Dr. Md. Roisul Islam

Dr. Md. Roisul Islam MBBS (SSMC)
DMU (USG)
General Practitioner

10/05/2025

আস সালামু আলাইকুম, সকলের জন্য:

✍️ সরকারি হাসপাতাল কিংবা প্রাইভেট ক্লিনিক, যেখানেই রোগী নিয়ে যান না কেন, নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণের চেষ্টা করেই দেখুন না, কী ফল পাওয়া যায় !

✅ ১. সরকারি হাসপাতালে অপরিচিত যে লোকটি উপযাজক হয়ে আপনার ঘনিষ্ট হিসাবে ডাক্তারকে পরিচয় দিবে বা আপনার জন্য এখানে সেখানে ছুটোছুটি করবে, বুঝে নেবেন সে একজন দালাল। শুরুতেই তাকে মার্ক করে রাখুন। এড়িয়ে চলুন। তাতে টাকা, সম্মান ও রোগী তিনটাই বাঁচবে।

✅ ২. জরুরী বিভাগ থেকে ভর্তির পর কাগজটি নিজ হাতে বহন করে নিজের ওয়ার্ডে যাবার অভ্যাস করুন। অথবা বহনকারী লোকটি আপনাকে বড়সড় খরচ করিয়ে শুইয়ে দিতে পারে।

✅ ৩. ইমার্জেন্সীর ইএমও বা ওয়ার্ডের ডিউটি ডাক্তাররা ( ইন্টার্ন বা ইউনিটের সিএ, রেজিস্টার, আইএমও ) উচ্চশিক্ষিত ও আপনার রোগীর চিকিৎসা দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ কোয়ালিফাইড।

সেখানে গিয়ে নিজের ক্ষমতা, শিক্ষাগত যোগ্যাতা, স্মার্টনেসের প্রমাণ দিতে যাবেন না। আপনি যতটুকু ভদ্রলোক হবেন, তারা তার চাইতে বেশি ভদ্র লোকের মত আপনাকে চিকিৎসা দিবে।

✅ ৪. হাসপাতালের সব সিরিয়াস রোগীর চিকিৎসা শুরু হয় ইএমও/ ইন্টার্ন/সিএ/আইএমও / রেজিস্ট্রারের হাত দিয়েই। তারা জানে কীভাবে রোগীকে দ্রুত সময়ে প্রাণ রক্ষাকারী চিকিৎসা দিতে হয়। বড় স্যার কখন দেখবে, কেন এখনো প্রফেসর / কন্স্যালট্যান্ট/ বড় ডাক্তার আসছে না বলে অতি স্মার্টনেসের পরিচয় দিবেন না। এতে চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসকের প্রতি আপনার অনাস্থা প্রকাশ পাবে। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ইমার্জেন্সী চিকিৎসা দেয়াটা তার পক্ষে বিব্রতকর হয়ে উঠলে আপনারই ক্ষতি।

✅ ৫. শুক্রবার সাধারণত হাসপাতালের কন্স্যালটেন্ট/প্রফেসর এর রাউন্ড বন্ধ থাকে। বন্ধের দিনে ইএমও/ আইএমও/ এইচএমও/ ইন্টার্নরা থাকেন। এসময় ডাক্তার নাই, ডাক্তার দেখে নাই বলে হুলস্থুল বা চেচামেচী করে কাউকে বিব্রত করবেন না বা অন্য রোগীর অসুবিধা সৃষ্টি করবেন না। ডাক্তাররাও মানুষ। মনে রাখবেন, সরকারের অন্য সব বিভাগ সপ্তাহে ২ দিন ছুটি পায়, আর হাসপাতালের ডাক্তারদের ছুটি ১ দিন।

✅ ৬. হাসপাতাল থেকে সাপ্লাইকৃত ঔষুধ ডাক্তাররা দিবে না। সংশ্লিষ্ট ঔষুধের জন্য নার্স বা ইনচার্জকে ভদ্র ভাষায় বলুন।

✅ ৭. রোগীর পাশ থেকে আপনার সমস্ত আত্মীয় স্বজনকে সরিয়ে ফেলুন। তারা রোগীর কোনো কল্যাণে আসবে না। তাদের জন্য চিকিৎসা প্রদানে দেরি হয়, এতে এমনকি রোগী মারাও যেতে পারে। রোগীর পাশে মানুষ যত কম থাকবে, তত রোগীর তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হবার সম্ভাবনা বাড়বে।

✅ ৮. সরকারী হাসপাতালে বেডের জন্য অযথা অনুযোগ / অনুরোধ করে করে চিকিৎসক বা নার্সদের অস্থির করে তুলবেন না। হাসপাতালে কেউ অযথা বেড দখল করে শুয়ে থাকেনা। সবাই অসুস্থ্য রোগী। সেখানে মুচি ডোম শুয়ে থাকলেও তাকে নামিয়ে আপনাকে উঠানো যাবেনা। বেড না থাকলে একজন ডাক্তারের মা নিজে অসুস্থ্য হয়ে আসলেও তাকে মেঝেতেই থাকতে হবে। সকল রোগী সমান। আর, রোগী বেড বা মেঝে যেখানেই থাকুক, সবাইকে সমান চিকিৎসাই দেওয়া হয়।

✅ ৯. কোন ধরনের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে অতিরিক্ত এটেনশন আদায়ের চেষ্টা করবেন না। যদি কোন রোগী বা তাদের আত্মীয় স্বজন হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স বা ষ্টাফদের খুব বেশী বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, অতিরিক্ত ঝামেলা এড়ানোর জন্য তখন হয়তো তারা সবাই ঐ রোগীকে এড়িয়ে চলতে পারেন। এটা খুবই স্বাভাবিক। এতে কিন্তু ক্ষতিটা আপনারই।

✅ ১০. রোগী কী খাবে… বলে বারবার বিরক্ত করবেন না। যদি স্যালাইন চলে তাহলে ভেবে নিন তাকে আলাদা করে খাওয়াতে হবেনা। খাবার বন্ধ রাখা হয় রোগীর ভালোর জন্যই। কিছুক্ষণ না খেলে আপনার রোগী মারা যাবেনা।

✅ ১১. ক্যানুলা খুলে গেছে, স্যালাইন অফ কেন, ঔষুধ কখন খাবে, কিভাবে খাবে, ঔষুধটা চেক করে দিন তো…. এই প্রশ্নগুলো নার্সকে ভদ্রভাষায় জিজ্ঞাসা করুন। সাধারণত এগুলো তাদের দায়িত্ব। তারা শিক্ষিত ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তাদের সম্মান করুন। এগুলো ডাক্তারের কাজ নয়।

