01/01/2023
আঁশযুক্ত খাবার খাবেন সুস্থ থাকবেন
==================
খাবারের আঁশ জাতীয় অংশ হল হজম না হওয়া শর্করা । এগুলো আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি বা শক্তি সরবরাহ করে না, কিন্তু তা অনেক দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে , যা আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য বড় শর্ত। খাদ্যের আঁশ অংশটুকু হজম না হওয়ার কারণে এগুলো পরিপাকতন্ত্রের বেশ কিছু জলীয় অংশ শোষণ করে ধরে রাখে এবং এই জলীয় অংশসহ এগুলো মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এতে মল নরম হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়। আরামদায়ক মল ত্যাগের জন্য মলদ্বারের বেশ কিছু ঝামেলামুক্ত রোগ প্রতিরোধ হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম হল- পাইলস বা অর্শ, ভগন্দর বা এনাল ফিসার, পায়ুপথের ফোঁড়া বা পেরি এনাল অ্যাবসেস ইত্যাদি। যারা বেশি পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন তাদের পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সার, অ্যাপেনডিসাইটিস, ডাইভারটি-কুলাইটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য হার্নিয়া হওয়ার যথেষ্ট আশংকা থাকে। আঁশযুক্ত খাবারে তা অনেকাংশে প্রতিরোধ সম্ভব।
খাবারের আঁশ পরিপাকনালী থেকে আমাদের খাবারের কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেয়, এর ফলে রক্তে কোলেস্টেরলসহ চর্বির মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। ফলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালীর রোগ বা অ্যাথেরোসক্লেরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। খাদ্য গ্রহণের পর আমাদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা যাতে হঠাৎ করে বেড়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে আঁশজাতীয় অংশ গুরুত্ব বহন করে। এতে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক সময় রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে, সেক্ষেত্রে আঁশজাতীয় খাবার সেটির নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা বেশি আঁশজাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তাদের পিত্তথলির রোগ ও লিভারের রোগও কম হয়।
অনেক দিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে এর প্রভাব মনের ওপর পড়তে পারে। এতে দিনের কাজকর্মের রুটিন ব্যাহত হয়। কাজে-কর্মে মনোসংযোগ সুষ্ঠু হয় না, অশান্তি, উদ্বিগ্নতা, কোনো কঠিন রোগ হয়েছে এমন ধারণা মনে চেপে বসে।
আঁশজাতীয় খাবার
==========
শাক-কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউয়ের ও মিষ্টি কুমড়ার আগা-ডোগা শাকে প্রচুর আঁশ অংশ রয়েছে। অপেক্ষাকৃত বেশি আঁশযুক্ত সবজির মধ্যে রয়েছে সজনে, কলার মোচা, ঢেঁড়স, ডাঁটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শিম, পটোল, কচু, বেগুন, বরবটি, মটরশুঁটি।