03/11/2025
নবীজির প্রতি দরুদ পাঠের ১০টি অনন্য ফজিলত ও উপকারিতা
(সহিহ হাদীস থেকে সংকলিত)
❑ |১| দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি ও প্রয়োজন পূরণ
এক সাহাবি (রাযি.) নবীজিকে বললেন— “আমি সবসময় আপনার উপর দরুদ পাঠ করবো।”
তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন,
“যদি তুমি তাই করো, তবে তোমার সব দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা দূর করা হবে এবং তোমার পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে।”
📖 [তিরমিযি: ২৪৫৭, হাকিম: ২/৪৫৭ — সহিহ]
❑ |২| রহমত, গুনাহ মোচন ও মর্যাদা বৃদ্ধি
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন।”
📖 [সহিহ মুসলিম: ৪০৮]
আরেক হাদীসে এসেছে —
“যে একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার প্রতি ১০ বার রহমত পাঠান, ১০টি গুনাহ মুছে দেন এবং তার মর্যাদা ১০ ধাপ বৃদ্ধি করেন।”
📖 [নাসায়ী: ১২৯৭, হাকিম: ১/৫৫০ — সহিহ]
অন্য বর্ণনায় রয়েছে—
“যে একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার প্রতি ৭০ বার রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ ৭০ বার রহমতের দোআ করেন।”
📖 [মুসনাদ আহমাদ: ২/১৭২ — হাসান]
❑ |৩| মুমিনের জন্য দরুদ হলো যাকাত
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“আমার উপর দরুদ পাঠ করো, কেননা এটি তোমাদের জন্য যাকাতস্বরূপ।”
📖 [মুসনাদ আহমাদ: ৩/৩৬৫ — নির্ভরযোগ্য হাদীস]
❑ |৪| কিয়ামতের মাঠে নবীজির নিকটতা অর্জন
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে আমার উপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠ করেছিল।”
📖 [তিরমিযি: ৪৮৪ — হাসান]
❑ |৫| দরুদ সরাসরি নবীজির কাছে পৌঁছে যায়
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“তোমাদের দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমুআ। এই দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের দরুদ আমার কাছে উপস্থাপন করা হয়।”
📖 [আবু দাউদ: ১০৪৭, নাসায়ী: ১৩৭৪ — সহিহ]
❑ |৬| দরুদ পাঠকারী নবীজির শাফায়াত লাভ করবে
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“যে ব্যক্তি সকালে ও বিকেলে আমার প্রতি দশবার দরুদ পাঠ করবে, সে কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত লাভ করবে।”
📖 [মাজমাউয যাওয়াইদ: ১৭০২২ — হাসান]
অন্য বর্ণনায় এসেছে — ‘নিষ্ঠার সঙ্গে’ দরুদ পাঠকারীও এ ফজিলত পায়।
📖 [তাবারানি, কাবির: ৫১৩ — নির্ভরযোগ্য]
❑ |৭| দরুদ হলো দু‘আ কবুলের মাধ্যম
একবার ইবনু মাস‘উদ (রাযি.) নামাজ শেষে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা, তারপর নবীর উপর দরুদ পাঠ করে নিজের জন্য দো‘আ করলেন। তখন নবী ﷺ বললেন —
“এখন চাই, তোমার দো‘আ কবুল হবে।”
📖 [তিরমিযি: ২/৪৮৮ — হাসান]
অন্যদিকে, যে প্রথমেই নিজের জন্য দো‘আ শুরু করেছিল তাকে নবীজি ﷺ বললেন —
“সে তাড়াহুড়া করে ফেলেছে।”
📖 [আবু দাউদ: ১৪৮১ — হাসান]
❑ |৮| দরুদ পাঠকারীর জন্য নবীজির দো‘আ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করে, আমি তার জন্য দশবার দরুদ পাঠ করি (দো‘আ করি)।”
📖 [তাবারানি: ২৬৯২, মাজমাউয যাওয়াইদ: ১০/১৬৩]
❑ |৯| দরুদ গুনাহের কাফফারা
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
“আমার উপর দরুদ পাঠ করো, কেননা এটি তোমাদের জন্য কাফফারা (গুনাহ মোচন) স্বরূপ।”
📖 [ইবনু আবি আসিম, আস-সালাতু ‘আলান নাবিয়্যি: ৭৮ — সহিহ]
❑ |১০| দরুদ — মর্যাদাপূর্ণ ও অনন্য আমল
কুরআনে আল্লাহ বলেন —
“নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করেন। হে মুমিনগণ, তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করো।”
📖 [সূরা আহযাব: ৫৬]
এই আয়াতে এমন কোনো আমল নেই যা আল্লাহ ও ফেরেশতারা একসাথে করেন এবং মুমিনদেরও আদেশ দেন — এটি দরুদের অসামান্য মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সর্বাবস্থায় নবীজির উপর দরুদ পাঠের তাওফিক দিন।
সাল্লাল্লাহু ‘আলান নাবিয়্যি মুহাম্মাদ।