25/10/2024
সময় না থাকলে এড়িয়ে যান,
অন্যথায় সবটাই পড়ে যান।
১। সন্ধানী ডোনার ক্লাব খুলনার প্রিয় সম্মানীত ডোনার ও রক্ত দাতাগন আসসালামু আলাইকুম, শুভেচ্ছা সবাইকে।
আমি ও আমার পূর্বে সন্ধানীয়ানরা আপনাদের নিকট থেকে আপনাদের ইচ্ছায় স্বেচ্ছায় রক্ত দানে সহায়তা করেছেন। ইহা মানবিকতার শ্রেষ্ঠ দান তা আমি বিশ্বাস করি।
২। আপনি সহ হয়তো অনেকেই জানতেন না রক্ত দানে ক্ষতির কোন কারণ নেই, কোন ধর্মে বারণ নেই। কোথায় কাকে কিভাবে রক্ত দান করে মহতী কাজটি করা যায়। সেই কাজটিতে সন্ধানীয়ানরাই আপনাদেরকে সহযোগীতা করেছে।
৩। সন্ধানীয়ানরা শুধু তাতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং নিজেরা বাড়ির খেয়ে বনের মহিষ তাড়িয়েছে। নিজেরাই সবার আগে বছরে তিন বারের জায়গায় জরুরী রোগীর জীবন বাঁচাতে চার বার রক্ত দিয়েছে।
৪। আমার যতদূর মনে পড়ে ব্যক্তি জীবনে আমি ছাড়া খুবই কম সংখ্যক সন্ধানীয়ান তার পরিবারের জন্য দুই-এক ব্যাগ রক্ত নিয়েছেন।
৫। রাত বারোটার সময় যখন কোথাও রক্ত সংগ্রহ করা যাচ্ছে না, তখন রিক্সা চালকের গামছা ফুটপাতে বিছিয়ে রক্ত নিয়ে রোগীর স্বজনের হাতে দিয়েছি। যদি ও অন্যায়। কিন্ত ডোনার তার পিতা-মাতার ভয়ে রক্ত দিতে পারবে না, আবার অত রাতে হাসপাতালে ও যাবে না, তাই প্রশিক্ষিত সন্ধানীয়ানরা কাজটা করেছে।
৬। বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এর বিভিন্ন দিবসে অনুরোধ এর পর অনুরোধ করে প্রোগ্রাম নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে বুঝিয়ে শুনিয়ে রক্ত সংগ্রহ করেছে। রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে সচেতন করেছে।
৭। এখন অনেক সন্ধানীয়ানরা নিজেদের পেশাগত ব্যস্ততায় রক্ত দিতে সময় পান না। সেখানে আমি অধম অফিস, সৈন্য, সামন্ত, ঢাল তলোয়ার ছাড়াও এখন ও কাউকে- "পারব না কথাটি না বলার চেষ্টা করি" এবং সারা রাত কল রিসিভ করি। কোথায় পাওয়া যেতে পারে জানা থাকলে পরামর্শ দেই। ভোর থেকে সকাল ৯ঃ৩০ টা পর্যন্ত ফোন রিসিভ করি না, বাকি সময় রিসিভ না করলে কাজের জন্য পারি না।
৮। এখন ও অনেক ডোনারের ভালোবাসার আবদার, "মুকুল ভাই না এলে রক্ত দিতে যাব না।" তাদের জন্য কোর্ট হেয়ারিং শেষে বা কাউকে নথি ধরিয়ে দিয়ে নিজের রুটি রুজির কথা না ভেবে সদর হাসপাতালে ছুটে যাই।
৯। সারাদিন কাজের জন্য দুপুরে না খেয়ে ও বিকাল ৫ টায় মেডিকেল কলেজে রক্ত দিতে গিয়ে ব্লাড ব্যাংকের পরিচিত জনের অনুরোধে দুটো বিস্কুট খেয়ে রক্ত দিয়েছি। যা ৬৮-৬৯ বার হবে হয়তো।
১০। ১৫০০ নাম্বার সহ দূর্বল মোবাইল টা নষ্ট হওয়ায়, অফিস নাই, সদস্য নাই, ডোনারদের সকল পুরানো রেজিস্টার খাতা সোনার ছেলেরা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়ার পর ও অসহায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরকে যতটা সম্ভব রক্ত দিচ্ছি।
১১। উপদেষ্টা নামীয় সম্মানীয়দের জন্য তাদের সম্মান রাখতে গিয়ে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে সারাদিন নষ্ট করে রক্ত যোগাড় করেছি। যা নিজের বোনের জীবন বাঁচাতে ও করি নাই।
১২। খবরদার সন্ধানী ও সন্ধানীয়ান নিয়ে মন্তব্য করার সময় সাবধান। ১৯৯১ থেকে এত দিন কিছু ভুল থাকতেই পারে।
তাই বলে...........।
১৩। কার ও রক্ত সন্ধানী খায়নি, যা করেছে তা হলো আপনাদেরকে মানব সেবায় অংশগ্রহণ করানো শিখিয়েছে বা সুযোগ দিয়েছে, অন্যদিকে অসহায় রোগীর জীবন বাঁচাতে সহযোগীতা করেছে।
১৪। আমি হয়তো ব্যর্থ, তাই যাদের রক্ত নিয়েছি, বা রক্তদানে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করেছি তাদের কাছে ব্যক্তি মুকুল ক্ষমা চাচ্ছি, যাদের ধৈর্য্য বা সময় নাই তাদের আমার নিকট রক্ত চাওয়ার দরকার নাই। কারণ আমার এখন সময় আর সামর্থ্য নাই।
কিন্তু শেষে আবার ও বলি সাবধান সন্ধানী ডোনার ক্লাব বিষয়ে মন্তব্য করবার ক্ষেত্রে।
এ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম মুকুল
সভাপতি
সন্ধানী ডোনার ক্লাব খুলনা।