✅ ১২. চিকিৎসককে সুন্দর ও ভদ্র ভাষায় সম্বোধন করুন। একইভাবে মহিলা ও পুরুষ নার্সকে " নার্স'" সম্বোধন করুন। আয়া বা কর্মচারীদেরকেও সুন্দর ভাষায় সম্বোধন করবেন। এগুলো আপনাকে ছোট করবে না বরং সম্মানীয় বানাবে। ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরাও আপনাকে সাহায্য ও সম্মান করবে।

✅ ১৩. সরকারি হাসপাতাল কিন্তু আপনার ট্যাক্সের টাকায় তৈরী! এই হাসপাতালকে নিজের টাকায় বানানো বাড়ির মতই পরিষ্কার ও সুন্দর রাখতে চেষ্টা করুন। আপনি যেখানে থুথু বা নোংরা ফেলবেন, অন্যেরা সবাই আপনার ফেলা জায়গাতেই আরো থুথু বা ময়লা ফেলে ভাসিয়ে দেবে। অপরাধের শুরুটা কিন্তু আপনিই করলেন!

✅ ১৪. হাসপাতালের ডাক্তারদের উপর বিশ্বাস রাখুন। আপনিই লাভবান হবেন। কারণ আপনাকে সেবা কম দিলে ডাক্তাররা লাভবান হবে না।

✅ ১৫. রোগী মারা গেলে ডাক্তারকে গালিগালাজ না করে স্ব-স্ব ধর্মের সৃষ্টিকর্তার কাছে অনুযোগ বা অভিযোগ করুন। ডাক্তার একজন মানুষ। তিনি চেষ্টা করেছেন কিন্তু হয়তো এবার সৃষ্টিকর্তা আপনার রোগীর সুস্থ্যতা চাননি ।।

আল্লাহ্ সকলের মঙ্গল করুন আমীন।।

সংগৃহীত, সংযোজিত ও পরিমার্জিত।🙏

তেল খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর? কোন তেল বেশি খারাপ? সরিষার তেল ভালো নাকি সয়াবিন তেল নাকি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল? মাছের তেল...
21/11/2024


তেল খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর? কোন তেল বেশি খারাপ? সরিষার তেল ভালো নাকি সয়াবিন তেল নাকি এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল? মাছের তেল ভালো নাকি মাংসের তেল? ইত্যাদি প্রশ্ন প্রায় সবার মনেই কমবেশি ঘুরপাক খায়। সোশাল মিডিয়া সহ নানা গণমাধ্যমে এগুলো নিয়ে আলোচনা চলে। অনেকে নিজের ইচ্ছামত অবৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে নিজের বিশ্বাসকে প্রচার করে, কেউ কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থেও কাজটি করে থাকেন। চলুন জেনে নেই প্রমাণনির্ভর বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা থেকে আমরা খবার তেল সম্পর্কে আমরা কি কি জানি।

প্রথমত, তেল একটি পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান যা মানুষের তিনটি প্রধান ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট অর্থাৎ শক্তি প্রদানকারী খাদ্য উপাদানের একটি। এছাড়া তেল শরীরের কিছু হরমোন তৈরি, অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিড ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ যোগান দেয়া এবং ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন এ, ডি এবং কে শরীরে শোষিত হতে সাহায্য করে। কিন্তু কি তেল কিভাবে বানানো হচ্ছে এবং কিভাবে খাওয়া হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে আদৌ তা স্বাস্থ্যকর কিনা।

রাসায়নিক গঠন অনুসারে ভোজ্য তেলে চার ধরনের ফ্যাট থাকতে পারে। মনো আনস্যাচুরেটেড ও পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা স্বাভাবিক রুম তাপমাত্রায় তরল থাকে এবং ভোজ্য তেল, মাছের তেল, বাদাম তেল ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যাতে হাইড্রোজেন বন্ড বেশি থাকে, স্বাভাবিক রুম তাপমাত্রায় জমে যায় এবং নারকেল তেল, পাম ওয়েল, ঘি, ক্রিম, বাটার, প্রানীজ চর্বি ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। চতুর্থ ধরনটি হলো ট্রান্স ফ্যাট যা তৈরি হয় আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটে আংশিকভাবে হাইড্রোজেন বন্ড তৈরির মাধ্যমে (যেমন ডালডা) এবং তৈরি হয় উচ্চ চাপ তাপে ভোজ্য তেল প্রসেসিং এর সময়, প্রসেসড ফুডে এবং রান্নার সময়।

এইসকল তেল খাবারের মাধ্যমে আমাদের দেহে প্রবেশ করার পর মূলত দু ধরনের চর্বিকনায় পরিনত হ্য়, কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড। দুটোই শরীরের বিভিন্ন কাজে প্রয়োজনীয়। কিন্তু এরা একা একা রক্তের মাঝে ঘুরে বেড়াতে পারে না। রক্তে চলাচলের জন্য এরা অন্য প্রোটিনের উপরে ভর করে কিছু লাইপোপ্রোটিন তৈরি করে। এর মাঝে আছে এলডিএল বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন, এরা লিভার থেকে চর্বিকণা হার্ট সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে নিয়ে যায়। আর আছে এইচডিএল বা হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন যা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ থেকে অতিরিক্ত চর্বিকণা লিভারে নিয়ে আসে জমিয়ে রাখা বা ভেঙ্গে ফেলার জন্য। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, রক্তে এলডিএলএর মাত্রা বেড়ে গেলে এবং এইচডিএল এর মাত্রা কমে গেলে বেশি বেশি চর্বিকণা রক্তনালী, হৃদপিন্ড সহ অন্যান্য অঙ্গে জমা হয়ে হার্ট এট্যাক, স্ট্রোক সহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট দুটোই মোট কোলেস্টেরল এর পরিমান বাড়ায় এবং ক্ষতিকর এলডিএল এর পরিমান বাড়ায়। যদিও স্যচুরেটেড ফ্যাট থেকে সরাসরি ক্ষতির বিষয়ে সাম্প্রতিক গবেষণা কিছুটা দ্বিমত পোষন করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড এভিডেন্স হিসেবে প্রচলিত কক্রেন রিভিউ এর ২০২০ সালের এনালাইসিস এ বলা হয় , খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট অন্তত ২ বছর পর্যন্ত কমিয়ে দিলে হৃদরোগের ঝুকির পরিমান ১৭% কমে। অন্যদিকে ২০১৭ সালের একটি বড় গবেষণা থেকে জানা যায়, খাবারে মোট ফ্যাট ও স্যাচুরেটের ফ্যাটের সাথে হৃদরোগ ও মৃত্যুঝুকি বৃদ্ধির সম্পর্ক নেই বরং উচ্চমাত্রায় শর্করা গ্রহনের সাথে মৃত্যুঝুকির সম্পর্ক বেশি।

