23/08/2025
ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুটা মারা গিয়েছে।
বিগত কয়েকদিনে ১০০ জনের মত রোগী দেখেছি যার মধ্যে ৮০-৯০% ই ছিল ডেংগু বা চিকুনগুনিয়া জ্বরের রোগী।
ডাক্তার না দেখিয়ে কি কি ওষুধ খেয়েছে-- এই কথা আমি রোগীদের জিজ্ঞেস করি।
আরবোভাইরাল ফিভারে যেহেতু শরীরের ব্যথা থাকে সেজন্য অনেকেই ব্যথার ওষুধ খেয়ে আসে।
রোগী দেখতে গিয়ে এরকম বেশ কিছু রোগী পেয়েছিলাম যারা ব্যথার ওষুধ খেয়ে এসেছিল ।
জ্বরে আক্রান্ত ১৪ বছরের বাচ্চার হিস্ট্রি নিয়ে জানলাম সে ৪ টা Diclofenac সাপোজেটরি নিয়েছে ওষুধের দোকানদের কথায়। পরবর্তীতে টেস্টে ডেংগু পজিটিভ এসেছিল এবং প্লেটলেট কম ছিল।
বাবা আর ছেলে ব্যথার ওষুধ খেয়ে এসেছিল।এরাও ডেংগু পজিটিভ হয়েছিল এবং দুজনের প্লেটলেটের অবস্থা খারাপ ছিল।
মাথাব্যথা সহ্য করতে না পেরে টাফনিল খেয়েও কয়েকজন রোগী এসেছিল।
এসব ব্যথার ওষুধ অল্প সময়ের জন্য খেলেও শরীরের ভেতর রক্তক্ষরণের একটা থিওরিট্যাল রিস্ক থাকে। কিন্তু ডেংগু জ্বরে আলাদাভাবে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে। তাই ডেংগু রোগী যদি এসব ব্যথানাশক খায়, তখন ঝুঁকিটা আর কেবল তাত্ত্বিক থাকে না—বরং বাস্তবেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
এর সাথে ব্যথানাশক ওষুধ কিডনিতে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়।আবার ডেংগু/ ভাইরাল ফিভারে রোগীর পানিশূন্যতা হয়েও কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে কিডনির ক্ষতি হতে পারে।
তাছাড়া প্রায় সময় দেখি,ছোট বাচ্চাদের ওষুধের দোকানদাররা ১-২ দিনের জ্বরে এন্টিবায়োটিক দিয়ে দেয়। শিশুরা অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক বেশি খেলে তাদের শরীরের ভাল ব্যাকটেরিয়াগুলোর সংখ্যা কমে গিয়ে ভাল-খারাপ ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয় (Dysbiosis)।
এই Dysbiosis এর কারণে তাদের Autoimmune Disease হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
Juvenile Idiopathic Arthritis হচ্ছে এমনই একধরনের Autoimmune Disease যার সাথে Antibiotic Overuse এর সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে।
প্রেস্ক্রিপসন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি করার শাস্তির আইন থাকলেও ,আজ পর্যন্ত এই আইনে কারো শাস্তি হয় নি মনে হয়। সবাই সাধু।
ওষুধের দোকান দিয়ে যারা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে ,তাদের ব্যাপারে সরকার ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।তারা শুধু ডাক্তারদের পিছনে লেগে আছে।
এদেশের ডাক্তাররা দীর্ঘদিন যাবৎ হাতুড়ে ডাক্তার ও ওষুধের দোকানদের অপচিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্থ রোগীদের ড্যামেজ কন্ট্রোল করে যাচ্ছেন।কোন সরকারই এই হাতুড়েবাহিনী আর হারামখোর ওষুধের দোকানদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে নাই। বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা অযোগ্য লোকদের কাছ থেকে তো আশাও করা যায় না।
ডা: ফরহাদ