16/06/2025
#কানপাকা রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা :
#কান পাকা রোগ কি?
===============
কানপাকা রোগ বলতে সাধারণভাবে মধ্যকর্ণের সংক্রমণকে বোঝায়৷কানের পর্দার আড়ালে ছোট কুঠুরির মতো অংশটি মধ্যকর্ণ৷মধ্যকর্ণে নানারকম রোগ জীবাণুর আক্রমণে কানপাকা রোগ দেখা যায়৷সাধারণত সর্দি বা ঠান্ডা লাগলে এই রোগ বেশি হয়৷শিশুদের মধ্যে কানপাকা রোগ বেশি হয়৷যেসব শিশুরা বোতলে দুধ খায় তাদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়৷ অনেক সময় বোতলের দুধ টিউবের মধ্যে দিয়ে কানে চলে যায়৷এছাড়া কানের পর্দা ফুটো হয়ে গেলে তখন বাইরে থেকে জীবাণু কানে পোঁছে সংক্রমণ ঘটাতে পারে৷বিশেষ করে ডুব দিয়ে গোসল করার সময় যাদের কানে পানি যায় তাদের এ সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি।কানের ভেতরে সংক্রমণ হলে কানের ছোট ছোট ধমনীগুলো ফুলে যায়৷এতে কানের ভেতরে নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং পুঁজ জমে৷সংক্রমণের ফলে কানে ব্যথা হয়৷ রোগী কানে কম শোনে।
কারণ:
• শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের বার বার সংক্রমণ হলে।
• সাধারণ সর্দি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে।
• মুখ গহ্বরের গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে।
• টনসিলের সংক্রমণ হলে। নাক ও গলার সংযোগ স্থলে টিউমার হলে বা অন্য কারণে অডিটরি টিউব বন্ধ হয়ে গেলে।
• হাম হলে।
• মুখ ও খুলির হাড়ের মাঝে অবস্থিত ফাঁকা অংশের ঘনঘন প্রদাহ হলে (সাইনোসাইটিস)
লক্ষণ:
• কানে ব্যথা, মাথা ব্যথা ও জ্বর হতে পারে।
• বাইরে থেকে কানের ভেতরে আলো ফেললে দেখা যাবে কানের পর্দা লাল হয়ে আছে। পর্দা ফেটে গেলে পুঁজ দেখা যায়।
• কানের পর্দা ফেটে গেলে কান দিয়ে পুঁজ পড়ে (এ সময় জ্বর ও কান ব্যথা কমে যায়)
• কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার পর রোগী কানে কম শোনে।
#কানপাকা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ :
হোমিওপ্যাথিক ওষুধ রুগীর লক্ষণ অনুযায়ী দিতে হয় তাই ডাক্তারই নির্ধারণ করবে কোন ওষুধ রোগীকে দিতে হবে. নিম্নে কিছু ঔষধ লক্ষণসহ বর্ণনা করা হলো.
#বেলাডোনা:কানে ব্যথার জন্য এটি খুব কার্যকরী ঔষধ,বিশেষ করে কানের ভিতরে লাল হয়ে যাওয়া, দপ দপ করা, ডান কান আক্রান্ত হলে প্রাথমিক অবস্থায় এই ঔষধ খুব ভালো কাজ করে
#ক্যাপ্সিকামঃ-পুরাতন কান পাকা কর্ন ছিদ্র হইয়া হলুদ বের্ণর ঘন পুজ নির্গত হয়।মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা হইলে এই ঔষধ উপকারে আসে।
#বোরাক্সঃ-নিম্ন গতিতে আতংক।অর্থাৎনিচের দিকে নামিতে বা নামাইতে ভয় পাওয়া ইহার বিশেষ লক্ষণের ধাতুর রোগীদের কান থেকে ঘন সাদা বর্ণের পুজ নির্গত হইলে বোরাক্স ভালো কাজ করে.
টেলুরিয়মঃ-নতুন বা পুরাতন কান পাকায় ইহা একটি প্রসংশনীয় ঔষধ।কানের পুজ মাংস ধোয়া জলের ন্যায় পাতলা,ভিষণ দুর্গন্ধ,লোকের কাছে বসিতে চায় না।দুর্গন্ধ যুক্ত কান পাকায় এই ঔষধ ব্যবহারে বহু রোগীর উপকার পাইতে দেখিয়াছি।
সোরিনামঃ-নতুন পুরাতন উভয় প্রকার কান পাকায় উৎকৃষ্ট ঔষধ।হলুদ বর্ণের পুজ অত্যন্ত দুর্গন্ধ।মল-মুত্র,ঘর্ম,মুখে দুর্গন্ধ,স্ফুর্তিহীন,শীতে কাতর,অপরিস্কার,নোংড়া রোগীদের ইহা অব্যর্থ।
মার্ক সলঃ-কানে পুজ,রক্ত মিশ্রিত,পুজে ভীষণ দুর্গন্ধ।হলুদ বা সবুজ বর্ণের পুজের সঙ্গে রক্ত।কানে যন্ত্রনা রাতে বৃদ্ধি,বিছানার গরমে বৃদ্ধি ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপকারী।
টিউবারকুলিনামঃ-প্রায়ই সর্দি ঠান্ডা লাগিয়াই থাকে।নাকে সর্দি,কানে পুজ,পুজে মাংস পচার মত দুর্গন্ধ,পুরাতন কান পাকা কিছুতেই আরগ্য না হইলে ইহা প্রযোজ্য।
থুজাঃপুরাতন কান পাকা,কানের পুজ পচা মাংসের মত দুর্গন্ধ।কানের ভিতরে গেজ হইলে থুজা তাহা আরোগ্য করিতে পারে।
আর্নিকা মন্টঃ-কান পাকা,কানের ভিতর কাঠি বা পালকাদী দিয়ে খোচানো কারণ অন্যান্য ঔষধে উপকার না হইলে আর্নিকায় উপকার হয়।
ভায়োলা অডোরেটাঃ-কানে ভীষণ বেদনার সহিত পুজ নির্গত হইতে থাকিলে এই ঔষধ সেবনে উপকার হয়।পুজ স্রাবের সহিত কান বেদনা এই ঔষধ সেবন করিতে দিয়া অনেক রোগীর উপকার হইতে দেখিয়াছি।
#কানপাকার বাইওকেমিক চিকিৎসাঃ-
ক্যালকেরিয়া সালফঃ-নতুন বা পুরাতন কান পাকায় গন্ধ বিহীন হলুদ বর্ণের ঘন পুজে ইহা উপকারী।
সাইলেসিয়াঃ-কানের পুজ মাংস ধোয়া জলের মতপাতলা দুর্গন্ধময় পুজে ইহা অব্যর্থ।
সতর্কতা:কানে আঙ্গুল বা কাঠি দিয়ে খোঁচানো উচিত নয়।
• পুকুরে বা নদীতে ডুব দিয়ে গোসল না করা, অথবা গোসল করার সময় কানে তুলা দিয়ে নেয়া উচিত।
• শিশুদের বসিয়ে তরল খাদ্য পান করানো।
• নাকের দুই ছিদ্র এক সঙ্গে সর্দি ঝাড়া উচিত নয়।
ডা: মোহাম্মদ রেজাউল করিম
বি, এইচ, এম, এস, (ঢাবি)
মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথিক)
সদর হাসপাতাল শরীয়তপুর
চেম্বার:সুস্বাস্থ্য হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসি
চৌরাঙ্গী মোড়, সদর শরীয়তপুর
মোবাইল ০১৯৬৭-১০২২৮৩