08/06/2024
মোরগ-মুরগির রোগ.........................
1.রানীক্ষেত
ইহা মোরগ-মুরগির ভাইরাস জনিত একটি মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ। সকল বয়সের মোরগ-মুরগি এ রোগে আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
হলুদাভ রংয়ের বা চুনা পানির মত সাদা পাতলা পায়খানা হয়। হাঁচি-কাশি থাকে, মুরগি ঝিমার ও মুখ হা-করে শ্বাস-প্রশ্বাস ত্যাগ করে। ঘাড়, পাখা ও পায়ের অবসতা দেখা দেয়। তীব্র প্রকৃতির ক্ষেত্রে হঠাৎ মৃত্যু ঘটে।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
রোগক্রান্ত মোরগ-মুরগি আলাদা রাখতে হবে। বাসস্থান, খাদ্যের ও পানির পাত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খামার ঘরে বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার র্নিষিদ্ধ রাখতে হবে। সুস্থ্য অবস্থাতয় মুরগিকে নিয়মিত প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে স্যালাইন ও ভিটামিন ও দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমন রোধে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
2.গামবোরো
গামবোরো ভাইরাস জনিত একটি মারাত্মক রোগ যা মোরগ-মুরগির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সাধারনতঃ ২ হতে ৮ সপ্তাহ বয়সের বাচ্চা এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
আক্রান্ত মোরগ-মুরগি সাদা পাতলা পায়খানা করে। মলদ্বার ভিজা ও মলযুক্ত থাকে। মলদ্বারের সন্নিকটে অবস্থিত বারসা নামক গ্রস্থি ফুলে যায়। মোরগ-মুরগি তার নিজ মলদ্বার ঠুকরায়। পায়ের গিরা ফুলে যায় এবং খুঁড়িয়ে হাঁটে। কাঁপুনি হয় এবং অতি ক্লান্তিতে মাটিতে শুয়ে পড়ে। শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দেয় এবং পিপাসা বৃদ্ধি পায়। মৃত্যুহার ৪০-৬০% হতে পারে।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
সুস্থ্য মোরগ-মুরগিকে সময়মত টিকা দিতে হবে। আক্রান্ত মোরগ-মুরগিকে আলাদা রেখে চিকিৎসা দিতে হবে। খামার, খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খামারে বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার নিযন্ত্রন করতে হবে। রোগাক্রান্ত মুরগির ঝাঁকে সাধারণ পানির পরিবর্তে গুড় মিশ্রিত পানি দেয়া যেতে পারে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে পানি স্বল্পতা রোধে স্যালাইন, ইলেকট্রোলাইটস ও ভিটামিন বিশেষকরে রক্তক্ষরন বন্ধে ভিটামিন [কে] ও দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমন রোধে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
3.মোরগ মুরগির বসন্ত
ইহা সকল বয়সের মোরগ মুরগির ভাইরাস জনিত একটি সংক্রামক রোগ।
লক্ষণঃ
এ রোগে আক্রান্ত মোরগ মুরগির ঝুটি, কানের লতি, চোখ, ঠোঁট ও মুখের ভিতর গুটি বা ফোসকা দেখা যায়। সাধারণতঃ শরীরের পালকহীন স্থানেই এসকল গুটি বেশী হয়। বয়স্ক মুরগির চেয়ে বাচ্চা বেশী আক্রান্ত হয় এবং এ রোগে মুরগির বাচ্চার মৃত্যুর হার বেশী। মুরগির ডিম উৎপাদন হ্রাস পায়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
পটাশ বা ফিটকিরির পানিতে তুলা ভিজিয়ে ক্ষতস্থান পরিস্কার করে দিতে হবে। জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে বাসস্থান ও ব্যবহার্য দ্রবাদি পরিস্কার করতে হবে। প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমন রোধে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
4.ম্যারেকস্
এ রোগের কারণ এক প্রকার ভাইরাস। এ রোগটিকে অনেক সময় ফাউল প্যারালাইসিস বলা হয়। সাধারণতঃ বিদেশী জাতের মুরগি এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
এ রোগে বিভিন্ন অঙ্গের স্নায়ুতন্ত্র অক্রান্ত হয়ে পক্ষাঘাতের সৃষ্টি করে। পায়ের স্নায়ুতে পক্ষাঘাত হলে খুঁড়িয়ে হাঁটে। ডানার পক্ষঘাতে ডানা ঝুলে পড়ে। মাংশপেশী আক্রান্ত হলে মাথা নিচ দিকে ঝুলে পড়েতে দেখা যায়। রোগ দীঘস্থায়ী হলে মুরগির দৈহিক ওজন হ্রাস পায় ও ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। অনেক সময় ডাইরিয়াও দেখা যায়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
আত্রান্ত মুরগিকে সুস্থ্য মুরগি থেকে পৃথক করতে হবে। চিকিৎসার ভাল ফল পাওয়া যায় না বিধায় প্রতিষেধক টিকা প্রযোগ করে রোগ প্রতিরোধ করা হয়। খামার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খামারে বহিরাগতদের প্রবেশধিকার বন্ধ করতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই।
5.ইনফেকসাস ল্যারিংগোট্র্যাকিয়াইটিস
এই রোগের জীবাণু এক প্রকার ভাইরাস। ইহা একটি সংক্রামক ও মারাত্মক ছোঁয়াচে প্রকৃতির রোগ। সাধারণতঃ শ্বাসযন্ত্রই এ রোগে আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
মুরগির শ্বাসযন্ত্রে ঘড় ঘড়, সাঁ সাঁ শব্দ ও কাশি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, কফ ও হাঁচি হয় এবং শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। শ্বাস গ্রহণকালে মুরগির হাঁপানো ভাব হয় এবং বড় হা করে মাথা ও ঘাড় উপরের দিকে উঠাতে থাকে। অপরদিকে শ্বাস ত্যাগকালে মুখ বন্ধ করে নীচের দিকে নামিয়ে দেয়। চোখ ভেজা থাকে। নাক দিয়ে রক্ত মিশ্রিত শ্লেষ্মা বের হয়। মাথার ঝুটি ও কানের লতি বেগুনী রংয়ের হয়। বেশী মারাত্মক হলে রোগ দেখা দেয়ার দু-একদিনের মধ্যেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মুরগি মারা যায়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
আক্রান্ত মুরগিকে পৃথক করে রাখতে হবে। এ রোগ থেকে বেঁচে থাকা মোরগ-মুরগি ভাইরাসের বাহক হিসাবে কাজ করে। সুতরাং রোগ থেকে সেরে ওঠা মোরগ-মুরগি সুস্থ্য মোরগ-মুরগির সঙ্গে না রেখে আলাদা করে রাখতে হবে। মৃত মোরগ-মুরগিকে যেখানে সেখানে না ফেলে মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। মোরগ-মুরগির খোঁয়াড়/খামারে মাঝে মাঝে জীবাণুনাশক ঔষধ ছিটাতে হবে। মৃত মোরগ-মুরগি সরিয়ে নেয়ার পর জীবাণুনাশক ঔষধ দ্বারা ঘরের মেঝে পরিস্কার করতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমন রোধে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
6.ডাক প্লেগ
এটি হাঁসের ভাইরাস জনিক একটি মারাত্মক রোগ। সাধারণতঃ প্রাপ্ত বয়স্ক হাঁসের এ রোগে হয়। এ রোগে মৃত্যুহার বেশী।
লক্ষণঃ