স্যাচুরেটেড ফ্যাট নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ট্রান্সফ্যাট নিয়ে বিতর্ক নেই। ট্রান্সফ্যাট ক্ষতিকর এলডিএল এর পরিমান বাড়ানো এবং উপকারী এইচডিএল এর পরিমান কমানো ছাড়াও শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ বাড়ায় যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও স্ট্রোক এর ঝুকি বৃদ্ধি করতে পারে। গবেষণায় জানা যায় খাবারে ট্রান্স ফ্যাট এর পরিমান প্রতি ২% বৃদ্ধিতে মৃত্যুঝুকি বাড়ে ২৩%। এ কারনেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খাবারে ট্রান্সফ্যাটের পরিমান ২% এর কম রাখার এবং দিনে মোট ক্যালোরির ১% এর কম ট্রান্স ফ্যাট রাখার (২০০০ ক্যালরি খাবার গ্রহন করলে দিনে সর্বোচ্চ ২.২গ্রাম পর্যন্ত) নির্দেশনা দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালে সব ধরনের ভোজ্য তেল, চর্বি ও খাবারে ২% এর বেশি ট্রান্সফ্যাট ব্যবহার না করার নির্দেশনা জারি করলেও সেটা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

সম্প্রতী বাংলাদেশের একদল গবেষক এদেশের বিভিন্ন ভোজ্য তেলে ট্রান্সফ্যাটের পরিমান সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক জার্নালে। গবেষকগন বাংলাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র‍্যান্ডেড ও নন ব্র‍্যান্ডেড সয়াবিন তেল ও পাম ওয়েল নমুনা সংগ্রহ করে ট্রান্সফ্যাট এর পরিমান নির্ণয় করে দেখেছেন প্রায় ৬৭% ব্রান্ডেড সয়াবিল তেলে এবং ২৫% নন ব্র‍্যান্ডেড সয়াবিল তেলে ২% এর বেশি ট্রান্সফ্যাট আছে। ব্র‍্যান্ডেড সয়াবিন তেলে গড়ে প্রায় ২.৮% ট্রান্স ফ্যাট পাওয়া গেছে। অন্যদিকে পাম ওয়েলের কোন নমুনায় ২% এর বেশি ট্রান্সফ্যাট পাওয়া যায় নি। স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমান সয়াবিন তেলে পাওয়া গেছে গড়ে ২১% এবং পাম ওয়েলে গড়ে ৪১%। ব্র‍্যান্ডেড তেল এর তুলনায় নন ব্র‍্যান্ডেড তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি ছিলো। পূর্ববর্তী গবেষণায় জানা যায় বাংলাদেশে মানুষ দিনে গড়ে ২৭ গ্রাম ভোজ্য তেল খান (প্রায় ৬ চামুচ)। খাবার তেলের মূল উৎস ব্র‍্যান্ডেড সয়াবিন তেল ধরা হলে ২৭ গ্রাম তেলে গড়ে ২.৮% ট্রান্সফ্যাট হিসেবে দৈনিক গ্রহনকৃত ট্রান্সফ্যাট এর পরিমান ০.৭৬ গ্রাম। উচ্চ তাপে রান্নার সময় (ফ্রাই) ভোজ্য তেলে ট্রান্সফ্যাট এর পরিমান বাড়ে প্রায় ৩.৬% সেটুকু হিসেবে নিলে মোট ট্রান্সফ্যাটের পরিমান দাড়ায় ১.৭৩ গ্রাম ট্রান্সফ্যাট শুধুমাত্র ভোজ্য তেল থেকেই আসছে। এর বাইরে কেউ যদি বানিজ্যিকভাবে তৈরি প্রসেসড ফুড খায় যেমন কেক, বিস্কিট, চকলেট, চিপ্স, অন্যান্য বেকারি আইটেম, ফ্রাইড খাবার সেক্ষেত্রে ট্রান্সফ্যাট এর পরিমান আরও বেশি হবে কেননা এসব খাবার প্রস্তুতের সময় উচ্চ ট্রান্সফ্যাটযুক্ত হাইড্রোজেনেটেড ওয়েল ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। ১০০ গ্রামের একটি কেকে প্রায় ১.৩ গ্রাম, ১০০ গ্রাম বিস্কুটে ১-৫ গ্রাম, ১০০ গ্রাম চিজ কেকে ০.৫-২ গ্রাম পর্যন্ত ট্রানফ্যাট থাকতে পারে। এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে প্রাকৃতিক ভাবেই ১-২গ্রাম ট্রান্সফ্যাট থাকতে পারে। সে হিসেবে একজন মানুষ যদি দিনে ২৭ গ্রাম ভোজ্য তেল খাবার পাশাপাশি একবেলা গরুর মাংশ খান, আর ডেজার্ট হিসেবে ১০০ গ্রাম কেক খান তাহলে তার দিনে মোট গ্রহনকৃত ট্রান্সফ্যাট এর পরিমান হবে প্রায় ৫ গ্রাম যা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত সর্বোচ্চ মাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি।

গবেষকগণ শুধুমাত্র সয়াবিন ও পাম ওয়েলের তুলনা করেছেন এই দুটো তেলের বাইরেও দেশে ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমুখী, সরিষা, রাইস ব্র‍্যান ও অলিভ ওয়েলের প্রচলন আছে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে সাধারনত হট প্রেস পদ্ধতিতে তেল নিষ্কাশন করা হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় উচ্চচাপ উচ্চতাপের কারনে এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক প্রসেসিং প্রক্রিয়ায় তেলে ট্রান্সফ্যাটের পরিমান বাড়ে। সেদিক থেকে কোল্ড প্রেস পদ্ধতি কিছুটা নিরাপদ। কোল্ড প্রেস এবং কম প্রসেসিং প্রক্রিয়ায় তৈরি হওয়া তেলগুলোকে সাধারন ভার্জিন/এক্সট্রাভার্জিন ইত্যাদি শিরোনামে বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশে ঐতিহ্যগতভাবে খাবারে সরিষার তেলের ব্যবহার প্রচলিত। সরিষার তেলে ট্রান্সফ্যাটের পরিমান নিয়ে তুলনামূলক গবেষণা পাওয়া যায়নি তবে ভারতীয় একটি গবেষণায় দেখা গেছে অপরিশোধিত প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষা তেলে গড়ে ০.২-১ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাট থাকতে পারে। প্রসেসড ওয়েল এর ক্ষেত্রে এই পরিমানটি আরও বেশি। যদিও সরিষার তেলে ট্রান্সফ্যাটের পরিমান তুলনামূলক ভাবে কম, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া সহ বহু অঞ্চলে সরিষার তেল ভোজ্য তেল হিসেবে নিষিদ্ধ। সরিষার তেলে উচ্চমাত্রায় ইরুসিক এসিড পাওয়া যায় যা হৃদপিন্ডের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ইদুরের উপরে গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে ইরুসিক এসিড হার্টের ক্ষতি করে। সরাসরি মানবদেহে ইথিক্যাল কারনে এই গবেষণা হয়নি তবে ভারতীয় একটি গবেষণায় দেখা গেছে সরিষার তেল গ্রহনকারীদের মাঝে হৃদরোগের প্রকোপ অন্যদের তুলনায় প্রায় ৫০% বেশি। ভিন্ন একটি গবেষণায় আবার দেখা গেছে সূর্যমুখী তেল এর তুলনায় সরিষার তেল ব্যবহারকারিদের হৃদরোগের প্রকোপ ৭১% কম। বিভিন্ন ধরনের বিপরীতমুখী ফলাফল থাকায় সরিষার তেলের স্বাস্থ্যঝুকি সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু বলা যায় না। তবে নিয়মিত সরিষার তেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিকর হতে পারে।

অন্যান্য দেশের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সূর্যমুখী তেলে ১.২৫-৩.৬২% ট্রান্সফ্যাট, রাইস ব্র‍্যান ওয়েলে ০.২-০.৫% ট্রান্সফ্যাট রয়েছে। অলিভ ওয়েলে সাধানরত ট্রান্সফ্যাট থাকে না তবে উচ্চতাপমাত্রায় অলিভ ওয়েলে ০.৬% ট্রান্সফ্যাট তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে আরেকটি প্রচলিত ভোজ্য তেল হলো নারকেল তেল। সম্প্রতী কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভোজ্যতেল হিসেবে নারকেল তেল কে স্বাস্থ্যকর বলে প্রচার করছেন। নারকেল তেলের প্রায় ৮০-৯০% স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড থাকে। এ কারনেই শীতকালে নারকেল তেল জমে যায়। বিভিন্ন গবেষণা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ প্রমাণ হিসেবে স্বীকৃত মেটা আনালাইসিসে দেখা গেছে নারকেল তেল রক্তে মোট কোলেস্টেরল, ক্ষতিকারক এলডিএল ও উপকারী এইচডিএল এর পরিমান বাড়ায় অন্যান্য ভোজ্য তেল এর তুলনায়। যদিও উপকারী এইচডিএল এর পরিমান বাড়ছে কিন্তু সেই সাথে এলডিএল ও মোট কোলেস্টেরল এর পরিমান বাড়ায় সার্বিক ক্ষতির পরিমান বেশি হতে পারে বিধায় নিয়মিত নারকেল তেল খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।

তেলের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় গুরুতপূর্ণ বিষয় হচ্ছে স্মোক পয়েন্ট, অর্থাৎ কত তাপমাত্রায় তেল পুড়ে যেয়ে ধোয়া উঠতে শুরু করে। স্মোক পয়েন্টের কাছাকাছি বা আরও উচ্চ তাপমাত্রায় তেলের সাথে বাতাসের অক্সিজেনের বিক্রিয়া শুরু হয় এবং এই প্রক্রিয়ায় ফ্রি র‍্যাডিকেল উৎপন্ন হয়। তেলে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটিএসিড এর পরিমান যত বেশি থাকে তত বেশি ফ্রি র‍্যাডিকেল তত কম তাপমাত্রায় তৈরি হয়। দীর্ঘসময় এবং বার বার তেল গরম করলে এই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়। এ কারনে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত তেলে অল্প তাপেই ধোয়া উঠতে শুরু করে। এই ধোয়ায় প্রচুর PHA (পলিসাইক্লিক এরোমেটিক হাইড্রোকার্বন) থাকে। এই PHA ও অন্যান্য ফ্রি র‍্যাডিকেল শ্বাস গ্রহন ও খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ঢুকে কোষের সেল মেমব্রেন ও ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএতে ক্ষতিকারক মিউটেশন এর মাধ্যমে সেখান থেকে ক্যান্সার, হৃদরোগ সহ নানা ধরনের দীর্ঘমেয়াদী রোগের ঝুকি বাড়াতে পারে। যারা এ ধরনের ধোয়ার মাঝে রান্না করেন তাদের ক্যান্সার হবার ঝুকি আরও বেশি। সয়াবিন তেলের স্মোক পয়েন্ট ২৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সূর্যমুখী তেলের ২৪৪ ডিগ্রী, পাম ওয়েল ২৩০ ডিগ্রী, রাইস ব্র‍্যান ওয়েল ২১৩, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল ১৯০ ডিগ্রী, অপরিশোধিত নারকেল তেল ১৭৭ ডিগ্রী, এবং সরিষার তেলের স্মোক পয়েন্ট ২৫৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সুতরাং দেখা যাচ্ছে নারকেল তেল ও অলিভ ওয়েল উভয়েরই স্মোক পয়েন্ট কম এবং উচ্চতাপে রান্নার উপযোগী নয়। অন্যদিকে সরিষা, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল উচ্চতাপে রান্নার উপযোগী। পাম ওয়েল মাঝারি তাপমাত্রায় রান্নার উপযোগী কিন্তু এটিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত বাণিজ্যিক তেল যা ডিপ ফ্রাই করতে এবং বার বার গরম করে রান্না করতে ব্যবহার করা হয়।

