20/09/2024
বুক ধড়ফড় করা বা পালপিটেসন –
এমন মানুষ পাওয়া যাবেনা, যার কখনো বুক ধড়ফড় করেনি। এটি কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ।
বুক ধড়ফড় একটি অস্বস্তিকর অনুভূতি। কারো কারো শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথাও হয়। কখনো কখনো মনে হয় এই বুঝি মারা যাচ্ছি।
হৃৎস্পন্দন হঠাৎ বেড়ে গিয়ে বা অনিয়মিত হলে রোগী অজ্ঞানও হয়ে পড়তে পারে। এ সময় মাথা ঝিমঝিম, মাথা শূন্য বোধ হওয়া বা মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এ রকম হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া জরুরি।
বুক ধড়ফড় এর কারণ –
🔶 কোন শারীরিক রোগ ছাড়া হতে পারে, যেমন -
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন হওয়া পালপিটেশন এর অন্যতম প্রধান কারণ।
এছাড়াও ধূমপান, পানিশূন্যতা, ,অতিরিক্ত পরিশ্রম, শরীরচর্চা করা, ঋতুস্রাবের সময়, প্রেগন্যান্সীর সময়, অতিরিক্ত চা বা কফি পান করলে বুক ধড়ফড় করতে পারে।
ব্লাড সুগার কমে গেলে, রক্তচাপ কমে গেলে বুক ধড়ফড় করতে পারে।
হঠাৎ করে সিগারেট ছাড়লেও বুক ধড়ফড় করে (তবে ধূমপান ছাড়ার ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা চলে যায়।
🔶 হার্টের বিভিন্ন সমস্যার জন্য হতে পারে –
এরিদমিয়া (অনিয়মিত হৃদস্পন্দন), হার্ট ব্লক, হার্ট এটাক, ভালভের সমস্যা, মায়োকার্ডাইটিস, হার্ট ফেইলুর ইত্যাদি।
🔶 হার্টের রোগ ছাড়া অন্য রোগে হতে পারে –
অনেক জ্বর, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, রক্তস্বল্পতা, ফিওক্রোমোসাইটোমা ইত্যাদি।
🔶 কিছু ওষুধ সেবন করলে -
সালবিউটামল, থিওফাইলিন, এন্টিকোলিনার্জিক, অ্যামিট্রিপটাইলিন, এমলোডিপিন, থাইরক্সিন (অভার ডোজ) ইত্যাদি।
🔶 ইয়াবা, কোকেন, এমফিটামিন সহ বেশকিছু মাদক গ্রহণেও পালপিটেশন হয়।
এটি সমস্যাজনক হয়ে উঠতে পারে যদি এর সঙ্গে কয়েকটি উপসর্গ দেখা দেয়। সেগুলো হলো- ১. বুকে ব্যথা ২. নিশ্বাস নিতে কষ্ট ৩. মাথা ঘোরা ৪. অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
🔷 বুক ধড়ফড় করলে কি করতে হবে -
🔸অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন পরিহার করা। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের Relaxation exercise, Yoga, Meditation করা যেতে পারে।
🔸চা বা কফি পান কমিয়ে দিতে হবে
🔸ধূমপান ও মাদক গ্রহণ বাদ দিতে হবে
🔸নিয়মিত শরীরচর্চা করা
🔸ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
🔸পর্যাপ্ত ঘুমানো
🔸পর্যাপ্ত পানি পান করা
🔸 ব্লাড সুগার কমে গেলে মুখে চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে হবে
🔸ব্লাড প্রেশার কমে গেলে মাথা নিচু করে শুয়ে পড়তে হবে। স্যালাইন বা শরবত খেতে হবে।
🔷 প্রাথমিক ব্যবস্থা নেওয়ার পর উন্নতি না হলে একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে কারণ বের করে চিকিৎসা দিতে হবে, যেমন— হিমোগ্লোবিন, ব্লাড সুগার,থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা, ইসিজি, ইকো-কার্ডিওগ্রাম, ইটিটি, ইলেকট্রোফিজিওলজি, এনজিওগ্রাম ইত্যাদি।
ডা: ফয়সাল আহমেদ
এপসিপিএস(মেডিসিন), এমএসিপি (ইউএসএ)
কনসালটেন্ট - মেডিসিন
২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল, কিশোরগঞ্জ
চেম্বার - মেডিস্ক্যান স্পেশালাইজড ইমেজিং সেন্টার
01747-131819