06/08/2022
#অগ্নাশয়ের_ক্যান্সারের_কিছু_বিষয়_যা_আপনার_জানা_প্রয়োজন
অগ্ন্যাশয় হচ্ছে দেহের ইনস্যুলিন ক্ষরণের প্রধান কেন্দ্র। আর শরীরের এই গ্রন্থিতেই বাসা বাধতে পারে মরণঘাতী ক্যান্সার। সাধারণত এই ক্যান্সার মধ্যবয়সিদের মাঝে বেশি হয়ে থাকে। আর নারীদের তুলনায় এটি পুরুষদের মধ্যে বেশি হতে দেখা যায়। অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার তখনই হয়, যখন পাকস্থলীর পেছনের এই গ্রন্থি অগ্ন্যাশয়ের কোষসমূহ আনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেয়ে একটি পিণ্ড সৃষ্টি করে। আর এই ক্যান্সার কোষগুলো শরীরের অন্য অংশে আক্রমণ করতে পারে।
#অগ্ন্যাশয়_ক্যান্সারের_লক্ষণ
এটি কে একটি নীরব রোগ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে, কারণ এটি সাধারণত শুরুতে কোন উপসর্গ প্রদর্শন করে না । তবে কখনো কখনো কিছু সাধারণ লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে।
#জন্ডিস
হ্যাঁ শুধুমাত্র লিভারের ইনফেকশন বা লিভারের রোগের কারণেই জন্ডিস হয়না অগ্নাশয় ক্যান্সারের কারণেও জন্ডিস হতে পারে। যার ফলে চোখ ও ত্বক হলুদ হয়ে যায়। কারণ যকৃতে বিপাকের ফলে উপজাত হিসেবে বিলিরুবিন উৎপন্ন হয়। বিলিরুবিন পিত্তনালীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধির কারণে অগ্নাশয়ে পিত্তনালী অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
#মলের_রঙের_পরিবর্তন_হয়
অগ্নাশয় ক্যান্সারের একটি সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে হালকা বর্ণের মল নির্গত হওয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অগ্নাশয় ক্যান্সারে আক্রান্তদের মল ধূসর বা খড়িমাটির মত সাদাটে বর্ণের হয়। পিত্তনালী অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই এমনটা হয়।
#গাঢ়_বর্ণের_প্রস্রাব
যেহেতু পিত্ত রঞ্জক যকৃতে জড়ো হতে পারে না সেহেতু অতিরিক্ত রঞ্জক প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়। একারণেই অগ্নাশয় ক্যান্সারের রোগীদের প্রস্রাবের বর্ণ গাঢ় হয়। যা হতে পারে কমলা বা হালকা চা রঙের।
#পেটে_ব্যথা
যদি অগ্নাশয়ের ক্যান্সার কোষ পেটের স্নায়ুর বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করে তাহলে পেটের উপরের অংশে এবং পিঠে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা নিয়মিতই থাকে তবে নিস্তেজ অবস্থায় থাকে। পিঠের মধ্যভাগ ও উপরের অংশে এবং পেটে হয় এই ব্যথা। কিছু ক্ষেত্রে এই ব্যথা কাঁধেও ছড়িয়ে যেতে পারে।
#পেট_ফাঁপা
প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত বেশীরভাগ মানুষেরই বদহজমের সমস্যা হতে দেখা যায়। বিশেষ করে চর্বি জাতীয় খাবার খেলে। যদি আপনার ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া বা ওজন কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
#ডায়াবেটিস
যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে হঠাৎ করেই রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণে পরিবর্তন হলে অথবা ডায়াবেটিসের আকস্মিক সূত্রপাত হলে এটি হতে পারে অগ্নাশয় ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। অগ্নাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে ত্বকে চুলকানির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
#চিকিৎসা
অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের চিকিৎসা টিউমার, টিউমারের আকার ও অবস্থানের উপর নির্ভর করে । ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে কিনা, এবং ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হয় । যদি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা যায়, তবে, এই ক্যান্সারের চিকিৎসা সফল হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে । যাইহোক, এমন কিছু চিকিৎসা আছে যা রোগীদের রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে, এবং আরো বেশী সময় ধরে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেয় । অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের যে সব চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে তার মধ্যে সার্জারি, রেডিয়েশন থেরাপি বা কেমোথেরাপি । এই সব চিকিৎসা প্রয়োজন অনুযায়ী রোগের যে কোনও পর্যায়েই ব্যবহার করা হতে পারে ।
অগ্নাশয়ের ক্যান্সারের উপসর্গ এবং চিকিৎসা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (BSMMU) HBP and Liver Transplant Surgery বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সাইফ উদ্দিন। তিনি বংলাদেশে হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়াটিক, লিভার প্রতিস্থাপন সার্জারি এবং লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় একজন অগ্রদুত। এই অভিজ্ঞ চিকিৎসক ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১০০ রোগীর পিত্তথলির পাথর, অগ্নাশয় এবং লিভার সিস্ট সংক্রান্ত রোগের সার্জারি করেন । এছাড়াও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে অগ্নাশয়ের ক্যান্সারসহ লিভারের বহু জটিল রোগের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে আসছেন । তিনি তার দীর্ঘদিনের গবেষণা কাজে লাগিয়ে দেশে ও বিদেশে বহু রোগীর হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়াটিক, এবং লিভার প্রতিস্থাপন এবং লিভার ক্যান্সার বিষয়ক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে আসছেন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আল-মানার হসপিটাল লিঃ এ Hepatobiliary pancreatic department এর প্রধান হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে সার্জারী সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ।