21/06/2024
#সর্প ৷
পৃথিবীতে প্রায় 2900 টি প্রজাতির সাপ আলাদা করা হয়েছে, এর মধ্যে বাংলাদেশে পাওয়া যায় প্রায় 94 প্রজাতির সাপ ৷ যার মধ্যে 24 টি প্রজাতি বিষধর ৷ এর মধ্যে আবার 12 টি প্রজাতি জলজ মানে সমুদ্র বা উপকূলীয় অঞ্চলে থাকে ৷ বাকি 12 টি বিষধরের মধ্যে আঞ্চলিক ভাষায় যেটিকে কালসাপ বলা হয় সেটি ব্যাতিত বাকিগুলো অপ্রয়োজনে মানে আপনি কোনো ঝামেলা না করলে সাধারনত সেধে এসে কাউকে কাটেনা ৷ সাপ খুবই লাজুক প্রাণী ৷
আব্রাহামিক রিলিজিওন মতে, হযরত আদম ও হাওয়া(আঃ) কে ইবলিস সাপের সুরতে ধোঁকা দিয়ে গার্ডেন অফ ইডেন থেকে বের করে দিয়েছিলো তাই সৃষ্ট জীবে দয়া করার জেনারেলাইজড নিয়ম এই ক্ষতিকর প্রাণীর ক্ষেত্রে খাটেনা ৷ সাপ নিজের বিষের ব্যাপারে সাধারনত অত্যন্ত যত্নশীল, এবং একে বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবে সাধারনত শুধুমাত্র শিকারের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে থাকে ৷ সাপের বিষ এক ধরনের প্রোটিন ৷
সাপের কোনো শ্রবনেন্দ্রীয় নাই তবে এর ভাইব্রেশন সেন্স অত্যন্ত প্রখর ৷ সাধারনত মোট সাপে কাটার রুগীদের মধ্যে 97% থাকে অবিষধর সাপের কাটা , যে 3% ক্ষেত্রে বিষধর সাপে কামড়ায় তার মাঝে আবার খুবই অল্প ক্ষেত্রে সাপ পরিপূর্ন বিষ প্রদান করে ৷
বিষধর সাপ সাধারনত 4 ধরনের হয়ে থাকে -
মায়োটক্সিক বা মাংশপেশীর বিষ ৷
কার্ডিওটক্সিক বা হৃদপিন্ডের বিষ ৷
নিউরোটক্সিক বা মস্তিষ্কের বিষ ৷
নেফ্রোটক্সিক বা কিডনির বিষ ৷
হেমোটক্সিক বা রক্ততঞ্চনজনিত বিষ ৷
সাধারনত, বেশীরভাগ সাপে কাটা রুগী অতিরিক্ত ভয়ে হার্ট এটাকে মারা যান ৷ শক্ত করে বেঁধে তেমন কোনো উপকার হয়না, রক্তসরবরাহে বাধা প্রদান করে থাকে ৷ তবে হালকা মাত্রায় বেঁধে দেওয়া, অঙ্গটি উপরে রাখা উপাদেয় ৷ পারলে সাপের ছবি তুলে রাখা ভালো, এতে বিষধর সাপ সনাক্ত করা সহজ হয়, বিষধর সাপ দংশনের লক্ষণগুলো হচ্ছে বমি, মাথাঘোরা, কামড়ানোর স্খানে ফোলা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, চোখে ডাবল দেখা, ঘাড়ের মাংসপেশী অবশ হয়ে ঘাড় পেছনের দিকে হেলে পড়া ইত্যাদি । এমন হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। ওঝায় বিষঝাড়ার ব্যাপারটি প্লাসিবো মানে সাধারনত অবিষধর সাপে কাটা রুগীদের একজন নামকরা ওঝার ধারা চিকিৎসা হয়েছে এতটুক মানসিক সান্তনাই ভয় কাটিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ৷
রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপটি অত্যন্ত আক্রমনাত্মক এবং হিংস্র একটি সাপ ৷ ধারনা করা হয় ভারত থেকে বন্যার পানির সাথে কচুরীপানায় ভেসে দেশে এই বিলুপ্তপ্রায় সাপটি ফেরত এসেছে ৷ এটি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটায় না, ম্যাম্মালদের মতো বাচ্চা প্রসব করে, এবং একই সাথে 80 টি পর্যন্ত বাচ্চা জন্ম দিতে পারে ৷ এর বিষে মাংসপেশীতে পচন ধরে, এমনকি কিডনী পর্যন্ত বিকল হতে পারে ৷
প্রতিরোধ - ব্যাক্তিগত পর্যায়ে সতর্ক থাকা, বিষধর সাপের কামড় নির্নয়ের উপায়গুলো জানা, বাসাবাড়িতে সতর্কতাসূলভ কার্বলিক এসিড ব্যাবহার করা ৷ সাপের ঘ্রানশক্তি কুকুরের চেয়ে প্রায় তিনশ গুন বেশী ৷ কার্বলিক এসিডের ঝাঝালো গন্ধ সর্প প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে ৷
নিরাপদ থাকুন, ভালো থাকুন, সতর্ক থাকুন, ধন্যবাদ ৷