03/12/2025
আজ ৩রা ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। জীবনের কোন না কোন সময় আমরা সবাই অল্প-বেশি প্রতিবন্ধীতার অভিজ্ঞতা পাই, হয়তো আমরা বুঝতে পারি না।
ধরুন, আপনি প্রচন্ড কোমর ব্যথায় পড়লেন, শুয়ে থাকা ছাড়া কিচ্ছু করতে পারেন না। ১৪ দিন পর আস্তে ধীরে হাটাচলা, কাজ কর্ম সব করতে পারেন। তাহলে এ ১৪ দিনের জন্য আপনি প্রতিবন্ধীতার অভিজ্ঞতা লাভ করলেন। এভাবে মানুষ তার জীবনকালে শুরুর দিকে অল্প সময়ের জন্য, শেষের দিকে বয়সকালের জন্য বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে লম্বা সময়ের জন্য প্রতিবন্ধী হতে পারেন। এছাড়া কেউ জন্মগত ভাবেও প্রতিবন্ধীতা নিয়ে জন্মায়। কাজেই আমাদের সবাইকে প্রতিবন্ধীর উন্নয়নে সামিল হওয়া দরকার।
উদাহারনস্বরুপ, সব পাবলিক টয়লেট যদি হাই কমোড হয় ও হুইলচেয়ার চলাচলের মত হয় তবে আমাদের যে কোন সময় ক্ষণস্থায়ী প্রতিবন্ধীতার মত পরিস্থিতি হলেও আমরা সবাই, বয়স্ক বাবা মা, গর্ভবতী মহিলা সবাই ব্যবহার করতে পারবো।
শুধু হাটাচলা না করতে পারাই প্রতিবন্ধীতা নয়। প্রতিবন্ধী অধিকার ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রতিবিন্ধীতাকে ১২ রকমে শ্রেণীবিন্যাস করা হয়েছে, আর নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজেবিলিটি সুরক্ষা ট্রাস্ট আইনে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধীতাকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। আমাদের অফিস আদালত, হাসপাতাল-ক্লিনিক, রাস্তা ঘাট, বাজার, আইন-আদালত এর প্রায় ৯০% শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধীদের চলাচলের জন্য উপযুক্ত নয়! কাজেই বাধ্য হয়ে প্রতিবন্ধী ভাই-বোনদের সাহায্য নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
প্রতিবন্ধী ভাই বোনেরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু। ৮০ ভাগ প্রতিবন্ধী দরিদ্র বা উন্নয়নশীল দেশে থাকে, আর ঐ সকল দেশে থাকা প্রতিবন্ধীদের বেশির ভাগ গ্রামে বাস করেন। কাজেই আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধী থাকা জরুরি।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী সদস্যের পাশাপাশি সংরক্ষিত প্রতিবন্ধী সদস্য নিশ্চিত করা অতীব জরুরি। এছাড়া সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী আসনে সংসদ সদস্য মনোনয়ন, রাজনৈতিক দলে প্রতিবন্ধীদের পদায়ন ও মন্ত্রনালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সমমানে প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের অংশগ্রহণ ও পদায়ন আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরো এ মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন হবে এ প্রত্যাশা রাখছি।