
13/09/2025
আধুনিক জীবনে আমরা অনেক সময় না ভেবেই এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলি,যা আমাদের শরীরকে ধীরে ধীরে ক্ষতির দিকে নিয়ে আসে।এর মধ্যে অন্যতম হলো অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ।
সাধারণত আমরা খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য লবণ ব্যবহার করি ।কিন্তু এই সামান্য অভ্যাসটা ই একদিন অনেক বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
লবণ কেন বিপদজ্জনক ?
🔴 লবণের প্রধান উপাদান সোডিয়াম।
🔴অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরের পানি ধরে রাখে।
🔴রক্তের ভলিউম বাড়ায় এবং যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, যা হাইপারটেনশন নামে পরিচিত।
⏩দীর্ঘ মেয়াদী এই উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন নীরব হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনীর সমস্যা এমনকি অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি করে।
তাই এটি সাইলেন্ট কিলার।
📌বর্তমান সময়ের বাস্তবতা
আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা প্রচুর প্রসেস ফুড, ফাস্টফুড, চিপস, সস,প্যাকেটজাত খাবার খাই। যেগুলোর প্রায় সব গুলোই অতিরিক্ত লবণ সমৃদ্ধ। শহুরে লাইফস্টাইল ,স্ট্রেস,কম শারীরিক পরিশ্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ দ্রুত হাইপার টেনশন এর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
তাহলে ,প্রশ্ন হচ্ছে এর সমাধান কি, বা প্রতিরোধ কি? সমাধান কি?
☑️দৈনিক লবণের পরিমাণ ৫ গ্রাম (WHO কর্তৃক) , যা এক চা চামচের বেশি নয়।
☑️ ফাস্টফুড(🍔🍞), জাঙ্কফুড(🥐🍕🥯),প্রসেস ফুড(🧇🥞🌭) এসব খাবার কমানো।
☑️রান্নায় অতিরিক্ত লবণ না দেওয়া এবং টেবিলে বাড়তি লবণ এড়িয়ে চলা।
☑️ ফল, সবজি ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া।
☑️নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
আসলে, হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হঠাৎ করে আসা কোনো রোগ নয় -
এটি আমাদের প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাস থেকে গড়ে ওঠে। লবণ কমানো হয়তো কঠিন মনে হবে কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি আমাদের হার্ট ও পুরো শরীরকে সুরক্ষিত রাখবে।
“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) আশা করেন , সঠিক পরিমাণে লবণ গ্রহণ করলে প্রতিবছর ২৫ লাখ মানুষ মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বেঁচে যাবে।” – প্রথম আলো: ২৭ জুন ২০২১।
আমরা নিজেকে, নিজের পরিবারকে, আপনজনকে হাইপারটেনশন এর মত নীরব ঘাতক থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য একটা স্লোগান দিতেই পারি –“ দৈনিক 5 গ্রাম লবণের বেশি নয়, পরিমাণে কম হলেই ভালো হয়।”
চলুন আজ থেকেই সচেতন হই, নীরব ঘাতক ( সাইলেন্ট কিলার) কে হারানোর প্রথম ও একমাত্র উপায় হলো নিজের জীবনধারা পরিবর্তন।
✍️জাকিয়া সুলতানা
ফুড এন্ড নিউট্রিশন (৩য় বর্ষ)