আক্রান্ত হাঁস খুড়িয়ে হাঁটে এবং সাঁতার কাটতে চায় না। সবুজ রংয়ের পাতলা পায়খানা করে। পানি পিপাসা বৃদ্ধি পায়। মৃত্যু হার ক্ষেত্র বিশেষে ১০০% পর্যন্ত হতে পারে।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
বাসস্থান, খাবার ও পানির পাত্র পরিস্কার রাখতে হবে। আক্রান্ত হাঁস আলাদা করে রাখতে হবে। রোগ দেখা দেয়ার পূর্বে নিয়মিত টিকা দিতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই।
7.ডাক ভাইরাস হেপাটাইটিস
ডাক ভাইরাল হেপাটাইটিস হাঁসের ছানার একটি মারাত্মক সংক্রামক ভাইরাস জনিত রোগ। যকৃত প্রদাহ এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
লক্ষণঃ
সাধরণতঃ তিন সপ্তাহের কম বয়সী হাঁস আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত হাঁসের ছানা চলাফেরা বন্ধ করে দেয় এবং একপার্শ্বে কাত হয়ে পড়ে থাকে। আংশিকভাবে চোখ বন্ধ করে থাকে। কিছু কিছু ছানা ঈষৎ সবুজ বর্ণের পাতলা পায়খানা করে। খিঁচুনী হয় এবং ঘাড় পিছনে বেঁকে যায়। ১ সপ্তাহ কম বয়সী ছানার মৃত্যুহার প্রায় ৯৫%।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত হাঁসের বাচ্চাকে বয়স্ক হাঁস থেকে পৃথক ভবে পালন করতে হবে। আক্রান্ত ছানাকে সুস্থ্য ছানা থেকে আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হবে। বাসস্থান ও খামার সরঞ্জাম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাঁসের বাচ্চাকে টিকা প্রদান করতে হবে।
চিকিৎসাঃ
এ রোগের কার্যকরী কোন চিকিৎসা নাই। তবে ইমিউন ডাক থেকে (রোগ থেকে সেরে ওঠা) এন্টিসিরা ইনজেকশন .৫ এমএল করে ব্যবহার করা যেতে পারে।
8.হাঁস-মুরগির কলেরা
এটি ব্যাকটেরিয়াজনিক অতি সংক্রামক একটি রোগ।
লক্ষণঃ
পাতলা সবুজ পায়খানা হয়। আক্রান্ত হাঁস-মুরগির হাঁটু ও মাথা ফুলে যায়। মুরগির মাথার ঝুটি ও কানের লতি নীলাভ রং ধারণ করে। তীব্র প্রকৃতির ক্ষেত্রে হঠাৎ মারা যায়। অনেক সময় কিছু দিন ভোগার পর মারা যায়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
আক্রান্ত হাঁসকে আলাদা করে চিকিৎসা করতে হবে। বাসস্থান, খাবার ও পানির পাত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নিয়মিত প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। তবে এ প্রতিষেধক টিকায় সাধারণত ৫০% এর বেশী ফল পাওয়া যায় না। প্রথম দিকে চিকিৎসায় দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
চিকিৎসাঃ
সালফানামাইড গ্রুপের ঔষধ বা এন্টিবায়োটিকের মধ্যে পেনিসিলিন বা ষ্ট্রেপটোমাইসিন বা ঊভয়ই সম্মিলিতি ভাবে নির্ধারিত মাত্রায় ব্যবহার করা যায়।
9.ফাউল টাইফয়েড
এটি মোরগ-মুরগির ব্যাকটেরিয়াজনিত একটি সংক্রামক রোগ।
লক্ষণঃ
উচ্চ মত্যু হার। রোগ ডিমের মাধ্যমে সংক্রামিত হলে ছানা ফুটার ট্রেতে মৃতপ্রায় ছানা দেখা যায়। মলদ্বারের চারপাশে সাদা মল লেগে থাকে। অতিতীব্র প্রকৃতির রোগে পাখি হঠাৎ করে মারা যায়। সবুজ বা হলুদ বর্ণের অতি দূর্গন্ধযুক্ত ডায়রিয়া দেখা দেয়। মাথা ও ঝুটি বিবর্ণ ও সংকুচিত হয়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