সুতরাং সামগ্রিকভাবে রান্নার জন্য কোন একটি নির্দিষ্ট ভোজ্য তেল কে সবদিক থেকে স্বাস্থ্যকর বলা সম্ভব না। কম স্মোক পয়েন্টের, কম স্যচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত তেল অল্প তাপে রান্না ও সালাদে ব্যবহার উপযোগী যেমন ভার্জিন অলিভ ওয়েল। উচ্চতাপে রান্নার জন্য উচ্চ স্মোকপয়েন্টযুক্ত এবং কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট সম্পম্ন ভোজ্যতেল কম ক্ষতিকর, সেদিক থেকে সয়াবিন, সূর্যমুখী ইত্যাদি দেল ব্যবহার করা যেতে। বাঙ্গালি রান্নার নিত্য সঙ্গী সরিষার তেল সম্পর্কে যথেস্ট পরিমান উচ্চ মান সম্পন্ন গবেষণা না থাকায় এর ইরুসিক এসিড জনিত ক্ষতির ব্যাপারে নিশ্চিত মন্তব্য করা যাচ্ছে না তাই পারতপক্ষে রান্নায় এড়িয়ে চলাই ভালো। গবেষকগণ বিভিন্ন তেলের মিশ্রন রান্নায় ব্যবহারের পক্ষেও মতামত দিয়েছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো ভোজ্যতেলে ১:১.৫:১ অনুপাতে স্যাচুরেটেড:মনোআস্যাচুরেটেড:পলিআনস্যাচুরেটেড (অর্থাৎ মোট তেলের ২৮.৫% এর কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট) ফ্যাটি এসিড থাকা এবং ১:৫-১০ অনুপারতে ওমেগা-৩:ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড থাকা স্বাস্থ্যকর। কোন একক তেলে এই গুনাবলী নেই। ২০১৬ সালের একটি গবেষণা পত্রে দেখা যায়, সয়াবিন তেলের সাথে ৫০-৭৫% রাইস ব্র‍্যান ওয়েল মেশানোর ফলে উচ্চতাপে পুড়ে যাবার ব্যাপারটি কমেছে। অলিভ ওয়েলের সাথে সয়াবিন তেল/সূর্যমুখী তেল মেশালে ওমেগা-৩:৬ এর অনুপাত বৃদ্ধি পায়, স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমে, রক্তে কোলেস্টেরল কমে। ইদুরে পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে পামওয়েল ও সূর্যমুখী তেল একসাথে খাওয়ালে রক্তে এলডিএল (৪মিগ্রা/ডেসিলিটার) এর পরিমান সবচেয়ে কম হয় অন্যদিকে এইচডিএলও (৩০মিগ্রা/ডেসিলিটার) বাড়ে। অলিভওয়েল ও সয়াবিন মিশ্রনে এইচডিএল সর্বোচ্চ বাড়ে (১৩৫.৭মিগ্রা/ডেসিলিটার) কিন্তু এলডিএল এর পরিমানও বেড়ে যায় (৩০.৮মিগ্রা/ডেসিলিটার)। সরিষার একটি ধরন ক্যানোলা থেকে প্রস্তুতকৃত ক্যানোলা ওয়েলে ইরুসিক এসিড কম থাকে। ক্যানোলা ওয়েলের সাথে পাম ওয়েল/অলিভ ওয়েল/রাইস ব্র‍্যান ওয়েল মেশালেও উচ্চতাপ স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যকর ফ্যটিএসিড অনুপাত ও উপকারী এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। কোল্ড প্রেস (ঘাণি ভাঙ্গা) তেল এর সাথে উচ্চতাপ সহনশীল তেল (সয়াবিন, সূর্যমুখী,পাম ওয়েল) ইত্যাদি ব্যবহার করলেও তাপসহনশীলতা, স্বাস্থ্যকর ফ্যাটিএসিড অনুপাত রক্ষা ও এন্টি অক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর উপাদানের সুবিধা পাওয়া যায়। এই সকল তথ্য বিবেচনায় নিয়ে আমাদের দৈনন্দিক নানা খাবারে ব্যবহারের উপযোগী তেল এর ধরন ও পরিমান নির্ধারন করা উচিত যার যার স্বাদ, রন্ধনশৈলী ও স্বাস্থ্যগত ঝুকি বুঝে। তবে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো ট্রান্স ফ্যাট নিয়ন্ত্রন এবং সরকারিভাবে এটি নিশ্চিত করা। অন্যথায় দেশের সকল শ্রেণীর মানুষ বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুকি তে থাকবেন।

ডা. মো: মারুফুর রহমান
চিকিৎসক ও গবেষক
দ্যা ইউনিভার্সিটি অফ শেফিল্ড, যুক্তরাজ্য

তথ্যসূত্র:

https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S2772753X24000078

https://www.who.int/southeastasia/activities/eliminating-industrially-produced-trans-fats-from-diets-in-who-south-east-asia-region

https://bdnews24.com/amp/story/health%2Fer6quimc4k

https://www.frontiersin.org/journals/plant-science/articles/10.3389/fpls.2020.01315/full

https://www.cochranelibrary.com/cdsr/doi/10.1002/14651858.CD011737.pub3/full

https://www.thelancet.com/journals/lancet/article/PIIS0140-6736(17)32252-3/abstract

https://www.cochrane.org/CD011737/VASC_effect-cutting-down-saturated-fat-we-eat-our-risk-heart-disease

https://www.mayoclinic.org/diseases-conditions/high-blood-cholesterol/in-depth/trans-fat/art-20046114 #:~:text=Unlike%20other%20dietary%20fats%2C%20trans,heart%20and%20blood%20vessel%20disease.

https://www.who.int/news-room/questions-and-answers/item/nutrition-trans-fat

https://www.who.int/news/item/09-09-2020-more-than-3-billion-people-protected-from-harmful-trans-fat-in-their-food #:~:text=WHO%20recommends%20that%20trans%20fat,with%20a%202%2C000%2Dcalorie%20diet.

https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC5121705/

https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1933287421002609

https://www.ahajournals.org/doi/10.1161/CIRCULATIONAHA.119.043052

https://en.m.wikipedia.org/wiki/Cooking_oil

https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/28925728/

https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0924224416302886

23/08/2024
20/08/2024

:

আমাদের বাচ্চাদের ব্রেইনের ৯৫% গঠন হয় প্রথম ৫ বছরে। বাকি ৫% গঠন হয় পরের ৩ বছরে। তাই প্রথম ৮ বছর আপনার সন্তানের জন্য - সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এর ভিতর ৫ বছর বেশী গুরুত্বপূর্ণ!

ফলে এই সময়ে সবচেয়ে careful থাকা উচিৎ! এই গঠন বলতে বুঝায় - ব্রেইনের connection তৈরী হওয়া।

যার যত connection তৈরী হবে, সে তত ব্রিলিয়ান্ট হবে!

এই connection তৈরীতে রঙিন খেলনা, পুষ্টিকর খাবার, বাচ্চার সাথে খেলা করা, গল্প বলা - এমনই অনেক কিছু নির্ভরশীল!

কিন্তু আমাদের দেশে - বাচ্চা কথা বলা শেখার আগেই - সবাই লাঠি নিয়ে বসে - ঠিকমত পড়ালেখা শিখছে তো?

#খাবারঃ

একসময় এদেশে মায়েদের বাচ্চার খাবারই ছিল - বার্লি আর সাগু!

তখন বার্লি Face বলে, একটা অপুষ্টির লক্ষ্মণ দেখা যেত। বাচ্চা হতো মোটাতাজা, মা মনে করতো - বেশ ভাল স্বাস্থ্য হয়েছে!

আজ সেই জায়গাটা নিয়েছে, সুজি! সুজি হয় চালের গুড়া, নাহলে গমের।

আবার এর সাথে কোন না কোন দুধ মিশ্রিত করে, সাথে থাকে চিনি। অথচ এর সবগুলোই অপুষ্টির জন্য যথেষ্ট।

কারণ গরীব হলে, গরুর দুধ মিশ্রিত করে - আর টাকা থাকলে infant formula. অথচ দুটোই বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক!

Infant formula'তে কোন কিছু মিশানো নিষেধ। আবার কোন চিকিৎসক লিখে দিলে - শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আমরা জানি সবসময়ই সুষম খাবার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে খিচুড়ি হলো, বাচ্চার সুষম খাবার।

অথচ মা'দের বুঝানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাথে যোগ হয়েছে - দাদা/দাদি, নানা/নানি।

মুরুব্বিদের ধারণা - তারাও তো বাচ্চা মানুষ করেছে, কখনো তো সমস্যা হয় নাই!

এর উত্তরে অনেক সময় বলি, দেশ যে ব্রিলিয়ান্ট জনসংখ্যার সংকটে ভুগছে, তা আপনাদের দান!

জাপানে প্রাইমারি স্কুলে কোন পরীক্ষা নেয় না! ওরা এই early childhood development এর উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

আর তাই সেরা ব্রিলিয়ান্ট ঐদেশে তৈরী হয়। আমাদের মত লাঠি হাতে নিয়ে শিক্ষা দেয় না।

#কেন_খিচুড়ি_সেরা?

আমরা সবাই বা অনেকেই জানি essential amino acid বলে, একটা শব্দ আছে। যা শরীর তৈরী করতে পারে না। ফলে বাহিরের খাবার খেয়ে সেই অভাব পূরণ করতে হয়।

একমাত্র খিচুড়িতেই সবগুলো পাওয়া সম্ভব (চালে আটটি আর বাকিগুলো ডালে থাকে)। ফলে চাল-ডাল একসাথে থাকলেই শুধু সবগুলো essential amino acid পাওয়া সম্ভব!

এছাড়াও ডিমে এইসবগুলো essential amino acid থাকে।

#ফলে_বাচ্চার_খাবার_হওয়া_উচিৎঃ

১) মায়ের বুকের দুধ ২ বছর পর্যন্ত, এর বাহিরে আর কোন দুধ নয়।

২) খিচুড়ি (চাল+ডাল+সয়াবিন/অলিভ ওয়েল+সবজি)

৩) ডিম

৪) মা যখন যা খাবেন - সেখান থেকে মাছ/মাংস/সবজি বাচ্চাকে দিবেন। (ফ্রেশ হতে হবে)

৫) সারাদিনে একবার ফল খাবে। #আঙ্গুর বাদে। বাচ্চা সকাল/দুপুর/রাত, প্রচুর ফল খায় - এটাও ভাল লক্ষণ নয়। কারণ পেট ভরা থাকায়, অন্য প্রয়োজনীয় খাবার খাবে না।

তাই সবাই Early Childhood Development এর উপর সময় দিন। সঠিক খাবার নিশ্চিত করুন! সুজি/গরু/ছাগলের (২ বছর বয়স পর্যন্ত) দুধ খাওয়ানো বন্ধ করুন।

বি.দ্র. ছাগলের দুধে অতিরিক্ত অসুবিধা, এক ধরনের রক্তশূন্যতা রোগ হয়।

লেখাঃ
Dr. Mohammad Neamat Hossain Ripon
BMDC reg. 28258
সহকারী অধ্যাপক (নিওনেটোলজী)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর।

মাঙ্কিপক্স.......
18/08/2024

মাঙ্কিপক্স.......

সাপে কাটলে করণীয়....
26/06/2024

সাপে কাটলে করণীয়....

18/06/2024

#ঈদের_সময়_খুব_কমন_অসুস্থতা_ও_চিকিৎসা
কোরবানির ঈদে একটু বেশিই মাংস খাওয়া হয় সবার। তাই অনেকেই ভোগেন সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়। এ নিয়ে রইলো বিস্তারিত আলোচনা।


কোষ্ঠকাঠিন্য দুই ধরনের

১। অ্যাকিউট কনস্টিপেশন বা সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্য

২। ক্রনিক কনস্টিপেশন বা দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য



সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্য

যদি অল্প কয়েকদিনের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ দেখা দেয়, অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় যদি তিন মাসের কম হয়, তবে তা সাময়িক। যেমন তিনবেলা মাংস, মাছ, ডিম খাচ্ছেন। কিন্তু নিয়মিত মলত্যাগ হচ্ছে না। হলেও তা বেশ শক্ত। এ সমস্যার মেয়াদ তিন মাসের কম হলে তা সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্য। আবার সারা বছর সুস্থ, শুধু কোরবানির ঈদের কয়েকদিন পর দেখা গেলো পেট ফুলে যাচ্ছে, পেটে ব্যথা হচ্ছে ও মলত্যাগ ঠিকঠাক হচ্ছে না- তবে এই অবস্থাকে অ্যাকিউট কনস্টিপেশন বা সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্য বলা যায়।



সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ

মলত্যাগের সাধারণ রুটিন বদলে যাবে।
শক্ত মলত্যাগ হবে।
মলত্যাগের সময় মলাশয়ে ব্যথা হবে।
মলত্যাগ অল্প অল্প হতে পারে।
পেট ফুলে যেতে পারে।
পেটে ব্যথা হতে পারে।
কিছুক্ষন পরপর বায়ু ত্যাগ হতে পারে।
খাওয়ার রুচি কমে যাবে।
দুশ্চিন্তা ও অবসাদগ্রস্ত মনে হতে পারে।


