10/04/2022
কেউ একা একেবারে নিজের মতো থাকতে পছন্দ করেন, সবকিছু তাঁর পছন্দ অনুযায়ী হতে হবে। আবার কেউ দলবল নিয়ে থাকলে ভাবেন তিনি শান্তিতে আছেন। মানসিক শান্তির বিষয়টা একেকজনের কাছে একেক রকম।
একটি উদ্বেগহীন জীবনে নিজের ইতিবাচক হওয়া জরুরি। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার বলেন, ‘নিজেকে কতটুকু শান্তি দেব এটা পুরোটা নিজের ওপর নির্ভর করে। আমরা যদি প্রতিদিনের বা প্রতি মুহূর্তের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবি, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কেননা আমাদের জীবনের অনেক কিছুই আছে, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে; তাই যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না, তা নিয়ে আফসোস করা উচিত নয়। আমাদের উচিত সেসব বিষয় এড়িয়ে চলা, যা নিজেদের জীবনে আমরা গ্রহণ করব না। যেমন কাউকে নিয়ে সমালোচনা করা।’
আমরা নিজেরা কিন্তু চাই না কেউ আমাদের নিয়ে বাজে কিছু বলুক, তাই আমাদেরও উচিত হবে আরেকজনের ক্ষেত্রে এমনটা না করা। সামাজিক যোগাযোগের বিষয়ে আরেকটু যত্নবান হওয়া ভালো। অর্থাৎ, কাজের ক্ষেত্রে নিজেদের একটা জায়গা তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি কাউকে অপছন্দ করেন, আপনার উচিত হবে তাঁর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। সব শেষে নিজের জীবনে কিছু বন্ধু রাখা, যাঁরা আপনার সব ধরনের কথা বলা বা অনুভূতি প্রকাশের জায়গা হবেন। কারণ, আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই নির্ভরতার প্রয়োজন। নির্ভরতার মানুষ কিন্তু যে কেউই হতে পারেন।
ব্যস্ততায় ভরা জীবনে যখন একটুও দম ফেলার সময় নেই, তখন খুব ছোট এবং সহজ কিছু উপায়ে আমরা আমাদের মানসিক শান্তি ধরে রাখতে পারি—
কঠিন কাজটি আগে করি
অনেকেই বলেন, সহজ কাজ দিয়ে দিন শুরু করা উচিত, এটি নিজের প্রতি আস্থা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। কিন্তু আসলে উচিত কঠিন কাজ দিয়েই দিন শুরু করা। কারণ, যখন আপনি কঠিন কাজটি সম্পন্ন করে ফেলবেন, আপনার ওপর থেকে একটা বিশাল মানসিক চাপ নেমে যাবে। এরপর সারা দিন কিন্তু ফুরফুরে মেজাজে কাজ করতে পারবেন আর সঙ্গে মানসিক শান্তি তো আছেই।
গ্রহণ করে নিন অপ্রাপ্তিগুলো
আমাদের সব চাওয়া-পাওয়া পূরণ হয় না। কিছু অপ্রাপ্তি সবার মধ্যেই থাকে। মানসিক শান্তির জন্য এই অপ্রাপ্তিগুলো মেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, অর্থাৎ সন্তুষ্টি। আপনার কাছে যা-ই আছে, তার মাঝে অবশ্যই কিছু না কিছু ভালো আছে। সেই ভালোকে নিয়ে ভালো থাকাই আপনার ভেতরকার অর্ধেক অশান্তি দূর করে দেবে।
লোকে কী ভাববে তা তাদের ভাবতে দিন
আমাদের মানসিক অশান্তির আরেকটি কারণ মানুষ কী ভাববে, তা ভাবা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, মানুষ আদতে আপনাকে নিয়ে কিছুই ভাবেনি কিন্তু আপনি অনেক কিছু ভেবে বসে আছেন। নিজেকে একটি উদ্বেগহীন জীবনের স্বাদ দিতে হলে ‘লোকে কী ভাববে’ এই ভাবনাকেও মাথা থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। এতে করে আমাদের মনের ওপর যে আলাদা চাপ পড়ে, তা দূর হবে এবং নিজের প্রতি নিজের আস্থা বাড়বে।