আক্রান্ত মুরগির ডিম ফুটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ডিম ফুটানোর পূর্বে ইনকিউবিটর ও হ্যাচারী পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ডিম ফুটাতে হবে। বাসস্থান, খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। দ্রুত চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যায়।
চিকিৎসাঃ
কোট্রিমোক্সাজোল, ক্লেরামফেনিকেল এবং পেনিসিলিন গ্রুপের ঔষধ এ রোগে বেশ কার্যকরী। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে ভিটামিন ও মিনারেলের ব্যবহার দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।
10.পুলোরাম
এটি মুরগির ছানার একটি মারাত্মক ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক রোগ।
লক্ষণঃ
ডিমের মাধ্যমে সংক্রামিত হলে অনেক বাচ্চা ডিমের মধ্যেই মারা যায়। কিছু বাচ্চা ডিম থেকে ফুটে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। আবার অনেক বাচ্চা কিছু সময় বাঁচে। জন্মের পর এ রোগে আক্রান্ত বাচ্চা মাথা নীচু করে ঝিম মেরে থাকে। ঘনঘন সাদা বর্ণের পাতলা পায়খানা করে বলে অনেক সময় একে ব্যাসিলারী হোয়াইট ডায়রিয়াও বলা হয়। আক্রান্ত বাচ্চা কিছু খায় না। পানির পিপাসা বেশী থাকে। ১-৩ সপ্তাহ বয়সের মুরগির বাচ্চার মৃত্যুহার প্রায় ১০০ ভাগ।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণঃ
ডিমের মাধ্যমে রোগ জীবাণু সংক্রামিত হয় বলে বাহক পাখির ডিম ফুটানো থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রতিবার ডিম ফুটানোর পূর্বে ইনকিউবেটর ও হ্যাচারী উত্তমরুপে পরিস্কার করতে হবে। হ্যাচারী জীবাণুনাশক ঔষধের সাহায্যে পরিস্কার করতে হবে। ডিম, হ্যাচারী ঘর ও ইনকিউবেটর নিয়মিত ফিউমিগেশন করতে হবে। মোরগ-মুরগির বাসস্থান, খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
চিকিৎসাঃ
সালফানামাইড, ফুরাজোলিডন ও ক্লোরটেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ঔষধ এ রোগে বেশ কার্যকরী। সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে ভিটামিন ও মিনারেলের ব্যবহার দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।
11.রক্ত আমাশায়
আইমেরিয়া নামক একপ্রকার প্রটোজোয়া দ্বারা সাধারণতঃ ২ মাসের কম বয়সের বাচ্চার এই রোগ হয়। এ রোগকে ককসিডিওসিসও বলা হয়।
লক্ষণঃ
লাল বা রক্তমিশ্রিত পাতলা পায়খানা করে। পালক ঝুলে পড়ে। বসে বসে ঝিমায় আক্রান্ত বাচ্চাগুলো একত্রে জড়ো হয়ে থাকে।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
খাদ্যে নির্দিষ্ট পরিমান ককসিডিওষ্ট্যাট নামক ঔষধ সরবরাহ করতে হবে। জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে নিয়মিতভাবে বাসস্থান, খাবার পাত্র ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে। চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যায়। ভ্যাকসিন ব্যবহার করা যায়।
চিকিৎসাঃ
সালফানামাইড জাতীয় ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা করা যেতে পারে।
12.মাইকোপ্লাজমোসিস (সি.আর.ডি)
মোরগ-মুরগির মাইকোপ্লাজমা জনিত কয়েক প্রকার রোগকে সাধারণভাবে ক্রনিক রেসপিরেটরী ডিজিজ বা সি.আর.ডি বলে। এই রোগে প্রাথমিকভাবে মোরগ-মুরগির শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
