
29/05/2025
পেশেন্ট এসেছেন, তার বাহ্যিক লক্ষ্মণ গুলো ছিল আশিক জিনের। কমন আয়াতের রুকইয়ার পর কিছু ইফেক্ট লক্ষ্য করলাম বললাম কি কি সমস্যা হয়েছে সেগুলো কাগজে লিখতে তিনি লিখলেন, লিখার মাঝে দেখলাম তিনি উল্লেখ করেছে তার পরিবারের কয়েকজন মানুষকে তিনি দেখতে পাচ্ছেন। এবং তিনি বলতেছেন উনারা তাকে জাদু করেছে যেন সংসার ভেংগে যায়। অথচ আমি উনাদেরকে জানি উনারা কখনো এই কাজ করতে পারেন না বরং উনারা বারবারই পরিবারটিকে রক্ষা করার আপ্রান চেষ্টা চালিয়েছেন।এরপর আবার রুকইয়াহ শুরু করলাম যিনা ফাহেশার আয়াত এবং সেহেরের আয়াত তেলাওয়াত করলে ইফেক্ট বাড়তে থাকে এবং জিন কন্ট্রোল নিয়ে নেয়।জিনের উক্বাদ হুসুন ধংসের নিয়তে রুকইয়াহ করতে থাকলে শয়তান পতিক্রিয়া দেখাতে থাকে।একপর্যায়ে সে বলতে থাকে তোদের কাউকে ছাড়বনা। সব গুলারে শেষ করে দিমু।কিছু মাইর খাওয়ার পর সর্বশেষ শয়তান জানায় সে রুগিকে ভালবাসে ছোট থেকেই,রুগিকে নিয়ে যেতে চায় তাদের কাছে, এজন্য সবার মাঝে সে ঝগড়া লাগিয়ে রেখেছে যেন সবাই পেশেন্ট থেকে দূরে থাকে।(আল্লাহু আ'লাম)
এই কাহিনি লিখার পিছনে কারন হল এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় রয়েছে যা জানা জরুরি।
১/ রুকইয়াতে চোখের সামনে কিছু ভাসিয়ে দেয়া সেটা কখনো মানুষ, বা যাদুর আসবাব, জাদুর স্থান বা অন্য কিছু, এটা কোন কোন সময় সঠিক আর আর কখনো শয়তান ধোকা দেয়ার জন্য এটা করে, এটা অভিজ্ঞ রাক্বীগন বুজতে পারেন, এক প্রকার জাদু আছে যেটাকে সিহরুত তাখাইয়্যুল বলা হয়। আর এই শয়তান এই সুযোগটা নিয়েছে এজন্য যে রুগি তার সমস্যা নিয়ে কবিরাজের কাছে গিয়েছিল কবিরাজ বলেছে তাকে অমুক অমুক ব্যক্তি গুলা জাদু করেছে।ব্যস শয়তান এটাকে বাস্তবে প্রমানিত করার জন্যই এমনটা করেছে। যারদ্বারা শয়তানের উদ্দ্যেশ হল রুগি সারা জীবন অই ব্যক্তিদের পিছনে লেগে থাকবে তার মুল সমস্যার দিকে ফোকাস করতে পারবেনা আর এতে করে শয়তান ব্যক্তিকে আজীবন ভোগ করবে।বুজতেও পারবেনা সে জীনের রুগি। আর পারিবারিক ভাবে একটা অশান্তি তৈরি করে রাখবে এতে হয়ত পরিবার বিছিন্ন হয়ে যাবে যা মুলত শয়তানের মিশন বাস্তবায়নের চুড়ান্ত লক্ষ সফল হবে।
২/ আশিক শয়তাদের রুগিদেরকে সাধারণত পরিবার, স্বামী, শশুর,শাশুড়ী, এদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য শয়তান নিজেই জাদু করে রাখে। যার ফলে রুগি চাইলেই তাদের সাথে ভাল আচরন করতে পারে না এবং তারা ও ইচ্ছা করে রুগির প্রতি ভাল আচরন দেখাতে পারে না। এর মুল কারন শয়তান তাদের মাঝে বিচ্ছেদ তৈরি করার জন্য জাদু করে রাখে। এসব রুগিরা মুলত অসহায় এবং তাদের পরিবার ও অসহায় হয়ে যায় যদি বিষয় গুলা তারা বুজতে অক্ষম হয়।
৩/ শয়তান তার নিজের মিশন লুকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং ব্যক্তির চিন্তা চেতনাকে কাজে লাগিয়ে সেভাবেই ধোকা দেয় এবং ফেতনা তৈরি করে রাখে।
৪/ কবিরাজরা শয়তান তাড়ানো দূর কি বাথ ওরা নিজেরাই শয়তানের গোলামে পরিনত হয়ে যায় এবং রুগিদের সুস্ত হওয়া দুরের কথা আরও কঠিনভাবে রুগি বানিয়ে দেয়।এবং পরিবারে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়
৫/ রুকইয়াতে কতক সময় বিশেষ করে শয়তান একটু শক্তিশালী হলে রুকইয়াকে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে চেষ্টা করে যদি রাক্বী সচেতন বা অভিজ্ঞ না হন তাহলে তার রুকইয়াকে পরিচালনা করবে শয়তান। এবং রুগী সুস্ততা দুরের কথা আরও সমস্যা বাড়বে এবং পারিবারিক কলহ তৈরি হবে। কাজেই রাক্বী নির্বাচনে সতর্ক থাকা।
৬/মাইরের উপরে ঔষুধ নাই কথাটার কিছু বাস্তবতা রয়েছে তবে এটা বুজা জরুরি কোন মাইর কখন আর কার জন্য কি মাইর উপকারী। বুজে শুনে মাইর না দিলে মাইর খাওয়াও লাগতে পারে তাই সাবধান থাকতে হবে।
সবশেষে এখন জিলহজ্জ মাস চলতেছে, খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় জিন জাদুগ্রস্থ রুগিদের প্রতি আহবান থাকবে এই সময় গুলাতে বেশি বেশি আমল করুন বিশেষ করে জিকির, তাসবিহ, নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ) রোজা এগুলার পরিমান বাড়িয়ে দিন। পারলে সরাসরি সেশন নিন, আর মনখুলে আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে দোয়া করুন আল্লাহ যেন এই মুছিবত থেকে উদ্ধার করেন।
আল্লাহ সকল রুগিদেরকে সুস্থতা দান করুন
সাইফুল্লাহ বিন বাশার
রুকইয়াহ ও হিজামা সেন্টার ময়মনসিংহ
01911202438
শেয়ার দিয়ে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন