20/04/2025
পায়ের ফোলাভাব (এডিমা) বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা/বসা, আঘাত, গর্ভাবস্থা, অথবা অন্তর্নিহিত চিকিৎসাগত অবস্থা (যেমন, হৃদরোগ, কিডনি, বা লিভারের রোগ, শিরাস্থ অপ্রতুলতা, বা লিম্ফেডিমা)। বাড়িতে হালকা থেকে মাঝারি ফোলাভাব কীভাবে পরিচালনা করবেন এবং কখন চিকিৎসা সহায়তা নেবেন তা এখানে দেওয়া হল:
**ঘরোয়া প্রতিকার এবং স্ব-যত্ন**
১. **পা উঁচু করুন**
- রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে এবং ফোলাভাব কমাতে দিনে ৩-৪ বার ২০-৩০ মিনিটের জন্য আপনার পা হৃদস্পন্দনের স্তরের উপরে তুলুন।
২. **লবণ গ্রহণ কমিয়ে দিন**
- অতিরিক্ত সোডিয়াম তরল ধারণকে আরও খারাপ করতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং তাজা ফল, শাকসবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন বেছে নিন।
৩. **হাইড্রেটেড থাকুন**
- পর্যাপ্ত পানি পান করলে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে এবং তরল ধারণ কমায়।
৪. **কম্প্রেশন মোজা পরুন**
- গ্র্যাজুয়েটেড কম্প্রেশন স্টকিংস রক্ত প্রবাহ উন্নত করে এবং তরল জমা হওয়া রোধ করে (বিশেষ করে শিরাস্থ অপ্রতুলতার জন্য সহায়ক)।
৫. **মৃদু ব্যায়াম ও নড়াচড়া**
- হাঁটা বা গোড়ালি ব্যায়াম (যেমন, পা বাঁকানো এবং ঘোরানো) রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং ফোলাভাব কমায়।
৬. **ম্যাসাজ**
- তরল নিষ্কাশনকে উৎসাহিত করার জন্য আপনার পা হৃদপিণ্ডের দিকে আলতো করে ম্যাসাজ করুন।
৭. **কোল্ড কম্প্রেস**
- আঘাত বা প্রদাহ থেকে ফোলাভাব কমাতে ১০-১৫ মিনিটের জন্য একটি কোল্ড প্যাক (কাপড়ে মুড়ে) লাগান।
৮. **দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা/দাঁড়িয়ে থাকা**
- দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে নড়াচড়া করার জন্য বিরতি নিন।
**কখন ডাক্তারের সাথে দেখা করবেন**
যদি ফোলাভাব থাকে তাহলে চিকিৎসার পরামর্শ নিন:
- হঠাৎ, তীব্র, অথবা শুধুমাত্র এক পায়ে (রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা থাকলে)।
- শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা (হৃদরোগের সম্ভাবনা) সহ।
- বাড়িতে চিকিৎসা সত্ত্বেও ক্রমাগত খারাপ হতে থাকলে।
- লালচেভাব, উষ্ণতা বা ব্যথা (সম্ভবত সংক্রমণ বা DVT) হতে থাকলে।
- কিডনি/লিভার রোগের লক্ষণগুলির সাথে মিল থাকলে (যেমন, ক্লান্তি, প্রস্রাব কমে যাওয়া, জন্ডিস)।
চিকিৎসার জন্য ঘরে বসে না থেকে দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যাবেন, দেরী হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
ডা: মোর্শেদ উদ্দীন আকন্দ
পোডিয়াট্রিস্ট ও প্লাস্টিক সার্জন