02/08/2025
হীমেল ভাই নওগাঁ থেকে তার বাবাকে নিয়ে আমাদের উত্তরা ডে কেয়ার সেন্টারে সাথে ছিলো তার স্ত্রী মেয়ে ও ভগ্নীপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম (পুলিশ সুপার)।হিমেল ভাইয়ের বাবা ৪ বছর থেকে ডিমেনশিয়া ভুগছেন।।উনারা ডিমেনশিয়া সম্পর্কে তেমন ভালো ধারণা ছিলোনা তার বাবাকে কোন এক্টিভিটি করাতো না। সম্পুর্ণ ঔষধের উপর নির্ভরশীল ছিলো ।আমরা তাদের কাউন্সিলিং করার মাধ্যমে বুঝালাম ডিমেনশিয়া Cure নয় Care। হীমেল ভাইসহ সবারই চেহারায় একটা হতাশাার ছাপ ছিলো। আমরা ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারে সদস্যদের বলি আপনি আগে ডিমেনশিয়া সম্পর্কে ভালো মত জানুন এবং বুঝুন । আপনাকে রোগ ও রোগীকে বুঝতে হবে । তারপর পদক্ষেপ নিন। তাহলে আপনরা সবাই ভালো থাকবেন। ব্যক্তি-কেন্দ্রিক যত্ন (Person-Centered Care) যত্ন প্রদানের পদ্ধতি যেখানে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির নিজস্ব চাহিদা, পছন্দ, ও জীবনধারা প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদের যত্ন প্রদান করলে দীর্ঘদিন সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ন জীবন-যাপন পারবেন। কিটউড (Tom Kitwood) একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং ডিমেনশিয়া কেয়ার বিশেষজ্ঞ, যিনি ডিমেনশিয়া রোগী যত্নের ক্ষেত্রে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পদ্ধতির ধারণা দেন। কিটউড তাঁর তত্ত্বে ছয়টি মূলনীতির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন, যা ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের যত্ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে অনুসরণ করা উচিত।
কিটউডের ব্যক্তি-কেন্দ্রিক যত্নের ছয়টি মূলনীতি: ১। সম্মান (Respect): ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য শ্রদ্ধাশীল আচরণ অপরিহার্য। তাদের মতামত, অনুভূতি, এবং ইচ্ছাকে সম্মান জানানো গুরুত্বপূর্ণ।
২। উদ্বুদ্ধকরণ (Encouragement) : ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ইতিবাচক প্রবণতাগুলি চিহ্নিত করে তাদের উদ্বুদ্ধ করা, যা তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত সহায়ক।
৩। সম্পর্ক (Relationship) : কেয়ারগিভারের সাথে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির একটি বিশ্বাসপূর্ণ সম্পর্ক গঠন করা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁকে অনুভব করতে হবে যে তিনি একা নন , বরং তাদের চারপাশে তাকে সাহায্য করার মতো অনেকে আছে।
৪। এনগেজমেন্ট (Engagement): রোগীকে তাদের নিজস্ব জীবন, চিন্তা এবং অনুভূতি নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা। এটি ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সহায়ক।
৫।। বিস্মৃতি বা ভুল বুঝে যাওয়া থেকে মুক্তি (Relief from Misunderstanding): ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ভুল বোঝাবুঝি বা বিভ্রান্তি হলে, যত্ন প্রদানকারী তাদেরকে শান্তভাবে সহায়তা করে ভুল বোঝাবুঝির সমাধান করেন। এটি ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির স্বস্তি ও শান্তি নিশ্চিত করে।
৬। অভিনবতা ও দৃষ্টিভঙ্গির গ্রহণ (Acceptance of Uniqueness and Perspective) : প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতা নিয়ে জীবন কাটায়। এই দৃষ্টিভঙ্গি এবং অভিজ্ঞতাকে গ্রহণ করা এবং তাতে শ্রদ্ধা দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিমেনশিয়া যত্নের জৈব-মনো-সামাজিক (Bio-psycho-social) মডেল
ডিমেনশিয়া যত্নের জৈব-মনো-সামাজিক (Bio-Psycho-Social) মডেল একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি যা ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, এবং সামাজিক দিক থেকে যত্ন প্রদানকে গুরুত্ব দেয়। এই মডেলটি মনে করে যে ডিমেনশিয়া শুধুমাত্র একটি শারীরিক বা মানসিক সমস্যা নয়, বরং এটি ব্যক্তির জীবনযাত্রার সমস্ত দিককে প্রভাবিত করে, এবং এর মধ্যে সঠিকভাবে যত্ন প্রদান করতে হবে। আমরা ডিমেনশিয়া যত্ন বিষয়ে বিভিন্ন উপদেশ ও সাহস দিলাম কি ভাবে এই দীর্ঘ পথ পারি দিবে।
অফিস ত্যাগ করার সময় সবার মনে আনন্দ ছিলো একটা ভরসার জায়গা পেয়েছে বলে মনে হলো।
হীমেল ভাই আপনারা একা নন, আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ সহায়তার জন্য আপনার পাশে থাকবে।
ডিমেনশয়া যত্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য আজই যোগাযোগ করুনঃ
হেল্পলাইনঃ
8801720498197 / 8801906246621
অফিসের ঠিকানা
আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ASB)
বাড়ী নং- ৪২, রোড নং- ৪ এ, সেক্টর -১৭/ ডি, উত্তরা,ঢাকা- ১২৩০।
(উত্তরা দক্ষিণ মেট্রোরেল ষ্টেশনের পূর্ব দিক।