জটিলতা

পায়ুপথের আশেপাশের রক্তনালীগুলোতে প্রদাহ হতে পারে এবং মলত্যাগ করার সময় পায়ুপথে রক্ত যেতে পারে। এমনকি পায়ুপথে চুলকানিও দেখা দিতে পারে।
এনাল ফিস্টুলা দেখা দিতে পারে।
ইউরিনারি ইনকনসিস্টেন্স বা প্রস্রাবে অনিয়ম দেখা দিতে পারে।


কোষ্ঠকাঠিন্য যেসব কারণে হয়

সাময়িক কোষ্ঠকাঠিন্য মূলত অস্বাভাবিক লাইফস্টাইলের কারণেই হয়। যেমন-
আঁশযুক্ত খাবার বা শাক-সবজি কম খাওয়া।
নিয়মিত মলত্যাগ না করা, বেগ আটকে রেখে কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া।
নিয়মিত খাবার না খাওয়া।
পরিমিত মাত্রায় না ঘুমানো, চিন্তিত বা অবসাদগ্রস্ত থাকা।
আইবিএস এর সমস্যা থাকা।
অত্যাধিক পরিমাণ প্রোটিন খাওয়া।
আবার কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এটি হতে পারে। যেমন- ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, অ্যান্টি স্পাজমোডিক, অ্যান্টি ডায়েরিয়াল ড্রাগস, আয়রন ট্যাবলেট, অ্যালুমিনিয়াম যুক্ত অ্যান্টাসিড ইত্যাদি।

দিনে কতটুকু প্রোটিন?

ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন ইউএসএ-এর তথ্য অনুযায়ী একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে প্রোটিন দরকার ১ গ্রাম/কেজি বডি ওয়েট। অর্থাৎ একজন মানুষের ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, আর তিনি যদি ভারী কোনও কাজ না করেন, তা হলে দিনে প্রোটিন দরকার ৬০ গ্রাম। ভারী কাজ বা শরীরচর্চা করলে আরও ৩০ গ্রাম বাড়নো যায়।
তবে একজন সুস্থ মানুষ কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া দিনে সর্বোচ্চ ২ গ্রাম/কেজি প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন। সেই হিসাবে ৬০ কেজি ওজনের কেউ দিনে সর্বোচ্চ ১২০ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারবেন। এর বেশি খেলেই হজমে গোলযোগ বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।
আমেরিকার ইন্সটিটিউট অব মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, ২৬ গ্রাম প্রোটিন পেতে ১০০ গ্রাম রান্না করা মাংসের প্রয়োজন। অর্থাৎ প্রতি ১ গ্রাম প্রোটিনের জন্য ৪ গ্রাম মাংস দরকার। সুতরাং কেউ যদি মাংস থেকেই সমস্ত প্রোটিন নিতে চায় তবে দিনে ২৪০ গ্রাম মাংসই যথেষ্ট।
সেই হিসেবে তার দিনে মাংস গ্রহণের সীমা হলো সর্বোচ্চ ৪৮০ গ্রাম। যা তিন বেলায় ভাগ করে গ্রহণ করতে হবে। এরচেয়ে বেশি হলেই ম্যাল-অ্যাবসরবশন সিনড্রোম তথা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেবে। হজমশক্তি বিবেচনায় অনেকের আবার ২০০ গ্রামের বেশি মাংস খেলেই দেখা দেবে এ সমস্যা।


কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যা করবেন

লাইফস্টাইল পরিবর্তন করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা যায়। যেমন-

প্রতিদিন পর্যাপ্ত শাকসবজি খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
অত্যাধিক মাংস খাওয়া যাবে না। দিনে ১০০-১৫০ গ্রামের বেশি না খাওয়াই উত্তম।
নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খেতে হবে।
সম্ভব হলে প্রতিদিন একটি আপেল খেতে হবে। আপেলে পর্যাপ্ত ফাইবার রয়েছে।
নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
যেদিন বেশি মাংস খাওয়া হবে, সেদিন সঙ্গে শাক-সবজি, গাজর, শসা এসবও মেনুতে রাখবেন।
সকাল, দুপুর ও রাতে এক গ্লাস পানিতে দুই টেবিল চামচ ইসবগুলের ভূষির শরবত খেতে পারেন। এতে কোলনের মধ্যে কিছু পরিমাণ পানি রিটেনশন হবে এবং মল তরল থাকবে। যারা নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খায়, তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা ৯০ শতাংশ কমে যায়।


Dr Ismail Azhari
MBBS, MRCP (London, UK)P-1
Founder : CCR Academy

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন চার্ট.....
13/06/2024

উচ্চতা অনুযায়ী ওজন চার্ট.....

থ্যালাসেমিয়া এক ধরণের বংশগত রক্তরোগ। থ্যালাসেমিয়া কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। মা ও বাবার মধ্যে একজন বা দুজনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক ...
04/06/2024

থ্যালাসেমিয়া এক ধরণের বংশগত রক্তরোগ। থ্যালাসেমিয়া কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। মা ও বাবার মধ্যে একজন বা দুজনই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে,সন্তানরা এই রোগ নিয়ে জন্ম(২৫%) নিতে পারে। এই রোগ হলে রক্তস্বল্পতাসহ নানারকম স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে। প্রতিরোধই এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।

📢আপনি থ্যালাসেমিয়ার বাহক কিন জানার জন্য আজই থ্যালাসেমিয়া স্ক্রিনিং টেস্ট করুন।
আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত রাখুন।

 ●স্বাস্থ্য পরামর্শএকজন গর্ভবতী মা, প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষ সে ,তার রক্তের গ্রুপই জানতেন না ।প্রথম বাচ্চা মৃত হয়েছিল।  প...
29/03/2024


●স্বাস্থ্য পরামর্শ

একজন গর্ভবতী মা, প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষ সে ,তার রক্তের গ্রুপই জানতেন না ।

প্রথম বাচ্চা মৃত হয়েছিল। প্রথম বাচ্চা মৃত হলেও পরবর্তী বাচ্চা জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো যদি সময়ের ভিতর Rh Anti D Ab নামক ইনজেকশন দিতো। কিন্তু যে রক্তের গ্রুপই জানতো না বাচ্চার হওয়ার আগে সে ডাক্তারকে কেমনে বলবে আর ডাক্তারই বা তার জন্য কি পূর্ব প্রস্তুতি নিবে।

যার ফলে প্রথম বাচ্চা হওয়ার পর মায়ের রক্তে Rh positive রক্তের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়।এবং পরবর্তীতে ঐ মা যতবার কনসিভ করে ততবারই বেবি IUD অর্থাৎ বাচ্চার গর্ভেই মৃত্যু হয় 🥲🥲

এই বাচ্চা ৩৮ সপ্তাহে মায়ের পেটে থেকে এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস হয়ে IUD হয়। এটা মায়ের ৮ম বাচ্চা ছিলো। একটা ভুলের জন্য একটা ইনফরমেশন না জানার জন্য সারাজীবন মায়ের হাহাকার 🥲...

