাটার অভ্যাস করতে হবে এবং সপ্তাহে অন্তত দুদিন লম্বা দুরত্ব হাটতে হবে।
টাইপ টু ডায়বেটিস একটা লাইফস্টাইল ডিজিজ। কিন্তু আমাদের অসচেতনতা এটাকে হয়তো কোন একসময় জিনেটিক ডিজিজে রুপ দেবে। [সংগৃহীত]