
17/07/2025
নারী বিজ্ঞানী মেরি কুরি (Marie Curie) সম্পর্কে কিছু তথ্য।
মেরি কুরি (Marie Curie) ছিলেন একজন খ্যাতনামা পোলিশ-ফরাসি বিজ্ঞানী, যিনি পদার্থবিদ্যা ও রসায়নবিদ্যায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি রেডিওএকটিভিটি (radioactivity) নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত, এবং বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। নিচে তার জীবনী বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
🟩 নাম ও পরিচয়:
পুরো নাম: মারিয়া স্কোয়াডোভস্কা কুরি (Maria Skłodowska-Curie)
জন্ম: ৭ নভেম্বর ১৮৬৭, ওয়ারস, পোল্যান্ড (তৎকালীন রাশিয়ান সাম্রাজ্য)
মৃত্যু: ৪ জুলাই ১৯৩৪, ফ্রান্স
পেশা: পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ
জাতীয়তা: পোলিশ জন্মসূত্রে, পরে ফরাসি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন
🟩 প্রধান অবদান:
১. রেডিওএকটিভিটি আবিষ্কার ও গবেষণা:
মেরি কুরি “রেডিওএকটিভিটি” শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন এবং তার স্বামী পিয়ের কুরির সঙ্গে একযোগে ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের বিকিরণ সম্পর্কে গবেষণা করেন।
২. নতুন মৌল আবিষ্কার:
পোলোনিয়াম (Polonium): পোল্যান্ডের নামে নামকরণ করেন।
রেডিয়াম (Radium): অত্যন্ত রেডিওএকটিভ মৌল, যার বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার হয়েছিল।
৩. নোবেল পুরস্কার:
🥇 ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার – হেনরি বেকেরেল ও পিয়ের কুরির সঙ্গে যৌথভাবে।
🥇 ১৯১১ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার – রেডিয়াম ও পোলোনিয়াম আবিষ্কারের জন্য।
👉 তিনি দুইটি ভিন্ন বিষয়ে নোবেল বিজয়ী একমাত্র ব্যক্তি, এবং প্রথম নারী যিনি নোবেল পুরস্কার পান।
🟩 কর্মজীবন ও অবদান:
প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন, যেখানে তিনি পদার্থবিদ্যায় ডিগ্রি লাভ করেন।
Curie Institute (ফ্রান্স ও পোল্যান্ডে) প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখনো ক্যান্সার গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশ্বযুদ্ধের সময় রেডিওলজিকাল অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সৈন্যদের চিকিৎসায় সহায়তা করেন।
🟩 ব্যক্তিগত জীবন:
স্বামী: পিয়ের কুরি – তিনিও একজন পদার্থবিদ।
সন্তান: ইরিন কুরি – তিনিও নোবেল বিজয়ী (রসায়ন, ১৯৩৫)।
🟩 মৃত্যু:
মেরি কুরি রেডিয়েশনের দীর্ঘমেয়াদী সংস্পর্শে থাকার কারণে aplastic anemia নামক একটি রক্তরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
🟩 মেরি কুরি’র উত্তরাধিকার:
নারীদের বিজ্ঞান গবেষণায় উৎসাহিত করেছেন।
তার নাম অনেক স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা কেন্দ্র এবং বিজ্ঞান পুরস্কারে অমর করে রাখা হয়েছে (যেমন: Marie Curie Fellowship, Curie Institute)।
১৯৯৫ সালে, তাকে প্যারিসের Panthéon-এ পুনঃসমাধিস্থ করা হয়, যা একটি বিরল সম্মান এবং প্রথম নারী হিসেবে এই সম্মান লাভ করেন।