স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি ক্যাটাগরির জন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে । আর সেটা হলো স্বামীর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ এবং স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে ।

সেক্ষেত্রে নবজাতকের রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হয় তাহলেই মাকে বাচ্চা প্রসব করার ৭২ ঘন্টা তথা ৩ দিনের মধ্যে একটি ইনজেকশন দিতে হয় ।যার নাম Rh Anti D Antibody ...

এই ইনজেকশন দিলে পরবর্তী বাচ্চার রক্তের গ্রুপ জনিত আর কোনো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকবেনা ইনশাআল্লাহ ।কিন্তু না দিলে পরবর্তী বাচ্চা মিসকারেজ হয়ে যেতে পারে ।

তাই সম্ভব হলে বিবাহের আগেই অথবা বিবাহের পর সন্তান নেয়ার আগেই রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করুন, সচেতন হোন। নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন হতে সহায়তা করুন ।
শেয়ার করুন ।

ডা. মো. সাব্বির হোসেন
এমবিবিএস (রংপুর মেডিকেল কলেজ)

[ছবিটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি এন্ড অবস বিভাগে তোলা ]

29/03/2024

বর্তমান সময়ে এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স বিষয়টা দেখা গেলেও ঢালাওভাবে এটার খারাপ প্রভাব সবার ঘরে ঘরে এসে পৌছায়নি এখনো, তবে তা খুব দেরি নয়..

এটা এমন এক রাক্ষস হতে যাচ্ছে যার কারনে সামান্য গলা ব্যাথা,কাশি,প্রশ্রাবে ইনফেকশনের মত কারনে মানুষের মৃত্যু সহজে হয়ে যাবে,যা আগে অল্পটাকার ঔষধে সেরে যেতো...

#এই এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স জিনিসটা কি?

গ্রামে একটা কথা শোনা যায় যে একটা সাপ কে আধামরা অবস্থায় ছেড়ে দিলে নাকি এটা প্রতিশোধ নিতে ফিরে আসে,তাই এটার মৃত্যু নিশ্চিত করতে হয়..

এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্সও এমন,যদি ধরেন শরীরের একটা জীবানুকে আপনি মারতে চান,তাহলে সঠিক অস্ত্র এবং সঠিক মাপের অস্ত্র দিয়ে সঠিক সময় নিয়ে মারতে হবে..

যদি আপনি এই ব্যাকটেরিয়া ভাইরাসকে আধমরা অবস্থায় ছেড়ে দেন,এটা রুপ পরিবর্তন করবে বেচে গিয়ে,আপনার আগের অস্ত্র আর এটাকে মারতে পারবেনা,এমন করে যদি সে জীবানুকে মারতে আপনার হাতের সব অস্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায়,তাহলে কি হবে?

সে জীবানু,ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাস উলটো আপনাকে মেরে ফেলবে🙂, এটাই হবে এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স এর কুফল যা মৃত্যুকে সহজে ডেকে আনবে..

অথচ আমাদের হাতে অনেক অস্ত্র ছিলো😢,আমরা নিজেরা সে অস্ত্র নষ্ট করে ফেলেছি যত্রতত্র এন্টিবায়োটিক খেয়ে,ভুল জায়গায় ভুল এন্টিবায়োটিক, ভুল সময় ধরে প্রয়োগের ফলে..

ব্যাকটেরিয়ার ধরন এবং কোন জায়গায় ইনফেকশন, রোগীর আরো কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে কিনা(ডায়াবেটিস /প্রেশার/কিডনি /লিভার /হার্টের সমস্যা)
ইত্যাদি বিবেচনা করে এন্টিবায়োটিক দিতে হয়.. যেটা একমাত্র একজন এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তারই বুঝবে, নিজে থেকে ২/১ টা এন্টিবায়োটিকের নাম মুখস্থ করে খেলে বা অন্য অনভিজ্ঞ লোকের অভারকনফিডেন্স ও পরামর্শে খেলে আপনার মাধ্যমেই হয়ে যাবে সে এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স...

**শেষে একটা মজার কথা বলি, সাপ আধমরা করার উদাহরণ দিয়েছিলাম শুরুতে.. এই ক্ষেত্রে কি শোনা যায়?
যে সাপকে মারার চেষ্টা করেছিলো,সাপ ফিরে এসে তাকেই মারার চেষ্টা করবে..

তবে এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স এত ভালো সাপ না, একটা ব্যাকটেরিয়াকে আপনি আধমরা করে ছেড়ে দিলে এটা আপনাকে শেষ করবে,তেমন না.. এটা শেষ করবে আপনার বৃদ্ধ বাবা মা কে,আপনার আদরের ছোটো সন্তানকে.. যে এন্টিবায়োটিক আপনি মুড়ির মত না বুঝে খেয়েছেন,সে এন্টিবায়োটিকে ভালো হবেনা আপনার বাবা মা সন্তানের অসুখ..🙃

কিছু পাপ দুনিয়াতে ভোগ করতে হয়, তবে এখানে একটু ভিন্ন,আপনার পাপে আরেকজন ধ্বংস হবে(সাথে আপনিও),আরেকজনের পাপে আপনি..

সুতরাং অবাধে এন্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করতে হবে.. জ্বর, সর্দি, গা ব্যাথা বমি,পাতলা পায়খানা ইত্যাদি মানেই যে এন্টিবায়োটিক, তা না..

৭০-৯০% ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক লাগেনা যার জন্যে আমরা খাই, ফলাফল কি?

এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স, এবং এটার ভবিষ্যৎ কুফল,সাথে টাকা লস,কারন একটা এন্টিবায়োটিক ৩০-৫০-৭০-১০০ থেকে শুরু করে হাজারের উপর..

শুধু জমির আইল নিয়ে সচেতন না হয়ে,নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হোন😊,নিজের বাবা মা ও সন্তানের জন্য বসবাসের একটা ভালো পরিবেশ রেখে যান..

Address

Mymensing

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Dr. Md. Roisul Islam posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category