আক্রান্ত মোরগ-মুরগির শ্বাসনালীতে ঘড় ঘড় শব্দ হয়। নাক দিয়ে সর্দি ঝরা সহ হাঁচি ও কাশি পরিলক্ষিত হয়। আক্রান্ত পাখির খাদ্য গ্রহণ কমে যায় ও ওজন কমতে থাকে। ডিম পাড়া মুরগির ডিম দেয়া কমে যায়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণঃ
আক্রান্ত মোরগ মুরগিকে আলাদা করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মুরগির লিটার, খাবার ও পানির পাত্র ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
চিকিৎসাঃ
টাইলোসিন, লিনকোমাইসিন, স্পাইরামাইসিন, স্যালিনোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় ঔষধ করা করা যেতে পারে।
12.খাদ্যপাণ বা ভিটামিনের অভাব জনিত হাঁস-মুরগির রোগ
হাঁস-মুরগির উৎপাদনে বা রোগ প্রতিরোধে ভিটামিনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ মুরগিকে সুস্থ্য, সবল ও কর্মক্ষম রাখে। অন্যান্য খাদ্য উপাদানের তুলনায় এ উপাদানের প্রয়োজনীয় পরিমান অতি কম হলেও বিভিন্ন উপসর্গের সৃষ্টি হয় এবং মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়।
হাঁস-মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ যেমন, ভিটামিন এ, ডি, ই এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স। নির্দিষ্ট ভিটামিনের অভাবে নির্দিষ্ট রোগ ও উপসর্গ দেখা দেয়।
লক্ষণঃ
মুরগির দৈহিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। উৎপাদন কমে যায়, উর্বরতা হ্রাস পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ডিমের খোসা পাতলা হয়। ক্ষুধামন্দা, দূর্বলতা, ওজন হ্রাস ও চর্মপ্রদাহ দেখা দেয়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। মোরগ-মুরগিকে সবুজ শাক সবজি, হলুদ ভুট্টা, শস্যকনা প্রভৃতি ভিটামিনযুক্ত খাবার সরবরাহ করতে হবে। খামারে হাঁস-মুরগির জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম ভিটামিন ব্যবহার করতে হবে।
13.খনিজ পদার্থের অভাবজনিত সমস্যা সমূহ
হাঁস-মুরগি উৎপাদন, দৈহিক বৃদ্ধি, স্বাস্হ্য রক্ষা ও প্রজননে খনিজ পদার্থের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খনিজ পদার্থ হাঁস-মুরগির হাড় গঠন, ডিমের খোসা গঠন, উৎসেচক তৈরী ইত্যাদি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখে।
হাঁস-মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলো যেমন-
১। ক্যালসিয়াম
২। ফসফরাস
৩। ম্যাঙ্গানিজ
৪। সোডিয়াম
৫। পটাশিয়াম
৬। আয়রন
৭। আয়োডিন
৮। ম্যাগনেশিয়াম
৯। অন্যান্য
অভাব জনিত লক্ষণ সমূহ
হাঁস-মুরগির অস্থি নরম, বাঁকা, ভঙ্গুর, বিকৃত আকারের হয়। বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পালকের চাকচিক্য থাকে না। পাখির ঠোঁট নরম ও বাঁকা হয়। ডিম উৎপাদন কমে যায়। মোররগ-মুরগি একে অপরকে ঠোঁকরায়। পেশীর দূর্বলতা দেখা যায়। ডিমের খোসা নরম ও পাতলা হয়।
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনঃ
সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। খাদ্যে বিভিন্ন খনিজ পদার্থের অনুপাত সঠিকভাবে দিতে হবে। হাঁড়ের গুড়া, শুটকী মাছ, প্রভৃতি খাবার সরবরাহ করতে হবে। খাদ্যের সাথে লবণ ব্যবহার করতে হবে।
#গামবোরো
#সিআরডি
#রানিক্ষেত
#পোলোরাম
#ম্যারেকস
#ডাকভাইরাস